ভাবনাদেয়ালের পলেস্তারা: ১২৮


ভাবনা: আটশো নব্বই
………………………………………………………

আমার ওয়ালে ঘুরে আসুন। দেখবেন, আপনাকে নিয়েই লিখি, তবুও আপনাকে লিখি না।

তুমি ছাড়া থাকতে পারি না কেন! তোমাকে নিয়ে তুমি ছাড়াই তো আছি! ভালোই আছি! তবুও আমার কোথায় কোথায় জানি তুমি থেকে যাও! আমি প্রমিজ তো করিই নিজের কাছে, তোমার খোঁজ নেব না আর, কথাও বলব না আর! কই, ঠিকই আবার তুমি এসে যাও! এইভাবে থেকে গিয়ে ঠিকই বুঝিয়ে দাও, তুমি আসলে কী আমার কাছে!

মেসেজ-না-দেখা লোকটা, দখল করে রাখে হৃদয়ের সবটা! অভ্যাসটা তুমি হয়ে গেছ, আর তুমি কিনা ফেইসবুকের দোষ দাও!

শোনো, আজ এখান থেকে চলে যাচ্ছি, কিন্তু পৃথিবী থেকে চলে যাচ্ছি না। আমি মরে গেলে আপনাকে ভুলে যাব, একদম গড-প্রমিজ!

জানো, যখন তুমি বলেই বসো, ‘ভালোবাসা নয়, শান্তি চাই।’, তখন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলি, তোমার কাছে যা অশান্তি, আমার কাছে তা-ই যে ভালোবাসা, তা-ই যে শান্তি! তুমি বলো, ভালোবাসা নয়, শান্তি চাই, সেটা তো বুঝলাম; কিন্তু শান্তিপূর্ণ ভালোবাসা তো মায়ের ভালোবাসা। এ ছাড়া খুব কমই থাকে, যেখানে ভালোবাসা আর শান্তি একসঙ্গেই বিরাজ করে। হ্যাঁ, এটা অবশ্যই তুমি আমাকে বা অনেককেই বলতে পারো, শান্তি চাই, ভালোবাসা নয়। কারণ তোমার দরকার শান্তি। আমরাও একমত তোমার সাথে। তুমিই ঠিক! আচ্ছা যাও, পরশু থেকে তোমাকে শান্তি দিয়ে দেবো আমি!

মাঝেমধ্যে তোমাকে নিয়ে ভাবতে গিয়ে একটা কথাই মাথায় আসে…ও মনে হয়…যাকে একটু হলেও পছন্দ করে, তার কাছেই ভালোবাসাটা আশা করে, আর যাকে অপছন্দ করে, তার কাছ থেকে শান্তি আশা করে।

আচ্ছা, পুরুষ কি কখনও এক‌ই নারীর কাছ থেকে ভালোবাসা ও শান্তি দুটোই একসঙ্গে পায়? আমার তো মনে হয় না! প্রায় সব পুরুষই শান্তি খোঁজে এমন কারও কাছে, যে তাকে আদৌ ভালোবাসে না।
আমার এমনই মনে হয়। আমি ভুলও হতে পারি! তবে কি জানো…যাকে অপছন্দ করো, যেমন আমি, তার কাছ থেকে শান্তি পেলেও তোমার কাছে সেটাও ভালো লাগবে না। মানুষ যাকে ভালোবাসে, তার কাছ থেকে অশান্তি পেলেও সেটাকে অমৃতের মতো লাগে; আর যাকে সহ্য করতে পারে না, তার কাছ থেকে শান্তি পেলেও সেটাকে বিষের মতো লাগে।

মেয়ে, শোনো, ওভাবে বেপরোয়া হয়ে ভালোবাসতে হয় না। জানি, বুঝি, মানি! তবুও…ভুল হয়ে যায়। এত তাড়াহুড়ো করতে গেলাম কেন! তোমাকে বলতেই-বা গেলাম কেন! যে তোমায় চায়নি নিজের পাশে কখনও, যেন তোমার শান্তিটা ঠিক থাকে, সেই আমিই কেন নিজেরটাই ভাবছি এমন সারাক্ষণই!
লোকে ভালোবেসে ভুল করে? না কি ভুল মানুষকে ভালোবেসে ভুল করে? জানি না এতকিছু! যে যত ভালোবাসে, সে তত কম জানে। আমিও যে সেই দলে! শুধু জানি, ভালোবাসা ভুল নয়! Love is a myth only if you don’t know how to love.

এই যে আমি নেই কোথাও…তোমার সামনে বা শহরে, বলো, এর চাইতেও বেশি শান্তি তোমায় দিই কী করে! ফেইসবুকটা যোগাযোগ মাধ্যম। ওটা অফ করে দিলেই যোগাযোগ বন্ধ। কিন্তু একটা মানুষ যখন মনে গেঁথে যায়, সেটা বন্ধ করার পথ তো নেই! শান্তিতেই থাকো, প্রিয়!
আচ্ছা, তুমি কি অন্য কাউকে ভালোবাসো? ও কি আমার মতোই পাগলামিটা করে? তুমি আসবে বলে ঠিক এতটা সময় নিয়ে অপেক্ষা করে থাকে? অপেক্ষা যে কী জিনিস, তা যারা মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসে, তারাই বোঝে। জানো, এতটা কঠোর আমার বেলায় তখনই হতে পেরেছ, যখন জেনেছ, আমি তোমায় ভীষণ ভালোবাসি। যে তোমায় ভালোবাসে না, পারলে তার প্রতি কঠোর হয়ে দেখাও দেখি!

কেন জানি মনে হয়, আমাদের আর কখনও যোগাযোগ হবে না। ভালোবাসার মানুষটার কাছ দিয়ে যাবার সময় যে অনুভূতিটা কাজ করে, পৃথিবীর কোনও ভাষায়ই তা ব্যাখ্যা করা যায় না। বিকেলে হেঁটে যাচ্ছিলাম তোমার বাসার সামনে দিয়ে। মাথা নিচু করে হাঁটছিলাম আর চোখ দিয়ে পানি ঝরছিল। আমার কোনও কিছুই সহজ নয়। খুব সহজেই যে কাউকে ভালোবাসতে পারি না, আবার যাকে বাসি, তাকেই বেসে যাই।

জ্ঞানী মানেই যে নিজেকে ভালোবাসে। বেআক্কেল মানেই যে অন্যকে ভালোবাসে। আমি জ্ঞানী নই, বেআক্কেল। এই সহজ বিষয়টা তুমি জানো না? জানলে আমার সঙ্গে অমন করো কেন? তুমি তো নিশ্চয়ই বেআক্কেল ন‌ও!

হ্যাঁ, তোমায় আমি বহু বছর শান্তি দিয়েছি। কীভাবে? ওই যে কিছুই বলিনি, বিরক্তও করিনি লাস্ট এক বছর। শুধু ঘ্যানঘ্যান করেছি ভালোবাসি ভালোবাসি বলে। এর আগের সাত বছর কিছুই বলিনি, চুপ করে থেকে ভালোবেসেছি। বলেছিলাম, তোমার বুকের ঠিক মাঝখানটা…ওটাই আমার ঠিকানা। জানো, খুব ইচ্ছে করে ওই ঠিকানায় মাথা রেখে মাঝেমধ্যে খুব করে কাঁদি!

আজকাল সম্পর্কে ভালোবাসা নেই এবং ভালোবাসায় সম্পর্ক নেই। কী লাভ বলো এমন একটা সম্পর্কে থেকে গিয়ে, যেখানে তৃতীয় জন লাগেই লাগে!

আমার ভীষণ ভয় মানুষে। আমি কোনও পুরুষকে কণামাত্রও বিশ্বাস করি না---এক বাবা আর ওঁর পরে তুমি ছাড়া। মুখে তো তোমাকে অনেক কথাই বলি, কিন্তু নিজেকে বার বারই বলি, এই মানুষটাই আমার বিশ্বাস, ভালোবাসা এবং বেঁচে থাকার একমাত্র কারণ। তাকে ছেড়ে থাকা তো যায়‌ই, কিন্তু ভালো না বেসে থাকা যায় না কিছুতেই!

সবচেয়ে সহজ এই সম্পর্ক, আবার সবচেয়ে কঠিন এই সম্পর্কই---কেননা যখন সেটা নেভানোর কথা বিশ্বাস আর বন্ধুত্বের মধ্য দিয়ে, তখন অনেকেই হেরে যায়। অবশ্য, হারবেই তো! যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাড়াহুড়োয়, সেই সম্পর্ক ভেঙেও যায় তাড়াহুড়োয়।

আমি আছি শান্তিতে; না আছে সম্পর্ক, না আছে বর, না আছে ‘বফ’। এর চাইতে শান্তি আর কিছুতে আছে, বলো? ও হ্যাঁ, তোমায় যখন ভালোটা বাসি, তখন ভীষণ শান্তিতে থাকি। আবার যখন কোনও মেয়েকে দেখি তোমার আশেপাশে, তখন খুবই অশান্তি লাগে! মেয়েরা সবকিছু সহ্য করতে পারলেও এই একটা জিনিস পারে না---ভালোবাসার মানুষটার সঙ্গে অন্য কাউকে।

বিশ্বাস করো, কখনও তোমার বউকে তোমার পাশে দেখে আমার কষ্ট হয়নি। সেদিন বেড়াতে গিয়ে তোমরা সবাই যে ছবিটা তুললে, সেখানে পাশে তোমার বউ ছিল। সম্ভবত তার মাথাটা তোমার কাঁধে হেলান দেওয়া ছিল। জানো, ছবিটা দেখে কেন জানি চোখ দিয়ে পানি ঝরেছে। অথচ আমার কখনও এমন হয়নি। সে তোমার খেয়াল রাখে, তোমার সন্তানের যত্ন নেয় এবং তোমার বাড়ির লোকজনেরও যত্ন নেয়। মানুষটার প্রতি আমার সবসময়ই সম্মান সেজন্য। তার দায়িত্ব সে সঠিকভাবে পালন করে যাচ্ছে। সে-ই তো সবচেয়ে বেশি সৌভাগ্যবান মেয়ে, যে তোমাকে বর হিসেবে পেয়েছে। ওইদিনের ছবিটা দেখে কেন জানি কষ্ট লাগল! জানি না এমন কেন হলো! আচ্ছা, ভালোবাসা কি মানুষকে হিংসুটে করে তোলে?

যখন তোমায় দেখি, আমার শান্তি লাগে। ব্যস্‌, হয়ে যায় আমার শান্তির বন্দোবস্ত!
যখন আমায় দেখো না, তোমার শান্তি লাগে। ব্যস্‌, হয়ে যায় তোমার শান্তির বন্দোবস্ত!
এক‌ই শান্তি, অথচ দুইয়ের উৎসে কত দূরত্ব!


ভাবনা: আটশো একানব্বই
………………………………………………………

এক। ছোটোবেলায় আমরা যাদের খারাপ ভাবতাম, বড়ো হয়ে দেখি, আমরা ঠিক ওরকমই খারাপ হয়ে বসে আছি! এখন আবার নিজেকে খারাপ ভাবতে আমরা পারি না, যদিও আমাদের একসময়কার বিচারে আমরা এখন সত্যি সত্যি খারাপ। নিজেকে ভালো ভাবার পেছনে অনেক অনেক যুক্তিও আমরা দাঁড় করিয়ে ফেলেছি, যেগুলির একটিও আমাদের মাথায় তখন আসেনি, যখন আমরা ছোটো ছিলাম।

জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, বিশ্বাস এবং সময়‌ই মানুষের ভাবনা বদলে দেয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের অবস্থান, বিশ্বাস, যুক্তি, বিচার বদলে যায়। আপনি যে সময়ে আছেন, আমি সেই সময়ে থাকলে হয়তো আপনাকে খারাপ ভাবতে পারতাম না, এখন যেমন ভাবছি। মানুষ সবসময়ই নিজেকে ভালো বানাতে এবং নিজের অবস্থানটা যৌক্তিক হিসেবে তুলে ধরতে নানান বুদ্ধি বের করে ফেলে।

এ কারণেই কাউকে জাজ করা ঠিক নয়। আপনি যাকে কোনও একটা বিচারে খারাপ হিসেবে জাজ করছেন, তার জায়গায় থাকলে সেই বিচারে আপনি হয়তো তার চাইতে অনেক বেশি খারাপ লোক হয়ে বেঁচে থাকতেন, যদিও তখন আপনি নিজেকে খারাপ ভাবতেনই না। সময়, সুযোগ, অর্জন ও দায়িত্ব মানুষের মনকে নানান উপায়ে গড়ে ও ভাঙে।

তাই কাউকে জাজ না করে, ভালো হয়, যদি তাকে ঠিক তার মতো করে গ্রহণ করেন কিংবা গ্রহণ করতে না পারলে তাকে তার মতো করে থাকতে দিয়ে তার দিকে না তাকিয়ে নিজের কাজে মন দেন। অন্যের মধ্যে ভালোত্ব খুঁজে চলার চাইতে জরুরি, নিজের মধ্যে ভালোত্ব খুঁজে পাওয়া। এক সময়ে বেঁচে আরেক সময়ের মানুষকে জাজ করা যায় না। একেক জীবন, একেক যাপন। যে যাপনে আপনি নেই, সে যাপন নিয়ে কথা বলা যায় কি?

গীবত মানুষের জীবনীশক্তি কমিয়ে দেয়।

দুই। আসলে আপনাকে কোনোদিনই কোনও কথা না বললেও আমার চলত। তবে বলছি কেন? কারণ আমার মতো আর কেউ যেন এই কথাটা আপনার মুখ থেকে না শোনে, সেজন্য।

আচ্ছা, আপনার মনে আছে কি না জানি না, আপনি একবার বলেছিলেন, যখন কোনও ভালো খাবার খান, কিংবা সুন্দর কোনও জায়গায় বেড়াতে যান, তখন আপনার বার বার মনে হয়, ইস্‌, যদি প্রিয় মানুষদের খাবারটা খাওয়াতে পারতাম, কিংবা এই সুন্দর জায়গায় তাদের সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে পারতাম! এইরকম নাকি আপনার মনে হয়! আপনি বলেছিলেন একদিন।

ইন দ্য সেইম ওয়ে, আমারও মনে হয়, ইস্‌, আজ রান্না করে যদি আপনাকে খাওয়াতে পারতাম! যদি আপনার পছন্দের পদগুলোর সবকটা একে একে ট্রাই করাতে পারতাম! যেহেতু আমারও মনে হয়, সেহেতু তার মানে, আমিও আপনার মতো একজন মানুষ, আমার চিন্তাভাবনাও আপনার সঙ্গে কিছুটা মিলে।

হ্যাঁ, অফিসে রান্না করে পাঠাতে পারি না, লোকজন কী ভাববে, তা ভেবে। আমরা যখন কাউকে দাওয়াত দিই, তখন সেই দাওয়াতটা আন্তরিকতার সঙ্গেই দিই, সেই দাওয়াত রক্ষা করা না করা যার যার ব্যাপার বা ভদ্রতা। আপনাকে আমি দীর্ঘ আট বছরে কিছু দিই না দিই, দাওয়াত কিন্তু দিয়ে এসেছি। ইদের সময়, ভালোবাসা দিবসে বা যে-কোনও মুহূর্তে। যা-ই হোক, সেটাকে আপনি কীভাবে নিয়েছেন, তা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত বিষয়।

আপনাকে খাওয়াব ভেবে আমি নিজহাতে মসলা কেনা থেকে শুরু করে আদা, রসুন, পেঁয়াজও বেটেছি; কারণ ব্লেন্ডারের মসলা খুব মিহি হয় না।

আমাদের প্রত্যেকেরই ভালোবাসার মানুষের জন্য চিন্তাভাবনাটা একটু বেশিই থাকে। হয়তোবা এটা দোষের! ভয়াবহ দোষের! আমার বেলায়ও তা-ই হয়তো হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন আমার মতো অপেক্ষা কেউ করেনি আপনার জন্য, এটা আমি দাবির সঙ্গেই বলছি।

আপনাকে সেইদিন ফোন করেছিলাম, কেটে দিলেন! আচ্ছা, এই আমি গত আট বছরে কয়বার ফোন করেছি আপনাকে? প্রশ্ন রইল। আপনার জন্মদিন, অ্যানিভার্সারি, ভালোবাসা দিবস, বসন্তের দিন, উৎসব বা যে-কোনও দিনে কিংবা সময়ে এই আমি আপনাকে ফোন করেছি? বিরক্ত করেছি? করিনি, আর করবও না কখনও।

আমি ভালোবেসেছিলাম আপনাকে। আপনার দরজায় ভিক্ষার থলে নিয়ে যাইনি কোনোদিনই। আমি এমনভাবে ভালোটা বেসেছি যে, কখনোই আপনাকে ফোনে, মেসেঞ্জারে, অফিসে বা আপনার বাসায় গিয়ে বিরক্ত করিনি।

কই, তখন কেন বললেন না? …যে হ্যাঁ, তুমি আমাকে ভালোবেসে ঠিক আমার মতো করেই আমায় থাকতে দিয়েছ। ধন্যবাদ তোমাকে। আজকাল নাহয় দুই-একটা কথা বেশিই বলে ফেলি, তাতেই বলে বসলেন, আমার ভালোবাসা নাকি আপনার শান্তি নষ্ট করে! আমি যেন আপনাকে একা থাকতে দিই।

আচ্ছা, আমার জানামতে যেখানে ভালোবাসা থাকে, সেখানে অভিযোগ থাকে; কিন্তু এমন একটা অভিযোগ করলেন আমার সম্পর্কে, যা মেনে নিতে আমার কষ্ট হয় এই ভেবে, যে মানুষটা আমাকে কখনও ভালোই বাসেনি, সময়ই দেয়নি, সেই মানুষটাই এত বড়ো একটা অভিযোগ করে বসল আমার নামে! কেন করল, আমার জানা নেই।

ভালো যারা বাসে, তারা অভিযোগ, অভিমান, রাগ, বিরক্ত করে। হ্যাঁ, এতকাল বিরক্ত করিনি। এখন বিরক্তির কথা বলে দূরে সরিয়ে দিতে যদি চান, সেটা ভিন্ন কথা।

আপনার আর আমার মধ্যে কিছুই নেই। যা ছিল, তা একতরফা নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ছিল আমার…যা আপনার দেওয়া শত আঘাতে বা অবহেলায়ও শেষ হয়নি। যেহেতু ভালোবাসার শুরুটা আমার হাত ধরে, সেহেতু এর শেষও হবে আমার হাত ধরেই।

আমি শুধু জানব, আপনি এমন একটা মানুষের সঙ্গে জিততে চেয়েছেন, যে আপনাকে জিতিয়েই রেখেছে সবসময়। আপনি এমন একটা মানুষকে আঘাত করেছেন, যে আপনার দেওয়া আঘাত নিয়েও আট বছর খুবই শান্তভাবে এবং কোনও রকম বিরক্ত না করেই ভালোবেসেছে।

শুনুন, জিততে যদি চান, তবে জিতবেন এমন কারও সঙ্গে, যে আপনাকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবে। আপনার সঙ্গে কিন্তু আমার কোনও প্রতিযোগিতা নেই। আপনাকে ভালোবাসতাম, এই আর কি! আপনি কাছে এসেছেন বলেই যে প্রেম করব বা আপনাকে আটকে রেখে দেবো, তেমন কিন্তু না।

আমরা তাদেরকেই সময় দিই, যাদের কাছ থেকে আমাদের কিছুই পাবার নেই কিংবা যারা আমাদের কখনোই কিছু দেয়নি এবং দেবেও না। অথচ যারা আমাদের তাদের পুরো জীবনটাই দিয়ে বসে আছে, আমরা তাদের কোনও খোঁজই নিই না!

আমাকে আপনি চেনেননি কখনোই। ধন্যবাদ আপনাকে।

আজকাল আর বিরক্ত করি না আপনাকে। নিশ্চয়ই অনেক শান্তিতে আছেন। থাকুন। বছর শেষ, আমাদের যোগাযোগও শেষ। শান্তিতে থাকুন।

এত কিছু না বললেও চলত, বললাম, কারণ আর কারও সঙ্গেই যেন এমনটা না হয়, ঠিক যেমনটা আমায় আপনি ভুল বুঝেছেন। আপনি মানুষটা অনেক ভালো, কিন্তু আমার নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আপনি বুঝতে পারেননি। থাক, আর বুঝতেও হবে না কষ্ট করে! আমি চলে যাবার পর আপনার জীবন শান্তিতে ভরে উঠবে, এই কামনা রইল। ব্যাপার না, আপনি দূরে থাকতে পারলে আমিও পারব। মানুষ সবই পারে, শুধু কিছু বিষয় সে পারতে চায় না।

ভাবনা: আটশো বিরানব্বই
………………………………………………………

এক। পুরো একটা দিন পর কথা হচ্ছে!

আচ্ছা, গত একটা দিন খুব শান্তিতে ছিলে নিশ্চয়ই? ঘুমটা হয়েছে ঠিকঠাক? প্রেমের কিংবা প্রেমগুলির কোনও ব্যাঘাত ঘটেনি তো?

তুমি কি এই একটা দিন মিস করেছ আমায়? না কি ধরেই নিয়েছ, আর আসব না বিরক্ত করতে?
শুনে রাখো, বাঁচতে গেলে এ জীবনে বিরক্ত করার জন্যও এক জন একান্ত, বিশ্বস্ত কেউ থাকা লাগে; আর তোমার সেই মানুষটাই হচ্ছি আমি!

আচ্ছা, তুমি কখনও বুঝতে পেরেছ, ধীরে ধীরে আমরা দু-জনই কিন্তু দু-জনকে সহ্য করা শিখে গেছি? দেখেছ কাণ্ডটা!

জানো, হাঁসের মাংস আর ভুনা খিচুড়ি কিংবা যে-কোনও খাবারই রান্না করি না কেন, তোমার কথাই সবার আগে মাথায় আসে। এক তুমি ছাড়া আর কোন পুরুষমানুষ আছে, যাকে আমার রেঁধে খাওয়াতে ইচ্ছে করবে?

তুমি কখনোই আমার কাছে জানতে চাওনি, তোমায় যে এতটা ভালোবাসি, এর পেছনে কারণ কী! জানো, ভালোবাসা কোনও কারণ নিয়ে হয় না। ভালোবাসাটা হয়ে যায় হুট করেই! আমার সারা চোখে-মুখে-ভাবনায়-অস্তিত্বে-অনুভবে তোমার জন্য নরম একধরনের মায়া লেপটে থাকে। এ এক অদ্ভুত ভালোলাগা! এ এক দারুণ কষ্টযাপন! এখানে পার্থিব কোনও প্রাপ্তি নেই জেনেও এখান থেকে বেরোতে ঠিক ইচ্ছে করে না।

আমি শুধুই তা নিয়ে বেঁচে আছি, যা আমার নয়। আমি এ-ও জানি, এর বাইরে বেঁচে থাকার আর কোনও ব্যাকরণ আমি জানি না।

যে ভালোবাসার পেছনে কারণ থাকে, সে ভালোবাসা দ্রুত ফুরিয়ে যায়। এই কারণেই আমার ভালোবাসা কখনও ফুরোয় না।

কেমন ভালোবাসি, কতটা ভালোবাসি, এইসব প্রশ্ন করে আমার কাছে কিছু জানতে চেয়ো না, কারণ ভালোবাসা বীজগণিতের কোনও অঙ্ক নয় বা উপপাদ্যও নয় যে, প্রমাণ করে আমার দেখিয়ে দিতে হবে!
বাই দ্য রাস্তা…আপনি কিন্তু জানালেন না গত একটা দিন মিস করেছেন কি না আমায়!

একটু পর পর অনলাইনে আসে মানুষটা, তবুও আমার মেসেজ দেখবে না। আচ্ছা, ব্যাপার না। এই পৃথিবীতে অনেক মানুষ বাঁচে, যাদের কপালে শুধুই আনসিন জোটে! আমি জীবনে নতুন ভালোবাসার মানুষ নিয়ে আসব। এইসব আকামের ভালোবাসার মানুষ দিয়ে কী হবে! কাছে থেকেও কত দূরে! আজাইরা!

আচ্ছা, যদি কখনও আর না ফিরি, খুশি হবে? যদি বলো ‘হ্যাঁ’, তবুও কিছু বলব না; যদি বলে বসো ‘না’, তবুও কিছু বলব না। শুধু এইটুকু জানি, ‘আমি ফিরব!’ তোমার কাছে ফেরার মানেই যে আমার নিজের কাছে ফেরা!
তোমাকে খুব খুব খুব করে চাইছি…নিঃশ্বাসের কাছে!

মনে হয়, ভীষণ রাগ করো আমার মেসেজ দেখে! তবে নাহয় হাতে লিখে চিঠি পাঠিয়ে দিই?

দুই। শোনো বিজি মানুষ, ঘুমোনোর আগে শেষ টেক্সটটা তোমায় দিতে চাই। ঘুম ভেঙে উঠে প্রথম টেক্সটটাও তোমায় দিতে চাই। তুমি শুধু আমায় বলবে, কখন কোথায় থামতে হবে এবং কখন কোথায় চলা শুরু করতে হবে। কিছু সময়ের জন্য নয়, বহু বছর কাটিয়ে দিতে চাই তোমার সঙ্গে ছায়া হয়ে।

দীর্ঘদিন ধরে-থাকা কোনও একটা জায়গা, জিনিস বা বিষয়ের উপর মানুষের না চাইতেও মায়া জন্মে যায়। তুমি রোজ যে চেয়ারটায় বসে অফিস করো, যে চায়ের কাপে চা খাও, যে লোকটা তোমার জন্য চা বানায়, দেখবে, যখন ওরা বা ওদের ছেড়ে চলে যাবে, তখন একটু হলেও কষ্ট লাগবে। না চাইতেও লাগবে।

তেমনি ঠিক তোমার প্রতি আমার মায়া জন্মে যায়। চলে যাব বলে বলেও যাই না, না চাইতেও থেকে যাই। আর এই মায়ার জন্যই বোধ হয় মেয়েদের আরেকটা নাম মায়াবী! মায়া করলেই মারা খেতে হবে, এমন কিছুও নয়; কিন্তু তুমি প্রায়ই অমন করে বলো কেন জানি না! মায়া না করে মানুষ বাঁচে কীভাবে!

মায়া জিনিসটা সবার ভেতরে থাকে না, তবে কম-বেশি মেয়েদের ভেতরে থাকে। হ্যাঁ, মেয়েরা এমনই হয়। এই যেমন আমাকেই দেখো না, চোখের কতটা দূরে থাকার পরেও তুমিই থেকে যাও হৃদয়ের খুব কাছে। আমার তোমার প্রতি মায়া, ভালোবাসা সবই থেকে যায়, শুধু আমার কাছে এসে তুমিই থাকো না! তোমার প্রতি আমার কোনও রাগ নেই, শুধুই একধরনের মায়া আছে। অভিমান জন্মে যেটুক, তা-ও ওই মায়া থেকেই। তবু আর কিছুই করার থাকে না, মায়াটুকু চুপচাপ গিলে ফেলা বাদে!

প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে একটা কথাই মনে উঁকি দেয়…আজ কি পাবো প্রিয় মানুষটার দেখা? সে কি আসবে হুট করে আমায় সারপ্রাইজ দিতে?...এইসব ভাবি।

তিন। রাতে আমার দু-চোখে ঘুম একদমই আসতে চায় না যেন! সেই ভোরে উঠি, তবুও ঘুম আসে না। অনেক ছাড়া ছাড়া ঘুম হয়, একটু চোখ লাগলেই শুধু তোমাকে স্বপ্ন দেখি। আচ্ছা, আমি কি পাগল হয়ে যাচ্ছি? না কি পাগল হয়ে যাব?

ভালোবাসায় কিছু হলে কি এমন মোচড় দিয়ে বুকের ভেতর ব্যথা করে? আচ্ছা, তুমি আমাকে যেমন ভালোবাসো, তেমনি কি অন্যদেরকেও বাসো? ধুর্‌! এসব কী প্রশ্ন করছি আমি! অনধিকারচর্চা হয়ে যাচ্ছে তো!

মাঝে মাঝে তোমার উপর যে কী পরিমাণ অভিমান হয় কী আর বলব! তোমাকে অ্যানাদার কলে দেখি, পরে তুমি আবার আমার কলটাও কেটে দাও! আচ্ছা, আমি এত বোকা কেন বলতে পারো? সৃষ্টিকর্তা তো একটু চালাক করেও আমাকে বানাতে পারত...নাকি?

আমি কেন বুঝি না যে, একটা মানুষের যাকে ভালো লাগবে, সে তো তার সঙ্গেই কথা বলবে! আমি কেন বুঝি না যে, তোমার যার সঙ্গে কথা বলে শান্তি লাগবে, যার সাথে কথা বলার পর তুমি শান্তিতে ঘুমাতে পারবে, তুমি তো তার সঙ্গেই কথা বলবে! বোকার মতো প্রতিদিনই তোমাকে ফোন করে যাই। এটা বুঝি না যে, আমার সঙ্গে কথা বলতে তোমার ইচ্ছে করে না, তাই কথা বলো না।

আমি মরে গেলে, যদি জিজ্ঞেস করার সুযোগ থাকে, তবে আল্লাহকে জিজ্ঞেস করব, আল্লাহ! তুমি আমাকে এত বোকা করে বানিয়ে কেন পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলে? আমার মাথায় একটু বুদ্ধি দিলে কী এমন ক্ষতি হতো?

আচ্ছা, আল্লাহ কি তখন চুপ করে থাকবে? আমার কথার কোনও উত্তর দেবে না? সৃষ্টিকর্তা তো আর তোমার মতো কৃপণ নয় যে কথা বললে সময় নষ্ট হবে! মরে যাবার প্রসঙ্গ উঠতেই মনে পড়ে গেল, আমি মরে গেলে তো আমার ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী তোমাকে আমার লাশ দেখতে দেওয়া হবে না! অবশ্য তুমি তো আমার লাশ দেখতে আসবেও না! অত সময় কি আর তোমার হবে?

যেটা বলছিলাম! আমার মৃত মুখটা তো তোমাকে দেখতে দেওয়া হবে না। আমার বাবা, চাচা সবাই হজ করে এসেছে তো, তাই নিয়মগুলো খুব শক্ত করে মানবে; যদিও আমি দেখো কিছুই না মেনে, কুল-মান সব ভুলে তোমাকে পাগলের মতো ভালোবেসে ফেলেছি! কিন্তু মরার পরে আমার দেহে জোর আর থাকবে না। আমি যে কিছুই করতে পারব না তোমার জন্য! তারা তো দেখতে দেবেই না তোমাকে আমার মরামুখটা!

একটাই চাওয়া। আমি মরার আগে তোমাকে অন্তত এক বার যেন দেখতে পাই, কেমন?


ভাবনা: আটশো তিরানব্বই
………………………………………………………

এক। আমি তোমাকে কেন ভালোবেসেছি, সেটার কারণ তুমি প্রায়ই জানতে চাও।

আমি বুঝি না, এই প্রশ্নের উত্তর কী করে দেবো। কেউ ভালোবাসার প্রমাণ কেমন করে দেয়!
আমি শুধু এটুকু বলতে পারি, সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিনই তোমার মুখটা আমার সবার আগে দেখতে ইচ্ছে করে।
আমি বলতে পারি, কোনও উদ্ভট বিষয় নিয়ে আলাপের চিন্তা করতেই তোমার কথা সবার আগে মাথায় আসে।
একটু গুড়ের পায়েস রান্না করলে কখন তোমার জন্য একবাটি সরিয়ে রাখতে পারব, সেই চিন্তাটাই মাথায় ঘুরঘুর করে।
আকাশে সামান্য মেঘ করলেই তোমার কথা মনে করি। মেঘ দেখলেই তুমি কেমন পুরনো গল্প বলতে ভালোবাসো, সেই কথা মনে পড়ে আর চোখে জল এসে যায়।

এইসব যা যা হয় আমার সঙ্গে কিংবা নিজেই ঘটাই যা-কিছু, তার ব্যাখ্যা দিতে আমি পারব না।
তুমি বরং নিজেই বুঝে নিয়ো একদিন সময় করে, এইসব ছোটোখাটো ব্যাপারের আসল মানেটা কী! কেমন?

দুই। সার্টিফিকেট অর্জনের চাইতে সার্টিফিকেট কাজে লাগানোই কঠিন।

সার্টিফিকেট মানুষকে বড়ো করে না, মানুষ‌ই সার্টিফিকেটকে বড়ো করে।

তিন। You have your limits. Either know those angels or face those demons. Whatever you can carry doesn't create problems.

চার। মানুষ খারাপ মানুষের কাছ থেকে দুঃখ পায় না, বরং যে ভালো মানুষটা তার মনের মতো করে চলে না, তার কাছ থেকেই মানুষ দুঃখ পায়। মনের মতো খারাপ মানুষের সঙ্গ মানুষ সহজে ছাড়তে চায় না।

পাঁচ। যদি কারও দুঃখ দূর করার চেষ্টা করো, তবে সবার আগে জেনে নাও, তার দুঃখটা আসলে কোথায়। জেনে না নিলে দেখা যাবে, তুমি যা দিয়ে তার দুঃখ দূর করার চেষ্টা করছ, তার দুঃখের উৎস বরং ওটাই! এতে তার দুঃখ উলটো বেড়ে যাবে, এবং তোমার আচরণে সে হঠাৎ করেই বিষণ্ণ ও অসুস্থ হয়ে পড়বে। কার‌ও উপকার করতে চেয়ে বোকার মতো ক্ষতি করে বসে থেকো না। মনে রেখো, একেক মানুষ একেক রকমের, তাই একেক মানুষের শান্তি একেক জায়গায়। পছন্দ ও অভিজ্ঞতা সবার এক ধরনের নয়। সবাই সব জায়গায় সুখ পায় না। যত জীবন, তত যাপন।

ছয়। একটা কথা কী, জানো? তুমি না আমাকে ভালোবাসতেই পারোনি! নিজের মনে করতে পারোনি কখনোই আমাকে। আর আমার যখন এই ব্যাপারটা মনে হয়, তখন খুব কষ্ট হয় বুকের মাঝে, খুব অভিমান জমে ওঠে। তখন মনে হয়, চুপচাপ দূরে সরে যাই। কিন্তু সেই সাথে আবার এটাও মনে হয়, তুমি আমাকে ফিল করতে না পারলে কী হবে? আমি তো তোমাকে প্রচণ্ড পরিমাণে ভালোবাসি! ছেড়ে যাই কী করে বলো তো!

আমি সবসময় তোমাকে ভালো রাখার চিন্তা করি, সকল সুখ এনে দিতে চেষ্টা করি আমার সাধ্যমতো। কিন্তু দ্যাখো, আমার সাধ ঠিকই আছে, তবে সাধ্যটা প্রয়োগ করার জায়গাটাই তুমি আমাকে দাও না! আচ্ছা, তুমি আমাকে ভালোবাসতে পারো না কেন? আমি কিন্তু বুঝি, বাবু, ভালোবাসলে ব্যাপারগুলো অন্য রকম হতো। খুব সূক্ষ্ম বিষয়েও তুমি আমাকে ভাবতে, সূক্ষ্ম বিষয়গুলোতেও তুমি আমাকে উজাড় করে ভালোবাসতে। যেখানে ভালোই বাসো না, সেখানে উজাড় করে ভালোবাসা আসবে কোত্থেকে? আমি ভালোবাসার কাঙাল টাইপ মানুষ। কিন্তু দ্যাখো, আমার কপালেই ভালোবাসা জুটল না!

আমার খুব ইচ্ছে, পৃথিবীতে নতুন একটা ভালোবাসার অমর কাহিনির সৃষ্টি হোক। চণ্ডীদাস-রজকিনী, লাইলি-মজনু, রোমিয়ো-জুলিয়েট, রাধা-কৃষ্ণের কাহিনির মতন কিছু-একটা হোক, যা হবে তোমার আর আমার অমর প্রেমকাহিনি, যা সকল মানুষের মুখে মুখে আজীবন থেকে যাবে। তুমি আর আমি হয়তো পৃথিবীতে থাকব না, কিন্তু পৃথিবীতে তোমার আমার ভালোবাসা আজীবন ইতিহাস হয়ে থেকে যাবে। আচ্ছা, এই সৃষ্টিটা হবে কী করে বলো তো? এটার জন্য তো অনেক নিষ্ঠা, ত্যাগ আর অনেক বেশি ভালোবাসার প্রয়োজন, কিন্তু তুমি তো আমাকে ভালোই বাসতে পারোনি! তবে আমার দিক থেকে আমি হান্ড্রেড পারসেন্ট ডেডিকেশন দিয়ে যাবই!

আমার অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, জানো! বেঁচে থাকলে আর বলার সুযোগ হলে কোনও একদিন তোমাকে এইসব বলব। আমার অনেক ইচ্ছে করে তোমার বুকে মাথা রেখে কাঁদতে। তাহলে হয়তো আমার কষ্ট কিছুটা কমত। আচ্ছা, তোমার বুকে মাথা রাখলে কি তুমি আমার কষ্টগুলো বুঝতে পারবে? না, তুমি পারবে না। কারণ তুমি আমাকে ভালোবাসতে পারোনি। আমি যখন টের পাই বা ফিল করি যে তুমি আমাকে ভালোবাসো না, বিশ্বাস করো, তখন দমটা মনে হয় বন্ধ হয়ে যায়। মনে হয়, এর মতো যন্ত্রণা আর কি কিছু আছে? অথচ সারাক্ষণই নিজেকে বুঝিয়ে যাই, না না, তুমি আমাকে ভালোবাসো! বাকি যা টের পাই, ও সবই আমার মনের ভুল! আমি অনেক বোকা, জানো! শুধু বোকারাই কষ্ট বাড়াতে পাগলের মতো ভালোবাসে। চালাকরা কিন্তু কাউকে এভাবে ভালোবাসে না। কারণ ওরা এর পরিণতিটা জানে। তাই ওরা নিজেকে কষ্ট পাওয়া থেকে সেইফ রাখে। আমার মতো বোকা গাধাগুলোই ভালোবেসে ফেলে। এমনকী নিজের জীবনের প্রতিটি মিনিটে, সব কাজে ভালোবাসার মানুষটাকে ভাবে। মনে মনে তার সঙ্গে প্রতিটি মুহূর্ত শেয়ার করে, কথা বলে।

আমি তো মনে মনে সারাক্ষণই তোমার সঙ্গে কথা বলি! তবে ওই জায়গাতেও আমি একা একাই বকবক করি। তুমি কোনও কথাই বলো না, যেমনটা ঠিক এখনও বলো না, তেমন। মানুষ কখনোই তার কাছে-থাকা দৌলতের মর্যাদাটা দিতে পারে না। বুঝতেই পারে না এর মর্মটা। তোমার জীবনে কিছু মানুষ চিরন্তন সত্য। এরা আজীবন থেকে যাবে তোমার সঙ্গে…প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে। কখনোই হারিয়ে যাবে না।


আমি অন্তরালেই থেকে যাব। অন্তরালে থেকে হারিয়ে গেলেও কিছুই এসে যাবে না। বললাম না আমার তো কোথাও কোনও জায়গাই নেই! তোমাকে যারা ভালোবাসে, তাদের মাঝে কিছু মানুষকে, তুমি একদমই, আমাকে যেমন গুরুত্ব দাও, ঠিক তেমনটাই গুরুত্ব দাও। আলাদাভাবে আমার কোনও জায়গা নেই, গুরুত্ব নেই। কিন্তু জানো, আমি এটাও জানি, গভীরভাবে বিশ্বাসও করি---এই তুমিই একদিন আমাকে ভীষণ রকমের ভালোবেসে ফেলবে, কিন্তু সেদিন আমাকে আর কোথাও খুঁজে পাবে না।


ভাবনা: আটশো চুরানব্বই
………………………………………………………

এক। নাহ্, বরং চলে যাই! আপনার সঙ্গে কথা বলেও-বা আর কী হবে! তার চেয়ে নতুন প্রেমিক খুঁজে নেওয়া ঢের ভালো। এই বসন্তটা অন্তত প্রেমিকের সঙ্গে কাটানো যাবে। আপনি থাকুন আমার শহরে নতুন মনের মানুষটাকে নিয়ে...

কেন যে আপনাকেই ভালোবাসতে গিয়েছিলাম। যাকগে, বাদ দিন! এই দুনিয়ায় সত্যিকারের ভালোবাসার দাম নেই, আর আমি কিনা এক আপনাকেই ভালোবেসে পথের ফকির হয়ে বসে আছি!

নতুন প্রেমিক হবে আমার। হয়তো তাকে নিয়ে এত কিছু লিখব না, কিন্তু তাকে আপনার চাইতেও বেশি ভালোবাসব।

যাবার আগে একটা কথা বলে যাই, আমার গিফটটা পাঠিয়ে দেবেন তো আমার বাসায়! আপনার ব্যবহার-করা কোনও একটা জিনিস দেবেন। ধুয়ে দেবেন না ভুলেও, যাতে আপনার গায়ের ঘ্রাণটা সেখানে থাকে---তোয়ালে, গেঞ্জি বা রুমালও হতে পারে...যেটা আপনার মন চায়!

আপনার বিশেষ একজনের জন্মদিন এই মাসে, মনে আছে আপনার? গতবার মনে করিয়ে দিয়েছিলাম। বলছিলেন, আমি নাকি সঠিক মানুষটার জন্য সঠিক কাজটাই করেছি। আসলে আপনার মাকে আমিও ভালোবাসি। সে আমারও মায়ের মতো। মনে রাখি তাই মায়ের জন্মদিন।

আমার অসুস্থ লাগছে, যা-ই হোক। যাইগা। কী আর করমু! না দেন দেখা, না কন কথা, তার চাইতে আমি থাকি একা!

এতটা কঠোর হইয়েন না কার‌ও প্রতি। আমরা মানুষ, যন্ত্র না। অতটা সহ্য করন যায় না!

পুনশ্চ। তোমার ব্যবহার-করা এমন কিছু একটা দেবে, যেটা আমি বহুকাল কাছে রেখে দিতে পারি। সেটা পোশাকও হতে পারে, তবে অবশ্যই তোমার ব্যবহার-করা। এবং তোমার খুব বেশি পছন্দের যেটা, সেটা দিয়ো না। 

তুমি লোক পাঠিয়ে অথবা নিজে এসে দিয়ে যেয়ো। আমার কাছে তোমাকে রেখে দেবার সামর্থ্য এবং শক্তি আমার নেই, কিন্তু তোমার ব্যবহার-করা জিনিস আমি রাখতে পারব!

দুই। তোমায় বুঝতে চাই বলেই তোমার সঙ্গে আরও অনেকটা সময় আমার থেকে যাবার খুব ইচ্ছে...তোমাকে আমার মতো করে নয়, ঠিক যেমনটা তুমি, সেইভাবেই বুঝতে চাই।

আমার নিজের কাছে, আমার চাইতেও তোমার দিকটা আগে ভাবতে হয়। আগে তুমি, তার পর আমি।
তুমি ছাড়া "ভালোবাসা" শব্দটা বড্ড এতিম!

আকাশের দিকে এক বার তাকিয়ে দেখেছ? আজকের চাঁদটা সুন্দর না? অবশ্য চাঁদ তো সবসময়ই সুন্দর...একদমই তোমার মতো!

আচ্ছা, তুমি কি চাঁদের মতনই কেউ? ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না, কিন্তু তার সৌন্দর্য অনুভব করা যায়, তাকে ভালোবাসা যায়।

আমার ইচ্ছে করছে এই চাঁদের আলোয় হাঁটতে তোমার সঙ্গে, আর খালিগলায় তোমার একটা গান শুনতে।

প্রিয়, আমারে দিয়ো না আর অবহেলা,
পারো যদি, বুকে দিয়ো ঠাঁই;
তুমি আর আমি দু-জন মিলে চলো চাঁদের দেশে যাই...

তিন। জানো, আজকাল জ্বর হলে কেউ দেখতে আসে না! ভালোবেসে কেউ বলেও না, তোমার কপালে হাতটা রেখে দেখি তো কত হলো জ্বর!

করোনা বা মহামারির কাছে সবাই কেমন যেন ভীতু!

হলেও হতে পারত কেউ একজন এই কপালের জলপট্টি!

অনেকসময় জল আগুন নেভাতে সাহায্য করে, আবার অনেকসময় আগুন শীতের প্রচণ্ড ঠান্ডা দূর করতে...

আসলে কখন, কোনটা কাজে লাগবে, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। আমাকে যদি ক্ষতিকারক বা শান্তি নষ্ট করার মানুষ বলে মনে হয় তোমার, সেজন্য আমি সরি।

চার। তোমাকে আজকাল ভালোবাসি না, এর মানে যে ঘৃণা করি, তা-ও নয়।

আসলে আমি ভালোবাসি মানে ভালোই বাসি, যখন মনে হয়, না, থাক, দরকার নেই আর ভালোবাসার, তখন আর বাসি না।

ঘৃণাটাকে সহজে ঢুকতে দিই না নিজের ভেতর। এতে করে যদি নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসার মতো গুণটা হারিয়ে যায়, সেই ভয়ে হয়তো!

ভালোবাসার অপর নাম অভিযোগ কিংবা ঘৃণা নয়।

সেদিন তোমার এক লেখায় পড়লাম, তুমি নাকি পাশে থেকে বা কাছে থেকেও শাস্তি দিতে জানো।
আচ্ছা, শাস্তিটা দাও কাদের? যাদের তুমি ভালোবাসো না, তাদের? না কি যারা তোমায় ভালোবাসে, তাদের? 

তুমি তো বলেছিলে, যে তোমার ক্ষতি করে, তুমি তাকেও ছেড়ে দাও, প্রতিশোধ কখনও নাও না।
তবে?!

কোন অপরাধে শাস্তি দাও?!

আর যে ক্ষতি করে, তাকে ছেড়ে দাও!?

তুমি এত যে কঠোর হও, আসলে কিন্তু এতটা কঠোর আদতে তুমি ন‌ও।

একটা অনুরোধ করি? রাখবে? যে মানুষটা তোমায় ভালোবাসে, তাকে ভালোবাসতে না-ইবা পারো, শাস্তিটা দিয়ো না, কেমন?

ভালোবাসা কোনও অপরাধ নয় নিশ্চয়ই! রিকোয়েস্ট রইল।

কাছে থেকে শাস্তিটা যাকে দাও, মনে রেখো এবং মাথায়ও রেখো, তোমার কাছে থাকা না থাকার উপর ভিত্তি করে মানুষটা তোমাকে ভালোবাসেনি।

তোমায় লিখছি কেন জানি না। জ্বর ভীষণ। খারাপ লাগছে।

পাঁচ। প্রিয়, আজ এই বৃষ্টিভেজা রাতে তুমি আর আমি ভূত-পেত্নীকে সঙ্গে নিয়ে...তোমার বাসার কাছে যে কৃষ্ণচূড়া গাছটা, সেই গাছের নিচে দাঁড়িয়ে চলো না একসঙ্গে ভিজি! তোমার কফির সেই লম্বাটে সাদা মগটা হাতে চলো না ভিজি!

আমার ন-টা বছর কেটে গেছে তোমার অপেক্ষায়। বলেছিলে, কোনও এক বর্ষায় দু-জন মিলে একসঙ্গে ভিজব আর কফি পান করব। দ্যাখো, আজও মনে আছে তোমার সেই কথা, তোমার হয়তো মনে নেই! তাতে কী! তুমি যে আমার সেই মানুষটা, যার অনেক কিছুই মনে থাকে না...

দু-চোখে বহু বহুবার বৃষ্টি নামিয়েছ, আজ নাহয় ভিজলাম বৃষ্টিতে আমরা দু-জন!

ছয়। জানো, আজকাল তোমার সঙ্গে নয়, তোমার রাগের সঙ্গে আমার ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। অবহেলা...সে তো তোমার দেওয়া সবচেয়ে বেশি দামি উপহার আমার জন্য!

কষ্ট...তা-ও অনেক দামি। এক তুমি ছাড়া আর কে-ইবা তা দেবে বলো?

ধীরে ধীরে অভ্যেসটা করিয়েই ছাড়ছ...কীসের, তা তুমিই জানো ভালো!

সপ্তাহের প্রতিটি দিন চব্বিশ ঘণ্টাই...এক তুমিই থেকে যাও আমার মাথায়; আজকাল তো স্বপ্নেও তোমায় চাই। যদি অভয় দাও, তবে তোমায় নিয়ে স্বপ্নেও থাকতে চাই। স্বপ্ন ভেঙে যাবার সাথে সাথে তুমি হারিয়ে যাবে বা হাওয়ায় মিশে যাবে, এমনটা কিন্তু নয়।

আমি তো তোমাকে বাস্তবেই পাই, এখন নাহয় স্বপ্নেও থেকো?

আমার আজকাল ভীষণ ইচ্ছে করে সংসার করতে, শুধুই তোমার সঙ্গে। আমি জানি না, তোমায় কতটুকু শান্তিতে রাখতে পারব, তবুও তুমি পাশে থাকলে আমার মনে হয় আমি শতকরা নব্বই ভাগ হলেও পারব!

মেয়েরা ভীষণ সংসারলোভী হয়, আজকাল আমারও মনে হয় তা-ই হয়েছে। তবে তুমি ছাড়া আর কাউকেই চাই না আমি আমার এই ছোট্ট জীবনে।

মুখে অনেকসময় অনেক কিছু বলতে পারি না তোমায়, তবে মনে মনে বলি, তুমি শুধুই আমার। জানো, ভীষণ লজ্জা হয় এইসব বলতে।

আমাদের ছোট্ট একটা সংসার হতে পারত, পাহাড়ের গা ঘেঁষে সেই ছোট্ট টিলায়, যেখানে তোমার ভালোলাগাগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে!

পাশে থেকে তোমার অনেক সৃষ্টির সঙ্গী হতে পারতাম! দু-জন মিলে একসঙ্গে অনেক কিছু লিখেও ফেলতাম হয়তো!

বেঁচে থাকার জন্য খুব বেশি কিছু যে লাগত না আমাদের, সেটা আমরা ভালো করেই জানি।

ছোট্ট এই জীবন দিব্যি কেটে যেত তোমার সঙ্গে রাগ করে, তোমার বকা খেয়ে, তোমার বুকে মাথা রেখে কান্নাকাটি করে, তোমায় ভালোবেসে, তোমার সৃষ্টির সাক্ষী হতে পেরে। আরও যে কত-কী বলো!
আচ্ছা, আমি কি কখনও তোমার কাছে ভালোবাসা চেয়ে বসতাম? মনে হয় না। একসঙ্গে সংসার করতে করতে কখন যে ভালোবাসা হয়ে যেত, হয়তো তুমি নিজেও জানতে না!

তোমাকে গতবছর বলেছিলাম, আমাদের একটা মেয়ে হলে ভালো হতো! মেয়েটা বাবার মতোই দেখতে সুন্দর হতো। চোখদুটো হতো একদমই বাবার মতো এবং মানুষ হিসেবেও আমি চাইতাম বাবার মতো ভালো একজন মানুষ হোক। আর হ্যাঁ, নিশ্চয়ই সে আমার মতো ধৈর্যশীল কোনও মানুষ‌ই হতো।


জানো, আমি আমাদের মেয়ের নামও ঠিক করে রেখেছি তোমাকে না জানিয়ে!

"নিধি" রাখতাম আমাদের মেয়ের নাম। তুমি, আমি আর আমাদের নিধি; সঙ্গে তোমার বাবা, মা, পরিবার। খুব সুন্দর কেটে যেত আমাদের জীবন। তাই না, বলো?

বেঁচে থাকার জন্য খুব বেশি কিছু কি লাগে বলো? আমার তো এক তুমি ছাড়া আর তেমন কিছুই লাগে না। 

আমাদের না-হওয়া সংসারটা আজও থেকে থেকে ভীষণ কাঁদতে থাকে! আমাদের মেয়েটা...ওর কথা আর কী বলব!

মেয়েটার মা তার বাবাকে যে এত ভালোবাসে, এটা মেয়েটা কাছ থেকে দেখলে অনেক কিছুই শিখতে পারত!

আমাদের কিছুই হয়নি কেন? কখনও ভেবে দেখেছ? আমি তোমায় ভালোবেসে সময়‌ই পাই না যে ভাবব! আমার সমস্ত খেয়াল তোমায় ঘিরে।

আমাদের মেয়েটাকে দুনিয়ার আলোই দেখাতে পারলাম না আমরা দু-জন! এইসব যখন মাঝেমধ্যে ভাবি, তখন প্রায়ই ইচ্ছে করে, তোমায় শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করি।

বাবু, আজও ভীষণ ভীষণ ভালোবাসি তোমায়! কতগুলি বছর কেটে গেল দেখেছ?



ভাবনা: আটশো পঁচানব্বই
………………………………………………………

এক। প্রিয়, শুভ সন্ধ্যা!

চলো না একসঙ্গে চা খাই সুমন দাদার দোকানে? খেতে খেতে বলবে তোমার মনখারাপের কারণটা?

বলতে চাইছ না তো? ঠিক আছে, সমস্যা নেই; যখন ইচ্ছে করে বা যাকে ইচ্ছে করে, বোলো।

বাসায় আসবে? চা বানিয়ে দিই তোমায়? জানো, আমি ভালো চা বানাতে পারি না! তবে তোমার জন্য সেটাও শিখে নেবো।

আমার চুপ করে থাকা যদি তোমাকে শান্তি দেয়, তবে আমি চিরদিনের জন্য চুপ হয়ে যাব। তোমার শান্তি আমার কাছে জরুরি, তোমার মন ভালো থাকাটা আমার কাছে সবার আগে।

আমার শহরে এসেছ, অথচ তোমার যত্নটাই করতে পারলাম না, তোমার মনখারাপটা ভালো করতে পারলাম না, তবে আর কেমন বন্ধু হলাম বলো!

আমি ভেবেছি, আমি অনেক দূরে সরে যাব সবার কাছ থেকেই।

এই মুহূর্তে তোমার হাসিমুখ দেখাটা আমার জন্য অনেক কিছু!

ভালোবাসা দূরত্ব ভালোবাসলেও এত দূরত্ব মনে হয় ভালো না।

দুই। জীবনে আর কিছু করতে পারো না পারো, যে তোমাকে ছেড়ে চলে গেছে, তার হাজব্যান্ডের চাইতে নিজেকে অনেক বেশি প্রতিষ্ঠিত করে তোলো। উত্তরটা দিতে হয় উঁচুতে ওঠার মাধ্যমে। রাস্তার হকারদের মতো চেঁচিয়ে আর যা-ই হোক, সমুচিত জবাব দেওয়া যায় না।

তিন। মানুষ চায়, আপনি ব্যাবসা করুন। কিন্তু আপনি ব্যাবসা করে তাকে ছাড়িয়ে যান, এটা তেমন কেউ চায় না। সাফল্য সহ্য করতে পারে, এমন মানুষ খুবই কম দেখা যায়। এই কারণেই আপনি কিংবা আপনার কাছের কেউ ভালো ব্যাবসা করলে, এমনকী তারাও সেটা সহ্য করতে পারে না, যারা ব্যাবসার পক্ষেই সবসময় কথা বলে! মানুষ লুজার থাকতে চায় সঙ্গীসাথী নিয়ে।

যা-ই হোক, যা বলতে এসেছিলাম...

স্টারলিং রুপার গহনা কেনার জন্য এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচাইতে বড়ো এবং বিশ্বস্ত অনলাইন শপ: রৌপ্যরূপ 

এই কমেন্টটা আমার পোস্টে করি। প্রতিষ্ঠানটি আমার ছোটো ভাইয়ের, তাই আমি এটার প্রচার করি। আমার পেইজে, আমার পোস্টে; আপনার কোথাও নয়। ভালো না লাগলে আমাকে আনফলো করে দিন।

আপনারা অনেকেই এই প্রচারটা সহ্য করতে পারেন না। তার পরেও নির্লজ্জের মতো আমাকে ফলো করেন আর করতেই থাকেন। ব্যাপারটা কেমন জানি! এত ভালোবাসা দেখলে ফালতু লাগে। আপনি আমাকে ফলো করলে আমি কিছুই পাই না, কিন্তু ওখান থেকে পণ্য বিক্রি হলে সেই টাকা আমার ঘরের কাজে লাগে। খুব সহজ হিসেব। বোঝার চেষ্টা করুন, বুঝতে না পারলে এখান থেকে দূর হন।

চার। তুমি যাকে পাত্তা দাও না, অনেকেই তার পেছন পেছন ঘোরে একটু পাত্তা পাবার জন্য। আবার যে তোমাকে পাত্তা দেয় না, সে-ও অনেক চেষ্টা করেও আরেকজনের কাছ থেকে পাত্তা পায় না। কী-একটা অবস্থা!

পাঁচ। সেই শুভাকাঙ্ক্ষী দিয়ে কী হয়, যে শুভাকাঙ্ক্ষী আমার বিপদের সময় হাত-পা গুটিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে চুপ করে বসে থাকে?

ছয়। তুমি প্লিজ আমার কথাগুলোকে অভিযোগ হিসেবে নিয়ো না। প্লিজ!

সেই ২০১৪ সালের তুমি আর আজকের তুমি'র মাঝে অনেক পার্থক্য। আমি সেই তুমি'টাকেই খুঁজি আজও!

এমনকী কোনও ভালোবাসাও পাবার আশায় নয়, আমি আজও নিঃস্বার্থভাবে তোমায় ভালোবেসে যেতে পারব; কিন্তু মনে হচ্ছে, আমার এই ভালোবাসার আসলে কোনও প্রয়োজন নেই।

আমার কোনও অভিযোগ নেই। তুমি যাকে খুশি সময় দাও, কার‌ও বাসায় যাও; কোনও সমস্যা নেই। তুমি আমার রুচি অনুযায়ী নিশ্চয়ই বাঁচবে না। তুমি তোমার মতো করেই শান্তিতে থেকো...

আমার একটা বিষয়ই কেমন জানি লাগছে; আমি অনেক নাক উঁচু করে চলি। সহজে কাউকে ফোন দিই না, সহজে কাউকে দেখা করার কথাও বলি না; এমনকী আমি বিপদে পড়লেও কার‌ও কাছেই হেল্প চাই না... আমি শুধুই তোমাকে ফোন দিয়েছিলাম আর দেখা করতে বলেছিলাম। ব্যস্, এতটুকুই!

তুমি যদি কখনও আমাকে ভালো না-ও বাসতে, তবুও আমি তোমার কাছে থেকে তা চেয়ে নিতাম না। আমার ভালোবাসা প্রথম থেকেই নিঃস্বার্থ ছিল; তাই নিতাম না।

শোনো, কঠোর হও, ব্যাপার না। আমি তোমার সবটা জেনেই এবং মেনে নিয়েই ভালোবেসেছি। কোনও টিনেজারের ভালোবাসা ছিল না এটা। আজকাল ভালো অনেকেই বাসে, তবে তাদের আর আমার বয়সও তো এক না, ভালোবাসাটাও তো এক না। তাই না?

মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই বিদায় বলেও কেন এত কিছু বলছি! জানি না। এই শহর ছেড়ে যেদিন যাবে, সেদিন হয়তো অনেকে কাঁদবে, কারণ তাদের জন্য হয়তো অনেক সময় দিয়েছ তুমি কিংবা দেখা করেছ তাদের সঙ্গে!

কিন্তু আমি কখনোই কাঁদব না। কেন, জানো? কারণ তোমার উপস্থিতি-অনুপস্থিতির উপর ভিত্তি করে তোমাকে আমি ভালোবাসিনি। তুমি পৃথিবীর যেখানেই যাও, আমার ভালোবাসতে কোনও সমস্যা হবে না; এর কারণ, তুমি সবসময় আমার মাঝেই থাকো।

তোমাকে যে কী পরিমাণে ভালোটা বেসেছি...আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়, আর কেউই আমার মতো করে ভালোটা তোমাকে কখনোই বাসেনি! এতটা ভালো ঈশ্বরকে বাসলে তিনি এতদিনে আমায় দেখা দিতেন!

আমি সেই আগের তুমি'কে খুঁজে বেড়াই। ভালো থেকো এই শহরে তোমার মনের মানুষদের নিয়ে।


ভাবনা: আটশো ছিয়ানব্বই
………………………………………………………

এক। বড়ো বাথরুম সারার পর আবিষ্কার করলেন, কলে পানি নাই।
প্রেমে পড়ার পর আবিষ্কার করলেন, ভালোবাসার মানুষটাই নাই।

...দুটোই খুব বিশ্রীভাবে দাগ রেখে যায়!

দুই। যারা তোমাকে নিজের দুঃখের কথা বলে আর বলতেই থাকে, তাদের ধারণা, তুমি খুব সুখে আছ। যারা নিজের দুঃখের মার্কেটিং করে না, তাদের কিনা লোকে সুখী ভাবে! হাস্যকর! ওরা বোঝেই না, অন্যের দুঃখ একমাত্র তারাই হজম করতে পারে, যাদের নিজেরই অনেক দুঃখ। এ পৃথিবীতে যার দুঃখ যত বেশি, নিজের দুঃখ নিয়ে সে তত চুপচাপ।

তিন। কাউকে অসীম ভালোবেসে কষ্ট দেবার চাইতে বরং তাকে একটু ভালোবেসে শান্তি দেওয়া অনেক অনেক ভালো। মানুষের স্মৃতিতে শান্তির স্থান ভালোবাসার উপরে। ভালো তো অনেকেই বাসতে পারে, কিন্তু শান্তি দিতে পারে ক-জন! যে ভালোবাসা অশান্তি দেয়, তা শুধুই তীব্র বিরক্তির উদ্রেক করে।

কে আমায় পছন্দ করে, তার চাইতে অনেক বেশি জরুরি হচ্ছে, কে আমায় শান্তি দেয়।

হয় শান্তি, নয় ঘৃণা। ("ঘৃণা" শব্দটি "নির্লিপ্ততা" অর্থে ব্যবহৃত।)

চার। মাঝরাতে ভীষণ কাঁদতে ইচ্ছে করছে তোমার পায়ের কাছে বসে।

তুমি সত্যিই আমার জন্য ভার্চুয়াল জগতের কেউ ছিলে না কখনও। তুমি ছিলে আমার বেঁচে থাকার কারণ, আমার মুখের হাসির উৎস। ভালোবাসা বিষয়টা কী এবং তা এত যে গভীর আর সুন্দর, সেটাও বুঝতে শিখেছি ও জেনেছি তোমায় ভালোবাসার পর।

কাউকে সকাল দিলে তো কাউকে বিকাল, আমার ভাগে ছিল না কিছুই, আর এরই নাম তুমি দিয়েছ কিনা কপাল!

আমাকে তুমি বোকা ভাবো, তাই না? প্লিজ, আমাকে আর বোকা ভেবো না, কেননা আমি সত্যিই বোকা। তুমি বরং আমাকে বোকা জেনো।

ছুঁয়ে-দেখা ভালোবাসা, মানে যে ভালোবাসা শুধুই স্পর্শের উপরই টিকে থাকে, অনেকটা হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো। মুখে নিলাম, আর অমনিই শেষ!

জানো, হাওয়াই মিঠাই আমার ভীষণ ভীষণ পছন্দের। আমি ঘর থেকে বেরোই হাওয়াই মিঠাই খেতে। হ্যাঁ, আমার ঘর থেকে বেরোনোর জন্য এটা একটা ভালো কারণ।

তোমাকে ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করছে, এই ইচ্ছেটা ছিল না কখনোই। তবে হঠাৎ...

তুমি আবার ভেবে বোসো না, তোমাকে আমার প্রায়ই ছুঁয়ে দেখতে মন চায়। আজই প্রথম ইচ্ছে হলো! কেন জানি মনে হচ্ছে, খুব তাড়াতাড়িই অনেক দূরে সরে যাব তোমার কাছ থেকে, আর কখনোই আসব না হয়তো বিরক্ত করার জন্য... সত্যিই এমন মনে হচ্ছে।

অনেকেই ভালোবেসেছে আমায়। আমি না কারুরটাই বুঝতে চাইনি। ওদের কষ্টটা এখন বুঝি, যখন তুমি আমারটা বুঝতে চাও না।

আচ্ছা, তুমি আর আমি তো এক না। তবে কেন বুঝলে না? ব্যতিক্রমটা হতেই হলো, তা-ও আবার আমার বেলাতেই?

দুর্গাবাড়ি রোডে জনতা ব্যাংকের সাথেই যে গলিটা, ওটার মুখে ভালো দুধ-চা বানায়। সন্ধ্যায় গিয়ে প্রায়ই একা একা খেয়ে আসি। কাউকেই লাগে না কখনও সময় কাটানোর জন্য বা একাকিত্ব দূর করার জন্য।

হুম, ভালো যারা বাসতে জানে এবং তা নিঃস্বার্থভাবে, তাদের কখনোই সমস্যা হয় না এবং তারা এই আশায়ও বসে থাকে না, কে ভালোবাসল আর কে বাসল না!

যারা ভালোবাসতেই জানে না, সমস্যাটা হয় মূলত তাদের। কেউ ভালোবাসলেও তাদের অস্বস্তি লাগে; কেউ একটু জানতে যদি চায়, 'খেয়েছ দুপুরে?', তখনও তাদের খুব সমস্যা হয়!

আসলে ভালোবাসা এমনও নয় যে বাসতেই হবে ভালোবাসা পাবার বিনিময়ে।

তোমার সঙ্গে তো আমার কোনও সম্পর্ক হয়নি। তোমাকে প্রথম থেকেই পছন্দ করতাম না তেমন একটা। অথচ ধীরে ধীরে তোমাকে ভালোবেসেই ফেললাম! এরকম হয়।

তুমি হয়তো লক্ষ করোনি, আর আমিও খুব করে বলেও বসিনি। গত একটা বছরে কী পরিমাণে যে পাগলামিটা করলাম, তা দেখে আমি নিজেও অবাক!

তোমাকে ছেড়ে থাকতে ইচ্ছে করে না আমার। তাই হয়তো চুপ করে থাকি বেশিরভাগ সময়ই, আর নীরবে সহ্য করে যাই তোমার দেওয়া শত-হাজার আঘাত!

অবহেলাটা আরও বাড়িয়ে দিয়ো, কারণ এ ছাড়া আমাকে দেবার মতো আর কিছুই নেই তোমার!
চেয়েছিলাম একটুখানি সময়, আর তুমি কিনা বললে, আমার সময় আমি দিব, যাকে খুশি তাকে দিব! হুহ্...অহংকারী লোক একটা!

এমন একটা ভাব যেন তার সময়ের জন্যই আমি তাকে ভালোবেসেছি! অ্যাই ছেলে, তুমি এত আজাইরা কেন!? 

যাকে খুশি তাকে সময় কেন দিবে? যে তোমার জন্য কাঁদতে কাঁদতে হাসতে পর্যন্ত ভুলে গেছে, তাকে তো তুমি দিতে পারো সময়টা। তাই না? যাদের সময় দাও, তাদের কেউ কি তোমার কথা ভেবে কখনও এক ফোঁটাও অশ্রু ঝরিয়েছে?

কঞ্জুস লোকটা আমার! ভালো না-ইবা বাসো, উপহার হিসেবে কিছু সময় অন্তত দিয়ো...?