- ও মাই গড! তোমার কাছে চলে আসব? পাগলা কুত্তা কামড়াইসে আমারে! মরলে তো একবারেই চট করে মরে যাব, আর তোমার কাছে এলে প্রতিদিনই একটু একটু করে মরতে হবে! অবশ্য আনন্দে বাঁচলেও মরতে হবে, কষ্টে বাঁচলেও মরতে হবে…তো তোমার জন্য হলেও একটু কষ্টে বেঁচে মরতে অসুবিধা কোথায়?--এই দর্শনে আমি তোমার কাছে চলে আসতেই পারি! হা হা হা! বাই দ্য ওয়ে, গানটা আমারও প্রিয়, খুবই সুন্দর গান।
- যা মন চায়, বলুন আপনি। আমি যা বলেছি, মন থেকেই বলেছি। গানটা আবারও শুনুন! আমার জন্য একবার, প্লিজ!
- আচ্ছা, ঠিক আছে।
- মনে করো, যদি সব ছেড়ে হায়, চলে যেতে হয় কখনও আমায়…
- এটাও খুব প্রিয়! চিত্রা সিং এক পিস জ্যান্ত ভালোবাসার নাম! জীবনে ওরকম কাউকে পেলে আস্ত একটা জীবনকেও হাসিমুখে গুডবাই বলে দেওয়া যায়!
- আমি যখন ফেসবুক থেকে হারিয়ে যাব, তখন এই লাইনগুলো…আপনার জন্য!
- আচ্ছা।
- শুধুই আচ্ছা? আমার জন্য এত ছোট ছোট রিপ্লাই-ই বরাদ্দ?
- আর কী বলা যায়? হারিয়ে যাওয়া ভালো! কাউকে ছেড়ে চলে যাওয়ার মধ্যেও এক ধরনের রোমান্টিকতা আছে! এক হাত ছাড়ি, ধরি আর একটা হাত…সুইট না ব্যাপারটা? শুভ রাত্রি।
- আপনার জন্য উপহারটি তৈরি করে একদিন না জানিয়েই আপনাকে পাঠিয়ে দেবো। সাথে একটা গল্প। অনেক যত্নে লেখা একটা গল্প। কীসের? সেটা নাহয় পরেই জানলেন।
আমি একদামের দোকানে যাই প্রায়ই। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসের কারণে টাকা কম থাকলেও নিজের অস্তিত্বকে ভুলে যেতে পারি না। তা ছাড়া দরদামে আমি সব সময়ই ঠকে যাই। তো সেদিন আমি সোয়েটার কেনার জন্য এরকম একটি দোকানে গেলাম। ওরা জানত, আমি গরীব মানুষ। আমি অভাবী আজ ভাগ্যের কারণে! যা-ই হোক, যাওয়ার সাথে সাথে ওরা বলল, আপনি অমুকের মেয়ে না? খুব দুঃখ হয় আপনাদের জন্য। কত প্রতাপশালী একটা পরিবার ছিল আপনাদের, অথচ আজ সব শেষ…
আমি একটি সোয়েটার ধরি, দামটা অনেক। আমার খুব পছন্দ হয় বিধায় আমি টাকাটা দিয়ে ওটা নিয়ে চলে আসি। আসার পর দেখি, পকেটটা খালি! কীভাবে সারামাস চলব, জানতাম না। পকেটে এক টাকাও নেই, শুধু হাতে সোয়েটারটা আছে--একটুকরো আনন্দ! যখন সোয়েটারটি পরলাম, দেখলাম, খুব টাইট হচ্ছে! দোকানে গিয়ে আর একটু বড় সাইজ আনার চেষ্টা করি। দেখি, আর কোনও সাইজই নেই। বাকিগুলোর সাইজ পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু ওই সোয়েটার ছাড়া একটাও আমার পছন্দ হচ্ছে না। তারা আমার ইমোশনটা বুঝতে পারে এবং টাকাটা জোর করে ফেরত দেয়। টাকা দিয়ে ফেরত নেবার মত লো-মেনটালিটি আমার নেই! কিন্তু লোকগুলো বুঝতে পারে আমাকে! তাই টাকাটা ফেরত দেয়! সেদিন শ্রদ্ধা জন্মেছিল তাঁদের প্রতি! ভালো মানুষ এখনও আছে পৃথিবীতে! যেমন: আপনি! আচ্ছা, আমি যে এত কিছুর পরও আপনাকে ভালো ভাবি, ভালো দেখি, এটা ভাবতেও কি আপনার বিরক্ত লাগে?
- শুভ সকাল!
- শুভ সকাল…এই শুভসকাল’টা আপনি না বললে আমার সকালটাই শুভ হয় না। খেয়েছেন সকালে?
- হুঁ। তুমি?
- না! যারা সব সময়ই নিয়মমতো খেতে পায় বা খায়, আমি ওদের দলে নই। Take care of yourself. Bye. (আমি কিন্তু ফেসবুক না।) Never treat me as Facebook. Your absence hurts me much.
- খেয়ে নাও।
- আপনার লেখাকে ছেড়ে থাকতে আমার খু্ব খুব কষ্ট হবে! আপনি খেয়েছেন?
- খাব। তুমি খেয়েছ?
- না। আচ্ছা, খেয়ে নিন।
- তুমি?
- আমি পরে খাব। মাথা ব্যথা করছে! Take care of yourself. Bye.
- OK.
- খেয়েছেন? না খেলে আগে খেয়ে নিন।
- তুমিও খেয়ে নিয়ো। ফিট থাকতে হবে তো!
- পড়াতে গিয়েছিলাম। আপনি ভালো থাকলে আমিও ভালো থাকি।
- খাওনি কেন?
- কারণটা বলেছি। খেয়াল করেননি! আপনি আমাকে ভুলে গেছেন। আপনি খেয়াল করে আমার কথাগুলো পড়েন না। আমার অস্তিত্ব আপনার মাথায়ই আসে না কখনও! আপনার জীবনে আমি কেউ নই। সত্যটা মেনে নিন। ভালো থাকুন।
- আবার! শুভ সকাল!
- আমার মনটা ভালো নেই! আমার এক কাকা মারা গেছেন।
- ওঁ দিব্যান্ লোকান্ সঃ গচ্ছতু।
- Block me. I can’t think a single moment without you. It hurts me much. You the only one who can make me feel happy, who can make my day beautiful. I am getting emotionally involved with you. It is one-sided, I know it better. So, I need to be left until it becomes too late. At the end of the day it will only hurt me...only me. No one else will suffer.
- Relax...
- BLOCK me. I don’t want to go through the same traumatic situation again! It won’t make you feel anything...but it will make me suffer. আমি অনেক ভেবেছি। ভেবে এটাই পেয়েছি। ভালোবাসা কষ্ট ছাড়া আর কিছু দেয় না। আমি অল্প থাকতেই এই মায়া কাটিয়ে উঠতে চাই।
- এমন অস্থির হয়ে আছ কেন?
- আমি সিরিয়াস! আমি আর কাউকে আমার পৃথিবী বানাতে চাই না। কিন্তু আমি বুঝে গেছি, আপনি একটু একটু করে আমার পৃথিবী হয়ে যাচ্ছেন। এটা ঠিক না। প্লিজ ব্লক মি। আমি ফেসবুকের অন্য সবার মতন না, আপনি জানেন! প্লিজ, ব্লক মি।
আমার মুখ দেখে কি আপনার মনে হয়, আমি অন্য সবার মতো মিথ্যে বলি? আপনি আমার সাথে কথা না বললে আমার কষ্ট হয়! আপনি রাগ করে সেদিন যা-যা লিখেছেন, সেটা পড়ে আমি সারারাত কষ্ট পেয়েছি। এই কষ্টগুলো আপনার কাছে ফেসবুক হলেও আমার কাছে না। আমাকে আপনি ব্লক করে দিন। আপনাকে আমি ব্লক করতে পারব না। প্লিজ! আপনি জানেন না, আমি কতটা সংবেদনশীল! আমি অনেক অনেক কষ্ট পাব! আর সেটা কমপ্লিটলি ওয়ান-সাইডেড। আমাকে বাঁচান! আমি আপনাকে ভুলে যেতে চাই! আমাকে ব্লক করে দিন। আমি দুইদিন কেঁদে কেঁদে আবার ঠিক হয়ে যাব! আমি মেয়ে তো, পাগলের মতো কাঁদব দুইদিন, অসুস্থ হয়ে যাব কাঁদতে কাঁদতে, আমার পৃথিবী অসাড় ও অন্ধকার হয়ে আসবে, এমনকি আমি মৃত্যুর কাছাকাছিই চলে যাব, আবার সব ঠিক হয়ে যাবে! মেয়েরা সহজে মরে না! কিন্তু এভাবে যত আপনি আমার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকবেন, ততই আপনার প্রতি আমার এক্সপেকটেশন বাড়বে! কী লাভ! এমন সেধে কষ্ট পাবার কী মানে! দেখি তো সবাই-ই কেমন ভালো থাকে! থাকি না শুধু আমি। ভালোবাসাকে স্রেফ পার্ট-টাইম পারসুয়েশন হিসেবে নিতে পারে না যারা, তাদের অনেক কষ্ট পেতে হয়!
সেই দিন আমি বিকেলে ঘুম থেকে হঠাৎ জেগে উঠি…আমার মনে হয়, আমি তো জিজ্ঞেস করিনি, মানুষটা খেয়েছে কি না! তাড়াতাড়ি মেসেজ পাঠাই। মাথায় অন্য কিছু ছিল না, মাথা কাজই করছিল না। আপনিই বলুন না, এটা কি শুধুই ফেসবুক? আমি বুঝতে পারছি, এটা ফেসবুকের বাইরে এক অচেনা টান! যে টানের কোনও মানে নেই, কোনও স্বীকৃতি নেই, কোনও স্বস্তি নেই! বরং আছে কিছু উপেক্ষা আর হিমশীতল প্রতিদান! আমি এমন অদৃশ্য মায়া থেকে বের হতে চাই! আমাকে ব্লক করে দিন, পেইজ থেকেও ব্যান করে দিন…যাতে আমি আর কখনও আপনার কোনও কিছুই খুঁজে না পাই! আমাকে ব্লক করে দিলে আপনার কিছুই এসে যাবে না, কিন্তু আমি বেঁচে যাব!
- সন্ধ্যায় কিছু খেয়েছ? না কি শুধুই লিখে যাচ্ছ মনে যা আসছে?
- আমার মতো ঊনমানুষের খবর কেউ রাখে না। আমার জন্য কখনও কারও কষ্ট হয় না। Even a dog receives better treatment than me! লোকে কুকুরকে লাথি মারে, সেক্ষেত্রে তো সে কিছুটা হলেও অ্যাটেনশন পায়, হোক তা নেগেটিভ অ্যাটেনশন, তবু পায় তো! একজন নীরজা তাও পায় না, সে পায় শুধুই ঔদাসীন্য! আমার প্রিয় মানুষটি আমার ব্যাপারে উদাসীন হয়ে আছে, এটা সহ্য করার চেয়ে বরং মানুষটির চরম ক্রোধ সহ্য করাও অনেক ভালো!
আমি আজ রাস্তায় সেন্সলেস হয়ে পড়ে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, আজকেই আমার শেষদিন! আজ আমি একা বের হলে আর হয়তো ফিরতাম না। আমার সাথে দুইজন ঈশ্বর ছিলেন, ওঁরাই আজকে আমাকে নিয়ে এসেছেন ধরে ধরে। সেন্স ফেরার পর শুনলাম, আমি নাকি রাস্তার মাঝেই শুয়ে পড়েছিলাম। যা-ই হোক, এই সব আপনাকে বলে কী লাভ! আপনার কাছে…আমি বাঁচলেও কী, আর মরলেও-বা কী? আমি আপনাকে ভুলতে চাই! আমি আপনার জন্য কোনও রকমের কোনও কষ্ট পেতে চাই না না না! তবুও আমি পাচ্ছি! এ কষ্ট থেকে আমাকে উঠে দাঁড়াতে হবেই! কেবলই কষ্ট পেয়ে বেঁচে থাকার জন্য আমি পৃথিবীতে আসিনি। আপনার কথাটিই বললাম--হাঁটি, হোঁচট খাই, আবার সামলে নিই নিজেকে!
আমি আমার এই একতরফা ভালোবাসাটাকে আর সামনে এগোতে দেবো না। এদিকে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি, আর ওদিকে আমার এই পাগলামিটা আপনাকে স্পর্শই করছে না! ভাবছেন, মেয়েটা পাগল হয়ে গেছে, মেয়েটার ইমিডিয়েটলি ডাক্তারের কাছে যাওয়া দরকার! অনেক হয়েছে। এনাফ ইজ এনাফ! আর না!
- শুভ রাত্রি!
- খুবই সুন্দর! মেসেজ না পড়েই উত্তর! আমারও কষ্ট হয়! আপনি তা বুঝবেন না!
- পড়েছি। পুরোটাই পড়েছি! তোমার এই অস্থিরতার উত্তরে কী বলতে হয়, আমি সত্যিই জানি না!
- আমি চলে যাব ভাবছি! আমি আর কোনও কথা বলতে চাই না আপনার সাথে! এই দুইমাসে আমার ব্যবহারে কষ্ট পেলে ক্ষমা করে দেবেন।
- আর কী কী ভাবছ?
- আমার কোনও কথাই তো আপনাকে স্পর্শ করে না। বাড়িতে একটা বেড়াল থাকলেও লোকে ওটার দিকে কখনও-সখনও তাকায়, মাছের একটা কাঁটা ছুড়ে মারে…আমি তো তারও অধম! আমি সব বুঝেছি। আমি চলে যাব কালকেই! আমি আর কারও জন্য কষ্ট পেতে চাই না। যতটুক হয়েছে, ততটুকই থাক!
তুই আসবি কবে?
…লাস্ট লাইনটা ভুলে গেছে। ওটা আপনাকে দিইনি।
আমি কেবলই ফেসবুক! আমি ফেসবুক হয়েই থাকতে চাই! কিন্তু আমার আবেগটা ফেসবুক না। আর আমি আমার আবেগকে সম্মান করি। পুরো পৃথিবীর চাইতে আমার আবেগের দাম বেশি…অন্তত আমার কাছে! তাই চলে যাব! যতটুক কথা হয়েছে, ততটুকই স্মৃতি হিসেবে থাকবে! আপনার কথা ভেবে কাঁদতে কাঁদতে প্রতিরাতে একটা মেয়ে টুক্ করে কফিনে ঢুকে পড়ে…আপনি কখনওই একটিবারও তার খোঁজ নিলেন না! এ বড় পাপ হে!…মনে রাখবেন!
আমার সাথে ঝগড়া করার সময় তো পৃষ্ঠাভরে লিখেন। আর এমনি সময় মেসেজটাও সিন করেন না।
আমার ভালোবাসা ফেসবুকের সস্তা মেয়েদের ভালোবাসার মতন না। এটা সত্য! এটা পবিত্র, এটা নিখাদ। এই দুইমাসে আমি অবচেতনভাবেই কীভাবে একটা ধরাছোঁয়ার বাইরে-থাকা মানুষকে এত বেশি ভালোবেসে ফেললাম, আমি জানি না। আপনি কি জানেন, আপনার কথা ভাবতে ভাবতে প্রচণ্ড মানসিক চাপের কারণে আমি আজ মাথাঘুরে পড়ে গিয়েছিলাম? তাতে আপনার কী! আমি সব সময় ভুল জায়গায় ভালোবেসে ফেলি! আর একাই কষ্ট পাই। আমার জন্য অপর দিকের মানুষটার কিছুই থাকে না--না কোনও অনুভূতি, না কোনও আবেগ! আমার জন্মই হয়েছে আমার সমস্ত অনুভূতি ভুল মানুষকে বিলিয়ে দেওয়ার জন্য। এবারও একই কাজটা করলাম! একজন মানুষ জীবনে ঠিক কতবার একই ভুলটা করতে পারে!
আমি কেন এমন করে আপনাকে ভালোবেসে ফেললাম? আমি তো আপনার কোনও অর্জনকে ভালোবাসিনি। তা হলে এত দিনে একবার হলেও বলতাম, আমার একটা চাকরি দরকার…কীভাবে পড়াশুনা করব? কিন্তু আমার তো কোনও দিনই এই কথাটা জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছেও হলো না!
আমি শুধু জানি, আপনি চলে গেলে আমাকে ‘শুভ সকাল’ বলার আর কেউ থাকবে না। সামান্য একটা শুভসকাল-এর লোভ আমাকে আটকে ফেলেছে! আপনি আমার পৃথিবী হয়ে গেছেন এই কয় দিনেই! Answer me, আমি এখন কীভাবে আমার পৃথিবী ছাড়া exist করব?
এটা নিছকই ফেসবুক হলে আমি কেন কাঁদি আপনার জন্য? আজকে সেন্স ফেরার পর চোখ খুলে কেন আপনাকেই আমার মনে পড়েছে? এসব কি শুধুই ফেসবুক?
আমাকে আপনি চিনতে পারেননি। বহু বছর পরও বুকের মধ্যে যত্ন করে ভালোবাসাটাকে রেখে দেওয়ার মতো বোকা আমি! লোকে বুকের মধ্যে ঘৃণা পুষে রাখে, আর আমি কিনা রাখলাম ভালোবাসা! এমন বোকাকে কেউ মনে রাখে না।
আপনি কেন এলেন? কেন?? আপনাকে ভুলতে আমার খুব খুব খুব কষ্ট হবে! আর আপনি আমার কথা মনেও রাখবেন না! কে তাকে ভালোবাসল লোকে তা মনে রাখে না, অথচ কে তাকে কষ্ট দিল তা লোকে ঠিকই মনে রাখে। হায় রে হিউম্যান সাইকোলজি!
- শুভ সকাল!
- ছবিটা ভালো করে দেখুন। দেখুন, আমি কতটা অসুস্থ ছিলাম। এখনও আছি। আর কিছু নয়, শুধু মানসিক চাপের কারণে!
আমার সেন্স আসার পরও আমার আপনাকেই মনে পড়েছে! এত সহজ ব্যাপার না এটা! আমি বুঝতে পেরেছি। পুরোপুরি আপনার কাছ থেকে আমাকে সরে যেতে হবে! আইডি, ফলোয়িং পেইজ, ইউটিউব সবটা থেকে! আপনার ওয়েবসাইটেও আর কখনও যাওয়া যাবে না! আমার খুব কাছের একজন আমাকে এটাই করতে বলেছে! এক্ষুনি চলে যেতে হবে! অত ভেবেচিন্তে চলে যাওয়া যায় না, চলে যেতে চাইলে না ভেবেই চলে যেতে হয়। কিন্তু আমার একটু সময় দরকার! একজনকে নিষ্ঠুরভাবে ভুলে যাবার জন্য আমার একটু সময়ের দরকার! অরুন্ধতী রায়ের “Love Laws lay down who should be loved. And how. And how much.” কথাটা কত যে সত্য!
নিয়মনীতি মেনেই কেন ভালোবাসতে হয়? মনের চাওয়ার কি কোনও দাম নেই! অমুকের প্রেমে পড়া যাবে না, কিংবা কেবল একজনের প্রেমেই পড়া যাবে, কিংবা জীবনসঙ্গীকে ভালো লাগতেই হবে, কিংবা একাধিক জনকে ভালো লাগতে পারবে না, কিংবা বিয়ের পর অন্য মানুষের প্রেমে পড়লে তা দোষ হবে…এসব আরোপিত বেড়াজাল মনের উপর নির্যাতন ছাড়া আর কী! বিবাহিত কেউ অন্য কারও সাথে প্রেম করলে সমাজ ভাবে, ঘরের মানুষের সাথে বেচারার দূরত্ব আছে বোধহয়! কেন? ঘরের মানুষের সাথে দূরত্ব না থাকলে আর কারও সাথে দূরত্ব কমানো বারণ নাকি? আবার দেখুন, এ সমাজ এমন এক সমাজ, যেখানে ঘরের মানুষের সাথে দূরত্ব থাকলেও বাইরের কারও সাথে মেলামেশা করাটা পাপ! যে দেশের সিনেমায় নায়িকার চোখের দিকে তাকিয়েই নায়কের প্রেম হয়ে যায়, সে দেশের সমাজের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি আর কী-ইবা আশা করা যায়? সব কিছুর পরও, মানুষকে সত্যিই কি বেঁধে রাখা যায়? কাউকে জোর করে বেঁধে রাখলে তার মনের মধ্যে এক ধরনের কষ্ট তৈরি হয়। কাউকে দিনের পর দিন কষ্টে বাঁচতে বাধ্য করা পাপ নয়?
আমি একটু ঠিক হই আগে! তার পর আমি নিজেই চলে যাব! আর আমার উপহারটা কোনও একদিন পাঠিয়ে দেবো! আমার এমনই একটা কপাল, যার জন্য ভালোবাসা শুধু নিষিদ্ধই নয়, গুরুতর অপরাধও বটে!
Block me! I have been going through excruciating pain. I am constantly tormented reckoning the fact that one-sided expectation will mentally destroy me. I have loved something which results in pain. I have never imagined that this day would come when I would be forced to forget someone brutally. I couldn’t help loving you. I feel one kind of celestial nexus between us. It hurts to let go someone who can make you happy. Block me in such a way that your existence can be vanished from my part. Do it for me! I want to forget you.
- শুভ দুপুর! খেয়েছ দুপুরে? আমার অফিসের ঠিকানা বদলে গেছে। কেন, জানো?
- আমার লেখা প্রতিটি কথা পড়ার জন্য অনুরোধ রইল! কারও আবেগকে মূল্য কেউ না-ই দিতে পারে, সেটা তার ব্যক্তিগত ইচ্ছে! কিন্তু তার লেখা প্রতিটি লাইন পড়ে উত্তর দেওয়া উচিত। কারণ অন্যের আবেগকে ছোট করতে নেই! মানুষ যখন এমন কাউকে কিছু লিখে পাঠায়, যাকে সে ভালোবাসে, তখন সে লেখার পরতে পরতে অনেক আবেগ জমানো থাকে। হতে পারে আপনার কাছে এ আবেগের কোনও দাম নেই, তবু ওইটুকু আবেগ নিয়েই যে আমি বেঁচে আছি! You are requested to read those feelings. Then block me.
- পড়ি তো! সত্যিই পড়ি।
- Block me. I can’t stop loving you. It hurts me.
- এত অস্থির হয়ে আছ কেন?
- ফেসবুক মনে হয় আমার ভালোবাসাকে? পেয়েছেনটা কী আপনি? Answer me.
- সত্যিই পড়ি কী লিখেছ।
- এক লাইনও পড়েননি।
আপনার কথাই আপনাকে বললাম! ‘ভালোবেসে যে মরে যায়, সে ফুল হয়ে বেঁচে থাকে! একদিন ঠিকই টের পাবেন।’
- ওটা আমার কোন লেখা?
- খসড়া আলোর জীবন।…অন্যরা যা শুনতে পায় না, আমি তা শুনি! কেউ খালিপায়ে নিঃশব্দে হেঁটে গেলেও সে শব্দ আমার কান এড়ায় না!...যার এতটা অন্তর্দৃষ্টি, সে বলুক, আমি কি ফেসবুকে শোঅফ-করা মানুষ? এতটা যিনি বোঝেন, তাঁর আমাকেও বোঝা উচিত ছিল…আমাকে ব্লক করে দিয়ে বাঁচার সুযোগটা করে দেওয়া উচিত ছিল!
আমি এই বোকা-বোকা কষ্ট জীবনের এই পর্যায়ে এসে আর সইতে পারছি না।
- দুপুরে খেয়েছ কি না জিজ্ঞেস করেছিলাম। You have ignored my feelings! মনে রেখো!
- আমিও জানতে চেয়েছি, আমি কি ফেসবুক? আপনি আমায় কী দৃষ্টিতে দেখেন? এটা আমাকে জানতেই হবে! Block me. আমি ব্লকলিস্টে থাকতে চাই!
Could you imagine, after getting sense I searched for you! It makes me die inside! It won’t make you think anything! I know it. You treat me just as Facebook, nothing else!
- ভুল বুঝে যাচ্ছ!
- Block me. আমি আবার কাউকে আমার পৃথিবী বানিয়ে ফেলেছি, নিজের অজান্তেই! এখান থেকে আমাকে উঠে আসতে হবে! আসতেই হবে!
- প্লিজ প্লিজ প্লিজ শান্ত হও!
- আমার সব কিছুই আপনার কাছে arrogance, misunderstanding, audacity. সব মেনে নিয়েই বলছি, my love towards you is not in question. Never belittle my feelings towards you. গতকাল আমি রাস্তার মাঝে সেন্সলেস হই, সেন্স ফেরার পরও আমি আপনাকেই মনে করেছি। আচ্ছা, মানুষ কেন আপনার কাছে বিসিএস-এর টিপস চায়? ওরা এত বোকা কেন? সাগরের কাছে এসে একঢোঁক জল চায়, এবং তা নিয়েই হাসিমুখে চলে যায়! আপনি তো inborn writer. আমি এই লেখককে ভালোবেসে ফেলেছি! এই লেখাগুলো ছাড়া আমার বাঁচাটা অসম্ভব হবে--তা নয়, একভাবে না একভাবে বেঁচে সবাই-ই থাকে, কিন্তু আমার বেলায় সে বেঁচে-থাকায় প্রাণটাই থাকবে না।
আপনিই তো বলেন, আপনার ফ্রেন্ডলিস্টের চাইতে ব্লকলিস্ট বড়! তো সেখানেই রাখুন না আমাকে! আমি সেই জায়গায় থাকলে একটা সান্ত্বনা তো পাব যে আপনার কাছেই কোনও এক বিশাল জায়গায় আমি ক্ষুদ্র কণার মতো হলেও থাকতে পেরেছি!
Existentialism পড়েছেন না? Death is not the ultimate end of life, rather it indicates a new beginning of life. ব্লকের মানেটা আমার কাছে ওরকম! আমি ভাবব, আমি আপনার কাছে এমন এক জায়গায় আছি, যেটা unnoticed. আমি আছি, কিন্তু আপনি বুঝতে পারছেন না! এটা আমি আমার জায়গা থেকে বললাম। আপনি হয়তো ওরকম করে ভাবেন না। এটা আপনার কাছে নেহায়েতই ছেলেমানুষি। আমাকে ব্লক করা না করা আপনার কাছে একই ব্যাপার। কিন্তু এটা আমার কাছে ম্যাটার করে। আমি যেমন করে ভাবি, আমাকে তেমন করে থাকতে দিন না একটু! কখনও কখনও নিজের একটা নিয়ম ভেঙে, নিজস্ব কোনও ধারণার বাইরে গিয়ে কাউকে ভালো রাখতে হয়। জানি, আমাকে ভালো রাখতে আপনি বাধ্য নন। তবু একজন মানুষ হিসেবে আপনার কাছে এই অনুরোধটা করছি।
Block me! আপনি কেন এলেন? ভালোই তো ছিলাম। নিজের অন্ধকার জগতে হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত হয়েও আবার হাঁটতাম! কিন্তু এখন আমি তো আর হাঁটতেই পারছি না! কিছু দূর হাঁটি, আবার ভাবি আপনার কথা! আমি আপনাকে না ভেবে থাকতে পারছি না। সত্যিই আমি বোধহয় পাগল হয়ে যাব! এমন তো হবার কথা ছিল না! এ কষ্টের ভাগ তো আপনি একটুও নেবেন না! তবে কেন আমি কষ্ট পাচ্ছি একা একাই? আমি চলে যাব! ঠিক তত দূরে চলে যাব, যেখানে গেলে আপনার ছায়াকেও আমি ভুলে যেতে পারি! ভুলে যেতে পারব না হয়তো, তবু চেষ্টা তো করতে হবে! আপনাকে ভুলে যেতে চাইলে আপনার কাছ থেকে অসীম মাত্রায় কষ্ট পেতে হবে…আচ্ছা, তা পেলেও কি সম্ভব ভুলে-যাওয়া? মানুষ যাকে একবার ভালোবেসে ফেলে, তাকে কি সারাজীবনেও কখনও ভুলতে পারে সে?
- তোমাকে দূরে সরিয়ে রাখা তো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। বাকিটা তুমি বুঝে নাও।
- অনুপম রায়ের লেখায় একটি গান আছে…আমি কি তোমায় খুব বিরক্ত করছি? আপনাকেও এই কথাটা জিজ্ঞেস করলাম। উত্তরটা দেবেন। মন থেকেই দেবেন, আমাকে খুশি করতে কিছু বলবেন না।
- না। কেউ কাউকে বিরক্ত করছে কি করছে না, তা নির্ভর করে তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের উপর। এই যেমন ধরো, তুমি টেক্সট পাঠাও--এটা যদি আমি না চাই, তবে তুমি যা-ই পাঠাও না কেন, আমি বিরক্ত হব। আবার তোমার টেক্সট আমার কাছে গ্রহণযোগ্য কি গ্রহণযোগ্য নয়, তা নির্ভর করবে তোমাকে বা তোমার টেক্সটগুলোকে আমি পছন্দ করি কি করি না, তার উপর। আমাদের ভালোলাগার বা মন্দলাগার কোনও absolute parameter নেই, জানো তো? একই কথা একজনের মুখ থেকে শুনলে ভালো লাগে, আবার অন্য একজনের মুখ থেকে শুনলে ভালো লাগে না। এমনও হয়, ব্যক্তির নয়, কথার গুণেও কথা ভালো লাগে। যাকে পছন্দ করি না, তার অনেক লেখা বা অনেক কথা আমার ভালো লাগতেও পারে--কেবলই সে লেখার বা কথার ভালোত্বের গুণে! যা-ই হোক, মোদ্দা কথা হলো, তোমাকেও ভালো লাগে, তোমার কথাগুলোকেও ভালো লাগে। তাই তোমার পাঠানো একটা টেক্সটও আমাকে কণামাত্রও বিরক্ত করে না।
- প্লিজ, আমাকে পৃথিবীর সবাই ভুল বুঝুক, অন্তত আপনি বুঝবেন না! আমার লম্বা মেসেজগুলো আপনার কাছে বিরক্তিকর হওয়ার আগেই আমি চলে যাব! আমাকে ছোট্ট করে জানিয়ে দিলেই হবে।
তুমি না হাসলে, হাসবে কে আমার বাগিচায়?…আপনার জন্য আমি অনেক দিন পর হেসেছিলাম! এ কেমন মায়া? একটু বলে দিন না! আমি সবসময় ভুল জায়গায় ভালোবেসে ফেলি! তবু শতভাগ সততা নিয়ে বলতে পারি, এ ভালোবাসা নিখাদ, নিষ্পাপ। ভালো না বাসুন, কিন্তু কখনও আমার ভালোবাসা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন না ভুলেও! আমার ঈশ্বর জানেন, কতভাবে, কতরূপে, কতবার ভালোবেসেছি আপনাকে! এজন্যই আমি চলে যাব! এ সমস্ত কষ্টের বোঝা আমি একাই নিজের কাঁধে নিয়ে চলে যাব!
জানেন, আমাকে কেউ ভালোবাসে না কখনও! মা-বাবা, ভালোবাসার মানুষ…কারও ভালোবাসা পাবার জন্য আমার জন্ম হয়নি! কেমন একটা জন্ম আমার, তাই না? আমার জন্য একটা লাইনই সত্য: জন্মই আমার আজন্ম পাপ! কেউ কখনও আমাকে ভালোবেসে দুটো লাইন লিখে পাঠায়নি! কারও চিঠিতে আমার জন্য দীর্ঘশ্বাস লেপটে থাকেনি কখনও! সেই আমিও বেঁচে আছি! কতটা অথর্ব একটা জীবন! কী হয় এমন আয়ু দিয়ে? ভেবেছিলাম, কালকেই হয়তো অপ্রয়োজনীয় আয়ুটা নিজেই ক্লান্ত হয়ে আমাকে ছেড়েছুড়ে যাবে! হলো না। হলো না তো হলো না, আমি বেঁচে ফিরে এলাম, এসেই আপনার মুখটাই প্রথম চোখের সামনে এল। আপনি কি বুঝতে পারছেন আপনার জায়গাটা আমার কাছে কোথায়? জ্ঞান ফিরলে দেখলাম, বেচারা আয়ু…ফুরোয়নি এখনও! প্রাণটা আটকে রইল! চোখ দুটো মেলেই আপনার কথা মনে পড়বে কেন? এর ব্যাখ্যা কী আপনার কাছে? এ অনুভূতির কোনও অর্থ নেই? মনে হয়েছে…আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি…এই চোখ দুটো মাটি খেয়ে না…আমি মরে গেলেও তারে দেখার সাধ মিটবে না গো মিটবে না…কতটা সত্য গানটার কথাগুলো! জীবনের একেকটা সময়ে একেকটা গানের আবেদন মানুষের কাছে দুর্বার ও অনিবার্য হয়ে ওঠে!
আপনিই বলুন, মৃত্যুর সান্নিধ্যে দাঁড়িয়ে নিভুনিভু চোখে আমি যার মুখটা দৃষ্টির আবছা আলোয় দেখেছি, তাকে ভোলা কি আদৌ সম্ভব কোনও দিন? কী বলেন, আমার প্রিয় লেখক!
এত মানুষের ভিড়ে আমাকে আপনার চোখেই পড়ে না! আপনার চোখগুলো আপনাকে ঠকায়! জানেন কি এটা? ওরা জানতেও দেয় না যে কেউ একজন আপনাকে কোনও দিন পাবে না জেনেও বোকার মতন ভার্চুয়াল ডাকবাক্সের কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে! অনেকক্ষণ পর খালিহাতে ফিরে যায়! আবার আসে প্রতিদিন একই পথে! ভুল পথের বাঁকে দাঁড়িয়ে থাকার আত্মতৃপ্তি নিয়ে এরকম কিছু বোকা মানুষ পুরো জীবনটাই একা-একা দুঃখের বোঝা কাঁধে নিয়ে চলে!
- তুমি অনেক সুন্দর লিখ, আমার পড়তে অনেক আরাম লাগে। তোমার ছোঁয়া পাই, শিহরণ জাগে।
- ‘প্রাক্তন’-এর ‘তুমি যাকে ভালোবাসো…’ শুনছি, আপনাকে মনে পড়ছে। যা-ই শুনি, যা-ই দেখি, যা-ই করি…কোনও না কোনও পথে আপনাকে নিয়ে আসি তার মধ্যে! কোনও মানে হয়?
- গানটা খুব প্রিয় গান।
- আপনার জন্য এই গানটি রইল, শুভকামনা হিসেবে!...তুমি অন্য কারও ছন্দে বেঁধো গান!
- পারব না। তুমি বেঁধো। ডোন্ট লিভ মি!
- আমার একটু সময়ের দরকার! আমি চলে যাব! যে কষ্টের বোঝা আমাকে একাই কাঁধে নিয়ে চলতে হবে, সেটা আর দীর্ঘস্থায়ী করে কী লাভ! আমার জন্য তো কখনও কারও কষ্ট হয় না। সবাই-ই বাঁচে খুব ভালোভাবে! আমার খবরটাও কেউ নেয় না! অবশ্য আমার খবর নিয়ে পার্থিব কী-ইবা লাভ আছে! আমি এমন কেউ নই, যার খোঁজ নিতে হবে। এমন একটা মানুষ বেঁচে আছে, যার খোঁজ নেওয়ার কেউ নেই, যাকে নিয়ে কারও কোনও মাথাব্যথা নেই, যে আজকে মরে গেলে কাল থেকেই বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাবে। এমন মানুষকেও বেঁচে থাকতে হয়, মৃত্যুকে প্রতি মুহূর্তেই কাছ থেকে দেখেও জীবনের সাথে লুকোচুরি খেলে যেতে হয়। আপনি কি বুঝতে পারছেন আমি কেমন আছি?
আপনি ছাড়া আমার সকালটা কখনও শুভ হবে না! বিশ্বাস না হলে বহু বছর পর জিজ্ঞেস করে দেখবেন…আমি কেমন আছি…এ জীবনে আপনার জন্যই আমি প্রথম সত্যিকারের সকাল দেখেছি! ভোরের আলস্যমাখা শরীর ভেদ করে আকাশ ফুঁড়ে আলো এসে যায়, সে আলো ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে কাছের দূরের গাছে, পাতায়, দেয়ালে, আমার ঘরে…সকাল দেখতে এতটা সুন্দর লাগে, এটা আপনার ‘শুভ সকাল’ না পেলে জানা হতো না। সকালের আলো, সকালের হাওয়া, সকালের রৌদ্র, সকালের গুঞ্জন…এসব আমি আগে কখনও বুঝিনি।
আপনি জানেন, কাল আমি রাস্তার মাঝে যখন শুয়ে পড়েছিলাম, চারপাশে কত মানুষের ভিড় জমেছিল! সবাই আমার দিকে তাকিয়ে ছিল, অথচ আমি ওদের কাউকেই দেখিনি। এত মানুষের মধ্যেও আমি আপনাকে খুঁজেছি! আজ সকাল থেকেই অসুস্থ শরীর নিয়েও আপনার নামের পাশে জ্বলে-ওঠা সবুজ বাতিটির দিকে তাকিয়ে ছিলাম ঘণ্টার পর ঘণ্টা! মেসেঞ্জারে আপনার অ্যাক্টিভ থাকা না থাকা আমার কাছে অনেক কিছু মিন করে। তখন অনেক ধরনের ভাবনা এসে মাথায় জমতে থাকে।
ঈশ্বর কখনও ভুল জানেন না! তাঁকে জিজ্ঞেস করুন আমি একটি কথাও বানিয়ে বলছি কি না! যদি আমার একটা কথাও কণামাত্রও মিথ্যে হয়, তবে তার জন্য পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম শাস্তিটিও মাথা পেতে নিতে রাজি আছি।
এই সব বলে কী লাভ! আমি কি আর কখনও কারও আফসোস হব! হব না তো! আমাকে ভেবে আফসোসের তপ্ত শ্বাস নিজের ঠোঁটে ছুড়ে দেবেই-বা কে? কেনই-বা দেবে?
কাউকে হৃদয়ের সবটুকু অকৃত্রিম ভালোবাসা দিয়ে তার বদলে ঘৃণা পেয়ে বেঁচে-থাকার জন্য সৃষ্টিকর্তা আমাকে এই আয়ুটুক দান করেছেন! এমন আয়ুর বোঝা কাঁধে নিয়ে আমাকে হাঁটতে হচ্ছে…আমারও কষ্ট হয়, আমিও যে একটা মানুষ!
আমি মেনে নিয়েছি! জানেন, মানুষের চোখের কোণে বেদনা জমে থাকে। আপনি ছোট করে এক অক্ষর লিখে পাঠালেও আমার এই চোখ দুটো এমনভাবে অক্ষরগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকে যে অক্ষরগুলোও আমার যন্ত্রণা বুঝতে পারে! কিন্তু দেখুন, আপনার চোখ কতটা ঠকায় আপনাকে, আপনি টেরও পান না! একবারও আমাকে দেখতে ইচ্ছে করায় না, আমার নামের পাশে সবুজ বাতি জ্বলছে কি না বুঝতে মন চাওয়ায় না!
আপনিই তো বলেন, কেউ খালি পায়ে নিঃশব্দে আপনার পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে সেই শব্দ আপনার কান এড়ায় না! আর আমার করুণ কান্নার শব্দ কি আপনার কানে পৌঁছে একটুও যন্ত্রণা দেয় না আপনাকে? একটুও বিরক্ত করে না? না কি আপনি এসবকে আমলেই নেন না কখনও? এতটাই পাথর হয়ে গেলেন আমার বেলায়! খুব জানতে ইচ্ছে করে!
উত্তর দিচ্ছেন না। অবশ্য কিছু উত্তর না পাওয়াই ভালো! তবু জানার আগ্রহটা থেকে যাবে আজীবন! এই একজীবনে এই বোকা আগ্রহটুকু নিয়েই নাহয় বাঁচলাম। আমি ভেবেছি, অনেক দিন মন্দিরে যাই না রাগ করে! কাল একবার যাব আপনার জন্য পুজো দিতে! আপনি কি জানেন আমি আপনার মঙ্গলকামনা করে কত দিন উপোস থেকেছি?...আরে, দুইএকদিন না খেয়ে থাকলে তো শরীরের জন্য ভালো, শরীর কমে--এমনটাই মাথায় এল তো? জানি আমি!
পরের জন্মে একসাথে ফুচকা খাব ঠোঁট-জিভ লাল করে! মনে থাকবে?
জন্মাবেন আমার জন্য, কেমন? জন্মাবেন আমার লেখক হয়ে…কোনও সেলিব্রেটি হয়ে না! আমার জন্য লিখবেন, আমাকে জিতিয়ে দিয়ে লিখবেন। আপনার লেখায় আমার কষ্টের ইতিহাস থাকবে, আমার না পাওয়ার বেদনায় আপনার কলম থেকে রক্ত ঝরবে। আপনার লেখা যেন ছুঁয়ে দেখতে পারি, বুকের ভেতর থেকে অনুভব করতে পারি। আপনি আবারও আসবেন আমার দেবদূত হয়ে। আপনি আসবেন শুধুই আমার হয়ে। আপনি ফিরে আসবেন আমার জন্য গোটা একটা জীবন হাতে নিয়ে। আমরা দুজন একই ক্ষণে মৃত্যুর ভাগ্য নিয়ে পৃথিবীতে আসব। একসাথে বুড়ো হব, একসাথে সুখে থাকব, একসাথে কষ্ট তাড়াব। খুব ঝগড়া হবে, কাটাকাটি মারামারি হবে, তবু কেউ কাউকে কক্ষনো ছেড়ে যাব না। আমরা ভুলেই যাব কী করে পরস্পরের হাত ছেড়ে একা-একা হাঁটতে হয়! আপনি নাহয় অন্য চেহারা নিয়েই আসুন, তবু মনটা যেন ঠিক এমনই থাকে। বেশি কিছু লাগবে না, মাথার উপর একটি ছাদ আর দুবেলা দুমুঠো খেতে পারলেই আমাদের দিব্যি হয়ে যাবে। ওই জন্মে আমি ঠিক আপনাকে চিনে নেব, খুঁজে নেব!
‘পরের জন্মে বয়স যখন ষোলোই সঠিক, আমরা তখন প্রেমে পড়ব…মনে থাকবে?’
একসাথে রাস্তায় হাঁটব, বেসুরো গলায় গাইব! ‘আমার অনেক কথা ছিল, এ জন্মে তা যায় না বলা। বুকে অনেক শব্দ ছিল--সাজিয়ে গুছিয়ে তবুও ঠিক কাব্য করে বলা গেল না! এ জনম তো কেটেই গেল অসম্ভবের অসঙ্গতে! পরের জন্মে মানুষ হব! তোমার ভালোবাসা পেলে মানুষ হবই হব!’
- তো ম্যাম, কোথায় এখন? কী করছেন?
- আপনার অক্ষরগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছি! এদের…এই অক্ষরগুলোকে বড্ড ভালোবাসি আমি! এগুলোকে ছেড়ে যেতে আমার খুব কষ্ট হবে!... মন ভালো নেই, বারে বারে মনে হয় তুমি পাশে নেই, ভাবি, ধুর ছাই কেন কাটে না সময়?...গান শুনছি। এই সম্পূর্ন গানটা আপনার জন্য! একেকটা গান, একেক টুকরো জীবন যেন!
- ভালোবাসি তোমায় এই এতটা! খুব সুন্দর গান!