আমার কান্না পাচ্ছে ভীষণ, একটু কাঁদব। তুমি কি ফোনটা ওপাশে কিছু সময় ধরে রাখবে? জানি না, কেন তোমাকে কান্না শোনাতে চাইছি, কিন্তু এটা খুব স্পষ্ট করে বুঝতে পারছি, তুমি আমার কতটা আপন! তা না হলে ফোন করে কেঁদে ফেলব কিংবা কান্না শোনাব, এমন মানুষ আমার আর কেউ নেই। মানুষ যাকে আপন ভাবে না, তাকে কখনও অশ্রুর শব্দ শোনায় না। কেন কাঁদতে চাইছি এতটা ব্যাকুলভাবে, কিছুদিন ধরে সেটারও কারণ খুঁজে যাচ্ছি, ঠিক পাচ্ছি না। অনেক দিন হয় খুব নিবিড়ভাবে কাঁদি না, হয়তো তেমন করে হাসিও না। মজার ব্যাপার কী, জানো? এতগুলো মানুষ যখন একসঙ্গে হাসে, তখন কিন্তু অনেকেই মেকি হাসি হাসে। বিশ্বাস হয় না? তুমি খুব খেয়াল করে দেখো, বিশ্বাস করতে বাধ্য হবে! হাসির ব্যাপারটা নাহয় এইভাবে ওইভাবে একে ওকে ভুল বোঝানো যায়, কিন্তু কান্নার বেলায়? তবে অবশ্য আজকাল যে অভিনয় করে কাউকেই কাঁদতে দেখি না, তা-ও নয়। দেখি অনেককেই। আমি বুঝি না, কান্নার মতন এত আপন একটা অনুভূতিকেও যদি মানুষ মেকি বানাতে শুরু করে, তাহলে শেষ পর্যন্ত আমরা আসলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াব? কে বিশ্বাস করবে কাকে?! কেউ বিশ্বাস পাবেই-বা কোথা থেকে!? আমি জানি না। এসব মাথায় আসছে কেন, কোথা থেকে, কিছুই বুঝতে পারছি না। তুমি কি শুনছ? তুমি কি আমার কথা শুনে আমার ব্যথার খোঁজটা অনুমান করতে পেরেছ? কতটা গভীর আমার ক্ষত, তুমি দেখতে পাচ্ছ না। আমি লুকিয়ে রাখি বলে এতদিন তো নিজেই ঠিক করে দেখতে পাইনি! তোমার সঙ্গে এলোমেলো কথা বলেও আমি খুব শান্তি পাচ্ছি। সবার সঙ্গে তো গুছিয়েই কথা বলি, তোমার সঙ্গে নাহয় এলোমেলো কিছুই বলি... হুঁ? তোমার কি সময় আছে? কিংবা ধৈর্য, আগ্রহ, ইচ্ছে...এইসব? আচ্ছা, তুমিও কি কান্না লুকিয়ে ফেলতে শিখে গেছ? বুঝে গেছ কি যে বড়ো হয়ে গেলে মানুষ আর সাবলীলভাবে কাঁদতে পারে না? হায়, এ পৃথিবীতে কান্না শুনতে কেউ ফোনটা ধরে না!