ভাবনা: দুইশো চার।
……………………………………..
প্রেমে পড়ার জন্য মেয়েরা একটু রাগী ছেলে পছন্দ করে। একবার প্রেম হয়ে গেলে মেয়েরা চায়, রাগটা কেয়ারে পরিণত হোক। বেশি কিছু নয়, আদর করে সস্তা এক গোছা কাঁচের চুড়ি কিংবা একটা বেলিফুলের মালা দিয়েই দেখুন না, কী এক ম্যাজিক অপেক্ষা করে আছে আপনার জন্য! তীব্রভাবে ভালোবাসবার কিংবা ঘৃণা করার ক্ষমতা বয়স যতোই বেড়েছে ততোই হারিয়েছি বোধ হয়। তবুও মেয়েদের আমার ভাল লাগে। সুন্দরী হলে তো আরও ভাল লাগে। ওদের সবকিছুই ভাল লাগে। সে কঠিন চোখ রাঙানোই হোক, মিষ্টি হাসিই হোক। স-বব্ . . . . . ছেলেদের যে কী দায়সারাভাবে তৈরী করা হয়েছে! ওরা আছেই মেয়েদের ঢং দেখে ‘ওয়াও! কী স্মার্ট’ এটা বলার জন্য। আমিও বলি। সামনাসামনি বলতে ইচ্ছে হয় খুউব। মঙ্গলবারের ‘প্রথম আলো’র ‘নকশা’ পাতাটা ওল্টানোর সময় আরও বেশি ইচ্ছে হয়। আমার লজ্জা-শরমের মাথাটা কোথায়, এটা খুঁজছি অনেকদিন ধরে। একবার খুঁজে পেলেই সত্যি-সত্যি খপ্ করে ধরে খেয়ে ফেলবো। ইশশশ্ . . . . . . .মেয়েরা সবাইই বিউটিফুল। আর ছেলেগুলি সবকটা গুড, ব্যাড, কিংবা আগলি।
পড়ছেন আর ভাবছেন কীসব ফালতু প্যাঁচাল শুরু করলাম! তাইতো? শুনুন স্যার, আমার ফেসবুক ওয়াল যেমন ইচ্ছে লেখার আমার কবিতার খাতা। আমি ফেসবুকে আসি প্রফেশনালিজম কপচাতে নয়। প্রফেশনালিজম ঠিক রাখতে। শুধু মাথা দিয়েই কাজ করা যায় না, মনও লাগে। আমি এখানে আসি আমার মনকে মেরামত করতে। কাজ করতে-করতে ওটা ভেঙেচুরে যায়। বড়ো-বড়ো কথা বলে ছোটো-ছোটো জিনিসগুলো নিয়ে ছোটোলোকি করার আর্টটা আমি এখনও রপ্ত করতে পারিনি। সন্দীপন বলতেন, “আমি আমার লেখার মতো।” কিন্তু আমার মধ্যে অতটুকু সততার অভাব আছে। তাই আমি পুরোপুরি আমার লেখার মতো নই। আমার লেখা পড়েই আমাকে চিনে নেয়া যাবে, অতটা সহজ কিংবা কঠিন, এর কোনওটাই আমি নই। বেশিরভাগ সময়ই আমি আমার লেখার চেয়ে সস্তা, মাঝেমধ্যে অবশ্য দামিও। এই আমি গত ৩৩টা বছর আমার সাথেই কাটিয়ে দিলাম দিব্যি। নিজের সাথে শান্তিপূর্ণ এবং অশান্তিপূর্ণ এই দীর্ঘ সহাবস্থান সত্ত্বেও নিজের কাছে নিজে অচেনাই রয়ে গেলাম আজ অবধি। জন্মের কঠিন দায়টুকু মেটাতে সহজ মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলেছি। এই চলাটা সহজ নয় নিশ্চয়ই। এই চলার পথে বিদ্যে লাগে, বিদ্যে না থাকলে বুদ্ধি লাগে। যার পেটে বিদ্যে নেই, সে চলে বুদ্ধির জোরে। যার মাথায় বুদ্ধি নেই, সে চলে বিদ্যের জোরে। কারও-কারও বিদ্যে আছে, কারওবা বুদ্ধি আছে, কিছু মানুষের পরম সৌভাগ্য—দুইই আছে। হায়, আমার কোনওটাই নেই! তবু কীভাবে যেন চলছি! এই আমি একটু পরেই অন্য আমি হয়ে যাচ্ছি। আমি আমার ভাবনার চাইতেও বেশি এলোমেলো অথবা হয়তো গোছানো। আমার ভাবনা এবং আমাকে বুঝতে হলে সেন্স, কমনসেন্স এবং সেন্স অব হিউমার—তিনটাই থাকতে হবে। অন্যথায় আমার কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকুন। প্রয়োজনে আনফ্রেন্ড কিংবা ব্লক করে দিন। লিভ অ্যান্ড লেট লিভ। যারা আমাকে বোঝে না, আমি তাদের সাথেও থাকতে পারি। কিন্তু যারা ভুল বোঝে, তাদের সাথে থাকার মতো টলারেন্স এবং সময় এর কোনওটাই আমার নেই। থাকলেও আমি দেবো না। সময় দেয়ার মতো অনেক ভাল কিছু আছে। সময় নেই মানে সময় নেই, এমন নাও হতে পারে। হয়তো এর মানে, আমি আপনাকে সময় দেবো না এবং আমি চাই না আপনি আমাকে সময় দিন। কারও কাছ থেকে সময় চাওয়ার আগেই ঠিক করে নেয়া ভাল, কেন উনি আমাকে সময় দেবেন। তাহলে আর নিরাশ হতে হয় না। লোকে এই সহজ ব্যাপারটা বুঝতে পারে না। ফলে আরাম করে অন্যকে ভুল বোঝে। কাউকে ভুল বোঝার চাইতে না বোঝাও ভাল। সুখ থাক আর না থাক, অন্তত স্বস্তিটুকু থাক। এ-ই আমার সবিনয় নিবেদন।
ভাবনা: দুইশো পাঁচ।
……………………………………..
আমার ফ্যামিলি আমায় নিয়ে এত বেশি স্বপ্ন দেখে যে স্বপ্নের প্রতি বিতৃষ্ণা জন্মে গেছে। দুনিয়ার মানুষের সব স্বপ্ন পূরণ করার দায় নিয়ে আমি পৃথিবীতে এসেছি! বুঝলাম, আমি মেয়ে। যদি পথে-পথে ঘুরে বেড়ানোই আমার স্বপ্ন হয়, তবে কি সেটা অনর্থক কিছু? আমি কী করবো? আমি কি ইচ্ছে করে মেয়ে হয়ে জন্মেছি নাকি? আমার কোনও স্বপ্ন নেই। সবার স্বপ্ন থাকতেই হবে কেন? আমার যে কিছু হতে ইচ্ছে করে না। আমার ছবি আঁকতে বড় ভাল লাগে। মানুষের মুখের ছবি আঁকতে বেশি ভাল লাগে। কী অদ্ভুত, দেখুন না! সবারই নাক কান মুখ আছে, অথচ সবাইই আলাদা চেহারার। ছবি আঁকার সময় মানুষের মনটাকেও বুদ্ধি করে নিয়ে আসতে হয় তুলিতে। এ কি সহজ কাজ? আমার স্বপ্ন, ছবি আঁকতে-আঁকতে একসময় মরে যাবো। কী? পারবো না, অন্য কোনও স্বপ্নেই না বেঁচে শুধুই ছবি এঁকে যেতে আজীবন?
আচ্ছা, আপনি কি ‘আপসাইড ডাউন’ মুভিটা দেখেছেন? জানি, আপনি আমাকে কোনও রিপ্লাই দেবেন না। জেনেও লিখে যাই। আপনার সময়ের অনেক মূল্য, তাই না? মিলিয়ে দেখুন না, আপনার জীবনটা কত কষ্টের! একসময় আপনার কিছুই ছিল না, কিন্তু অফুরন্ত সময় ছিল। আজ আপনার সবকিছুই আছে, কিন্তু সবচাইতে দামি যে জিনিসটা, মানে আমি সময়ের কথা বলছি, সেটাই নেই। কাউকে দেয়ার মত কোনও সময় আপনার হাতে নেই—এমনকি, নিজেকেও না! কী লাভ হল এত বড় কিছু হয়ে? রাগ করছেন? আপনি চাইলে আমার কাছ থেকে অগনিত সময় ধার নিতে পারেন। আমি একসাথে ৩টা আইডি চালাই। এই এক জীবনেই আমি ৩জন মানুষের জীবনে বাঁচি। ৩ ধরনের ভাবনা একসাথে ভাবি। আর আপনি? হায়, আপনার এই এক পিতৃপ্রদত্ত জীবনেই বাঁচতে পারছেন না ঠিকমত!
আপনার মূল্যবোধের জায়গা থেকে একটা প্রশ্নের উত্তর দেবেন? আমি যদি আমার মুখের ছবি আঁকি, সে ছবির দিকে আপনি সৎসাহস নিয়ে কয় জীবন ধরে তাকিয়ে থাকতে পারবেন?
এই শোনো না! গোমড়া মুখের সীমান্ত, যেন ফুলের আগুনে ফুটন্ত, আসেনি তো তাই প্রেম-বসন্ত, প্রস্তর যেন তবু জীবন্ত, জ্বালায় অনুভূতি কাম জ্বলন্ত, হারায় পরে একা-একান্ত! ভেবেছটা কী, এই সীমান্ত?
এই দেখুন না, ঈদ আসে, ঈদ যায়, আর আমার কেমন জানি লাগে। আচ্ছা, ঈদের সাথে কি বাবাও আসে? ঈদ কি দেখা যায়? ছোঁয়া যায়? আমি যে দেখি, ছুঁই। আমি ভুল করে এসব ভাবি, না? আচ্ছা, বাবাও কি এখন ঈদের মত? ধরা যাবে না, ছোঁয়া যাবে না, কিন্তু অনুভবটা ঠিকই করা যাবে—এমন? বাবাকে নিয়ে এইসব অদ্ভুত ভাবনা আসে কেন মনে? বাবা যখন বেঁচে ছিলেন, তখনও কি এমন করে ভাবতাম? মনে পড়ে নাতো!
ভালোবাসি তোমায়….!!!
আমি জানি না কে তোমায় কেমন করে কতটা ভালোবাসে, কিন্তু আমার মতো করে এতটা নিবিড়ভাবে কেউ কখনও ভালোবেসেছে তোমায়? বুকে হাত দিয়ে বলো তো!
লজ্জা পাচ্ছি এমন করে বলতে, কিন্তু এই না-কষ্টগুলো কি কারও সাথে ভাগাভাগি করার মত জিনিস, বলো? কার যে কখন কেন হৃদয় পোড়ে, কজনই বা তা বোঝে?
তোমাকে নিয়ে আমার কিছু পর্যবেক্ষণ আছে। বলি?
~ তুমি কখনও তিলকে তাল কর না। সহজ বিষয় তোমার কাছে সহজ, কঠিন বিষয় তোমার কাছে কঠিন।
~ যা তোমার নয়, তা ছিনিয়ে নেওয়ার বৃথা চেষ্টা তুমি কখনওই কর না।
~ খুব ক্ষুদ্র বিষয়কে কেন্দ্র করেও অবলীলায় তুমি মানুষের প্রশংসা করতে পারো।
~ কখনও কাউকে আহত করে কথা বল না, বলতেও চাও না; অথচ আমরা তার উল্টো, এমনকি আমি নিজেও।
~ কষ্টগুলো গিলে খেয়ে হাসিমুখে কথা বলার অসীম প্রতিভা তোমার মধ্যে রয়েছে। যে মানুষ যতো বেশি কষ্ট আর চাপ সহ্য করতে পারে, সে মানুষ ততো বেশি পরিণত।
~ না তুমি জিলাপির প্যাঁচ বোঝো, না তুমি কোনও কিছুতে জিলাপির প্যাঁচ দেখতে পাও।
~ যে কারও সাথে খুব সহজেই মিশতে পার, সে যেমনই হোক না কেন তুমি তার ভাল দিকগুলি খুঁজে বের করতে পার।
~ সময়গুলো চলে যায়, প্রতিটা মানুষের প্রতিটা মুহূর্ত কেটে যায়—শুয়ে, বসে, অলসভাবে, পরিশ্রম করে, খেলে, আড্ডা দিয়ে—যেভাবেই হোক কেটে যায়। তুমি তোমার প্রতিটা মুহূর্ত তোমার মত করে কাটাও। সময়কে তুমি বশে আনতে পার।
~ তুমি যা-ই কর, তোমার সর্বোচ্চটুকু দিয়েই কর।
~ তুমি একজন হাসিখুশি প্রাণবন্ত মানুষ। আমাদের এই অল্প পরিচয়ের সম্পর্কে কখনও রাগ, বিরক্তি, একঘেয়েমি—এই বিষয়গুলি একবারও আসেনি শুধু তোমার জন্যই। তুমি যেমন সবার, তুমি তেমন আমারও। তোমাকে সারাজীবনের জন্য পেলে আমার হয়তো আর চাওয়ার মতো কিছুই থাকত না, অমূল্য রত্ন পেতাম। তবু তোমাকে যেভাবে পেয়েছি, তাতে অমূল্য রত্নই পেয়েছি, পেয়েছি তোমার ভালোবাসা আর আদর। আমি যদি কোনওদিন হারিয়ে যাই, আর হঠাৎ ফিরে আসি হাজার বছর পর, আমার গালে হাত দিয়ে ছুঁয়ে দিয়ো।
~ তোমার চাহিদা খুব সামান্য, অল্পতেই খুব বেশি খুশি হয়ে ওঠো।
সবসময়ই ভাল থেকো। আমি ভাল আছি। তুমি এমন একটা মানুষ, তোমার কথা ভাবলে মনটা শান্ত হয়ে যায়, ঠিক যেমনটা প্রার্থনা করার পর হয়; এ শান্তি তা ঘণ্টার পর ঘণ্টা যোগাসন করলেও পাওয়া সম্ভব নয়।
আপনাকে অনেক ভালোবেসে কল্পনা করলাম, কাছে টানলাম ইচ্ছেমত! কোথায় আছেন? কী করছেন? কাঙ্ক্ষিত কারও, কিংবা ভালোবাসার কারও সাথে একটা বিশেষ সময় (হোক সময়টা রাত বা দিন) কাটানোর আগে, আনন্দের অস্থিরতায়, কিংবা বিশেষ সময় শেষে, সানন্দের সস্থিরতায় যখন পুরোপুরি মাতাল, উদ্বেল, ঠিক তখনই—অনেক-অনেক দূরের কোনও এক বিরক্তিকর মানুষের আজাইরা অযাচিত ভালোবাসাময় একটা মেসেজ এসে, অসময়ে সেলস্ক্রিনে যখন অসভ্য বেয়াড়া সৈনিকের মেজাজে কড়া নাড়ে—তখন ব্যাপারটা নিশ্চয়ই ভীষণ বিরক্তমাখা হাস্যকর হয়।
মাঝেমাঝে নাহয় হলামইবা এই হাস্যকর মুহূর্তের কারণ!
ভাবনা: দুইশো ছয়।
……………………………………..
চোখে তাজা ঘুম আর ক্লান্ত শরীরটাকে একরকম জোর করে টেনেহিঁচড়ে বাসা থেকে বের করে এনে যখন গন্তব্যের পথে—বাসের ঝাঁকুনির সাথে তাল মিলিয়ে সমানে ঝিমুচ্ছি, বাসের জানালা দিয়ে আধবোজা চোখে দেখি, ওই অদূরের সবুজ মাঠে, ষাটোর্ধ্ব তরুণরা পূর্ণ জীবনীশক্তি নিয়ে দারুণ উদ্যমে ফুটবলের পেছনে দ্রুত ছুটছে! তখন মনে হয়, জীবন সুন্দর, শুধু আমিই একটা আস্ত পচা বুড়ি, যে এখনও পর্যন্ত জীবনকে চিনলই না! নিজেকে আবারও মনে করিয়ে দিই………..সব কথার পাল্টা জবাব দিয়ো না, তর্ক করো না। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষটিরও তো কখনও-কখনও ভুল হয়। নিজেরটাই শুধু ভেবো না, অন্য কারওরও তো কিছু বলার থাকতে পারে। একজন মানুষের প্রতি ঘৃণা, অবিশ্বাস আর তাচ্ছিল্য লালন করে আর কত বাঁচবে, বলো? ভুল করলে ভুলটা মেনে নিয়ে চুপ থাকা শেখো, চুপ থাকার প্র্যাকটিস করো। আমি ভুলে ভরা, মানছি। এর মানে এ নয় যে তুমি সবসময়ই নির্ভুল।
কোনও এক স্বকল্পিত সত্তা এসে সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে, ছোটবেলায় মাস্টারমশাই যেমনি করে পড়া ধরতে সামনে এসে দাঁড়াতেন। আর আমি অমনিই বাধ্য স্টুডেন্টের মত চুপ হয়ে যাই।
যারা বই পড়ে না, কবিতা ভালোবাসে না, মানুষের ভেতরেথাকা অনুভূতিগুলো অনুভব করতে চায় না (কারও অনুভূতি প্রকাশ্য, কারওবা অপ্রকাশ্য)……….তাদের জন্য আমার খুব মায়া হয়। জীবনে তৃপ্তির একটা পূর্ণ জায়গা—জীবনভর তাদের অপূর্ণতায় পূর্ণ থাকে। এক দিক দিয়ে অবশ্য ভালই হয়, কারণ অনেক তৃপ্তির পেছনেই একটা লুকোনো কষ্ট থাকে, সেই কষ্ট তাদের আর কষ্ট করে পেতে হয় না। অবশ্য, কার যে কীসে তৃপ্তি, সেটাও একটা ভাববার বিষয়!
অনেকগুলো অদ্ভুত কারণে আমিও বই পড়ি না। কিছুই পড়া হয়নি, কিছুই না, একদমই কিছুই না। বছরে হয়তো ৩/৪টা বই…..সম্বল ওইটুকুই!
বইপড়ার সময় অনেক প্রশ্ন মাথায় আসে, উত্তর পাই না। ইচ্ছে করে, লেখককে পাশে বসিয়ে বইটা পড়ি আর প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করি। নিজের মতো করে যদি বুঝে নিই, তবুও মনে হয়, আমি যা বুঝেছি, লেখক কি তা-ই বুঝাতে চেয়েছেন? যদি তা বুঝাতে না চেয়ে থাকেন, তাহলে তো আমার ভুল হলো, বইটা পড়ে কী হল তবে? ব্লা ব্লা ব্লা…………লেখক যা লেখেন, পাঠক পর্যন্ত পৌঁছে সে লেখা তো আর সেরকম থাকে না, হাজার মনে হাজার ভাবনায় বিভক্ত হয়ে হাজার রঙ ধারণ করে। ব্যাপারটা একদিক দিয়ে কষ্টকর হলেও অন্যভাবে, মজার কিন্তু! প্রায়ই তো ইচ্ছে করে, সব ছেড়েছুঁড়ে ওই এক ‘শালা’ রবীন্দ্রনাথকে খুঁজতে বের হয়ে যাই! বড্ড জ্বালায় ওই খ্যাপাটে বুড়ো ব্যাটা! উনি সেই কবে চলে গেছেন!…………বললেই হলো নাকি? শুদ্ধ ভালোবাসায়, মন থেকে খুঁজলে ঠিকই ধরা দেন। লেখকরা মরতে জানেন না। হুমায়ূন আহমেদের সাথে মাঝেমধ্যেই কত কথা হয়, খেয়াল করলেই বুঝি, ঝুউউমম বৃষ্টির স্নিগ্ধতা উপভোগের সময় তিনিও নীরবে কেমন পাশে এসে দাঁড়িয়ে পড়েন………হলদে পাঞ্জাবিতে হাত দুটো পেছনে আড়াল করার চেষ্টায়।
যাঁরা লেখেন, এবং জীবিত, এই প্রশ্ন-যন্ত্রণায়, মাঝেমাঝে রাগে, মেজাজ খারাপ করে দুএকদিনের জন্য উনাদের লেখাও পড়ি না। যাঁরা নেই, তাঁদেরকে প্রশ্ন করতে পারি না। যাঁরা আছেন, তাঁরাও প্রশ্ন ছোঁড়ার সীমানার বাইরে। তবে উনাদের বেঁচে থেকেই বা কী লাভ হল? ইসস্ জীবনে যদি অন্তত একজন মানুষ থাকতেন যিনি অনুমতি দিতেন যে তাঁর লেখা পড়ার পর মনেআসা সব প্রশ্নের উত্তর তিনি দেবেন!
পুণ্যে পাপ কাটে। নইলে পুরো পৃথিবীটা গিজগিজ করতো পাপিষ্ঠদের বিষাক্ত পদচারণে। আচ্ছা, পাপে কি পুণ্য একদমই কাটে না? কত পুণ্যাত্মাকে দেখি হঠাৎ পাপাত্মা হয়ে ঢ্যাংঢ্যাং করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন!
আমি ভাবি, একজন মানুষ মূলত তিন রকমের—এক। চারপাশের মানুষ তাকে যেমন ভাবে, তেমন। দুই। সে নিজের কাছে নিজে যেমন, তেমন। আর, তিন। মানুষটা সত্যিই যেমন, তেমন।
যেমন ধরুন, আমার জীবনের চারপাশের অনেক মানুষ ভাবেন, আমি ভীষণ সাহসী। সত্যিকারের আমি মানুষটা হয়তো ভীতুও না, আবার সাহসীও না, মাঝামাঝি কিছু একটা, অথচ আমার নিজের কাছে আমি প্রচণ্ড রকমের ভীতু একজন মানুষ। তাই আমি সবসময়ই সাহস দেখাতে ভয় পাই। আমি যে নিজের কাছেই নিজেই নিজেকে ভীতু করে রেখেছি! সে বলয় এক কঠিন বলয়! আমি কীকরে সেখান থেকে বের হই? যে খাঁচা বাইরে, সে খাঁচা ভাঙা যায়; কিন্তু যে খাঁচা মনের মধ্যেই, তা ভাঙবো কোন উপায়ে? আবার, অন্যভাবে ভাবলে, একজন মানুষ, যত মানুষের সাথে পরিচিত হয়, তত রকমের। সত্যিই, একজন মানুষের জীবনে যদি এক হাজার মানুষের সাথে পরিচয় হয়, তার নিজস্ব একান্ত কিছু অপরিবর্তনীয় বৈশিষ্ট্য থাকলেও, সে এই হাজারটা মানুষের সান্নিধ্যে এসে ঠিক হাজার রকমের হয়ে যায়।
আর পৃথিবীটা? এই পৃথিবীতে যত মানুষ, পৃথিবীটা তত রকমের। এই পৃথিবীতে যত প্রাণ, পৃথিবীটা তত রকমের।
ভাবনা: দুইশো সাত।
……………………………………..
আগে কারও নিজের অজান্তে ছবি তুললে সেটা হতো ক্যান্ডিড, আর এখন লোকে সচেতনভাবেই ‘ক্যান্ডিড’ ছবি তুলতে পারে! সবাই কত এগোচ্ছে! স্মার্ট পাবলিক যত্তোসব!
আমি কাউকে কখনও বেঁধে রাখি না, আমার হাত আর মন দুটাই খোলা। আমার মনে হয়, যা থাকার তা এমনিই থাকে, আর যা যাওয়ার, সেটাকে যতই আঁকড়ে থাক, আর যতই মুঠি পাকিয়ে ধর না কেন, তা চলে যাবেই, থাকবে না। রশি আর দড়ি নিয়ে কারও পিছনে কেন ঘুরতে হবে, বলো? বাঁধবে যত, হারাবে তত—আমি এটা বিশ্বাস করি। যা করি, তা আমার ভেতরের পুরোটাই দিয়ে করি, মুখোশের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে খুব হিসেবে চলতে চাই না। আমাকে তুমি কেন প্রায়ই জিজ্ঞেস কর, আমি কী চাই? যা চাই, তা তো সরাসরিই বলেছি। তুমি তা না চাইলে সরাসরিই ‘না’ বলে দিতে পার। বড় হয়ে গেছি তো, তাই এখন ‘না’ বলতে পারি, শুনতেও পারি। যদি কখনও সত্যিই তেমন কোনও সুযোগ পেয়ে যাই, মানে তোমার অংশকে আমার ভেতরে লালন করতে চাই, আমার পরিচয়ে বড় করতে চাই, তুমি দেবে তা আমাকে?
মনে পড়ে, ২০১৫-এ তোমার সাথে একটা বিষয় নিয়ে আমি কিছু কথা বলেছিলাম। তুমি আমার কথায় সম্ভবত কষ্ট পেয়েছিলে, তাই চুপ ছিলে, কিছুই বলনি আমাকে। তোমার চুপথাকা আমাকে তিলেতিলে শেষ করে দিচ্ছিল ভেতর থেকে। বারবার মাথায় একটা কথাই ঘুরছিল—এই মানুষটাকে আমি কথার আঘাত করতে পারলাম! কেন লিখে পাঠালাম এতকিছু? যা মনে আসে তা কি লিখে ফেলা যায়, নাকি লেখা উচিত? আসলে আমি তোমাকে উচিত-অনুচিতের সীমানা পেরিয়ে ভাবতাম। পরে বুঝেছি, অমন করে ভাবাটা আমারই ভুল। তারপর যে হাত দিয়ে তোমাকে মেসেজ দিয়েছিলাম, সে হাতের আঙুল অনেকটুকু কেটে ফেলেছি চাকু দিয়ে। ভয় পেয়ো না! বিশ্বাস করো, বিন্দুমাত্রও কষ্ট হয়নি। কারণ, আমার আঙুল কাটার যন্ত্রণার চাইতে তোমাকে দেয়া কথার আঘাত ছিল আমার কাছে বড় যন্ত্রণা। আত্মগ্লানি বড় কষ্ট দেয়। যে আঘাত হৃদয়ের ভেতর থেকে আসে, তা সহ্য করা খুব শক্ত। আঙুল ব্যান্ডেজ করলাম, মলম লাগালাম, আস্তেআস্তে ঠিক হয়ে গেলো, তবু মনের ক্ষতটা আর সারল না। তারপর তোমার সামনে যে দিন গেলাম সে দিন কানে ধরে মাফ চেয়েছি। তোমার মনে নেই হয়তো। অবশ্য, আমার অনুভূতি বা আচরণ নিয়ে তুমি ভাববে, অতো আশা আমি করি না। আমার দ্বারা তোমাকে কষ্ট দেওয়া হয়তো কোনদিনই হবে না। যদি নিতান্তই হয়েও থাকে, তবে ধরে নিয়ো আমি বদলে গেছি, আর ওই বদলে যাওয়ার পেছনে হয়তো সামান্য হলেও তোমার ভূমিকা আছে।
অনেক ভালোবাসি তোমাকে। বিনিময়ে আমি চাইনি যে তুমিও ভালোবাসো, চাইনি যে তুমি আমার খোঁজ নাও, তোমাকে বিয়েও করতে চাইনি, চাইনি তুমি কোনওদিনও ফোন কর আমাকে। আমি কিছুই চাই না তোমার কাছে। আমি শুধু চাই, তোমার সব চাওয়া পূর্ণ হোক। তোমার প্রাপ্তিই আমার প্রাপ্তি।
খুব কষ্ট হয়েছে এই ২ মাস ৫ দিন। খুউউউব। খুব লিখতে ইচ্ছে করলো তোমাকে, তাই লিখলাম। রাগ কোরো না, প্লিজ।
যতবার কারও সামনে যেতে নিই, ততবারই তোমার ছবিটা বুকের মধ্যে করেই নিয়ে যাই। ওখানে আর কেউ আসে, এমন সাধ্য কার? কেউ কোনওদিন তোমার এ স্থান নিতে পারবে না। আমার পৃথিবীতে তুমি অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়েই থাকবে চিরকাল। আমার পৃথিবীটা খুব ছোট। সেখানে তুমি আছ। আর কাউকেই আমার দরকার নেই। এই হৃদয়ে এতটা প্রবলভাবে তুমি আছ যে আমি সত্যি দিশেহারা। আমার ঠাঁই না আছে তোমার কাছে, না আমি যেতে পারি অন্য কারও কাছে। এমন বেঁচে থাকা যে কী নির্মম, বুঝতে পারো? ভগবান কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেন না। ভগবান তোমাকে যাকিছু দান করেছেন, তা তুমি যত্ন করে মূল্যায়ন করেছ এবং নিজের ভাগ্যকে সুপ্রসন্ন করেছ, তাই আজ তুমি সবার চোখে অনন্য হয়ে উঠেছ। আমাকেও ভগবান অনেক কিছু দান করেছেন, কিন্তু আমি তাঁর দানের মূল্যায়ন করতে পারিনি, যার ফলে ভাগ্য তো সুপ্রসন্ন হয়ইনি, বরং ভাগ্য আমাকে এখন তিরষ্কার করে চলে প্রতিনিয়তই। আমি তোমার মত সবার ভালোবাসার পাত্র হয়ে উঠতে পারিনি নিজের ভুলেই। ভগবানের দান গ্রহণ করতে হয় বিনীতভাবে, নিজের সকল অভিজ্ঞতা আর অহংকারকে বিসর্জন দিয়ে। আমার সবচাইতে বড় ভুল হল, আমি যা নিয়ে মেতে থাকি, তাকে ঘিরেই আমার সমস্ত চিন্তাভাবনা ঘুরপাক খায়। আমার হাতের নাগাল দিয়েই রত্ন খেলে, আর আমি কিনা মাটি ঢেলাকেই রত্ন ভেবে আসল রত্ন পায়ে ঠেলি। আমি যেটার পেছনে সময় দিচ্ছি, সেটা আসলেই সময় দেয়ার মত কিছু কি না, তা সঠিক সময়ে উপলব্ধি করাই আত্ম-উন্নয়নের প্রথম ধাপ।
ভাবনা: দুইশো আট।
……………………………………..
তুমি আসলে কী চাও?
এটার উত্তর দেওয়ার আগে জানিয়ে নিই, তুমি যা চাও, আমি তা চাই না। এটাই তোমার আমার মধ্যে দূরত্বের একমাত্র কারণ। আমি তোমাকে যতটা আপন ভাবি, ততটাই আপন করে রাখতে চাই। আমি চাই তুমি কী করছ, কেমন আছো, কোথায় আছো, কীভাবে আছো, আর কী অবস্থায় আছো, তার পুরোটা জানতে। আমি চাই তোমার জীবনে কোনও ঝামেলা না বাড়িয়ে তোমাকে যেভাবে আমার অংশ হিসেবে মেনে নিয়েছি, তা মেনে চলতে। তোমার বিয়ের রাতে তোমাকে একটা চিঠি লিখেছিলাম, মনে পড়ে? ওখানে কিছু কথা ছিল, কাল্পনিক বলতে পার, ধরে নিতে পার অবাস্তব, কিন্তু আমার কাছে সেটাই সত্য। ওটা শুধুই চিঠি ছিল না। ওটা স্রষ্টার কাছে আমার চোখের জলে নিবেদিত আন্তরিক প্রার্থনা ছিল। সে প্রার্থনা আজ পর্যন্ত আমি মেনে চলছি। তুমি কেন আমাকে উত্তরগুলো দাও না যা আমি জানতে চাই? আমাকে ইনবক্সে নক করতে এভাবে কেন বারণ করলে? আমার কষ্ট হয় না? খারাপ লাগে না? আমি কি অপমানিত বোধ করতে পারি না? আমাকে বলে দাও তাহলে যে, তোমার সাথে যেন আর কখনও ফেসবুকে যোগাযোগ না করি। আমি করবোও না কোনওদিন। হ্যাঁ, আমি পারবো। দেখে নিয়ো। কাল রাতে তো শুধু জানতে চেয়েছি তুমি কোথায় আছো? কেন এড়িয়ে যাও তুমি?
আমাকে কেন জিজ্ঞেস কর, আমি কেমন আছি? ওই একটা কথাই তো তোমার বলার, তাই না? আমি বলি কী, এটা আর তুমি আমাকে জিজ্ঞেস কোরো না। আমি খারাপ থেকেও ভাল আছি বললে পাছে তুমিও খারাপ থেকেও ভাল আছি বলো, এই ভয়ে আর মিথ্যে বলা হবে—এই দুই কারণে, ‘ভাল নেই’ বলে ফেলি। আর এজন্য দেখ, তোমাকে অনিচ্ছায়, কিংবা নিছকই ভদ্রতায়, দুএক সেকেন্ড বাড়তি খরচ করে দুএক লাইন বেশি লিখতে হয়। কী দরকার এমন অকারণ সৌজন্যের? তুমি আর আমায় জিজ্ঞেস কোরো না, কেমন আছি, দোহাই লাগে।
নাহয় তোমার জন্য একটুখানি
শিখে নিলেম মিথ্যে……
আমি আছি ভীষণ ভাল!
চলছে তোমার কেমন?
বৃষ্টি শেষে
ঘোমটা ছেড়ে
উঠেছে দ্যাখো রুদ্দুর
শুভ দুপুর……….
কিছুই ভাল লাগছে না। দুই পা বাঁধা, ‘শিল ট্রিটমেন্ট’ দিব। ভাবছ, এটা আবার কী? আসলে এটা আমার আবিষ্কার। দুই পা শক্ত করে কাপড় কিংবা দড়ি দিয়ে বেঁধে শিল দিয়ে ছেঁচা। ‘ছেঁচা’ কী বস্তু, বোঝো তো? ওরকম করলে সত্যিই আরাম পাওয়া যায় অনেক। বিশ্বাস না হলে ট্রাই করে দেখতে পারো। না, আসলে তুমি এটা করতে পারবে না। কেননা, পায়ে ঠিক কী টাইপের অনুভূতি হলে এটা করলে কাজে দিবে, সেরকম কিছু না হলে আরামের বদলে তুমি বরং ব্যথা পাবে।
ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে ডাক্তারকে যে ঠিক কী বলবো, কোন অসুবিধার কথা কীভাবে বললে ভাল হয়, সেটাই বুঝতে পারি না।
জানো, একবার এক ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কী সমস্যা?
বললাম, চেয়ারে বসলে আমার বসার অনুভূতি হয় না, কোনও আরাম বোধ হয় না, মনে হয় যেন আমি দাঁড়িয়েই আছি।
আমার কথা শুনে ডাক্তারের যে চেহারাটা হয়েছিল সেটা মনে পড়লে আমি এখনও সেই ডাক্তারের জন্য অসহায় বোধ করি।
নিজের মনে নিজেই হাসি হাহ্ হাহ্ হাহ্! নাহ্! কোনও সমস্যা নেই আমার। সমস্যা সব ‘মন’-এ। এক চড়ে মনের সবকটা দাঁত ফেলে দিতে পারতাম! আসলে মনেও না, মনে হয়, আমিই একটা আস্ত সমস্যা! ভেবেটেবে আবারও হাসি হাহ্ হাহ্ হাহ্!
মাঝেমাঝে কেমন যেন মন, শরীর, শরীরের ভেতরের সমস্ত কিছু—এমনকি রক্তও, সবাই মিলে একসাথে এক ‘ব্যথার আসর’ জমায়। শরীরের ভেতর রক্তের স্রোত ব্যথার স্রোত হয়ে বয়ে চলে। ওরা সবাই মিলে আসর জমায়, সে আসরে ওরা কেমন খিলখিলিয়ে হাসে। আর আমি প্রচণ্ড যন্ত্রণায় নীল হয়ে যাই, নিজের অস্তিত্বের প্রতি বিরক্তি ধরে যায়। ওদের সে আসর শেষ হলে সব ঠিক হয়ে যায়। সবকিছুই একসময় ঠিক হয়ে যায়। যতই মনে হোক কেন, এ কষ্ট ফুরোবে না কোনওদিনই, সব কষ্টই ফুরিয়ে যায়। শারীরিক কিংবা মানসিক—যতটা কষ্ট পেলে মানুষ ভাবে সে বুঝি মরে যাবে, আসলে, সত্যিটা হচ্ছে এই, তার চেয়েও অনেক-অনেক গুণ বেশি কষ্টেও মানুষ দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে দিনের পর দিন, এমনকি সারাজীবনও।
তোমাকে পাওয়ার নেশায় বাজে বকছি। কিছু মনে কোরো না।
ভাবনা: দুইশো নয়।
……………………………………..
জানো, আমার না এই মুহূর্তে তোমাকে নিয়ে ‘কৃষ্ণকলি’তে যেতে খুব ইচ্ছে করছে। চারপাশে চুপচাপ নীরবতা, মুখোমুখি দুটো কফির পেয়ালা। ধোঁয়ার সাথে বিকেল ফুরোচ্ছে। এই! যাবে? দুজনে পাশাপাশি বসে কফি খেতাম! জোরেজোরে শব্দ করে কফিতে চুমুক দিতাম! তুমি শব্দ করে কফি খেয়েছ কখনও? একবার শুধু খেয়ে দেখো! সত্যি, মজা আছে! চোখ বন্ধ করে একটা চুমুক দিয়ে উমমমমমমমম্ করে জোরে একটা নিঃশ্বাস ফেলবে, সত্যি বলছি, সারা শরীরে প্রশান্তির ছায়া বয়ে যাবে। একবার ট্রাই করে দেখো কিন্তু!!
আমার সামনে আবার ওভাবে জোরে শব্দ করে খেয়ো না যেন! তুমি ওভাবে কফি খেলে আমি আবারও ঘণ্টায় চুয়াত্তর হাজার কিলোমিটার গতিতে তোমার প্রেমে পড়ে যাবো একদম। তখন কিন্তু তোমাকে আমার জাপটে ধরতে ইচ্ছে করবে! ইচ্ছে করবে, কফিতে ভেজা তোমার ঠোঁট দুটো চেটে খেয়ে নিতে! আমি কিন্তু তখন চুপচাপ ভদ্র মেয়েটি হয়ে থাকব না বলে দিলাম। হিংস্র হয়ে উঠব। আমাকে শান্ত করতে তোমার কফি ফেলে আমাকে নিয়েই পড়ে থাকা লাগবে। জানি, শরীরী কামনা মেটানোর হিংস্রতা তোমার ভাল লাগে, তবু বলছি, তুমি বরং কফিটুকু এনজয় কর। আমি চলে যাচ্ছি।
এই! বলো না, যাবে ‘কৃষ্ণকলি’তে? গেলে কী হয়? যাবে নাতো? জানতাম, যাবে না!
আচ্ছা থাক, যেতে হবে না। তবে একবার যেয়ো। একা-একা। সেদিন শব্দ করে কফিতে চুমুক দিয়ো কিন্তু মনে করে। সাথে যদি কেউ থাকে, মানে, তোমার বউ কিংবা প্রেমিকা, ও যদি এতে রেগেও যায়, আগুন ধরিয়ে দিতে চায় সবখানে, তবে একটু রাগুকই না! একটু রাগলে কী এমন ক্ষতি হয়, বলো তো?
আচ্ছা, ‘কৃষ্ণকলি’ নামটা অনেক সুন্দর না? তুমি আমায় কৃষ্ণকলি বলে ডেকো। মনেমনে ডাকলেও চলবে।
আবারও প্রেমে পড়েছি তোমার, বাবু! এতবার প্রেমে পড়লে নির্ঘাত আমাকে পাবনায় দৌড়াতে হবে! প্লিজ, আমায় তোমার বুকে লুকিয়ে রাখো!
শুন না, বুকটা একটু প্রশস্ত করে দাও না? তোমার বুকের লোমের ভাঁজে গুটিসুটি মেরে আর কতক্ষণ থাকব? এবার একটু আরাম করে ছড়িয়ে শোবো।
এই এই এই! আমায় তোমার শরীরের একটুখানি ঘ্রাণ ধার দেবে এখন? মানে, এক্ষুনিই! প্লিজ, দাও না! সত্যি বলছি, পরেরবার দেখা হলেই ফেরত দিয়ে দেবো, মানে, দেখা হলে যতটা নিতাম, তার চেয়ে যতখানি আজ দেবে ততখানি কম নেবো। শোধবোধ। কী? হবে না, বলো? কী হলো? দাও নাগো!
আমি বড্ড বেশি জ্বালাচ্ছি, না? আসলে বিশেষ একটা মুহূর্তে আমি খুব ডিপ্রেসড থাকি, মনমেজাজ কেমন জানি হয়ে যায়! তাই হয়তোবা! আশা করছি, আসছে পরশু থেকে আমি আবারও স্বাভাবিক হয়ে যাবো। রিয়েলি সরি, বাবু! আমি অনুতপ্ত! মাথার মধ্যে কিছু অর্থহীন চিন্তা ভাবনা ঘোরাফেরা করছে, একটু বেশি-বেশিই করছে। ইদানিং হঠাৎ কেন এমনটা হচ্ছে, আমি তা পরিষ্কার বলতে পারব না। আমার বারবারই মনে হচ্ছে আমার চলার পথ শেষ, আমার বুঝি যা দেয়ার, সব দিয়ে দিয়েছি। আমার সব ফুরিয়ে গেছে। আমি আজ রিক্ত। আমার আর দেবার কিছুই নেই। এখন আমার যাওয়ার সময়। আচ্ছা, কাল, পরশু, বা তার পরের দিনটা কি আমার শেষ দিন হতে পারে? নিশ্চয়ই পারে! তবে সেটা আজ নয় কেন? আজ আরও কিছু দেখতে মন চাচ্ছে? মানে, কিছু একটা ঘটবে, যা দেখতে আমি বেঁচে থাকতে পারি? কিন্তু তার জন্য যে প্রস্তুত থাকা চাই! না, আজ আমি ততটা প্রস্তুত নই।
একটা এক্সপেরিমেন্ট করলাম আজকে। বাথরুমের বড় বালতিটায় পানি ভরে তার মধ্যে আমি ডুবতে পারি। বেশ ভালই পারি। ওপর থেকে যদি শাওয়ারটা ছেড়ে নিই, বেশ হয়। চলে যাওয়ার জন্য পানিই তো দারুণ আশ্রয়, তাই না?
পৃথিবীতে মৃত্যুই মানুষকে সবচাইতে বেশি স্বার্থপর করে তোলে। মৃত্যুর সময় সে আর কারও কথা চিন্তা করে না। আর যে চিন্তা করে সে কখনও মরে না।
কথাগুলো ঠিক হল না বোধহয়। মৃত্যু তো অবধারিত। তাই মৃত্যুর আগে মৃত্যু নয়। আত্মঘাতী যে হয়, সে নিশ্চয়ই খুব স্বার্থপর। তা নাহলে সে আত্মহননের চিন্তা করতে পারত না। যে নিজে-নিজে মরে, সে নিজের কাছ থেকে পালিয়ে যেতেই মরে। মরে গিয়ে বাঁচতে চায় বলেই সে মরে। এমন মানুষ আর যা-ই হোক, নিঃস্বার্থ কিছুতেই নয়।
এসব কেন বলছি আমি? আসলে এই মুহূর্তে অন্য কোনও চিন্তাই আমাকে এতটা স্বস্তি দিতে পারছে না যতটা দিতে মৃত্যুচিন্তা পারছে। আমি এই পৃথিবীর প্রতিটা মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যেতে চাইছি, কেবল এই ভাবনাটাই স্বস্তি দিচ্ছে আমাকে। তুমি চাইলে আমার এসব কথাকে প্রলাপ কিংবা স্বগতোক্তি নামে ডাকতে পারো।
তোমাকে এভাবে চাওয়াটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল! যাকে চাওয়া ঠিক নয়, তাকেই চাইতে খুব ইচ্ছে করে। জীবন এমন কেন?
তুমি ভাল অভিনেতা ছিলে, কিন্তু আমি ভাল দর্শক হতে পারিনি, সেটা আমার ব্যর্থতা, ওতে তোমার কোনও দোষ নেই। থিয়েটারের নায়ককে দূর থেকেই দেখতে হয়, কক্ষনো তার কাছে যেতে নেই। কাছে গেলেই বিপদ! তখন তার হাত ধরে ফেলতে ইচ্ছে করে। সে হাত ধরে নাচতে ইচ্ছে করে—সে যেমনি নাচায়, তেমনি করে। সে নাচ বড় সর্বনেশে নাচ! একবার সে নাচে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া মানেই মৃত্যু অবধারিত! ওতে অবশ্য নায়কের কিচ্ছুটি এসে যায় না। ও যে নটরাজ মাত্র, প্রেমিক নয়!
আমার মনে প্রশ্ন জাগে, আমার আসলে কে আছে? এমন কেউ কি আছে যার হাত আমি নির্ভাবনায় সারাজীবনের জন্য ধরতে পারি? এই পৃথিবীতে যার একান্ত কেউ নেই, পরিবারকে দেয়ার ও পরিবারের কাছ থেকে পাওয়ার কিছু নেই, তার জীবনেরও কোনও মূল্য নেই। সে জীবন পৃথিবীর কাউকে কিচ্ছু দিতে পারবে না। মানতে যতো কষ্টই হোক, এটাই সত্যি!
ভাবনা: দুইশো দশ।
……………………………………..
স্ক্রিনশটটা খেয়াল করে দেখো। গতকাল অ্যাকাউন্টটা ডিঅ্যাক্টিভেট করতে গিয়ে ‘কারা আমাকে মিস করবে’ ফেসবুকের এই লিস্টে তোমার বামে যারা আছে, এরা প্রত্যেকে আমার পরিবারের এক একজন সদস্য। আমি যদি ভুলে নরকেও চলে যাই কোনও অপরাধের শাস্তিস্বরূপ, তখন আমাকে তীব্র ভর্ৎসনা করতে যেমন ওদের বাধবে না, তেমনি আমাকে ওখান থেকে টেনে তুলতেও ওদের থাকবে না কোনও ক্লান্তি! সেটা আমি জানি। পৃথিবীতে এরাই আমার সবচাইতে আপন। কথা সেটা নয়। কথা হল, এই লাইনে ওদের সাথে তুমি ঢুকলে কেমন করে! তবে বুঝে দেখো, তোমাকে আমি কোথায় রাখি! তুমি মুখে যা-ই বলো না কেন, এইটুকু বুঝি, আমার চোখে তুমি যে কী, তা তুমিও নিশ্চয় আমার চেয়ে কম জানো না!
এখন মৃত্যু আরও কাছের, রোড অ্যাক্সিডেন্ট আছে—কত সহজেই অ্যাক্সিডেন্ট হয়! হাতের কাছে নদী আছে, চাইলেই চিরদিনের জন্য ডুব দিয়ে দেয়া যায়। বিশ্বাস করো, তবু এখন আসলেই সেভাবে আর চলে যেতে ইচ্ছা করে না। এই জীবনে কাউকে যে জড়াবো, সেও আর হয়ে উঠবে না। জানো তো, এই গেলো বছর, ওই নিদারুণ তারিখে ওই শুভলগ্নে আমি জায়নামাজে বসে কী বলেছিলাম? সুখে-দু:খে, আনন্দে-বেদনায় আজ থেকে আমি কেবল তোমারই রব। আর কারও নয়। তোমাদের মাঝে লীন হয়ে রব প্রতিদিনের প্রতিটি স্পর্শে! কেউ জানবে না! কী আর করবো, বলো! এছাড়া আর কোনও উপায়ও ছিল না যে! তাই আজ যা ইচ্ছা, যা মনে আসছে, তা-ই তোমার কাছে প্রকাশ করছি, জানি আমার সমস্ত অনুভূতির তুলনায় এ কিছুই নয়, অতি সামান্য। আমি তোমাকে এভাবেই পেয়ে এসেছি, আমার নিজস্ব অনুভবে এতদিন ধরে। সেখান থেকে আমি সরি কীকরে, বলো? কিন্তু এই পাওয়া যে এত বেশি জ্বালাবে, তা বুঝিনি। মাঝেমাঝে সত্যি করে তোমাকে ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছা হয়। একেবারে সত্যিকারের, নিজের মত করে। অ্যাত্তোগুলা চুমু আর অ্যাত্তোগুলা আদর করে তোমার গলা জড়িয়ে ধরে তোমার বুকের উপর গুটিসুটি হয়ে একটা ছোট্ট ঘুম দিলাম মনেমনেই। ঠিক আছে? সরিয়ে দেবে নাতো আমাকে? দিলে দাও। যাবো না!
রাত বাড়ছে…
রাতের, প্রায় দুপুর হয়ে যাচ্ছে…
রাত, চুলোয় রান্না বসিয়েছে…
ছোটমাছ ভাজা হবে…
কাঁঠালবিচি দিয়ে শুঁটকি ভর্তা করা হবে…
আমার কাঁঠালবিচির পোড়াপোড়া ঘ্রাণটা নিতে ইচ্ছে করছে…
কিন্তু আমার খুব ঘুম পাচ্ছে…
যদি কখনও পানিতে পড়ে যাও, তখন তোমাকে যদি কেউ বাঁচাতে চেষ্টা করে, তবে একটা কথা খুব করে মনে রেখো—কখনওই সেই মানুষটার উপর সম্পূর্ণ ভর দিয়ো না। সেই মানুষটার হাতটা ধরে রেখে, হাত-পা ছড়িয়ে জাস্ট ভেসে থেকো, মানে সেই মানুষটাকে সুযোগ দিয়ো যেন উনি তোমাকে বাঁচাতে পারেন। বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায়, সাঁতার না-জানা মানুষটা সাঁতার জানা মানুষটার উপর এমনভাবে ভর করে বাঁচতে চায় যে, মানুষটা অন্যকে বাঁচাবে কী, নিজের জীবন নিয়েই টানাটানি করতে-করতে হাঁপিয়ে ওঠেন! তোমাকে এ পরামর্শ দেয়ার কারণ, তুমি সাঁতার জানো না। কেন দিলাম? আমার পৃথিবীর একমাত্র সূর্য তুমি! তুমি আলো দেয়া বন্ধ করলে সব আঁধারে ঢেকে যায়।
আচ্ছা, সবই যখন জানো তুমি, তখন এভাবে বারেবারে আমাকে ফিরিয়ে দিয়ে লাভ কী, বলো? আমার পৃথিবী মোমবাতি, কুপি আর হ্যাজাকের আলোতে সাজতে-সাজতে ক্লান্ত বড়! আইপিএস-জেনারেটর অন্ধকার সরায় হয়তো, কিন্ত সেখানে আসলেই কি প্রাণ থাকে, বলো? তারচে’ আকাশের আলো কত ভাল! আমার আলো চাই, আলো! তবে সে আলো একমাত্র তোমার কাছ থেকে আসে, যা নিয়ে আমি বেঁচে আছি।
আমি কৃত্রিম ঝর্ণায় সুখ খুঁজি না। পাহাড় কেটে বয়ে চলা নদীই আমায় টানে বেশি। আমি গান শুনি না, পাখির কুজন আমার ঘুম ভাঙায়, আমি তাতেই খুশি। যদি কখনও দেখি এসবকিছু শেষ—এই ঝর্ণা, নদী, পাখি, আর আমার আকাশ—সেদিন বেঁচে থাকার আর কোনও মানেই থাকবে না!
আকাশের সাথে গল্পে মাতি, ওটাই আমি সব থেকে ভাল পারি। কিন্তু হঠাৎ যদি আকাশ ভাবে, আর কোনও উত্তর দেবে না আমাকে, তবে কী নিয়ে বাঁচবো আমি? আমি জানি, যেভাবে বেঁচে আছি সেটা আসলে ঠিক জীবন নয়। এ জীবনের অর্ধেক গড়া কল্পনায়, বাকি অর্ধেক বাস্তবতায়। দূর থেকে দেখার জন্য সে জীবন হয়তো মন্দ না, আমি হয়তোবা সত্যি অতো মন্দ নেইও, তবু তেমন জীবনটাও ধরার জন্য একটা হাত খোঁজে। কল্পনায় আমি সবসময়ই তোমায় ধরে বাঁচি, তবু কখনও কল্পনারা জোর করে ধরতে চায় বাস্তব মূর্তি, রঙগুলি হয়ে উঠতে চায় আরও বেশি রঙিন। আমি স্বপ্ন দেখি, আর সেই স্বপ্নেই সামনে এগোই, একটু হেসে অল্প বাঁচি।
উত্তর যদি না-ই দেবে, তবে আর ডেকো না এই আমাকে! হারিয়ে যাবো, সে-ই ভাল। আমাকে এড়িয়ে চলো। একবারও ভাবো না আমি চলি কীভাবে? অন্য কেউ আমাকে দেখুক, সেটা পর্যন্ত চাই না, অথচ যাকে চাই সে কেবলই সাবধানে এড়িয়ে যায়! তুমি আমার সাথে কেন কথা বল না? আমি সারাদিন ডেকে যাই, আর তুমি চুপচাপ বসে থাক। হোয়াটস্অ্যাপ, ইমো, ভাইবার-এর মতন এখন মেসেঞ্জার-এও আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছো। আচ্ছা, যদি আমি এখানে আসা ছেড়ে দিই, তবু তোমার কিচ্ছু মনে হবে না, তাই না? তোমার সারাদিনে কিছুই কি ঘটে না, যা আমাকে জানাতে ইচ্ছে করে? নিজ থেকে গল্প কর না কেন? কালকে বাসায় ফেরার পর থেকেই মাথা ঝিম ধরে আছে। আর তুমি কিনা মাথাটা আরও খারাপ করে দিচ্ছ! তুমি এমন কেন? আমি জানি, আমি একা নই, তুমি আছই সবখানে আমার সাথে। ক্ষুধা পেয়েছে, খাবো। তুমি খেয়ে নিয়েছো নিশ্চয়? ঠান্ডা লাগলেও আজ মিডনাইট-বাথই নেবো ঠিক করেছি। কাল ভোরে আবার কলেজে ছুটতে হবে। এখনও রাগ করে আছ? এখন থেকে আর অপরিচিত কারও সাথেই কোনও কথা বলব না। ঠিক আছে? এবার তো কিছু বলো! ভুল করেছিলাম। সব কিছু সাদা চোখে আর দেখব না। গাড়িতে ঘুমাবোও না। ঠিকাছে? কিছু বলো না! গত সেমিস্টারে ছোটবোনের বিয়ে ছিল। ৩ ঘণ্টার পরীক্ষা ১.৫ ঘণ্টায় দিয়ে বের হয়ে আসতাম। এই সেমিস্টারে মিডটার্মেও জ্বর। আজকেও সর্দিজ্বর। হাঁচি দিতেদিতে কোনও রকমে দুই ঘণ্টা পার করে বের হয়ে এসেছি। তবুও হান্টার কমিশনের রিপোর্ট বা উডের ড্যাসপ্যাচ-এর হদিস বের করতে পারলাম না। তবে এ দুই সেমিস্টারে আমিই প্রথম ব্যক্তি যে সবার আগে হলত্যাগ করেছে! আর শোনো, আমার ফটোফেস ভাল না, তুমি জানো। জ্বর থাকলেও আর মাথা ভর্তি তেল হলেও আমাকে দেখতে কিন্তু খুব খারাপ লাগছিল না, ছবিতে যতটা পচা দেখছ, তার চেয়ে অনেক ভাল লাগছিল সামনাসামনি। তাছাড়া, তোমাকে এই যে ছবিগুলি পাঠালাম, সেগুলি একরকম না দেখেই আন্দাজে ক্লিক করেছি। বুঝেছো?
কিছু প্রশ্ন করছি। উত্তর দাও।
প্রশ্ন এক। আমি যে এতকিছু বলি তোমার কাছ থেকেও কিছু শোনার আশায়, বোঝো না? কিছুই জানাও না কেন?
প্রশ্ন দুই। ভাল ছেলে একটা! আর আমি তো পচা মেয়ে, তাই আমাকে কিছুই বলতে মন চায় না, না?
প্রশ্ন তিন। কিছু কি বলবো তোমায়? তোমার লেখা নেশা ধরিয়ে দিয়েছে। সকাল থেকে কতবার যে তোমার ওয়াল চেক করেছি, ভয়ে ফোনে কিছু বলতেও পারিনি। শূন্যতা ঘিরে ধরে তোমার লেখা না পেলে! আর কত নেশা ছড়িয়ে দেবে আমার মাঝে?
প্রশ্ন শেষ। শুধু একটা কথা, তোমার প্রথম কাজ হল লেখা, তারপর অন্যকিছু, বুঝলে হাঁদারাম? আমাকে নিয়ে ভয়ের কিছু নেই, আমি রাগ, অভিযোগ, অভিমান কিছুই করব না! আর আরেকটা শেষকথা আছে। ‘এই কাজটা শেষ করে ফোন করব’—এই কথাটা আর কক্ষনো বোলো না, প্লিজ। তোমার যে কখনওই ফোন করতে মনে থাকে না, প্রিয়। অর্থহীন অপেক্ষা খুবই বিরক্তিকর!