ভাবনা: নয়শো বত্রিশ ……………………………………………………… ১. ছোটোবেলা থেকে এখন অবধি আমি কখনও দরজা-জানালা লক করে ঘুমাইনি। দরজা রাতে ভেজানো থাকে, লক করি না। আর দিনের বেলা এপাশ-ওপাশ সব দরজা-জানালা খোলা থাকে। সবসময় আলো-বাতাস চলাচল করে, এটা ভালো লাগে আমার, ঘরবাড়ি জীবন্ত জীবন্ত লাগে। এমনকী মাঠছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও আমি ভর্তি হতাম না। বিশাল মাঠ থাকবে। ক্লাসরুমের জানালা, লম্বা খোলা বারান্দা দিয়ে আলো আসবে। বাইরের গাছ-পাখি দেখা যাবে, এরকম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেছে বেছে ভর্তি হয়েছি সবসময়। হা হা হা... ২. তুই আমার ঘুম। তুই আদর করলে ঘুম ঘুম লাগে। ঘুমুতে ইচ্ছে করে জড়িয়ে ধরে। ৩. তুমি শুভসন্ধ্যা বললে আর অমনিই এখানে মেঘ করল; আরেকটু বলো, তাহলে বৃষ্টি নামবে! ৪. হিস্ট্রি ঘাঁটতে গেলে দেখা যাবে, এরকম এক-দুইটা গোপন প্রেম সবারই আছে। অথচ সবাই এমন ভাব করে, যেন উনি এইমাত্র পৃথিবীতে জন্ম নিয়েছেন, কিচ্ছু বোঝেন না এসব! হিপোক্রেটের দল! ৫. তোমার কাছে যাব, গিয়ে চোখে গাঢ় করে কাজল দেবো। কানে কিছু একটা পরব, গলায় কিছু একটা, হাতে কাচের চুড়ি পরব, কানের পেছনে ফুল পরব। তারপর তোমার দিকে আধা ঘণ্টা ঠায় তাকিয়ে থাকব। ৬. : তুমি বোধ হয় ব্যাপারটা বুঝতে পারছ না। : কী বুঝতে পারছি না? : এই যে তোমাকে যেভাবে দেখি... আমি তোমাকে ভালোবাসি। হয়তো এর কোনও গন্তব্য নেই, হয়তো এই অনুভূতির কোনও মূল্য তুমি কখনও দেবে না। আচ্ছা, কখনও তারা খসে পড়তে দেখেছ? খসে যাবার সময় দেখতে ভালো লাগে, মনে হতে থাকে, তারাটা আরও ধীরে খসুক... হঠাৎ দেখবে, এতক্ষণ যা ভাবছিলে, তা ভুল; যাকে নিয়ে ভাবছিলে, সে আর নেই, চোখের সামনে থেকে হারিয়ে গেছে। চোখের সামনে না থাকলেও সেই তারাটি মনের মধ্যে ঠিকই থেকে যায়। তারার এই খসে পড়াটা কিন্তু সবাই দেখতে পায় না। অনেকেই খুব করে চায় দেখতে, তবু সারাজীবনেও তার ইচ্ছেটা পূর্ণ হয় না। সেই তারা খসে গেলেও কিছু আলো রেখে যায়; আকাশেও, যে দেখে তার মনেও। ভালোবাসা ব্যাপারটাও ওই খসে-পড়া তারাটির মতন। আমি তোমার প্রেমে নিজের আকাশটা আলোয় আলোয় ভরে দেবো। হয়তো তা ক্ষণিকের, তবুও দেবো। ওইটুকুতেই আমার সমস্ত সুখ। অনেকে তো খুব করে চেয়েও... ওটুকও পায় না একজীবনে! ৭. : আই লাভ ইউ। : তার মানে তুমি আমাকে ইয়ে করে দিবে? : কী…হ্?!! : হুঁ। : ইয়ে করব ক্যান? : মানে কৌশলে আমার ইজ্জতহরণ করবে! : No, man! You’re absolutely wrong! : কেন? তুমি কি ইয়ে করতে পারো না? : পারি, তবে সেটা সরাসরি, ফোনে বা চ্যাটে তো পারি না! ইয়ে করতে আই লাভ ইউ লাগে নাকি? সেক্স আর লাভ তো সম্পূর্ণ ভিন্ন দুইটা জিনিস! : কিন্তু আমি শুনেছি, মানুষ নাকি আই লাভ ইউ বলে বলে ইয়ে, মানে আই-লাভ-ইউ করে দেয়! : কে বা কারা করে জানি না, আমি করি না, বলিও না মুখে, সেটাই মুখ্য। আর যে বা যারা এটা নিয়ে আমাকে সাথে জড়ায়, সেই দায় ও শাস্তির ভারও তার বা তাদের। আমার কী? আমি তো জানি, আমি কী! এখন কথা হচ্ছে, আমি কেন তোমাকে আই লাভ ইউ বললাম? শোনো, বলি। আমি যখন অনলাইন হলাম, তার কয়েক সেকেন্ড পর তুমি অনলাইন হলে। এটা যত বার হয়, আমি তত বারই তোমাকে আই লাভ ইউ বলি। লিখে হয়তো মাঝে মাঝে পাঠাই। এ-ই আর কি! আরও কিছু কারণ থাকে অন্যান্য সময়। সেগুলি জানবে পরে। সবার আই লাভ ইউ বলার কারণ নিছকই যৌনতা নয়। সুমির মুখ দিয়ে আই লাভ ইউ বের করা সহজ কাজ না। বরং খেয়াল করে দেখেছ বোধ হয়, বিশেষ মুহূর্তেও আমি তোমাকে আই লাভ ইউ বলি না। আই লাভ ইউ-র মধ্যে মানুষ sexual excitement কেন বা কীভাবে নিয়ে আসে বা চিন্তা করে, সেটা সত্যিই আমার কাছে বিস্ময়কর! আই লাভ ইউ কথাটা ছোটো ছোটো অনেক সুন্দর মুহূর্ত আর অনুভূতি মনে করে কিংবা দেখে তারপর মনে আসে। কখনও আমরা বলে ফেলি, কখনওবা বলি না কিংবা বলতে পারিই না। ভালোবাসার কথা ফস্ করে বলে ফেলা খুব শক্ত কাজ। যারা নিজেদের সেক্সুয়ালি উত্তেজিত করার জন্যে আই লাভ ইউ বলে, আমি শিওর, হয় ওরা এসব বোঝেই না, নয় বুঝেও অপর পক্ষের মন বা সুন্দর ভালোবাসাকে নষ্ট করার মত জঘন্য অন্যায় করে। শুধুই সেক্স মাথায় রেখে আই লাভ ইউ বললে ভালোবাসার সৌন্দর্য নষ্ট হয়। একটা শরীরের বিষয়, আরেকটা মনের। এই দুইটি একসাথে থাকতেও পারে, আবার না-ও থাকতে পারে। ৮। শৈশব বড়ো সুন্দর! আমার বাচ্চাটার সাথে আরও দু-একটা বাচ্চা থাকলে একটু বেশি আনন্দে থাকত মনে হয়। থাক, ওর মা তো আছে। অনেকের তো তা-ও থাকে না, একা একা বড়ো হয়। আমরা মা-ব্যাটাই বৃষ্টির স্বাদ উপভোগ করি সবসময় একসাথে। আমি ওকে ভিজতে দিই, সঙ্গে নিজেও থাকি আশেপাশে। তবে একটু মেঘ ডাকলেই বর্ণ ভয়ে দৌড়ে দৌড়ে সিঁড়িতে এসে বলে, মা, আমি গুড়ুমকে বকা দিসি, তাই ও এরকম করতেসে। রুমে ঢুকে আমি কাপড় চেইঞ্জ করে দেবার সময় আকাশ আবার ডেকে ওঠে ভারী সুরে। বর্ণ: মা, গুড়ুম আমাকে এখন কী বলল? আমি: বলল, বৃষ্টিতে অল্প ভিজে বাসায় চলে আসতে, না হলে জ্বর হয়, ঠাণ্ডা লাগে। ... এরপর আবার আকাশ গলা খাঁকারি দেয়। বর্ণ: মা, এবার গুড়ুম কী বলল? আমি: (কী যে বলি, মহামুসিবত!) গুড়ুম বলসে, বেশিক্ষণ বৃষ্টিতে থাকলে গুড়ুম তোমাকে কারেন্ট লাগায়ে দিবে, তখন তুমি কারেন্ট হয়ে যাবা। অন্নেক ব্যথা লাগবে! নানাভাইকে দৌড়ে এসে সে বলে, নানাভাই, গুড়ুম আমার সাথে আজকে কথা বলসে, তুমি জানো?! আহারে, বৃষ্টির মতোই কী নির্মল, কী বিশুদ্ধ শিশুরা! ঝুমবৃষ্টির সাথে প্রায় সকলেরই শৈশবের এক গভীর সন্ধি থাকে। আজকাল ফ্ল্যাটবাসার বন্দি জীবনে বাচ্চারা সেই স্বাদটা উপভোগ করতে পারে না। তাই মা-বাবা’কেও সাহায্য করতে হয় এই সন্ধিটা তৈরির জন্যে। ভাবনা: নয়শো তেত্রিশ ……………………………………………………… ১। এত সুন্দর চাঁদ উঠলে ঘুমাই কেমনে? আমার বালিশ বরাবর এসেই উঁকিঝুঁকি মারতে হবে কেন ওকে? ও কি আমার সাথে মিতালি করতে চায়? ও কি ভুলে গেছে, সেই মিতালিটা কবেই হয়ে গেছে বড্ড অজান্তেই! আজকের আকাশটা সুন্দর। রাতের আঁধারের আলাদা একটা সৌন্দর্য আছে। যতই আঁধার হোক না কেন, কোনও কোনও দিন রাতের আকাশটাকে দিনের আকাশের চেয়েও অন্যরকম সুন্দর লাগে। একটা কেমন নীলচে আলো লেগে থাকে আকাশে। তাকিয়ে থাকলে প্রেমে পড়বে না যে, ও মানুষই না, পাথর। ঝামেলা ইজ অলওয়েজ ওকে উইথ মি। আমার জীবনের ঝামেলা আমি সরাতে পারি না, তাই অ্যাকসেপ্ট করি। আর যা যা ঝামেলা না সরালেও জীবন ঠিকই কেটে যায়, সেগুলি নিয়ে ভাবিই না। জীবন তো এমনিতেও জটিল, একে আরও জটিল করে কী লাভ? দুনিয়াতে ভালো মানুষের দাম নেই। ভালো মানুষের তাপ কেউই সহ্য করতে পারে না, তাই কেউ কাছেও থাকে না। দূরে সরিয়ে দিয়ে কান্নাকাটি করে আর দেখায়, কত দরদ আমার জন্যে সবার! হা হা হা... বাদ দিই এসব! আর কিছু নয়, তোমাকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে। তুমি অনেকক্ষণ কেঁদে কেঁদে হালকা হবে আমার বুকের মধ্যে... এ আশ্রয় অনেক বছর ধরেই তোমার জন্য নির্ভার... আমরা একে অপরের কাছাকাছি এলে আর কিছুই করতে পারি না। অদ্ভুত রকমের ধীর, শান্ত হয়ে যাই... মনে হয়, আর কিছুই করার নেই, কোথাও যাবার নেই, সব কাজ শেষ, এখানেই ইতি... ২। আমার একটা অদ্ভুত ব্যাপার হয়। ঠিকমতো তোমাকে না পেলে হিউজ মেজাজ খারাপ হয়। দুনিয়াসুদ্ধ চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছা করে। কথায় কথায় মেজাজ গরম হয়। দাঁতে দাঁত চেপে চুপচাপ থাকি। কেউ কথা বললে উত্তর দিই কম। আম্মু তখন বেশি কাউকাউ করে। আরও মেজাজ খারাপ হয়। খু-উ -ব খারাপ অবস্থা আমার, বুঝেছ? ভালো না এগুলি। একদমই ভালো না! স্কুলের প্রেম এরকম হয়। বেশিই তীব্র অনুভূতি! তাই না? আমি তো স্কুলে পড়ি না, বরং পড়াই। আশ্চর্য! আমার কেন এমন হবে? তা-ও এতগুলি বছর পর! এত সুন্দর মুষলধারে বৃষ্টি হওয়া সকালে তুমি কেন নেই পাশে? বৃষ্টির সব গান আজ ফিরিয়ে দিয়েছি, কানে হেডফোন দিয়ে অন্য গান শুনব বলে! হ্যাঁ, দিয়েছি। সে কথা শুনে বৃষ্টির তাই হয়েছে মান, কমেছে সুর আর থেমেছে গতি। তবুও কানে বাজে শুধুই বৃষ্টির গান! প্রবল বর্ষণের রিমঝিম তাল কিছুতেই থামে না। সেই সুর, তাল, লয় যে বহুবছর ধরেই কানে বেজে চলেছে বর্ষণ না হলেও... সেই ঘনবর্ষণে যে আমরা চুপিচুপি ভিজি, সেকথা প্রায়শই মনকে ভুলে যেতে বলি... তুমি জেনেবুঝে বিষ খেয়েছিলে, তোমার মন তোমাকে ভাইব দেওয়া সত্ত্বেও, তুমি সেই বিষ খেয়েছ, আমি নিজেও তা-ই করেছি! কী অদ্ভুত! কখনও কখনও মানুষ বিষ খায় কিনা বাঁচার আশায়! বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের একটা কথা পড়েছিলাম: Where there's marriage without love, there will be love without marriage. এখনও ফিল করি, দু-জন কতটা কাছে ছিলাম দু-জনের! এর পরে না তুমি কারুর কাছের হতে পেরেছ, না আমি পেরেছি। সত্যিই পারিনি... মানুষ পারে না বোধ হয়। আমরা জীবনে শুধু এক বারই কারুর কাছের মানুষ হই, বাকি সবই সময়ের দাবিতে অভিনয় করে যাওয়া... কিছু জিনিস once in a lifetime হয়। হয় বলেই ওসব বড়ো সুন্দর! আজ আমরা কেউ কারুর নই, অথচ দেখো, আমরা আজও দু-জন দু-জনের হয়ে আছি! বুঝি এরই নাম নিয়তি! ৩। কথা বলতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু ফোনে ব্যালেন্স নেই; আশ্চর্য আজকেই ক্রেডিট ফুরোনো লাগল! অবশ্য আমি খেয়াল করিনি, যখন করেছি, তখন রিচার্জ করার সময় ছিল না। যা-ই হোক, তুমি কতদূর এসেছ? ঘুমোতে পারছ না, তাই না? এখন মাথাটা না ধরে গেলেই হয়! সাবধানে থেকো। তুমি জার্নিতে থাকলে কেন জানি না আমার মধ্যে অদ্ভুত এক অস্থিরতা আর টেনশন কাজ করে... করতে থাকে আর করতেই থাকে। এবং এটা কোনোভাবেই থামতে চায় না। এ বড়ো আশ্চর্য বিষয়! আমি ভাবি, তুমি ঘুমোও, আর ওদিকে তুমি মোবাইলে গ্যাঁজাও... উফফ্ পারো বটে! তোমার মাথা ধরবে না তো কার ধরবে? তুমি একটা বাজে লোক। আমি যে এই বাজে লোকটাকে ভালোবাসি, এটা সে দিনে কতবার ভুলে যায়? তবুও আমি ওকেই ভালোবাসি। আমি জানি, একদিন ও আমার জন্য ভালো হয়ে যাবে, আর কক্ষনো বাজে হবে না। ও যা-ই করুক, আমার কিচ্ছু বলার নেই। আমি শুধু চাই, ও বাজে না হোক। যে নোংরা কাজগুলো আমি পছন্দ করি না, ওর সেগুলো আমার চোখে ভেসে না উঠুক কোনোদিনই। এর বেশি আর কিছুই চাওয়ার নেই আমার। ৪। এখনও রাতের বোঝা টানতে গেলেই ভীষণ রকম ক্লান্ত লাগে, এখনও ভিড়ের মাঝে হারিয়ে ফেলি নিজের মাঝে মত্ততাকে। এখনও রাত ফুরোতেই ঠিক এসে যায় গভীর কালো অমানিশা, শুধু আর হয় না পূরণ ভালোবাসার ভালো’টাকে ছোঁয়ার দিশা! তোমার মতো মানুষের সাথে যে না থাকবে, সে কখনও বুঝতেই পারবে না, তুমি যে কী! তোমার সাথে থেকে এই কয় মাসে এক ঝগড়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারিনি আমি। আর ঝগড়া করার পরিস্থিতি, তুমি খুব ভালো করেই জানো, কী করে তৈরি করতে হয়। আজকে আবার বলে দিলে, আমি ক্যাটক্যাট করি সবসময় তোমার সাথে! কেন? ক্যাটক্যাট করা ছাড়া আর কোনও কিছুই কি করিনি তোমার সাথে বলার মতো? ভালোভাবে কখনও তো কথাই বলিনি! ক্যাটক্যাটটা করলাম কখন তাহলে? চুপ তো করেই ছিলাম, মেসেজ করেছ কেন আমাকে? না কি আমাকে খারাপ বলতে পারলেই তোমার যত শান্তি আসে? আমি তো তোমাকে মেসেজ করাও বন্ধ করে দিয়েছি, কথা বলাও বন্ধ করে দিয়েছি; আমি ভেবেছি, থাকুক সে তার মতো করে, যেভাবে থাকতে তার ভালো লাগে। তুমি মেসেজ না করলে আমি তোমাকে বিরক্ত করতাম না, আর তোমারও এত ক্যাটক্যাট শুনতে হতো না। থাকো তুমি শান্তিতে। আমি মেসেজ করব না আর। আমাকে দিয়ে ভালো কিছু আশা করো কেন? আমার দ্বারা ভালো কিছু হওয়া সম্ভব না। আমাকে খারাপ প্রমাণ করতেই ভালো লাগে সবসময়, তাই না? যখন তুমি নিজেও খুব ভালো করেই জানো, আমি কখন কী জন্য করি অমন, তারপরও এমন করে মজা পাও। ঠিক আছে করো এমন যত খুশি। আমি তো পানিতে পড়ে গেছি, আমাকে লাথি মারবে না তো আর কাকে মারবে! মারো মারো! ৫। অন্তত এই সময়গুলোতে থাকা যেত না আমার পাশে? এখনই যেতে হলো? চলে যাবার জন্য এই মুহূর্তকেই ঠিক মনে হলো? আর কেউ না জানুক, তুমি তো জানতে, তুমি ছাড়া আমার কেউ নেই! অন্য সবার মতো তুমিও আমাকে বুঝলে না! তোমাকে আর কিচ্ছু বলতে চাই না। শুধু বলব, থাকলে প্লিজ ভালোভাবে পরিপূর্ণভাবে থাকো, আর না থাকলে সারাজীবনের জন্য চলে যাও। পৃথিবীতে একটা মানুষও আমার জন্য নেই, সেটা আমি বুঝতে পারছি, কিন্তু তাতে কোনও অসুবিধা নেই। যতদিন পারব, একাই বাঁচতে পারব, যেদিন আর পারব না, নিজেকে শেষ করে চলে যাব। আমার একটাই রিকোয়েস্ট, এভাবে আমার ইমোশন নিয়ে আর মজা কোরো না। যে-কোনও একটা সিদ্ধান্তে আসো। যদি আজকে জানাতে না পারো, তাহলে এ জীবনে আর কোনোদিনই আমার খোঁজ করতে এসো না। তোমাদের সবার ব্যবহার আর মিথ্যা অভিনয় দেখে দেখে জীবনের প্রতি ঘৃণা চলে আসছে আমার। যার পৃথিবীর চারপাশের প্রত্যেকটা মানুষ যার যার নিজের স্বার্থে অন্ধ, তার পক্ষে বেঁচে থাকাটা একটা অভিশাপ। আমার ইমোশন নিয়ে মজা নেওয়া বাদ দাও। এদিকে আমি প্রতিরাতে না ঘুমিয়ে প্রতিটি মুহূর্ত মৃত্যুযন্ত্রণা নিয়ে পার করি, আর ওদিকে তুমি আমার অবস্থা দেখে দেখে মজা নিতে থাকো। ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে কেউ কীভাবে এমন করে, আমি জানি না। যে মানুষটা তোমার প্রতি এতটা শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা নিয়ে বাঁচে, তার প্রতি আর তার ইমোশনের প্রতি তোমার সামান্যতমও শ্রদ্ধাবোধ থাকবে না, এটা মেনে নিতে আমার কষ্ট হয়। যদি পারো ফোন করতে, কোরো, আর যদি তোমার মনে হয়, তুমি কোনোদিনই আমার ভালোবাসার মর্যাদা দিতে পারবে না, তাহলে আর কোনোদিনই কোনও খোঁজ করতে এসো না। ধরেই নিয়ো, আমি মরে গেছি। আর যদি কোনও এমন মুহূর্ত আসে, যখন মনে হয়, তোমাকে ছাড়া কিছুতেই আর বাঁচতে পারব না, তখন সহ্য করতে না পারলে প্রয়োজনে সুইসাইড করব, তবুও তোমার কাছে কখনও যেতে চাইব না। নিজের জন্য আর কাউকেই লাগবে না আমার। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এবার আর পরীক্ষা দেবো না। আগে যা পড়েছিলাম কিংবা এখন যা-কিছু পড়ছি, রিভিশন দিচ্ছি, কোনও লাভই হচ্ছে না, রোজ মডেল টেস্টে বসলে কিছুই মনে থাকে না। গত কয়েক মাস এমনই হচ্ছে। অনেক বার পড়া বিষয়গুলোও মাথা থেকে পুরোপুরি মুছে গেছে, পুরোনো পড়া দেখলেও মনে হয়, আজকে নতুন দেখছি, এমনকী সকালে পড়া বিষয় দু-ঘণ্টা বাদে পুরোপুরি ভুলে যাই! এমন বাজে অবস্থার কারণে পড়তে বসতেই ইচ্ছে হচ্ছে না কিছুদিন ধরে। সারাক্ষণই আরেকটা ভিন্ন জগতের চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খেললে এমনই হবে, এটাই স্বাভাবিক। আমার মাথা এখন সম্পূর্ণ খালি। কোনও কিছুই নেই আর মাথায়। নতুন করে কিছু ঢোকেও না। এমনই তো হবার কথা ছিল আমার সাথে! আমি যা করেছি, তার ফলাফল তো আমাকেই ভোগ করতে হবে! এজন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আর পরীক্ষা দেবো না। যেখানে জানিই যে পাশ করব না, সেখানে স্বেচ্ছায় যেচে পড়ে বার বার ব্যর্থতার গ্লানি নিজের কাঁধে নিয়ে আরও গভীর অন্ধকারে ডুবে যেতে চাই না। আগামীতেও আমি আর কোনোদিনই কোনও চাকরির পরীক্ষায় হয়তো আর বসব না। আগে থেকেই যে মানুষ ভেতর থেকে কোনও রকমে নিজেকে জোড়াতালি দিয়ে চলছিল, সে এবার এতটাই টুকরো হয়েছে, যা আর কিছু দিয়েই জোড়া লাগে না। ভেতর থেকে আমি সম্পূর্ণ ভেঙে গেছি, যদিও নিজেকে রোজ জোর করে বোঝাতে চাইছি, কিচ্ছু হয়নি আমার, আমি ঠিক আছি! কিন্তু তার সাথে এটাও পরিষ্কার হয়ে গেছে নিজের কাছে যে, কিছুই আর ঠিক নেই আমার ভেতরের, নিজের ভেতরে নিজের জন্য অবশিষ্ট কিছুই যে রাখিনি, আমি সেটা এতদিন পর এসে বুঝতে পারছি! সবাই নিজেরটুকু ঠিক রেখে অন্য সবাইকে সার্ভ করে, আর আমি কিনা নিজের সেইটুকুনও তুলে রাখতে ভুলে গেছিলাম! এখন এই ভেঙে-যাওয়া মানুষটা আর কিছুই করতে পারবে না জীবনে। সবচেয়ে বড়ো কথা, যে নিজেই নিজের কাছে বোঝা হয়ে যায়, সে আর বাড়তি কোনও কিছুর দায়িত্ব নিতে পারে না। আমার সাথে যারা পরীক্ষা দেয় রোজ, ওরাও বলে, মানুষ তো না পড়েও এর চেয়ে অনেক বেশি মার্ক পায়, তাহলে তোমার কী হয়েছে? তুমি পড়ো না বাসায়? আমি তো জানি, আমি পড়ি ঠিকই, কিন্তু কিচ্ছু মনে থাকে না, কোথায় যে মন পড়ে থাকে, কোন সে চিন্তায় মন এমন করে, তা-ও জানি, কিন্তু নিজের মনের উপরে নিজের সব নিয়ন্ত্রণই যে হারিয়েছি, আমি সে কথা কী বলে কাকে বোঝাব! কাউকে বলারও উপায় নেই যে, কী হচ্ছে আমার সাথে আমার ভেতরটাতে। এভাবে নিজেকে শেষ হয়ে যেতে দেখে সত্যিই খুব অসহায় লাগছে। পেছোনোর জায়গা নেই, এগোবই-বা কোথায়…চারিদিকে তো শুধুই অন্ধকার! জীবন নিয়ে মজা করতে করতে পুরো জীবনটাই নষ্টই করে দিলাম! ভালোবাসার মূল্য এভাবে নিজের জীবন দিয়ে মেটাতে হলো! Thank you for hacking my brain… my inner self and for cracking me to the core! Thank you so much! And listen, actually God is playing with my emotions, not you... and I do not have any knowledge about how to make my God happy! How can I survive now? তুমি একটা খুনি! তুমি আমাকে খুন করে ফেলেছ! ভাবনা: নয়শো চৌত্রিশ ……………………………………………………… ১। লোকে বলে, ধরে রাখতে জানলে নাকি মানুষ থেকে যায়! অথচ আমি দেখেছি, না, থাকে না। রাখতে জানলেও অনেকসময় মানুষ থাকে না। জোর করে হয়তো মানুষের শরীরটাকে বাঁধা যায়, মনটাকে নয়। ২। সেই ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপের কথা। বয়সে নেহায়েতই বাচ্চা, খেলা-টেলা কিছু বুঝি না। শুধু আবছাভাবে এইটুকু মনে আছে, আর্জেন্টিনা বনাম ক্যামেরুন ম্যাচে কী-একটা জানি ঘটেছিল... ৩। ধরুন, আপনি আপনার ফেইসবুক ওয়ালে লিখলেন: আর্জেন্টিনা ভালো খেলে। কাহিনি খতম! অমনিই সবাই কমেন্টবক্সে হামলে পড়বে... তুই খারাপ, তোর বাপ খারাপ, তোর দাদাজান খারাপ। কিংবা তোর চরিত্র খারাপ, তোর মাথায় ঘিলু নাই, তোর আচরণ জঘন্য... কিংবা তুই ফালতু চাকরি করিস, তুই দুই নম্বর ব্যাবসা করিস, তুই এই... তুই সেই ডট ডট ডট ব্রাজিলের খেলা তো জীবনেও দেখিসনি, তুই সিজনাল সাপোর্টার, আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের সামনে দাঁড়াতেই পারবে না... অথচ আপনি ওদের কাউকে কিছুই বলেননি, ওরা চাইলেই আর্জেন্টিনা ভালো খেলে কি খেলে না, তা নিয়ে আলাপ করতে পারত। কিন্তু না, ওরা তা করবে না; কেননা জেনেটিক ইনহেরিট্যান্স থিওরি অনুযায়ী, ওদের যত আনন্দ, আপনাকে নিয়ে বাজে কথা বলাতেই... যেন আপনার পেছনে লাগার জন্যই ওদের জন্ম হয়েছে! কেন? এর কারণ এ নয় যে, ওরা ব্রাজিলের সাপোর্টার। অথবা ধরুন, আপনি আপনার ফেইসবুক ওয়ালে লিখলেন: ব্রাজিল ভালো খেলে। কাহিনি খতম! অমনিই সবাই কমেন্টবক্সে হামলে পড়বে... তুই খারাপ, তোর বাপ খারাপ, তোর দাদাজান খারাপ। কিংবা তোর চরিত্র খারাপ, তোর মাথায় ঘিলু নাই, তোর আচরণ জঘন্য... কিংবা তুই ফালতু চাকরি করিস, তুই দুই নম্বর ব্যাবসা করিস, তুই এই... তুই সেই ডট ডট ডট আর্জেন্টিনার খেলা তো জীবনেও দেখিসনি, তুই সিজনাল সাপোর্টার, ব্রাজিল আর্জেন্টিনার সামনে দাঁড়াতেই পারবে না... অথচ আপনি ওদের কাউকে কিছুই বলেননি, ওরা চাইলেই ব্রাজিল ভালো খেলে কি খেলে না, তা নিয়ে আলাপ করতে পারত। কিন্তু না, ওরা তা করবে না; কেননা জেনেটিক ইনহেরিট্যান্স থিওরি অনুযায়ী, ওদের যত আনন্দ, আপনাকে নিয়ে বাজে কথা বলাতেই... যেন আপনার পেছনে লাগার জন্যই ওদের জন্ম হয়েছে! কেন? এর কারণ এ নয় যে, ওরা আর্জেন্টিনার সাপোর্টার। তাহলে উপরের ঘটনা দুইটির কারণ কী? কারণ একটাই: ওরা 'জন্মসূত্রে বাংলাদেশি' ব্রাজিলিয়ান/আর্জেন্টাইন সাপোর্টার। এবং এটাও মাথায় রাখুন, আপনি খুব বেশি সৌভাগ্যবান হলে উপরে লেখা ওসব ভদ্রোচিত কমেন্ট বা ফিডব্যাক পাবেন। উগ্র ও অশ্লীল কমেন্ট পাবার আশঙ্কাই বেশি। এমনকী ব্যক্তিগত আক্রমণের শিকারও হতে পারেন এমন কিছু উগ্র সমর্থকের দ্বারা... যাদের কখনও কোনও ক্ষতি করা দূরে থাক, যাদের আপনি চেনেনই না! এমন অবস্থা চলতে থাকলে একসময় খোলা জায়গায় বড়ো পর্দায় খেলা দেখানোর আয়োজন করতে চাইলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। আমাদের মস্তিষ্কে সেট করা আছে: ব্রাজিলের বিপক্ষের দল সবসময়ই আর্জেন্টিনা, আর্জেন্টিনার বিপক্ষের দল সবসময়ই ব্রাজিল... তা মাঠে যে টিমই ওদের বিপক্ষে খেলুক না কেন! ওহ্ না না...! একটু ভুল হলো! কারেকশন করে দিচ্ছি... আমাদের মস্তিষ্কে সেট করা আছে: ব্রাজিলের বিপক্ষের দল সবসময়ই আর্জেন্টিনার সাপোর্টার, আর্জেন্টিনার বিপক্ষের দল সবসময়ই ব্রাজিলের সাপোর্টার... তা মাঠে যে টিমই ওদের বিপক্ষে খেলুক না কেন! ব্রাজিল জিতলে হেরে যায় আর্জেন্টিনার সাপোর্টার, আর্জেন্টিনা জিতলে হেরে যায় ব্রাজিলের সাপোর্টার; আর বেঁচে যায় ওরা, যারা সত্যি সত্যি হেরে গেছে! বউ মরে রামের, আর কান্নার আওয়াজ শোনা যায় রহিমের! গতরাতের ম্যাচে ক্যামেরুনের প্রতিটি খেলোয়াড়ের পায়ে আমি আর্জেন্টিনার সাপোর্টারদের ঘিলু দেখেছি, যেমনটা দেখেছিলাম ২২ নভেম্বরের ম্যাচে সৌদি আরবের প্রতিটি খেলোয়াড়ের পায়ে ব্রাজিলের সাপোর্টারদের ঘিলু! দাঁড়ান দাঁড়ান, একমিনিট! ভাবছেন, এবারের বিশ্বকাপে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা বাদে আর কোনও টিমই আসেনি? অবিশ্বাস্য হলেও সত্য... নিশ্চয়ই এসেছে, আরও ৩০টি টিম এসেছে! কেন এসেছে ওরা? এখনও বুঝতে পারেননি? ওরা এসেছে বাংলাদেশি ব্রাজিলিয়ান ও আর্জেন্টাইন সমর্থকদের কাছে রং-চা বেচতে, আদাকুচি ও লেবুর রস মিশিয়ে! আমি খুব বেশিই খুশি হব, যদি এবারের কাপটা ব্রাজিল কিংবা আর্জেন্টিনা কেউই না পায়। ৪। আর্জেন্টিনার কাতারে নেমে গেল বিশ্বের এক নম্বর টিম ব্রাজিল! আজকের হারটা অতিঅবশ্যই ব্রাজিলের প্রাপ্য ছিল। ফিনিশারদের এত বাজে দশা আর কখনও কোনও খেলায় দেখেছি বলে মনে পড়ছে না। ও ব্রাজিল, আমার ঘুমের দাম মিটিয়ে যাও! ৫। ... because Brazil deserves this defeat. Well played, Cameroon!! ৬। বিশ্বাস করো আর না-ই করো, একদিন এই খেলা হয়ে যাবে। সেদিনও তুমি বেকার থেকে যাবে। মেসি-নেইমার-রোনালদো'রা বাংলাদেশ থেকে নিজ নিজ দেশে চলে যাবে তোমার আত্মত্যাগের বিন্দুমাত্রও স্বীকৃতি না দিয়েই। ওদের পকেটে থাকবে কাঁড়ি কাঁড়ি ডলার, আর তোমার পকেটে সেই পুরোনো শূন্যতা... বাবা-মা'য়ের অপূর্ণ স্বপ্নে মোড়ানো তোমার ব্যর্থতা। তোমার ফেইসবুক পারফরম্যান্সের জোরে ওরা জিতবে কাপ, অথচ তোমাকে তখনও আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখবে বেকারত্বের অভিশাপ! বলের পেছনে ছুটতে ছুটতে বাড়বে ওদের বিত্ত, ওদের পেছনে ছুটতে ছুটতে ধুঁকবে তোমার চিত্ত। বিশ্বাস করো, সেদিনও তুমি তুমিই থেকে যাবে, ওরা ওরাই থেকে যাবে। তোমার এইসব অর্থহীন উগ্রতা তোমার উচ্চতা বাড়াতে পারবে না একচুলও! ৭। খেলার মাঠে আর্জেন্টিনার ডিফেন্স খুব একটা শক্ত না হলেও ফেইসবুকের মাঠে ওদের ডিফেন্স বিশ্বে এক নম্বরে। আসলে বাংলাদেশের মানুষ যাকে একবার বুক দিয়ে আগলে রাখে, তার আর কোনও চিন্তাই থাকে না। হারুক বা জিতুক, সে-ই জয়ী। এর বাইরে গেলেই উগ্র সমর্থকদের রোষানলে পড়তে হবে। আচরণে ও আক্রমণে আর্জেন্টিনার এমন উগ্র সমর্থক খোদ আর্জেন্টিনায়ও নেই। আর্জেন্টিনার জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে চার কোটি। যদি ধরে নিই, এই সাড়ে চার কোটির প্রত্যেকেই খেলা দেখে, তাহলেও বাংলাদেশি আর্জেন্টিনার সমর্থকদের সংখ্যার কাছে সেই সংখ্যাটি নস্যি! আর্জেন্টিনার কেউই যদি আর্জেন্টিনাকে সমর্থন না-ও করে, তবুও সমর্থক-সংখ্যার বিচারে আর্জেন্টিনা জয়ী। এমনকী আর্জেন্টিনার মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আর্জেন্টিনার বাংলাদেশি সমর্থকরা ওদের মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলতে পারে! এবং সুযোগ পেলে ওরা তা করবেই। অন্ধ ও ক্রুদ্ধ আবেগে বাংলাদেশিরা ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন! প্রিয় ম্যারাডোনা, প্রিয় মেসি, ভাবতে পারেন এসব!? ৮। রাতের হাওয়া যে অদ্ভুত রকমের শীতল, এটা অনুভব করতে আর উপভোগ করতে অবশ্যই ট্রেনে বা লঞ্চে চড়তে হবে। হবে মানে হবেই... ঝিকঝিক করে আমাদের ট্রেনটা ছুটেই চলেছে। সেই সাথে শীতল হাওয়া চোখেমুখে লেপটে লেপটে যাচ্ছে... ট্রেনের সাথে ছুটে-চলা গ্রামগুলোর ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে... ওমা, ওগুলো কী!! চোখে পড়ে, অসংখ্য অসংখ্য জোনাকপোকা ঝিকিমিকি করছে!! উপরে আকাশের তারাগুলোও মিটিমিটি জ্বলছে... ইসসসস্... একখাবলা জোনাকপোকা নিয়ে এসে যদি ব্যাগে ভরে রাখা যেত... মানুষের কত কী যে ইচ্ছে হয়... আমার মাঝে মাঝেই খুব মনে পড়ত... ঘুমকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে অলস নির্জন দুপুরবেলায় রৌদ্রছায়ায় ঘেরা বারান্দার মেঝেতে গাছেদের সাথে বসে বসে কত গল্প আর স্মৃতিচারণ যে করতাম... বারান্দায় বসে বসে এই অভ্যাসগুলির চর্চা করা আমার প্রতিদিনকার কাজ। প্রিয় মানুষটি ছেড়ে চলে যাবার পর থেকে আমি ভয়ংকর রকমের একা হয়ে যাই, যাকে বলে... হঠাৎ ধাক্কা দিয়ে সমুদ্রে ফেলে দিয়ে বলা: সাঁতারু হতে হবে তোমাকে! তখন থেকেই আমার এসব অভ্যাস গড়ে ওঠে... এই যেমন রাতে বারান্দায় বসে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়া, সকাল এগারোটার দিকে রুমের সাথে থাকা ছাদে চেয়ারে চায়ের মগ নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মিষ্টি রোদ মেখে ছায়ায় বসে থাকা, কবিতা আবৃত্তি করে মোবাইলে রেকর্ড করে শোনা, গান তৈরি করা, কফি আর স্যুপ-নুডলস বানিয়ে রাতে এসব কাজের মাঝে মাঝে খাওয়া... আজ দেখছি, থেকে গেল কেবল এরাই, চলে গেল আর বাকি সবই! হা হা হা... ভাবনা: নয়শো পঁয়ত্রিশ ……………………………………………………… ১। আমাকে যারা ফলো করে, তারা দুই দলে বিভক্ত: এক। যারা আমাকে এখন অপছন্দ করে দুই। যারা আমাকে সামনে অপছন্দ করবে কিছু লেখার ও বলার সময় আমি এ-ও মাথায় রাখি, দ্বিতীয় দলের লোকজন একসময় প্রথম দলে চলে যাবে, মানে আমাকে অপছন্দ করবে, এবং/কিন্তু ফলো করবে। আমাকে অপছন্দ করা সহজ, কিন্তু আমাকে আজেবাজে কথায় আক্রমণ করার লোভ সামলানো কঠিন। কেউ আছে, যাকে অপছন্দ করে, তার ধারেকাছেও ঘেঁষে না। কেউবা আছে, যাকে অপছন্দ করে, তার পিছে পিছেই ঘোরে। আসলে কী জানেন, মানসিক বেকারত্বই সকল অনর্থের মূল। আফসোস, আমার ফলোয়ারেরা আমাকে নিয়ে যতটা পড়ে থাকে, তার সিকিভাগও আমার সৃষ্টি নিয়ে পড়ে থাকে না। থাকেও যদি, সেগুলো নিয়ে থাকে না, যেগুলোতে থাকতে গেলে হেডঅফিসে কিছু গ্রে-ম্যাটার থাকা লাগে। আমার গত দুই-তিন দিনের ওয়ালপোস্ট খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন। তবে আমি খুশি, কেননা আপনাদের চাইলেই নাচানো যায়। ২। মেয়েদের প্রিয় প্রাণী তিনটি: প্রভুভক্ত কুকুর, দক্ষ দর্জি আর বউভক্ত স্বামী। ছেলেদের প্রিয় প্রাণী তিনটি: পরের প্রাক্তন স্ত্রী, পরের বর্তমান স্ত্রী আর পরের ভবিষ্যৎ স্ত্রী। ৩। : তোমার জন্য আকাশের চাঁদ এনে দিতে পারি! : চুপ থাক, ব্যাটা চাপাবাজ! আগে নিজের জন্য এনে দেখা! ৪। শাশুড়ি: মা, তুমি পারবে তো ধৈর্য ধরে আমার সংসারটা সামলে রাখতে? পুত্রবধূ: কী যে বলেন, মা! আমি তো আর্জেন্টিনার সাপোর্টার! শাশুড়ি: ওরে, তোরা কে কোথায় আছিস, আমার বউমার জন্য একটা ঠাণ্ডা সেভেন-আপ নিয়ে আয়! ৪। খেয়াল করে দেখলাম, যারা সত্যিই খেলা বোঝে, তারা আর্জেন্টিনাকেই সাপোর্ট করে। এই যেমন ফিফা, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ। যত যা-ই লাফান, আপনি নিশ্চয়ই ফিফা'র চাইতে খেলা বেশি বোঝেন না! ৫। একই ভুল নিয়ে একেকটা সময়ে মানুষের মধ্যে একেকটা আফসোসের জন্ম হয়। ৬। হেই, পোল্যান্ড! লিমিটেরও একটা বাজে খেলা আছে! আহা, গোলকিপারের পাশাপাশি আর দু-একজনও যদি পোল্যান্ডের পক্ষে খেলত! ৭। Ahhh this Polish goalkeeper... such a beautiful wall!! ৮। শহরকে মনখারাপের ঝুলিভর্তি গল্প শুনিয়ে এসেছি। জমানো-শীতে পুরো শহর সন্ধ্যেবেলায় এমনিতেই ঝিমুতে থাকে। আমার গল্প শুনতে গিয়ে আজ কিন্তু ওকে ঝিমুতে দেখলাম না। বরং দেখলাম গা ঝাড়া দিয়ে নড়েচড়ে বসতে। কেন? এমন করে মনখারাপের গল্প একলা রাস্তার কানে কানে কেউই কি আগে বলেনি? না কি আমার মতন করে বলেনি? জানি না। ধুলোয় মাখামাখি করা রাস্তাগুলোকে নিজের বন্ধু বলতে দারুণ লাগছে। একঝুড়ি অশান্তি নিয়ে গিয়ে একবুক প্রশান্তি কিনে বাড়ি ফিরেছি। রজনীগন্ধার গন্ধ পাচ্ছিলাম না, তাই গোলাপের তোড়াই আমার আজকের মাদকতার সাক্ষী ছিল। হুমায়ূন পড়ে তো মনখারাপের স্থায়িত্বকাল চাইলেও বাড়ানো সম্ভব নয়! আর... ও হ্যাঁ, গাউনের রং আর ‘সাতকাহন’এর মলাটের রংটা কিন্তু প্রায় মিলে গেছে। ও দীপাবলি… আমার দীপাবলি! আচ্ছা দীপা, তুমি এমন কেন? এই আমারও নারীত্ব ছাড়িয়ে পুরুষ হতে খুব ইচ্ছে করে তোমার জন্য। এমন একজন নারীকে পেতে যে-কোনও কিছু ত্যাগ করে সন্ন্যাস নেওয়া আমার কাছে সহজ মনে হয়। দীপা, আমি তোমাতে ডুবে কেন যাই? আমার কী দোষ দেবে তুমি? লেখক মশাই, একটা কাল্পনিক চরিত্রকে এমন করে সব গুণ ঢেলে না সাজালে কি কিছু কমে যেত? হয়তো যেতই! কেননা স্রষ্টার নামটা যে সমরেশ মজুমদার! ৯। সেইদিন আর খুব বেশি দূরে না, যখন থেকে আমি অভিমান, অভিযোগ করা ছেড়ে দেবো। আমি ছেড়ে দেবো অপেক্ষা করা, তোমাকে ওয়েটিংয়ে দেখলে মাথা গরম করা, আমাকে সময় দিচ্ছ না বলে বলে মাথা খাওয়া। দেখা করব দেখা করব বলে ‘অশান্তি’ করাও ঠিক ছেড়ে দেবো। অসুস্থ হলেই তোমার কোলে শুতে চাওয়া, অন্য কারও উপর রাগ হলে সেই রাগে তোমার সাথে ঝগড়া করা একদিন ছেড়ে দেবো। কত বায়না, কত শখ, কত স্বপ্ন, আমার স্মৃতি, আমার এত বছরের অপেক্ষা... আমার চোখের জলে তিলতিল করে গড়ে ওঠা লুকোনো সংসার... ছেড়ে দেবো! বলতে পারো, ছেড়ে দিয়েছি। তুমি অনেক ব্যস্ত, অনেক কাজ তোমার, অনেক দায়িত্ব নিয়ে বসে আছ... ব্লা ব্লা ব্লা... আচ্ছা, ছেড়েই দিলাম! শোনো, আমি তোমার হাতটাও আজ ছেড়ে দিলাম। তুমিও আমাকে তোমার মনে, মগজে, শরীরে বহন করে বেড়ানোর স্বভাবটা ছেড়ে দিয়ো। ১০। জিতে যাওয়া মানেই যেমন যুদ্ধে জয় না, হেরে যাবার মানেও কিন্তু পুরোটা ক্ষয় না। ঝগড়াবিবাদ এড়িয়ে এবেলা রাস্তা আগলে দাঁড়াও, জেনে রেখো, সমঝোতা পারত হতে এ-পথ ছাড়াও। মদ খেতে চায় আসলে সবাই-ই, মুখে কেউ কয় না, মাতাল হতে চাইলে তো সবারই মদ গিলতে হয় না। ১১। (এসো, অনুবাদ শিখি।) aeza afonara naredar fotbul kala dakan r ae kala sapot koran,afnera kamon poros?narera hafpen pora doray doray kalba,r afne bada daban na?hafpen pora mohela dakla amr oskane hoy,ame cedus hoe,amr manubekutar dondo dareya gay.godeo ora amr natner boyose,tata ke?mohela tu,nake?afnadar mutu lukgolar karona mayara fotbul kala,kirikit kala,avaras a ota pataka dakay.ame mona kore,mayadar kag sodo sameka daka,tar saba kora,tar gale sunau,mar kayau sonsar kora gaua.ara, mayamanos kano atu bogba?ato askara kanu paba?ga mayagola fotbula gatlo,odar kaw beya korba?kunu gane manos ke ae morko mayadar beya korba?samer payar nesa sterer bahast,atae sab kotar sas kota.mona rakban,ae pitibi do denar,r porukal sara gebonar. ১২। আমারও মন খারাপ হয়, তোমাকে মনে পড়ে, কিন্তু বলা হয় না। সত্যি কথা হচ্ছে, বলার সাহসই হয় না। কী দরকার আগ বাড়িয়ে কিছু কথা কাটাকুটি করার! তোমাকে দেখানোর জন্য কয়েক হাজার ইউটিউব ভিডিয়ো সেইভ করে রেখেছি, অনেক দীর্ঘ আলোচনায় যাবার মতন কয়েক লক্ষ টপিক ঠিক করে রেখেছি। আমার ইচ্ছে হয়, সুন্দর, শেখার মতো কিছু দেখামাত্রই তোমাকে সেটা পাঠাই; অথচ পারি না। তোমার দরজা আমার জন্য বন্ধ নয় জানি, কিন্তু এমন করে খুলে রাখা, যেন আমি শত চাইলেও ঢুকতে না পারি। তাই আমি আজকাল ঢোকার কোনও চেষ্টাই করি না। আমি ভেতরে না ঢুকতে পারলেও দরজা থেকে তোমাকে দেখি। যত নিখুঁতভাবে তোমার হাসি, কান্না, হাঁটাচলা দেখা যায়, আমি দেখি। তোমাকে দেখতে আমার ভালো লাগে। জানো, আমি হাতভর্তি রজনীগন্ধা নিয়ে অনেক সাহস করে যেই তোমার দরজায় দাঁড়িয়েছিলাম, দেখেছি, গতসপ্তাহে আমার দেওয়া বাসি গোলাপের তোড়াটাই তুমি এখনও ফুলদানিতে সাজানোর সময় করতে পারোনি! আমি তবুও অপেক্ষা করে যাই... অপেক্ষা সুন্দর। অপেক্ষা আমাকে নিজেকে চিনতে শিখিয়েছে। ১৩। হেমন্তের দিনে ভাত খাওয়ার পরে অল্প কিছু দুপুর পাওয়া যায়। ঘুম জড়িয়ে আসে, কম্বল গায়ে ঘুমোতেও বেশ লাগে, কিন্তু ওইটুকু ঘুমের জন্য এই মনোরম দুপুরগুলোর সৌন্দর্য নষ্ট করতে ইচ্ছে হয় না। এখন সেইসব দুপুর পার করছি। নাকে লাগছে শুকনো পাতা পোড়ানোর গন্ধ। আহা! এই গন্ধটা যে আমাকে দিয়ে কত কত ছোটোবেলার স্মৃতি মনে করিয়ে নেয়! যে জীবনটা দ্রুতই ফুরিয়ে যাচ্ছে, সেই জীবনের বিকেলগুলো এখন বেলা পাঁচটার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়! মানা যায়? তারপর সেই সাড়ে পাঁচটা থেকে যেই রাত শুরু হয়, তার তো শেষ হবার নামই থাকে না আর! রাতগুলো বরাবরই বেশ বড়ো! আমার আরেকটু বেশি বিকেল পেতে ইচ্ছে করে; ইচ্ছে করে, শিম-ফুলকপির তরকারি খেয়ে ভাতঘুম দিয়ে ওঠার পরও আমি যেন চা খেতে খেতে ‘সাতকাহন’ পড়ার জন্য অনেকটা সময় পাই। আমার হেমন্তগুলো খুব ছিমছাম আর সাদামাটা, কিন্তু অনেক বেশি স্মৃতি দিয়ে মোড়ানো। নানুবাড়ির সেই বিটিভি, বাংলা সিনেমা, রাতের ছায়াছন্দ, ভোরের চিতই পিঠা, সন্ধ্যেবেলার গুড় দিয়ে বানানো রং-চা’গুলো আমাকে তো বড়ো হতে, বেড়ে উঠতে দিল না। এমন দুপুরে শুকনোপাতা কে পোড়ায় সাহস করে? ওদের কি তবে ছেলেবেলার কোনও স্মৃতি নেই? ওদের জীবনে কি কখনও হেমন্ত আসেইনি? ১৪। একটা সময় তোমাকে অনেক অনেক অশান্তি দিয়েছি, এটা এখনও আমি ভুলতে পারি না। মাঝে মাঝে নিজের ভেতরে এজন্য খুব কষ্ট হয়। সব কষ্ট তো দেখানো যায় না, কিন্তু হয়। তুমি আমাকে মাফ করে দিয়ো। পৃথিবীতে ভালোবাসার আগে শান্তি, এটা আমি এখন মানি। যে ভালোবাসায় শান্তি নেই, সেই ভালোবাসা শাঁখের করাতের মতো ক্রমাগত কাটতে থাকে। আমি এখন শুধু চাই, তুমি ভালো থাকো, আর শান্তিতে থাকো। যদি তোমাকে বিন্দুমাত্রও অশান্তি দিই, তাহলে নিজ থেকেই দূরে সরে যেয়ো, আমি কিছুই জানতে চাইব না। আমার অতিরিক্ত প্রত্যাশা তোমার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছিল, আর সেই কয়টা দিন চাইলেও তুমি ভুলে যেতে পারবে না। মানুষ কখনোই তাকে ভুলে যায় না, যে তাকে একসময় দিনের পর দিন বিরক্ত করে গেছে। তবু আমাকে একজন অবুঝ ভেবেই ক্ষমা কোরো। তুমি আমার ভালোবাসার মানুষ। আমি আগেও তোমাকে ভালোবাসতাম, এখনও ভালোবাসি। ভবিষ্যতেও, নিজের কাছে কমিটেড যে, আমার ভালোবাসার মানুষকে আমি বদলাব না। এটাই ফাইনাল, তুমি যা-কিছুই করো না কেন। ভুলে যাও, দূরে সরিয়ে দাও, কখনও যোগাযোগ না রাখো, আস্তে আস্তে ভুলে যাও, তবুও তোমাকেই জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নিজের ভালোবাসার মানুষ হিসেবেই জানব। আমি বিশ্বাস করি, মানুষ আমৃত্যু তার ভালোবাসার মানুষকে ভুলতে পারে না; যারা ভুলতে পারে, তারা আদতে ভালোবাসেইনি। ভালোলাগার বা সময় কাটাবার মানুষ অনেক থাকতে পারে, কিন্তু ভালোবাসার মানুষ এক জনই হয়। ভাবনা: নয়শো ছত্রিশ ……………………………………………………… ১। কারণে অকারণে হঠাৎ হঠাৎই অনেক মিস করি তোমাকে। তার মানে এমন নয় যে, আমার কোনও কিছুর অভাব পড়ছে, কিন্তু এই অকারণ শূন্যতা হয়তো থেকেই যাবে শেষমেশ। দূরের জিনিস যখন কাছে আসে, তখনকার চাইতে... কাছের জিনিস দূর থেকে আরও দূরে সরে গেলে আরও অনেক কাছের হয়ে যায়। আসলে আমাদের মধ্যে আত্মার সম্পর্কও আছে হয়তো কিছু। আমার যে সবকিছুর মাঝেই কেমন যেন শূন্য মনে হয়; মনে হয়, আমার সবচেয়ে যে আপন, সে-ই সবচেয়ে দূরে। ভালো থেকো, যেখানে যেভাবেই থাকো। মন ঘোরাতে, ভুলে থাকতে মানুষ অনেক কিছুই তো করে। আমি তোমার বিরক্তির কারণ হতে চাইনি, চাইও না কখনও। একটা সময় তোমার মতো করে তোমাকে ভালো রাখতে পারতাম না, কিন্তু এখন সেটা বুঝতে পারি বলেই নিজেকে অন্য কোথাও আটকে রাখতে চেষ্টা করি। সবটুকু যে পারি না, সেটা বুঝতে হয়তো পারছ। ইমোশনালি অন্য কাউকেই ভাবি না, নিই না। অন্য কারও প্রতিই কোনও ইমোশন কাজ করে না আমার। শুধু বাঁচতে যতটা দরকার, ততটাই ব্যবহার করি। কোনও কিছুর প্রতিই আর মোহ কিংবা অ্যাটাচমেন্ট নেই আমার। একটা কথা বলি। কারও সাথে মিশলেই কি আর তার হয়ে যাওয়া যায়? এত সহজ হলে তো কত মানুষ হাঁফ ছেড়ে বেঁচে যেত! মানুষ অনেকসময় ইচ্ছে করেই নিজেকে ধোঁকা দেয় বাঁচার আশায়। এভাবে সে নিজের কাছ থেকেই পালাতে চেষ্টা করে। নিজেই নিজের পরীক্ষা নেয়, আর সেসব পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়। আমি বুঝতে পারি, আমি তোমার জীবনে কখনোই স্পেস পাবো না, তাই নিজেকে ভুলিয়ে রাখার সব সম্ভাব্য সুযোগই ব্যবহার করি। আমি তো দেখি, তুমি ভালোই থাকো। আমি যে নেই তোমার আশেপাশে, সেটা এতদিনে কখনও তোমার অনুভবই হয়নি হয়তো। এগুলো একটাও কিন্তু অভিযোগ নয়; তোমার কাছে সব কথা বলার অভ্যাসটা ছাড়তে পারিনি, তাই। একদিন হয়তো এই বদভ্যাসটা থেকেও সরে যেতে পারব! ২। খুব জানতে ইচ্ছে করে, স্বাধীনতার এত বছরেও জাতি হিসেবে আমরা আসলে কতটা স্বাধীন? বাক্শক্তি হারিয়েছি অনেক আগেই। এক অদৃশ্য শক্তি টুটি চেপে ধরেছে। এ শক্তি কোনও দল কিংবা কোনও গোষ্ঠীর নয়, বরং একটি ধারণা, একটি মনোভাব। রোজ রোজ অজস্র অনিয়মের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছি---ইচ্ছেয় হোক, কিংবা নেহায়েতই অনিচ্ছেয়। চোখের সামনে অনিয়মগুলো হতে দেখতে দেখতে নিজেকে অনেকসময়ই এক যন্ত্রমানব ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না। তা-ও সাহস করতে ইচ্ছে হয় যে কিছু-একটা বলি! আচ্ছা, স্রষ্টা কি তাঁর সকল বান্দাকে সমান দৃষ্টিতে দেখেন না? তিনি কি সকল বান্দাকে এই একটা পৃথিবীতেই বসবাসের সুযোগ করে দেননি? আমাদের বাবা-মা'ও কি তাঁদের সব সন্তানকে একদৃষ্টিতে দেখেন না? যদি তা-ই হয়, তাহলে আমাদের, মানে বান্দাদের... আমাদের, মানে সন্তানদের মন এত কলুষিত কেন? কেন আমার অপরের অধিকারটুকুও স্বেচ্ছায় উপভোগ করতে দিতে জানি না? কেন প্রতিবাদ, চাপ, অভিযোগ কিংবা শক্তি প্রয়োগ করে অধিকার ছিনিয়ে নিতে বাধ্য করতে হবে কাউকে কাউকে? এই ভূমি কি তবে নির্দিষ্ট কোনও জনগোষ্ঠীর? শুধু পরিবার নয়, একটি রাষ্ট্র, এমনকী পুরো পৃথিবীটাই যদি রোজ রোজ নিজের অধিকার ছিনিয়ে নিতে সোচ্চার হয়, তবে... কোথায় আমাদের ভ্রাতৃত্ববোধ? কোথায় আমাদের স্বাধীনতা? কোথায় আমাদের শান্তি? কোথায় আমাদের সহনশীলতা? কোথায় পালাল মানবিকতা? কোথায় লুকোল ঐক্য? আসুন, তেলা মাথায় তেল দেওয়া বর্জন করে একে অপরের সমভাগী ও সমব্যথী হতে শিখি। আমরা যেন ভুলে না যাই, আমাদের শেষটা কিন্তু একই। প্রত্যেকের কাছে ধর্ম জিনিসটা ধর্মের চাইতে অধিক আবেগে পরিণত হয়েছে, আর এই আবেগের জায়গায় আঘাত করলে মানুষ সহজে ভুলতে পারে না। আপনি শেষ কবে অপমানিত হয়েছিলেন, সেটা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি? কেউ ভোলে না। ধর্ম নিশ্চয়ই মূর্খতার শিক্ষা দেয় না। উস্কানিতে সাড়া না দিয়ে সঠিক তথ্য যাচাই করুন, এবং সমস্যা সমাধানের একটা শান্তিপূর্ণ পথ গ্রহণ করুন। দেখবেন, ওতেই প্রকৃত মঙ্গল, ওতেই অবারিত শান্তি। ৩। যদি কখনও অনুভব করো, তোমার ভালোবাসার অজুহাতে কেউ তোমাকে ব্যবহার করছে, যন্ত্রণায় রাখছে, তবে পৃথিবীর সমস্ত যুক্তিকে একপাশে সরিয়ে রেখে তখনই তার হাতটা ছেড়ে দাও। ...এমন অনেক সুন্দর সুন্দর কথা নানান জায়গায় পড়ি, খুব ভালো লাগে পড়তে, কিন্তু ওই পড়া পর্যন্তই, নিজের জীবনে কাজে লাগাতে আর পারি না। নিজের জীবনের সাথে পুরোপুরি মিলে যায়, এমন পরামর্শ পেয়েও আমি আগের মতোই কষ্টে থাকি। আমার মতন এতটা অপদার্থ মানুষের বেঁচে থাকার সত্যিই কি কোনও অধিকার আছে? তুমি আমাকে খুবই অপছন্দ করো, তাই না? এমনকী কখনও কখনও ভীষণ বিরক্ত হও আমার প্রতি এবং অস্বস্তিবোধ করতে থাকো। হয়তো কখনও এটাও ভেবে বসো, কী জন্য একটা সময়ে আমার সাথে তুমি যোগাযোগ রাখতে! তোমার জন্মদিন গেল, আমি তোমাকে উইশ করিনি, তার কারণ, জানি, আমার উইশ করা না করায় তোমার কিছুই এসে যায় না; বরং তুমি এমন একজন মানুষের বিরক্তিকর আচরণ থেকে মুক্তিই চাইবে সেই বিশেষ দিনে। তা ছাড়া শুধু টেক্সট করে কী হয়! আমি তো কিছুই করতে পারি না তোমার জন্য! সুতরাং এইসব ফালতু কথা নিতান্তই মূল্যহীন। তোমাকে কী করে মুক্তি দিই, বলো? আমি নিজেই তো নিজের চিন্তাভাবনা থেকে তোমাকে আলাদা করতে পারি না। হয়তো এই না পারা আমাকে সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে, হয়তো কখনও কাজের চাপে কিছুক্ষণের জন্য ভুলে থাকতে পারব শুধু! এটুকুই আমার অনেক বড়ো প্রাপ্তি। সবাই সব কিছু পায় না জানি, কিন্তু আমার মতন কিছু কিছু মানুষ অনেক চেষ্টা করেও জীবনের কাছে কিছুই পায় না... এটা কেউ বিশ্বাস করবে? কাউকে দূরত্বে রেখে দিয়ে ভালোবাসি বলতে যে কেউ চাইলেই পারে। নিজে সবসময় সাইলেন্ট থেকে অন্যের দোষ ধরা সহজ। আমি তোমার মনের মতো করে চলতে গিয়ে না পাবার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়েই বাঁচতে শিখে গিয়েছি, শুধু এই বেঁচে থাকাটাকে অনুভব করতে পারি না...এই যা! আয়ুর প্রতি এমন নির্লিপ্ততা আমাকে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছে। ভালো থেকো। আমার জ্বালাতন সহ্য করে যাবার জন্য কৃতজ্ঞতা। ৪। আমার সব কিছুতেই সমস্যা তোমার। কী চাও বলোও না, আবার থাকতে চাইলে জোর করে দূরে সরিয়ে রাখো। আমি কী করব তাহলে? কোনদিকে যাব? আমি তোমার ইচ্ছেমতো চলতে চেয়েছি সবসময়ই, কিন্তু তুমি তো কিছুই বুঝতে দাও না আমাকে। আমি তোমাকে ভালো না লাগার কথা বলিনি। তোমাকে ভালোলাগা মন্দলাগার কী আছে? তুমি তো আমার ভালোবাসার মানুষ! ভালোবাসার মানুষকে কেউ জাজ করে না; যে করে, সে ভালোবাসতেই জানে না। আমি বলেছি, তোমাকে বুঝতে চেষ্টা করে করে আর আমার ভালোবাসার গভীরতা বোঝাতে চেষ্টা করে করে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছি আমি, কিন্তু তুমি কিছুই বুঝতে চাও না আমার। তুমি আমার জীবনে আসার পর থেকে আজ পর্যন্ত আর কাউকে নিয়েই কখনও ভাবিনি আমি। আমার কাছে ভালোবাসার অর্থ কেবলই তুমি। অনেক বার ক্লান্ত হয়ে, জেদ করে, রাগে-অভিমানে অনেক কিছু করেছি, তবুও কারও সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়াইনি, আর যখন সেটা নিয়েও জেদ করতে গেছি, তখন সৃষ্টিকর্তা কোনও-না-কোনও উপায়ে সেটা হতে দেননি। আমি সবসময়ই তোমাকে বোঝার চেষ্টা করে যাচ্ছি, তোমার মনের মতো হতে চাইছি, তোমার শান্তির জায়গা হতে চাইছি, কিন্তু আমি জানি না, আমি কী করলে কীভাবে থাকলে কী আচরণ করলে তুমি শান্তি পাও, তুমি ভালো থাকো। তোমাকে ভালোবাসব, এ ব্যাপারে আমি তো নিজের সাথেই কমিটেড, তাহলে আমাকে তুমি একটুও বুঝতে দাও না কেন তোমাকে? মানুষকে তো সুযোগ দিতে হয়। আর আমি তো চেষ্টা করছি। আমার কথায় কোনও ভুল থাকলে ধরিয়ে দিয়ো। তোমার কাছে আসাও সমস্যা, তোমার সাথে ফোনে কথা বলাও সমস্যা, তোমার সাথে যোগাযোগ রাখাও সমস্যা... তাহলে আর কীভাবে এগোয় মানুষ! সম্পর্কে একটা সূত্র ধরেই তো মানুষ এগোয়। আমি তাহলে আর কোনভাবে ধরে রাখব তোমাকে, তুমিই বলো? ৫। সন্তান পিতা-মাতার সামগ্রিক প্রতিফলন। আপনার সন্তানকে দোষারোপ করার আগে নিজের এবং নিজেদের দিকে তাকিয়ে দেখুন, কেননা সন্তানেরা সবার আগে পিতা-মাতাকেই অনুকরণ ও অনুসরণ করে এবং আমৃত্যু তাঁদের কিছু বৈশিষ্ট্য, অভ্যাস নিজের মাঝে ধারণ করে। আপনার মধ্যে আচরণগত সমস্যা থাকলে আপনার সন্তানের মধ্যেও তা থাকবে। এ নিয়ে তাকে বকাঝকা করার কোনও মানে নেই। খারাপ গাছের ফল সাধারণত ভালো হয় না। আপনি নিজে যা নন, তা আপনার সন্তানের কাছে প্রত্যাশা করবেন না; করলেও, আশাভঙ্গের জন্য নিজেকে তৈরি করে নেবেন তার আগে। আপনি যা পাবার যোগ্যই নন, তা-ও পাবার আশা করে কী লাভ? বরং কোনও একভাবে তা পেয়ে গেলে ধরে নেবেন, ওটা বোনাস, তখন সেই প্রাপ্তির জন্য উদ্যাপন করুন! ৬। সমস্যা হচ্ছে, কেউ যদি এখন আমার হৃদয়ে এই পৃথিবীর সব কষ্টও দিয়ে যায়, তবুও সেই অনুভূতি আমার মধ্যে খুব বেশিক্ষণ কাজ করে না; ধীরে ধীরে ব্যথার অনুভূতিগুলো এতটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। এটা আমি সত্যিই চাই, কেউ আমায় এমন কোনও কষ্ট দিক, যে কষ্টটা আমি আজ পর্যন্ত কোনোদিনই পাইনি এবং সেই কষ্টটা আমার ভেতরে তীব্র একধরনের স্পার্ক তৈরি করুক...খুব করে এটা আমি চাই, তবুও কিছুতেই কিচ্ছু হয় না। আমাকে এই মুহূর্তে রাস্তায় গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দিলেও আমি দিব্যি সেখানে শান্তির ঘুম দিয়ে উঠব। আমার কিচ্ছু নেই, অথচ আমার তাতে কিছুই এসে যায় না... এমনই একটা ভয়ানক অবস্থানে পৌঁছে গেছি আমি। আমার এই কষ্টের অনুভূতিগুলো দরকার, কারণ অনুভূতিশূন্য একজন মানুষ কিছুই করতে পারে না। পারবে কীভাবে... তার কাছে যে শান্তিরও কোনও অনুভূতি নেই! ভাবনা: নয়শো সাঁইত্রিশ ……………………………………………………… ১। ভালো সময় জীবনে আসতে হয়তো একটু বেশিই দেরি হয়। তবে যখন আসে, তখন বাকি জীবনটায় সবকিছুই ভালো আসে বা হয়। খারাপ কিছু এলে বা হলেও তা থেকে নিজেকে বের করে নিয়ে আসতে মানুষ পারে যদি সে একবার শিখে ফেলে কখন, কীভাবে, কোথা থেকে নিজেকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। সময়ের চেয়ে চমৎকার শিক্ষক আর কে আছে! দুঃসময় মানুষকে জীবনে পরিপূর্ণভাবে পরিপক্বতা দান করে, মানুষ চিনতে শেখায়, ভুল-সঠিক চিনতে শেখায়; এভাবে করে মানুষকে সম্পূর্ণরূপে সংশোধন করে। জীবনে এর চেয়ে বড়ো সম্পদ আর কিছুই হতে পারে না। এই সম্পদ খরচ করে মানুষ বাকিটা জীবন সুখে-স্বস্তিতে বেঁচে থাকতে শিখে যায়। এই শিক্ষাই মানুষকে মানুষ করে বাঁচিয়ে রাখে। Almighty or Nature has three answers to our prayers or wishes, I believe: 1. Yes 2. Yes, but not now 3. I've a better plan for you ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে জানে যে, সে-ই জীবনে ভালো কিছু পায়, বাকিরা হারিয়ে যায়। মানুষ যা চায়, তা না পেলেও, যা তার দরকার, তা ঠিকই পেয়ে যায়। সুন্দরতম সময়ের দেখা পেতে চাইলে নিজেকে আনন্দে রাখতে হয়, স্থির রাখতে হয়, সমস্ত কষ্টকে সহজভাবে মেনে নিতে হয়, অপ্রয়োজনীয় আবেগ থেকে দূরে রাখতে হয়, কাজকেই ইবাদত বা প্রার্থনা হিসেবে গ্রহণ করতে হয়। অবিশ্বাসে সব হারানোর চেয়ে বরং কিছু পাবার বিশ্বাসে বাঁচা অনেক ভালো। ২। একটা ভালো ব্যাপার হচ্ছে, এখন প্রচুর মানুষ কবিতা পড়ছে, পাঠ করছে। নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা লিখছে, আবৃত্তি করছে শখে। নিজেরা অ্যালবাম করছে নিজেদের পাঠের! কথা-কবিতা ব্যাপারটা মানুষকে কবিতার প্রতি আকর্ষণ করেছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। এটা খুব পজিটিভ ব্যাপার। আমাদের সময়ে কবিতার ইমেজটা একদমই বোরিং টাইপের ছিল। কেউ কবিতা কিংবা ছন্দ মিলিয়ে লিখছে বা আবৃত্তি করছে, এই ব্যাপারটা নিয়ে খুব ট্রল হত, হাসাহাসি হত। এখনকার জেনারেশন কথা-কবিতায় ঝুঁকছে। এই সুবাদে নতুনের সাথে পুরোনো কবিতাও পাঠ হচ্ছে। কবিতাপ্রেম বাড়ছে। এটা খুব খুব ভালোলাগার একটা বিষয়। আমার আশেপাশে এখন আমি গল্প-উপন্যাসের চেয়ে কবিতাপ্রেমী, পাঠক-পাঠিকা বেশি দেখি। খুবই ভালো লাগে! একবার কবিতায় বাঁচতে শিখে গেলে নিজেকে আর একা লাগে না। একাকিত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য কবিতার চেয়ে ভালো হাতিয়ার তেমন একটা নেই। ৩। আমি: অ্যাই বলো, তোমার শরীর খারাপ, তবু এত রাত পর্যন্ত জেগে থাকো যে? ক্যানো? কোন সুন্দরীর জন্যে? রাত জাগতে জাগতে আধামরা হয়ে গেলে কি সে তোমার জন্যে এক ফ্লাস্ক চা বানিয়ে তোমাকে দেখতে যাবে? সত্যি করে বলো তো, এরকম প্রতিশ্রুতি কি সত্যিই দিয়েছে কেউ…যে সেই সুখে শরীর যায় যাক বলে ভাসিয়েছ নিজেকে? বিলিভ মি, আমি এরকম প্রতিশ্রুতি দেই নাই! কক্ষনো দিবও না! আমি হলে জাস্ট কিলিয়ে ঘুম পাড়াব কিংবা পাড়াতাম। ঘুমই প্রেম! ঘুমই ভালোবাসা! বাসার বাইরে থাকো, বাসার যত্নটা কখনোই বাইরে পাওয়া যায় না, এটুকু তো বোঝো। তাই নিজের কিছুটা যত্ন নিজেই নাও। যখন অসুস্থ থাকো, তখন কয়েকটা দিন যেতে দাও না অসুস্থের মতো, একটু আরাম দাও শরীর আর মাথাটাকে...কেউ তোমাকে যন্ত্র হবার দায় নিশ্চয়ই দেয়নি? কেউ যদি দিয়ে থাকে, তবে সে তোমায় চায় না, কেবল তোমার সৃষ্টিকেই চায়। জানি না, কথাগুলো আমার বলাটা তোমার কাছে ঠিক লাগছে কি না; কিন্তু আমার মনে হয়েছে, বলা উচিত, তাই বললাম। মুখে হয়তো অনেক কিছুই বলি না বা বলবও না, তার মানে এটাও না যে আমি একেবারেই রোবট! (‘রোবট’ নামটা আমার বন্ধুদের দেওয়া।) এই যে বলা-উচিত কথাগুলোও কতবার ভেবে লিখেছি, তা আমি নিজেই জানি না। আমি হয়তো অত রোমান্টিক করে বলতে বা প্রকাশ করতে পারি না, তার মানে এটাও না যে ভালোবাসার তীব্রতা আমার ততটাই আবছা। আমি একটু আর্মি-জেনারেল-টাইপ কথাবার্তা বলি, আদর করে বলতে পারি না। আগে নিজে সুস্থ থাকো, তারপর দুনিয়ার ব্যাপার নিয়ে মাথা নষ্ট করো। আন্ডারস্টুড? তুমি: জি ম্যাডাম, লোকে আমাকেও রোবট বলত। তুমি এত ভালো কেন? ধরে মাইর দিতে ইচ্ছা করে! ৪। যা দেখলাম, এই বিশ্বকাপে দুই ধরনের সাপোর্টার আছে। এক দলের হিসেব খুবই সরল। ওরা ভাবে, আমরা জিতলেই আমরা জিতব। কথা শেষ---দি এন্ড! নো ভুগিচুগি! হিসেব বোঝা জলের মতো সোজা! অন্য দলের হিসেবে একটু জটিল হিসেবের হিসেব ও সমীকরণের হিসেব আছে। ওরা ভাবে, যদি অমুক দল তমুক দলকে হারাতে পারে এবং তমুক দল সমুক দলের কাছে হেরে যায় এবং অমুক ও তমুক ম্যাচ ড্র হয়, তবে আমরা জিতবই জিতব। অতএব, এই বিশ্বকাপ আমাদের। আমাদের জেতা ঠ্যাকায় কে! অভিনন্দন! অভিনন্দন! এসো, সবাই মিলে বিশ্বকাপজয়ের জয়োল্লাস করি। আমরাই সেরা, আমরাই জয়ী! ওরে, তোরা কে কোথায় আছিস... ও-দলের কানের সামনে গিয়ে শরীরের সব শক্তি দিয়ে ভুভুজেলা বাজা! আজ আমাদের বড়ো আনন্দের দিন, আজকের এই আনন্দযজ্ঞে সবাই মিলে ঝাঁপিয়ে পড়! ভালোবাসা ব্যাপারটা সত্যিই অদ্ভুত! প্রাণ যায় যাক, মান যায় যাক, তবু যাকে ভালোবাসি, তার পক্ষে সাফাই গাইতে যা যা করা দরকার, কারণে বা অকারণে আমৃত্যু তা-ই তা-ই করে যাব! আহা, আবেগের সামনে সবই মার খেয়ে যায়! জানি, সাদিয়া নিরলসভাবে ফেইল করেই যাচ্ছে...করেই যাচ্ছে। হোয়াট অ্যা স্পিরিট! হ্যাটস অফ, জানুসোনা! আমি যেহেতু সাদিয়াকে ভালোবাসি, সেহেতু নাদিয়া ক্লাসের টপার হলেও তার অবস্থান অতি-অবশ্যই সাদিয়ার অনেক অনেক অনেক-টু-দ্য-পাওয়ার ইনফিনিটি পেছনে। এহ্, কীসের সাথে কীসের তুলনা! অঙ্কে নাদিয়ার ১০০ সাদিয়ার ২৮-এর চাইতে কত যে কম, তা ভাবলেও সুখে আর তৃপ্তিতে গা শিউরে ওঠে! ফেলুদি সাদিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে যে প্রশ্ন তোলে, সে নাম্বার ওয়ান উন্মাদ-উজবুক! করুণা হয় অমন মাথামোটা গর্দভদের দেখলে! ছিঃ! ভায়া, এত বোঝো, আর হিসেব বোঝো না? ক্লাসের বাকি ২৭ জন অঙ্কে...আচ্ছা, মানলাম, শূন্য না পাক, অন্তত ১ থেকে ২৭-ও যদি পেত, তাহলেই তো খুব সহজেই আমার কলিজাপাখি সাদিয়া নাচতে নাচতে ক্লাসে সেকেন্ড হতে পারত, এবং নির্ঘাত নচ্ছার নাদিয়াকে পেছনে ফেলে দিত একসেকেন্ডেই, তাই না? সাদিয়া একা আর কত করবে! সীমারও তো একটা ধৈর্য আছে! সাদিয়ার আজকের এই অবস্থানের জন্য মূলত ওই ২৭ জনই দায়ী, এ ব্যাপারে সাদিয়াকে জড়িয়ে কথা বলে যে, তার চাইতে গণ্ডমূর্খ আর কোথাও কি আছে?! ৫। এ কী করল রিচার্লিসন! গোলকিপারের সামনে থেকেও অমন দুটো পাস মিস করল! পাড়ার আনাড়ি ছেলেরাও তো এতটা ভুল করে না! ওকে আরও আগেই মাঠ থেকে বের করে দেওয়া উচিত ছিল! আহা, আরও দুই গোল কত সহজেই ব্রাজিলের পকেটে ঢুকত! ওরকম মনে হয়...এটা হলে ওটা হতো, কিংবা এটা না হলে সেটা হতো; হ্যাঁ, মনে হতেই পারে। খুবই স্বাভাবিক। মনে যা হচ্ছে, তা তো মিথ্যে নয়। চোখের সামনেই তো সব দেখা গেল! তার সাথে এ-ও সত্যি, সব দিনই কারুর একার হয় না। একেক দিনে একেক জন রাজা। আগের ম্যাচে রিচার্লিসনের অবদানের কথা যেন আমরা ভুলে না যাই। আবেগের ঠেলায় স্মৃতি ঠেলার বদভ্যাস তো আর আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়! অবশ্য, ভুলে আমরা যাই-ই। দর্শক কিংবা সমর্থক হিসেবে আমরা খুব একটা দয়ালু গোছের প্রাণী নই। সহ্য করতে পারা ও ক্ষমা করতে পারা, দুই ক্ষমতাই আমাদের বেশ অল্প। কাউকে ভালোবাসলে তার প্রতি নিষ্ঠুর হবার সকল অধিকার আমরা কোত্থেকে যেন পেয়ে যাই। এ কারণেই বাঙালির ভালোবাসা খুব একটা সুবিধার বস্তু নয়। এ থেকে এক-শো হাত দূরে থাকাই বিচক্ষণতার পরিচয়। গতকালের আগে ব্রাজিল সে পর্যন্ত সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩টা ম্যাচে জিতেছে, ২টাতে হেরেছে, আর ড্র হয়েছে ৪টা ম্যাচ। বিশ্বকাপ-আসরের হিসেবে বলতে গেলে, ব্রাজিল এই প্রথম সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে জিতল; এর আগের দুই ম্যাচই ড্র হয়েছে। সুইজারল্যান্ড যথেষ্ট শক্ত একটা টিম। অতীতে কে কয়টা কাপ জিতেছে, এ হিসেবে শ্রেষ্ঠত্বের বিচার করেন যাঁরা, তাঁরা ইতালির দিকে তাকান, উত্তর পেয়ে যাবেন। বাপ-দাদার কী ছিল, তার চাইতে জরুরি, আমার কী আছে, সেটার দিকে তাকানো। সোনালি অতীতের রোমন্থনে ধূসর বর্তমানকে ঢেকে ফেলে কেবল নির্বোধেরাই। ব্রাজিলের সমর্থকরা যে খুব নিশ্চিন্তমনে গতকালের খেলাটা দেখেছে, এমনটা ভাবলে ভুল হবে। বিশ্বকাপে যে টিমের বিপক্ষে ব্রাজিল আগে কখনও ম্যাচ জিততেই পারেনি, তাদের বিপক্ষে খেললে সমর্থকদের মাথায় একটু হলেও চাপ থাকেই। তার উপর নেইমার আজ মাঠে ছিল না, তার মতন একজন ডিপেন্ডেবল প্লেয়ারের অনুপস্থিতি নিঃসন্দেহে একধরনের মনস্তাত্ত্বিক শূন্যতা তৈরি করেছে। মেসি-নেইমার-রোনালদো'দেরকে মাঠে দেখাও দর্শকদের চোখে ও মনে আরাম দেয়। আগের ম্যাচ জেতানোর নায়ক রিচার্লিসনের ফিনিশিংয়ে কিছুটা ছন্দপতন, প্রতিপক্ষের গোলবারের কাছাকাছি গিয়েও খেলোয়াড়দের ব্যর্থ হওয়া, সেমি-অটোমেটেড অফসাইড টেকনোলজিতে পড়ে গোল-হয়ে-হইল-না-গোল গল্পের আফসোস, গোলের হাত থেকে অন্তত দু-বার অল্পের জন্য রক্ষা…এ সবকিছু চোখের সামনে সহ্য করতে করতে গোলের জন্য অপেক্ষা খেলার সৌন্দর্য ক্রমেই বাড়িয়ে দিচ্ছিল। অপেক্ষাই সুন্দর! ৮৩ মিনিটের মাথায় ক্যাসেমিরোর ডান পা থেকে যখন অমন জোরালো শটে বল ঢুকে গেল বারে, তখন হয়তো সুইজারল্যান্ডের গোলকিপার হতভম্ব হয়ে মনে মনে গাইছিল… আমার ধরার কিছু ছিল না...না গো...আমার ধরার কিছু ছিল না...চেয়ে চেয়ে দেখলাম, বল ঢুকে গেল...বল ঢুকে গেল, চেয়ে চেয়ে দেখলাম... সত্যিই বেচারা সোমারের কিছুই করার ছিল না। গোলবারের দিকে ছুটে আশা বলটা ছিল একদমই তার নাগালের বাইরে। এভাবেই মাঠজুড়ে ছোটো ছোটো পাসের নান্দনিক ব্রাজিলীয় প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ব্রাজিল চলে গেল পরের রাউন্ডে। নকআউটে প্রথমে গেল ফ্রান্স, অনুসরণ করল ব্রাজিল। তারপর? দেখা যাক, কী হয়! ভাবনা: নয়শো আটত্রিশ ……………………………………………………… ১। সুইজারল্যান্ডের গোলকিপার: আমার ধরার কিছু ছিল না...না গো...আমার ধরার কিছু ছিল না...চেয়ে চেয়ে দেখলাম, বল ঢুকে গেল...বল ঢুকে গেল, চেয়ে চেয়ে দেখলাম... ২। আমি এক তুমি বাদে ছাড়া আর কারও উপরই ভরসা পাই না। তবু তোমার এই থাকা, না থাকার মতোই... Maybe I’ve wasted my last two years behind someone wrong! And at the same time, I’m in doubt if I should continue this relationship or not, because so many things about him are still in question. I’m going through a hard situation. I wasn’t hungry for getting a relationship, but I don’t know why am I doing the same mistakes repeatedly. Now I'm fully destroyed. I just wanted to fix my life in the right way but I’m failing and failing again. Nothing can I do to fix myself up. Everything I’ve done is wrong and still I can’t find out my problems or lackings. I just want a life where I would never regret on myself feeling that I never tried. I've lost my confidence in every aspect of my life. Now I just feel that nothing can I ever fix. Maybe it's not wastage. I've learnt a lot. Who knows! সম্পর্কটা হয়তো টিকবে না। কারণ জানোই তো, আমি কারও সাথেই মানিয়ে চলার মতন মানুষ নই, খুবই একরোখা। কেউ যেচে এসে সবকিছু মেনে আর মানিয়ে নিলেই সেটা সম্ভব। সে-ও কি হয়! কী একটা লাইফ! অগত্যা, আবার একলা চলো রে! অবশ্য আমি অভ্যস্ত হয়ে গেছি আমার একাকিত্ব নিয়ে! যেখানে আমার চেয়ে আমার শরীরের মূল্য বেশি, সেখানেও কি আমার যাওয়া ঠিক হবে? মানুষ বোধ হয় সারাজীবনেও সত্যিকারের ভালোবাসার খোঁজ পায় না। ৩। এই পৃথিবীর কারও প্রতি কিংবা কোনও জিনিসের প্রতি ইমোশনাল অ্যাটাচমেন্ট না রেখে বাঁচতে শিখলে বেঁচে থাকা অনেক সহজ হবে; অন্তত নিজের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছেই থাকবে। শরীরের টানে শরীর ছোটে, আর মনের টানে ছোটে মন। যেখানে শরীর এবং মন দুই-ই টানে, সেখানেই আটকে যায় মানুষ। শুধুই শরীরের টানে মানুষ আটকায় না, অথচ শুধু মনের টানে একই মানুষটাই আটকে যেতে বাধ্য হয়। এ কারণেই হয়তো মানুষ এতটা দুনিয়ামুখী হয়। নিজের ভেতর থেকে ইমোশনাল অ্যাটাচমেন্ট ঝেড়ে ফেলা খুব কঠিন। আমি এখনও এটি আয়ত্তে আনতে পারিনি, এজন্যই বোধ হয় বারে বারে আটকে যাই। আমাকে একটু শেখাবে, কীভাবে নিজের ভেতর থেকে ইমোশনাল অ্যাটাচমেন্ট ঝেড়ে ফেলব? তাহলে আমার জন্য খুব ভালো হয়। তা না হলে সবাই বারে বারে এই দুর্বলতার সুযোগটাই নিচ্ছে। যত যা কিছুই হয়ে যাক, আমার আবেগের জায়গাটা পাথর করে ফেলা দরকার। একের সাথে অন্যের তুলনা কেউ ইচ্ছে করে করে না। এটা অবধারিতভাবেই এসে যায়। যখন বিশেষ কারও সাথে অন্য কাউকেই মেলানো যায় না, যখন এমন কেউ তার বিশেষত্বে সবার থেকে আলাদা হয়, যার কাজগুলো অন্যদের থেকে আলাদাভাবে প্রকাশ পায়, তখন অবধারিতভাবেই তুলনা চলে আসে। আমি আজ অবধি আমার জীবনের সব থেকে সেরা মুহূর্তগুলো তোমার কাছে তোমার সান্নিধ্যে কাটিয়েছি। যখন অন্য কেউ বিশেষ হয়ে উঠতে চায়, কিন্তু তার ছিটেফোঁটাও তোমার সাথে মেলাতে পারি না, যা আসলেই আমার প্রাপ্য, তা যখন অপূর্ণ থেকে যায়, তখন তুলনা চলে আসে; সেই তুলনা থেকেই শূন্যতার জায়গাটা আরও গভীর হয়। এ যে কিছুর বিনিময়ে পূর্ণতা পাবার অযোগ্য। ভালোবাসা অকৃত্রিম। অনেক আড়ম্বরের মাঝেও একে আলাদা করা যায়। এই সহজ বোধটি আমি তোমার কাছ থেকে শিখেছি। তোমার জন্য প্রতিটি মিনিট অপেক্ষা করে থাকি। প্লিজ, এই এক মিনিটের অপেক্ষায় আমাকে আজীবন রেখে দিয়ো? বিশ্বাস করো, এতে আমি ভীষণ ভীষণ সুখী থাকব। ফেইক ভালোবাসায় আমার আর চলছে না, এর চেয়ে বরং বড্ড বেশিই একা হয়ে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে। ইদানীং অনন্তকাল ঠিক মানুষের প্রতীক্ষায় থাকতে ইচ্ছে হচ্ছে। এমনকী সেই প্রতীক্ষাটা যদি হয় আমৃত্যু, তবুও! এই জনমের সব হিসেব আমি চুকিয়ে দেব ঠিক মানুষের প্রতীক্ষাতে। আমি আর চাই না, কেউ আমাকে ভুল করে কিংবা নিজের প্রয়োজনে ভালোবাসুক। ৪। : I confess, over the past 10 years I've slowly failed to cherish all the good things in you. My lack of attention has brought us where we are today. Nevertheless, I wish only for your happiness. : You don’t have to apologize. Actually, it’s not all your fault. I just don’t want to stand behind and wait for you to turn around anymore. Go wherever you want to. I'll find my way. Thank you. ৫। জি ভাই, ঠিকই ধরেছেন, সত্যিই আমি সিজনাল ফুটবল ফ্যান, প্রফেশনাল নই; আমার প্রফেশন ভিন্ন। আপনি কি প্রফেশনাল ফুটবল ফ্যান? ফুটবলের সাথে ফুটবলের মতোই মাঠে মাঠে গড়ায় আপনার জীবন ও জীবিকা? বাহ্! দারুণ...দারুণ! এই অভিনব পেশার নানান সুযোগ ও সম্ভাবনা নিয়ে একটু বিশদে বললে আমরা সবাই কৃতার্থ হতাম। আপনার এই মহামূল্যবান আলোচনা বেকারত্ব কমাতে অনেক ভূমিকা রাখবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। কোনও দলের প্রতিই আমার বিন্দুমাত্রও রাগ বা অনুরাগ নেই, আবেগ তো অনেক পরের কথা! তবে এসব নিয়ে নিজে না নাচলেও অন্যদের নাচাতে আমার ভালো লাগে। আপনারা সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে আমার ওয়ালে এসে নাচানাচি করতে থাকেন, দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। বার বারই মনে হতে থাকে, আরও নাচাই...আরও! ভালোবাসার নৃত্যশিল্পীবৃন্দ, সবিনয় কৃতজ্ঞতা জানবেন। আপনারা যখন জিজ্ঞেস করেন, "ভাই, আপনি কোন দল করেন?", তখন আবেগে আপ্লুত হয়ে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলতে ইচ্ছে করে। কতটা গভীর নিঃস্বার্থ ভালোবাসা থাকলে একজন মানুষ তারই মতো আরেকটা পাগলের খোঁজে এমন পাগলের মতো হাতড়ে বেড়ায়, তা সহজেই অনুমেয়। যে আবেগ আমায় এমন কাউকে দূরের মানুষ ভাবতে শেখায়, যিনি কখনোই আমার কোনও ক্ষতি করেননি, সে আবেগধারী আমার অতিসত্বর মানসিক চিকিৎসা জরুরি। তবে হ্যাঁ, যখন দেখি, পাড়ায় পাড়ায়, ওয়ালে ওয়ালে প্রফেশনাল ফুটবল ফ্যানদের ক্রীড়াক্রোধ আর বিজয়মিছিল, তখন সত্যিই ভীষণ ভালোলাগা কাজ করে। এর কারণ, পেশাগত জীবন নিয়ে খুশি হতে পারাটা অনেক বড়ো একটা সৌভাগ্যের ব্যাপার। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা'র প্রফেশনাল ফ্যানদের কাছে আমাদের সবারই শেখার আছে। অমন তৃপ্তি নিয়ে পরম নিষ্ঠার সাথে পেশাগত দায়িত্ব পালন করাটা একধরনের আর্ট। সম্মানিত প্রফেশনাল ফুটবল ফ্যানদের নিজের পেশা নিয়ে এমন উচ্ছ্বাস দেখলে আমি খুবই অনুপ্রাণিত বোধ করি। এই মহান আর্টিস্টদের প্রতি শ্রদ্ধা আর শ্রদ্ধা! আমার প্রিয় মেসি-নেইমার-রোনালদো-এমবাপ্পে আমার কাছে সম্ভ্রম, বিনোদন ও অনুপ্রেরণার উৎস, ঝগড়াঝাঁটির নয়। এই জাদুকরেরা যখন মাঠে দৌড়োতে থাকেন, তখন আমার মন ও চোখ পড়ে থাকে তাঁদের পায়ের কাছে। এ আমার নেশাও নয়, পেশাও নয়...এ কেবলই অসীম ভালোলাগায় মেশা। ৬। জয় সুন্দর। আর্জেন্টিনা সুন্দর। আকাশ সুন্দর। হেমন্তের মিষ্টি রোদ্দুরে রোদ্দুরে আজ বিশ্বকাপ-জয়ের ঘ্রাণ দোর্দণ্ডপ্রতাপে ফুরফুর করে চারিদিকে ভেসে বেড়াচ্ছে। পাখিসব করে রব...আহা, কী আনন্দ আকাশে-বাতাসে... বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই আর্জেন্টিনার সমর্থক। তাই গতরাত থেকেই থেকে থেকে ভুভুজেলা বাজছে। সুতীব্র শিহরনে বীর বাঙালির দুই ঠোঁটই একসঙ্গে জেগে উঠেছে। এই জেগে ওঠা সত্যিই বড্ড কাঙ্ক্ষিত। তাই আমরা চাই, সবাই জিতুক। সবাই জিতলে সবাই জেগে উঠবে। খুব আনন্দ হবে। বড়ো আশা মনে, বাংলার প্রতিটি ঘরদোর জয়োল্লাসে ফেটে পড়ুক: ভামোস, আর্জেন্টিনা! খামোশ, অ-আর্জেন্টিনা!! আকাশে আকাশে পতপত করে উড়ুক আর্জেন্টিনার আকাশিরঙা পতাকা। দেখুক পৃথিবী, আমরা সবাই বাঁশের আগায় আকাশ রাঙাই... আমাদের থামায়, অত সাহস কে দেখায়?! মেক্সিকোকে ধন্যবাদ ওদের অসাধারণ ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শনের জন্য। প্রতিপক্ষ অতটা চমৎকারভাবে খেললে তখন না জিতলে বড়ো পাপ হয় হে! ম্যারাডোনার সুযোগ্য উত্তরসূরিদের অভিনন্দন পাপের ভাগীদার না হবার জন্য। মেক্সিকোর এমন সম্মানজনক পরাজয়ের পেছনে আর্জেন্টিনার অবদান আমরা পরম কৃতজ্ঞতায় মনে রাখব...কে জানে, হয়তোবা পুরোনো অভ্যেসে মনে রাখতে বাধ্য হব! আমরা জাতিগতভাবে কৃতজ্ঞতার শীর্ষে। আমরা প্রমাণ করেছি, আমরা সহজে কিছু ভুলে যাই না। সেই ১৯৮৬ সাল থেকে ডট ডট ডট আজ বড়ো আনন্দের দিন। প্রযুক্তি এখন অনেক উন্নত---হাত-পা'সহ সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গ খুব সহজেই পৃথকভাবে সনাক্ত করতে সক্ষম। ভাবা যায়, আমাদের সবার প্রিয় আর্জেন্টিনা আজ হাত থেকে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে! আজ আর্জেন্টিনা টিমের একটাই স্লোগান: পা থাকতে হাতে কী! বাই দ্য ওয়ে, মেসিকে বিশেষ ধন্যবাদ নান্দনিক গোলটার জন্য। একটু শক্ত ডিফেন্স পেলে রিচার্লিসনের মতো অমন দৃষ্টিমধুর গোল তিনিও নিঃসন্দেহে দিতে পারতেন। কিন্তু বিধিবাম, কী আর করা যাবে! রাজার মতো জিততে চাইলে যে রাজার সাথেই লড়াইটা হতে হয়! পুনশ্চ। টফি'তে খেলা দেখছিলাম। খেলার মধ্যবিরতির সময় দেবাশীষ বিশ্বাসের সঞ্চালনায় যে ছোট্ট ক্যুইজ প্রতিযোগিতাটি হলো, সেখানকার একটা প্রশ্ন ছিল: আর্জেন্টিনা শেষ কবে বিশ্বকাপ জিতেছে? খুবই সহজ প্রশ্ন, আপামর ক্রীড়ামোদী জনতা বহুবছরের ক্রমাগত চর্চার ফলস্বরূপ এর উত্তর জানে। কথা সেটা নয়। কথা হচ্ছে, দেবাশীষ দাদা কি ইচ্ছে করেই প্রশ্নটা করেছেন? না কি ওটা আদতে কোনও প্রশ্নই ছিল না, বরং ছিল রমেশ শীলের সেই কালজয়ী গানের সময়োচিত ইন্সপায়ারেশনাল রেনডিশন---মেসির প্রতি নিবেদিত: হাফটাইম ফুরাইসে রে মেসি, হাফটাইম ফুরাইসে... শূন্য গোলে ছুইটা ছুইটা হাফটাইম ফুরাইসে!