সুখ

বিয়ের ছয় বছর পর যখন বাপের বাড়ি গেলাম প্রথম বারের মতো,
ওরা আমায় জিজ্ঞেস করল,
ভালো আছিস তো, মা?




এই একঘেয়ে প্রশ্নের উত্তরে হাসতে হয় কি কাঁদতে হয়, তা আমি আর জানতাম না।
ভেতর থেকে বুকফাটা কান্না এলেও, কখনও কখনও কাঁদতে নেই, চুপচাপ তা গিলে ফেলতে হয়।
কী হবে তাদের সামনে কেঁদে, আমার ব্যক্তিগত অশ্রুর চাইতে যাদের অভিধানের ভালো-ঘর বেশি ভালো?




আমি ভাবতে লাগলাম, কী বলা যায়! কী বলা যায়!
বলব নাকি...এই ধরো, রাত ৮টায় ভালো থাকি, আবার সোয়া ৮টা বাজলেই শুরু হয় খারাপ থাকা?
না কি বলব...সপ্তাহ কিংবা দিন ধরে প্রশ্ন করলে ভালো হয়, উত্তরটা সহজে দিতে পারব! মানে বলছিলাম কী, শেষ কবে পর পর দুই দিন, কিংবা ভাগ্য নেহায়েত ভালো হলে পর পর দুই সপ্তাহ ভালো ছিলাম, মনেই তো আসছে না!




হঠাৎ দেখি, আমাকে চুপ থাকতে দেখে ওরা সবাই আমার দুই সন্তানের দিকে তাকিয়ে আছে।
আমার মেয়েকে নিজের কোল থেকে ওর দাদুর কোলে দিয়ে সারা চোখে-মুখে দারুণ তৃপ্তির হাসি ছড়িয়ে দিয়ে হাসিমুখে নীরবতা ভাঙলাম...মা, তোমার নাতিকে এবার স্কুলে দিলাম।
ছেলের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বললাম, বাবা, দিদাকে "হুইলস অন দ্য বাস গো" শুনিয়ে দাও তো!




দেখলাম, এই বাড়ির একমাত্র মেয়েটিকে সুখে থাকতে দেখে
সবার মধ্যে আনন্দের ফোয়ারা বইছে।