[পূর্বভাষণ | ভূমিকা | আবৃত্তির সূচনাপাঠ]
(নরম, ধীর ও আবেগময় কণ্ঠে বলা)
"কিছু সম্পর্ক থাকে,
যার কোনো সংজ্ঞা থাকে না…
থাকে না কোনো নাম, দাবি, বা সময়ের বাঁধন।
তবুও, সে থেকে যায়—
ভেতরে… গভীরে… প্রতিটি নিঃশ্বাসে।"
"যাস না, থাকিস"
একটি সম্পর্কের একান্ত অনুভব...
হারানো, অথচ হারাতে-না-পারা এক আত্মিক সংলাপ…
যেখানে 'তুই' শুধুই একটা মানুষ নয়—
একটা ছায়া, একটা ঘ্রাণ,
একটা স্মৃতির ধ্বনি…
যা কিছুতেই পেরিয়ে যাওয়া যায় না।
[আবৃত্তির স্ক্রিপ্ট]
(আবেগ-মেশানো ধীর কণ্ঠে শুরু)
: আমি কেমন?
: জানা নেই... (প্রিয় রহস্যময়ী)।
: আমাকে নিয়ে কতটুকু জানিস তুই?
: জানতে চাইনি তো!
: তবে...
সেই প্রথম দিন থেকেই
তোর চাওয়াটা ছিল একইরকম—
আচ্ছা, ওটাকে কি ভালোবাসা বলে?
না কি ভালোথাকা?
না কি শুধুই... ছুঁয়ে থাকা?
(নিস্তব্ধতা, হালকা দীর্ঘশ্বাস)
বিকেল শেষ হয়ে এল।
তুই ভুলে আছিস আমায়—
তাতে আমার কোনো আক্ষেপ নেই।
সিগারেটের ধোঁয়ায়
তোর ছায়া ঝাপসা হয়ে আসে,
অজান্তেই আমি হয়ে যাই
নিজের প্রতি বড্ড বেখেয়ালি।
: আজ তোকে জানতে ইচ্ছে করছে...
তুই আসলেই কেমন?
: হা হা… আমি?
আমি তো এই সিগারেটের ছাইয়ের মতোই।
আমাকে জেনে এখন আর কীই-বা করবি?
যত জানবি, ততই হারিয়ে ফেলবি।
(একটু দৃঢ় স্বরে)
: হেঁয়ালি করিস না তো!
ওসব আমার একদম ভালো লাগে না!
আর বলেছিলাম তোকে—
নিজেকে ঠিক করে তুলতে!
করছিস না কেন?
: কেন করব?
তুই কি এখনও আগের মতো
কৌতূহল নিয়ে তাকাতে পারিস আমার চোখে?
না, পারিস—
আমি বুঝি।
তুই যতই "পিচ্চি" বলে ডাকিস,
আমি যে কিছুই বুঝি না,
তা কিন্তু নয়।
: বড্ড বেশিই কথা বলিস তুই, পিচ্চি।
: এই শোন, তুই আমাকে পিচ্চি বলবি না!
: যাহ্, গাধি।
: তোকে ভালোবাসি।
: জানি...
তবে আমাকে বলতে বলিস না,
আমি বলতে পারি না।
(নিঃশব্দ বিরতি, ধীরে বলা)
: আচ্ছা…
তুই কি আর কখনও আমাকে খুঁজবি না?
তুই জানিস, তোকে ছাড়া
আমি ভালো থাকতে পারি না।
তাই বলি,
যা, তুই চলে যা।
আমার এই আবেগ নিয়ে
তোকে আর বিরক্ত করতে চাই না।
আমি...
আমার ভাবনার থেকেও
অনেক বেশি এলোমেলো।
তোর একটা মেসেজ…
আমি কয়েক-শো বার পড়েছি।
সেটা আমার খুব প্রিয়—
তুই যখন বলতিস—
"যাইস না, থাকিস।"
(গলা একটু ভারী করে)
আমি যাইনি রে...
শুধু তোকেই হারিয়ে ফেলেছি।
: ভালো আছিস তো, পাগলি?
: জানি না…
(স্পষ্ট আবৃত্তির ভঙ্গি)
কোনো কিছু পেয়ে হারানোর চেয়ে,
হারানোর পর পাওয়াটাই—
বেশি অর্থবহ।
হারানোর পর,
কারও আত্মায় ফিরতে চাইলে
নিজেকে অনেক পোড়াতে হয়।
তবে…
আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন—
এই মানুষটির প্রাপ্তিই
আপনার হৃদয়ের জন্য যথেষ্ট।
(নরম কণ্ঠে)
জীবনে বেশিরভাগ মানুষকেই
আমরা পাবার পর হারিয়ে ফেলি।
তারা এমনভাবে হারায়,
যেন মুখোমুখি হবার ইচ্ছেটাও আর থাকে না।
অনেকেই আসে…
আবার সময় হলে,
চলে যায়…
সময়ই তাদের বিদায় দেয়।
কিন্তু…
অনুভূতিরা তো এমন নয়।
তারা ঠিকই টেনে আনে তাকে,
যাকে পেলেই
মনের ভেতর আলো জ্বলে।
(গভীর স্বরে)
আমি এক অদ্ভুত প্রকৃতির মানুষ।
আমার মাইন্ডসেট আলাদা।
অন্য মেয়েরা যেমন সন্দেহ করে,
আমি তেমনটা করিনি।
কারণ—
ভালোবাসলে বিশ্বাস করতেই হয়।
(ছোট্ট থেমে ধীরে বলা)
মানুষ খুব নিষ্ঠুর আর স্বার্থপর।
তাই আমি ভয় পাই…
জীবনে মানুষ যত কম,
ঝামেলাও তত কম।
তবে…
জীবনে একদিন একজন আসবেই—
যার মৃত্যু নেই।
যার অস্তিত্ব থাকবে
মনের সবচেয়ে গভীর কোণে।
: হ্যাঁ, আমি পেয়েছিলাম সেই মানুষটিকে…
আজ খুব বলতে ইচ্ছে করছে—
"আমি পেয়েছিলাম তোকে!"
তুই শুনছিস?
তুই হারিয়ে যাবার পর থেকেই
আমি তোকে আরও গভীরভাবে পেয়েছি।
তুই এখন অনেক স্থির।
তোর তাড়া যেন ফুরিয়েছে।
: আমাকে অস্থিরতায় ফেলে
তুই দিব্যি ঘুমিয়ে গেলি!
: আমি শান্ত হতে পারছি না…
দুটো কারণে—
এক, তুই আমাকে ছেড়ে যাচ্ছিস
এটা নিশ্চিত হওয়া।
আর দুই…
তোর কাছে গিয়ে
বাড়াবাড়ি রকমের ভালোবাসা দেখাতে পারছি না—
এই অপ্রাপ্তিটা।
(নরম স্বরে)
আমি জানি,
এভাবে তোকে আর কখনও পাবো না।
তবুও…
তোর হাতটা ধরলাম,
তোর গালের কাছে মুখ রাখলাম—
চোখ বন্ধ করতেই
মনটা কেমন জানি ঘোরে হারিয়ে গেল…
তুই ঘুমাসনি—
আমি জানি।
তুই বিশ্বাস কর…
এই মুহূর্তে তোকে ছুঁয়ে
আমি নিজেকে জীবিত অনুভব করছি।
তুই আমাকে সরিয়ে দিস না…
এইটুকু অনুভব,
এইটুকু আবেগ—
আমার বেঁচে থাকার প্রমাণ।
(গলার চাপা কম্পন)
তুই যেভাবে চাস, আমি হয়তো তেমনটা পারি না।
তবুও…
মনের অজান্তেই আমি কেবল তোকেই চেয়েছিলাম।
তোর জায়গায় আমি থাকলেও
হয়তো এমনই করতাম।
তবু দেখ—
আমাদের মাঝে এক অদৃশ্য যোগসূত্র
এখনও রয়ে গেছে।
আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে…
আচ্ছা,
তুই কি সত্যিই আমাকে ছেড়ে গিয়েছিলি?
: সবকিছু ঠিকঠাক নিয়েছিস?
কিছু ফেলে যাচ্ছিস না তো?
: হুম… তোকে।
: হা হা…
: সত্যিই যে তোকে ফেলে এসেছিলাম,
বুঝতেই পারিনি।
ভালোবাসার প্রতিদানে
ভালোবাসা চাওয়া যায় না…
(শেষ লাইন ধীরে, গলার ভার রেখে বলা)
তুই যাস না…
থাকিস।
[শেষ]