আসন্ন সন্ধের প্রতীক্ষায় বসে আছি
দিনান্তের শ্রান্তি নিয়ে। রক্তরাঙা সূর্যটা
পশ্চিমাকাশকে লাল করে ডুবে যাচ্ছে।
তার বিদায়ী রশ্মি মুঠোয় মুঠোয়
সোনা ছড়িয়ে দিয়েছে সাগরের অথই জলে।
ওই তো দীঘল দেবদারুর আড়াল থেকে উঠছে
কিশোরীর ক্ষীণতনু চাঁদ। আরও একটু পর
বিগলিত আলিঙ্গনে সিক্ত করবে সে
ওই দেবদারু, আর তার ক্ষণিকের অতিথি
হংসমিথুনকে।
আমার শুধুই মনে হচ্ছে,
আজকের আকাশটা বড়ো বিষণ্ন;
যেন সৃষ্টির ভাণ্ডারে যত আনন্দ ছিল,
পৃথিবীর বেহিসেবি মানুষগুলো সব
কোথায় যেন উড়িয়ে দিয়েছে।
আমাদের পড়ে আছে যা,
এ কেবলই দুঃখ আর হতাশা।
চারিদিকে যেন নির্ভেজাল অন্ধকার
আর সেই অন্ধকারে
মহাসাগরের অন্তর-নিঃসৃত সাগরিকা
আমার দু-চোখের সামনে অভিমানে
ফুলে ফুলে উঠছে। ব্যর্থ আক্রোশে ঝাঁপিয়ে পড়ছে
দীর্ঘকালের কাছ-ছাড়া দয়িতের বুকে।
সাগরিকার নাচ শুরু হয়ে গেছে,
প্রাগৈতিহাসিক ছন্দ যেন দামামা বাজিয়ে
রাতের অতিথিদের প্রাণের পশুটাকে
জাগিয়ে তুলছে। এই ক্ষণিকের রাত্রিশেষে
শ্রান্ত হবে সে—জড়তা আর অবসাদকে
পার করে দিয়ে উঠছে নতুন সূর্য;
জন্ম নেবে আরেকটা দিন।