বেদের আলোয় অদ্বৈত: নয়




মায়ার কার্যকারিতাকে বুঝতে একটি জনপ্রিয় উপমা ব্যবহার করা হয়: 'দড়িতে সাপ দেখা' (Rajju-sarpa Nyaya)। অন্ধকারে বা স্বল্প আলোতে একটি দড়িকে ভুল করে সাপ হিসেবে দেখা হয়। এখানে দড়িটি হলো ব্রহ্মের প্রকৃত স্বরূপ, এবং সাপটি হলো মায়ার দ্বারা প্রতিভাসিত মিথ্যা জগৎ। সাপটি বাস্তব বলে মনে হলেও দড়ির প্রকৃত স্বরূপ (দড়িত্ব) পরিবর্তিত হয় না। যখন আলো আসে এবং দড়িটিকে দড়ি হিসেবে চিনতে পারা যায়, তখন সাপের ভ্রম দূর হয়। একইভাবে, আত্মজ্ঞানের মাধ্যমে যখন মায়ার আবরণ দূর হয়, তখন ব্রহ্মের প্রকৃত স্বরূপ উপলব্ধি হয় এবং জাগতিক বিভ্রম অপসৃত হয়।

অবিদ্যা (Avidyā) হলো ব্যক্তিগত অজ্ঞানতা, যা জীবের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। এটি মায়ারই একটি ব্যক্তিগত বা ব্যষ্টিগত অভিজ্ঞতা। যখন মায়া সামগ্রিকভাবে বিশ্বজগৎকে প্রকাশ করে এবং ব্রহ্মের স্বরূপকে আবৃত করে রাখে, তখন অবিদ্যা ব্যষ্টিগতভাবে প্রতিটি জীবকে প্রভাবিত করে। অবিদ্যার প্রভাবেই জীব নিজের প্রকৃত স্বরূপ, অর্থাৎ ব্রহ্মের সঙ্গে তার অভিন্নতাকে ভুলে যায়। এই অজ্ঞানতার কারণে জীব ক্ষণস্থায়ী দেহ-মন-ইন্দ্রিয়কে (Anātman) নিজের প্রকৃত পরিচয় (Ātman) মনে করে। এটিই জীবের সীমাবদ্ধতা, দুঃখ, শোক এবং জাগতিক সম্পর্কের মূল কারণ। অবিদ্যা জীবকে বন্ধনে আবদ্ধ করে, কারণ এর প্রভাবেই জীব নিজেকে কর্তা (Karta: কাজের নিষ্পাদনকারী), ভোক্তা (Bhokta: অভিজ্ঞতার উপভোগকারী) এবং ভোগী (Bhogi: ফলের প্রাপক) মনে করে।

অবিদ্যার ফলস্বরূপ যা যা ঘটে:

মিথ্যা আত্মপরিচয়—জীব নিজেকে শরীর, মন এবং ইন্দ্রিয়ের সমষ্টি হিসেবে দেখে, এবং ভাবে যে, সে এগুলির দ্বারা গঠিত একটি স্বতন্ত্র সত্তা।

কর্মফল এবং পুনর্জন্মের চক্র—নিজের শরীরকে 'আমি' মনে করার কারণে জীব বিভিন্ন কর্মে লিপ্ত হয় এবং সেই কর্মের ফল ভোগ করে। এই কর্মফল জীবের বারবার জন্ম-মৃত্যুর চক্রে (Saṃsāra) আবদ্ধ থাকার কারণ হয়।

দুঃখ ও আসক্তি—দেহ-মনের সাথে নিজেকে অভিন্ন ভাবার কারণে জীব জাগতিক বিষয়গুলির প্রতি আসক্ত হয়। যখন এই বিষয়গুলি তার ইচ্ছানুযায়ী হয় না, তখন সে দুঃখ অনুভব করে।

এককথায়, মায়া হলো ব্রহ্মের সৃজনশীল শক্তি, যা জগৎকে সৃষ্টি করে এবং ব্রহ্মের স্বরূপকে আবৃত করে রাখে। অন্যদিকে, অবিদ্যা হলো জীবের ব্যক্তিগত অজ্ঞানতা, যা মায়ার প্রভাবে ব্রহ্মের সঙ্গে তার অভিন্নতাকে ভুলিয়ে দেয় এবং তাকে দেহ-মনের সাথে নিজেকে যুক্ত করে রাখতে বাধ্য করে। মুক্তি (Mokṣa) অর্জনের জন্য মায়া এবং অবিদ্যা উভয়কেই অতিক্রম করতে হয়—মায়ার প্রভাব থেকে মুক্তি আসে ব্রহ্মজ্ঞানের মাধ্যমে, যখন জগৎকে তার প্রকৃত স্বরূপ (ব্রহ্ম) হিসেবে দেখা যায়, এবং অবিদ্যা থেকে মুক্তি আসে আত্মজ্ঞান বা ব্রহ্মাত্মৈক্য জ্ঞানের মাধ্যমে, যখন জীব তার ব্যক্তিগত অজ্ঞানতা দূর করে নিজেকে ব্রহ্ম থেকে অভিন্ন বলে উপলব্ধি করে।

'ব্রহ্মাত্মৈক্য' শব্দটি তিনটি সংস্কৃত শব্দের সমন্বয়ে গঠিত: ব্রহ্ম: চূড়ান্ত বাস্তবতা, পরম সত্য, যা অপরিবর্তনীয়, অনাদি ও অনন্ত। এটিই সকল অস্তিত্বের উৎস। আত্মা: ব্যক্তিগত আত্মা বা 'স্ব' (Self), যা প্রতিটি জীবের অভ্যন্তরে অবস্থিত। ঐক্য: একত্ব, অভিন্নতা (Non-duality)। সুতরাং, ‘ব্রহ্মাত্মৈক্য জ্ঞান’ হলো সেই জ্ঞান, যা প্রমাণ করে এবং অনুভব করায় যে, আপাতদৃষ্টিতে পৃথক মনে হওয়া জীবাত্মা (ব্যক্তিগত আত্মা) এবং ব্রহ্ম (পরমাত্মা) আসলে এক ও অভিন্ন। এর অর্থ হলো, জীবের মূল স্বরূপ সেই বিশ্বজনীন সত্য ব্রহ্ম থেকে আলাদা নয়।

মায়া ও অবিদ্যার মধ্যে একটি সূক্ষ্ম অথচ গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। মায়াকে মহাজাগতিক বা সমষ্টিগত শক্তি হিসেবে দেখা হয়, যা সমগ্র মহাবিশ্বের সৃষ্টি, স্থিতি এবং লয়কে পরিচালনা করে। ঈশ্বর, সগুণ ব্রহ্ম হিসেবে, এই মায়া দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নন; বরং তিনি মায়াকে ব্যবহার করে জগৎকে নিয়ন্ত্রণ করেন। অন্যদিকে, অবিদ্যা হলো মায়ারই একটি ব্যক্তিগত বা ব্যষ্টিগত রূপ, যা জীবকে সীমাবদ্ধ করে রাখে। এই কারণ-কার্য সম্পর্কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: মায়া (কারণ) অবিদ্যার (কার্য) জন্ম দেয়, যা জীবের মধ্যে তার সীমাবদ্ধতার এবং দুঃখের অনুভূতি সৃষ্টি করে। এই পার্থক্যটি বোঝায়, কেন এক ব্রহ্মের মধ্যে থেকেও বহু জীবের মধ্যে অজ্ঞানতা ও দুঃখের ভিন্ন ভিন্ন প্রকাশ দেখা যায়। মায়া এবং অবিদ্যার এই পার্থক্যটি অদ্বৈত বেদান্তে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটি ব্রহ্মের নির্গুণ অবস্থা এবং জীবের সগুণ অভিজ্ঞতার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে।

ব্রহ্মের শুদ্ধ চৈতন্য এবং অজ্ঞানের আশ্রয়স্থল হওয়ার আপাত-বিরোধটি অদ্বৈত বেদান্তের দুটি প্রধান উপ-শাখা, ভামতী এবং বিবরণের মধ্যে একটি মৌলিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে অবিদ্যার দুটি দিক: আশ্রয় (āśraya), অর্থাৎ যার মধ্যে অবিদ্যা থাকে, এবং বিষয় (viṣaya), অর্থাৎ যার সম্পর্কে অবিদ্যা রয়েছে। সুরেশ্বরের ‘নৈষ্কর্ম্যসিদ্ধি’ গ্রন্থে এই বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, অজ্ঞানতা নিজের মধ্যে বা নিজের সম্পর্কে হতে পারে না; এটি কোনো ব্যক্তি বা কোনো কিছুর সম্পর্কে অজ্ঞানতা। অদ্বৈত মতে, দুটি মূল সত্তা রয়েছে: আত্মা (সত্তা) এবং অনাত্মা (যা আত্মা নয়)। অনাত্মা বা মন যেহেতু নিজেই অজ্ঞানের সৃষ্টি, তাই এটি অজ্ঞানের আশ্রয় হতে পারে না। এ কারণে একমাত্র বিকল্প হিসেবে ব্রহ্মকেই অবিদ্যার আশ্রয় হতে হয়, কিন্তু এতে ব্রহ্মের শুদ্ধ জ্ঞানস্বরূপ সত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ যদি ব্রহ্মই অজ্ঞানের আশ্রয় হয়, তাহলে ব্রহ্ম কি অজ্ঞানতাপূর্ণ? এই প্রশ্নটি অদ্বৈতের মূল প্রতিপাদ্যকে চ্যালেঞ্জ করে এবং এর সমাধানে গভীর দার্শনিক অন্তর্দৃষ্টি প্রয়োজন।

অদ্বৈত বেদান্তের দুটি প্রধান উপ-শাখা—ভামতী এবং বিবরণ—এর মধ্যে অবিদ্যার আশ্রয় ও বিষয়বস্তু নিয়ে যে-বিতর্ক রয়েছে, তা তাদের মূল দার্শনিক মতবাদের পার্থক্যের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।

ভামতী স্কুল অব থট: ভামতী স্কুল মনে করে যে, অবিদ্যা জীব বা স্বতন্ত্র আত্মার মধ্যে থাকে, কারণ ব্রহ্ম যেহেতু বিশুদ্ধ জ্ঞানস্বরূপ, তাই তার মধ্যে অজ্ঞানতার স্থান নেই। তারা জীবকে ব্রহ্মের একটি সীমাবদ্ধতা বা অবচ্ছেদ (Avaccheda-vāda) হিসেবে দেখে, যেমন একটি পাত্রের ভেতরের স্থান (আকাশ) মহাকাশের একটি সীমাবদ্ধ অংশ। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে, প্রতিটি জীবের জন্য একটি পৃথক অনাদি অবিদ্যা থাকে, যার ফলে একজনের মুক্তি অন্যদের প্রভাবিত করে না। ভামতী স্কুলের মতে, যখন একটি জীব তার নিজের অজ্ঞানতা থেকে মুক্ত হয়, তখন কেবল সেই জীবের মুক্তি ঘটে, কিন্তু অন্য জীবেরা তাদের নিজস্ব অজ্ঞানতার কারণে আবদ্ধ থাকে। জ্ঞান অর্জনের পদ্ধতি নিয়েও তাদের ধারণা ভিন্ন।

ভামতী স্কুল মনে করে যে, উপলব্ধি অর্জনের জন্য মনই প্রধান যন্ত্র, এবং উপনিষদের মহাবাক্যগুলো কেবল পরোক্ষ জ্ঞান প্রদান করে। মনন ও নিদিধ্যাসনের মাধ্যমে এই পরোক্ষ জ্ঞানকে প্রত্যক্ষ জ্ঞানে রূপান্তরিত করতে হয়। যজ্ঞের মতো কর্ম সম্পর্কে ভামতী স্কুল মনে করে, এগুলি কেবল ব্রহ্মকে জানার আকাঙ্ক্ষা (বিবিদীষা) তৈরি করে। শ্রবণের ভূমিকা নিয়ে ভামতী স্কুল শ্রবণের জন্য কোনো বিধি (vidhi) আছে বলে মনে করে না, বরং এটিকে একটি প্রশংসামূলক বা বেদ-বিধিসম্মত কার্যক্রম হিসেবে দেখে।

বিবরণ স্কুল: অন্যদিকে, বিবরণ স্কুল দাবি করে যে, অবিদ্যা ব্রহ্মের মধ্যে থাকে। তারা যুক্তি দেয়, জীব নিজেই অবিদ্যার সৃষ্টি, তাই জীবকে অবিদ্যার আশ্রয়স্থল বলা হলে তা অন্যোন্যাশ্রয় দোষ (anyonyāśraya-doṣa) (যখন দুটি ধারণার মধ্যে এমন নির্ভরশীল সম্পর্ক থাকে যে: 'ক'-কে জানার জন্য 'খ'-কে জানতে হয়, আবার 'খ'-কে জানার জন্য 'ক'-কে জানা প্রয়োজন হয়। ভারতীয় দর্শনে প্রায়শই এই উদাহরণটি ব্যবহৃত হয়: যদি বলা হয়, শরীর (দেহ) তৈরি হয় কর্মের ফলস্বরূপ (পূর্বজন্মের কর্ম অনুযায়ী)। আবার সেই কর্ম সম্পন্ন হয় শরীরের মাধ্যমে (শরীর না থাকলে তো কর্ম করা যায় না)। এই ক্ষেত্রেও কর্ম ও শরীর একে অপরের ওপর নির্ভরশীল, যা একটি যৌক্তিক ত্রুটি সৃষ্টি করে।) বা যৌক্তিক চক্রাকার যুক্তির জন্ম দেয়। অর্থাৎ, জীব অবিদ্যার কারণে সৃষ্ট, আবার অবিদ্যা জীবের মধ্যে থাকে—এটি একটি আত্মবিরোধী যুক্তি। বিবরণ স্কুল জীবকে ব্রহ্মের একটি প্রতিচ্ছবি বা প্রতিবিম্ব (Pratibimba-vāda) হিসেবে বর্ণনা করে, যেমন অসংখ্য দর্পণে প্রতিফলিত একটি মুখের প্রতিচ্ছবি। তাদের মতে, একটিই অনাদি অবিদ্যা রয়েছে, যার বিভিন্ন রূপ বা মোড আছে। সুতরাং, একজন মুক্ত হলে সামগ্রিকভাবে অবিদ্যার শক্তি দুর্বল হয়।

জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে বিবরণ স্কুল মনে করে যে, মহাবাক্য নিজেই সরাসরি আত্ম-উপলব্ধি ঘটাতে পারে। তাদের মতে, শ্রবণ, মনন ও নিদিধ্যাসন সম্মিলিতভাবে সরাসরি জ্ঞান প্রদান করে। বিবরণ স্কুল দাবি করে, যজ্ঞের মতো কর্মগুলি সরাসরি জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করে। শ্রবণের জন্য বিবরণ স্কুল নিয়ম-বিধি (niyama-vidhi) আছে বলে মনে করে, যা নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে শাস্ত্র অধ্যয়নের গুরুত্ব তুলে ধরে।

এই বিতর্কটি কেবল দুটি ভিন্ন দার্শনিক মতবাদের বিষয় নয়, বরং এটি অদ্বৈতের একটি গভীর শিক্ষণ পদ্ধতিকে প্রতিফলিত করে। বিবরণ স্কুলের যুক্তিটি একটি কঠোর যৌক্তিক পদ্ধতির উপর নির্ভরশীল। তাদের মতে, অবিদ্যা ব্রহ্মের উপর প্রতিভাসিত হয়, ঠিক যেমন দড়ির উপর সাপের প্রতিভাস হয়। দড়িটি (ব্রহ্ম) সাপের (অবিদ্যা) অস্তিত্বের কারণ বা আশ্রয় না হলেও, এটি সাপের প্রতিভাসের ভিত্তি। এই দৃষ্টিভঙ্গি সরাসরি চূড়ান্ত সত্যের দিকে ইঙ্গিত করে, যেখানে অবিদ্যাকে ব্রহ্মের উপর আরোপিত একটি প্রতিভাস হিসেবে দেখা হয়। বিবরণ স্কুলের এই প্রতিবিম্ববাদ-এর একটি পরিবর্তিত রূপ হলো আভাসবাদ (ābhāsa-vāda), যা বলে যে, প্রতিচ্ছবি কেবল একটি আপাত বা অলীক প্রকাশ।

অন্যদিকে, ভামতী স্কুল একটি তুলনামূলকভাবে সহজবোধ্য প্রারম্ভিক বিন্দু প্রদান করে, যেখানে অজ্ঞতাকে জীবের ব্যক্তিগত দোষ হিসেবে দেখা হয়। এটি অজ্ঞতাকে ব্যক্তিগত দায়িত্ব হিসেবে গণ্য করতে সাহায্য করে, যা আধ্যাত্মিক পথের জন্য অপরিহার্য। এটি সাধকদের জন্য একটি ব্যাবহারিক পথ নির্দেশ করে, যেখানে ব্যক্তি তার নিজের অজ্ঞানতা দূর করার জন্য সচেষ্ট হয়। প্রকৃতপক্ষে, এই বিতর্কটি ব্যাবহারিক (Vyāvahārika) স্তরের একটি সমস্যা। অদ্বৈতের চূড়ান্ত পারমার্থিক (Pāramārthika) সত্যে কোনো অবিদ্যা বা তার আশ্রয় বলে কিছু নেই। বিতর্কটি হলো অজ্ঞানীকে পরমার্থ সত্যের দিকে নিয়ে যাবার জন্য কোন দৃষ্টিভঙ্গিটি সবচেয়ে কার্যকর, তা নিয়ে। এই দুটি স্কুল একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে, যেখানে একটি কঠোর যৌক্তিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে চূড়ান্ত সত্যের দিকে অগ্রসর হয় এবং অন্যটি ব্যাবহারিক আধ্যাত্মিক অনুশীলনের মাধ্যমে সেই সত্যকে উপলব্ধির পথ সুগম করে।

শূন্যবাদ বা নিহিলিজম একটি দার্শনিক মতবাদ, যার মূল বক্তব্য হলো—জীবনের কোনো স্বতঃসিদ্ধ অর্থ, মূল্য বা উদ্দেশ্য নেই। এটি লাতিন শব্দ nihil থেকে এসেছে, যার অর্থ শূন্য বা কিছুই নয়। "Nihilism" শব্দটি মূলত ১৯শ শতকে ইউরোপীয় দর্শনে (বিশেষ করে রাশিয়ান চিন্তাধারা ও ফ্রিডরিখ নিটশে-র লেখায়) প্রচলিত হয়। মূল্যবোধহীনতা: নৈতিকতা, ধর্ম, সমাজব্যবস্থা বা সত্য—এসবের কোনো চূড়ান্ত ভিত্তি নেই। অর্থহীনতা: জীবনের কোনো অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য নেই। অস্তিত্ব-সংশয়: আমরা যা বাস্তব বলে মনে করি, তারও কোনো চূড়ান্ত অর্থ বা সত্য না-ও থাকতে পারে।