ঘরদোর ধুয়েমুছে চকচকে-তকতকে করে কী লাভ, যদি তোমার ঘর তোমার চেয়েও উজ্জ্বল দেখায়? ঘরকে পরিপাটি করার আগে মনকে পরিপাটি করো। ছোট্ট জীবন, অহেতুক অত যন্ত্রণা না নিয়ে আনন্দে কাটাও! ঘর গোছাও কেবল ততটুকুই, যতটুকু লাগে। লোকের কথায় কী এসে যায় যদি তুমি খুশি থাকো? বেঁচে যাওয়া সময়ে বরং মনকে গোছাও... একটা ছবি আঁকো, একটা কবিতা লিখো, নতুন কিছু রান্না করো, বন্ধুর সাথে ঘুরে আসো... মন যা করতে বলে... করো, দেরি হয়ে যাবার আগেই। যা ইচ্ছে রাঁধো, বাগান করো; পান করো... ধূম কিংবা সুরা যা খুশি। সাঁতার কাটো, পাহাড়ে ওঠো, কুকুরের সাথে দৌড়াও, গান শোনো, বই পড়ো... বন্ধুদের নিয়ে আড্ডায় মাতো... জীবন ফুরোলে ফুরোয় যে সবই! লোকের চোখের শান্তির চেয়ে নিজের মনের শান্তি বড়ো। যে দেয় না কিছুই, তাকে দিতে গিয়ে ভুলেও হারিয়ো না কিছুই। ঘরদোর, পোশাক, আসবাবপত্র গোছাতে গোছাতে অতটা সময় খুন কোরো না, যতটা করলে পরে জীবন চেনার মেলে না সময়। যায় যে দিন, আর আসে না ফিরে। খুব গোছানো, খুব পরিপাটি, খুব ঝকঝকে... যদি এমনি করেই জীবন কাটাও, তবে জেনে রেখো, যখন বাড়বে বয়স, ধীরে ধীরে পড়বে ভাটা শক্তিতে আর উদ্যমে, দেখবে তখন, অত কাজে শরীর সায় না দিলে মনে কেবলই খচখচ করবে এই ভাবনা... কী যেন নেই... সব এলোমেলো... পারছি না কেন গোছাতে কিছুই! বরং মনকে তৈরি করো... সে যেন শেখে সব মেনে নিতে... সময়ের দাবিতে জীবনের অনুষঙ্গ যদি হয় অগোছালো। যেদিন যাব চলে... সেদিন এক ধুলোবালিছাই বাদে আর কী-ইবা র'বে! তার চেয়ে কিছু জমুক ধুলো, বাঁচুক সময়। কখন কোথায় বসে কাকে খাওয়ালে কিংবা বিল দিলে কার, কেউই মনে রাখবে না ভুল করেও! তোমার পরিচ্ছন্ন ঘরের স্মৃতি মনে রেখে কে-ইবা দেবে বোকার মতন? তোমার বন্ধুত্বে কেউ কতটা স্বস্তি পেল, তোমার সঙ্গ পেয়ে কেউ কতটা নির্ভার হলো, তোমার অস্তিত্বের সুবাসে শেখাল জীবন কতটা কাকে, লোকে বরং এসবই রাখে মনে, এর বেশি কিছু নয়।