: এই পাগলি... না করিস না, টেনে নে আমায় তোর কাছে।
: আজ তোকে ভীষণ মনে পড়ছিল।
: সত্যি বলছিস? আমাদের মনের এত মিল থাকার পরও... 'তুই যে কেন এত দূরে চলে যাস আমার থেকে!' জানিস, আমি তোর জন্য অনেক অপেক্ষায় ছিলাম।
: আমাদের মনের দূরত্ব নেই বলেই বুঝি বাস্তবতাতেই এতটা ফাঁক থেকে যায়। শুধুমাত্র এই একটা দিনে দেখা হয়, মাঝখানে কত শত-হাজার দিন পেরিয়ে যায়! অথচ, তুই এই দিনটার জন্য এত অপেক্ষায় থাকিস—তবুও আমার সামনে এসে এমন নিশ্চুপ হয়ে থাকিস কেন?
: তুই সামনে এলে আমার হার্টবিট থেমে যায়। তুই জানিস না, আমি তোর জন্য কেমন অস্থিরতায় সবগুলো দিন কাটিয়েছি।
: তোকে না বলেছি, কান্না না করতে? বুকে আয়, পাগলি।
: তুই যখন আদর করে ‘পাগলি’ বলে ডাকিস, তখন খুব জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা করে তোকে।
: নিজেকে মেলে দিলাম... যা ইচ্ছে কর!
: যদি তোকে এভাবেই পুরোটা সময় জুড়ে পেতাম, তাহলে আমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষের একজন হতাম।
: হা হা, পাগলা! কী যে বলিস! তোর হাতে ওটা কী রে?
: কিচ্ছু না।
: লুকিয়ে রাখছিস কেন? দে ডায়েরিটা! আমি জানি, ওটা তুই আমার জন্যই এনেছিস।
: তোকে দিতে চেয়েছিলাম... কিন্তু এখনও শেষ করতে পারিনি।
: প্রতিবার একই কথা বলিস! শেষ করতে পারিস না, না কি শেষ করতে চাস না কখনও?
: বলব না।
: বলবি না, জানি! তোর সেই অদ্ভুত খেয়াল—"এই ডায়েরিটা শেষ হয়ে গেলে নাকি আমি হারিয়ে যাব!" তাই তো প্রতিবার অসমাপ্ত রেখে দিস, বরাবরের মতোই।
: সব জেনেও তোকে নিজের কাছে রাখতে পারছি না... জানিস, আমি কতটা অন্ধকার?
: অন্ধকারে তোকে স্থায়ী করবার সাহস আমার নেই বলেই তো তোকে এমন করে যেতে দিই, প্রতিবার। কিন্তু, জানিস—তুই চলে যাবার পরই নিজেকে ভীষণ নিঃস্ব মনে হয়।
: এসব বলতে তোকে মানা করেছি না? আমার কথা শুনবি না বলে ঠিক করেছিস?
: বলতে চাইনি... কিন্তু আমি তোর সব কথা শুনতে রাজি। শুধু একটা বার বলেই দেখ!
: পাগলি, চা বানিয়ে দেবো?
: তুই যে কী দারুণ চা বানাতে পারিস! তোর চায়ের কাপে তো তোর ছোঁয়া থাকে, আর তোর চোখের দিকে অনেকটা সময় তাকিয়ে থাকার জন্য হলেও—তোর হাতের বানানো চা উপেক্ষা করার সাহস আমার নেই।
: তুই একটা উপন্যাসের পাতা।
: আমাকে এত ভালোবেসে কী পাস তুই?
: শান্তি।
: কেমন শান্তি—যেখানে বার বার এত যন্ত্রণা দিয়ে যাস নিজেকেই?
: তুই বুঝবি না, পাগল।
: বুঝতে হবে আমাকে! তুই বলবি আজ। নিজেকে আঘাত করে এভাবে ভালোবাসতে চাস? তবে প্রয়োজন নেই অমন ভালোবাসার!
: আরে পাগলি, রাগ করছিস কেন? বিশ্বাস কর, তোকে একবার জড়িয়ে ধরতে পারলেই আমার সব কষ্ট-যন্ত্রণা দূর হয়ে যায়। আমি কি এমন কিছু করেছি? তোকে জন্য বিশেষ কিছুই তো কখনও করতে পারিনি।
: আমি চাই না, তুই এসব কর।
: এসব না করলে আমার লেখা আসে না তোকে নিয়ে... এজন্যই করি। আর জানিস, কষ্ট পেতেই মানুষ লেখে—সুখী হবার কিছু নেই এখানে, কিন্তু... আত্মায় ভীষণ শান্তি ভর করে।
: পাগলি... তোকে ভালোবাসি।
: ভালোবাসার মানুষকে ছুঁয়ে লিখতে এমনি অনুভূতিই হয়। তোর জন্য খুলে রেখেছি ক্ষীণ আলোর সেই বারান্দা, যেখানে আমার অনুভূতিরা কিছু সময় ছটফট করে মরে যায়... চোখে লুকিয়ে রেখেছি তোর জন্য রাখা একরাশ খামখেয়াল। আসবি তো তুই?
: আসব, পাগলি... আসব আমি—বার বার আসব।