শ্রাবণের সতেরোতে

তুমি আর তুমি ভালো থাকবে—
হয়তো তাজমহলের মতন, নয়তো
আরও সুন্দরভাবে।




কেন এমন হয় সব কিছু?
মাঝে মাঝে মনে হয়, কিছুই বুঝি না…




অথচ সব কিছু ভুলে যাই—
সমুদ্র কেমন, বাতাসের তীব্রতা কেমন,
আকাশের নীল কতটা সত্য,
চন্দ্রপ্রভায় কতটা সুখ মাখানো,
মৌরিবনে কয়টা বিকেল লুকিয়ে,
বেহুলার বাঁশি কতখানি পোড়াতে জানে,
এসব বহুদিন হলো আমার জানা হয়নি।




আসলে আমি সত্যের সাথে হাঁটিনি কখনও,
আমাকে পাবে গভীর রাতে ব্রথেলে!




কেন?
মানুষ নিরেট মিথ্যে হয় না?
হয় তো! বরং
মানুষ কখনও নিরেট সত্য হয় না।
ছায়ায়-ঢাকা কিছু গোপন অসুন্দর থাকে!
. . . থাকে তো!




রাম-লীলার গভীরে সতী নারী হেঁটে গেলে,
তুমি বুঝি নীল গদ্য লেখো?




সুখের গল্পে ধীরে ধীরে মুঠোয় মুঠোয় বিষাদ ঢালো…
তুমি যেন কে?
জলাঙ্গীর তীর ঘেঁষে হেঁটে-বেড়ানো
পোড়ো এক নারী!




সব সুখ যে একরকম হয় না,
হয়তো, নারী, সুখের আকালে ভুগছিলে,
নয়তো আমার অনেক বিলাসী দীনতা ছিল,
শুধু এক অগ্নিকন্যা নিঃশব্দে কী যেন বলে গেল!




তারপর,
সোনামানুষ, কতটা ভালো আছ?
জানি, তোমার গোপনগৃহেও নীল মানুষ বাস করে।
আমি আজন্ম মূর্খ পথিক,
সেই গৃই তবে আমার কেন হবে!




কোনোদিন যদি হঠাৎ পথে দেখা হয়ে যায়,
মুখোমুখি আমি নিঃশব্দে তাকিয়ে কী বলব?
. . . চলো, একপশলা বৃষ্টি হয়ে যাক!




কেন জানি মনে হয়, এবার ফিরে যাই।
আকাশটা অন্ধকার, সূর্যের সঙ্গে চাঁদটাও নিখোঁজ;
শুধু সেই মেয়েটি গেয়ে যায়…
নষ্ট ভ্রমর, এ-পাড়ায় আর এসো না।




আচ্ছা, তুমি তাজমহল চেনো?
কী অদ্ভুত! মানুষ, মানুষের মৃত্যুতেই সমৃদ্ধ হয়!




ঠিক কতখানি মৃত্যুর নাম তাজমহল বলতে পারো?
সংস্কৃতি বোঝে না, অথচ শ্রেষ্ঠত্বের গল্প তার মগজে!




সে যাক, বলছিলাম তোমার কথা।
তুমি আমার প্রিয়সুন্দর অলকা-অন্ধকার,
একগুচ্ছ সুরলহরি বয়ে যায় গহিনে তার,
মেরুন আলোয় সোনালি বাহার।




নীল, পৃথিবীর কিছু মানুষ খুব দরদি থাকে,
ওদের আল-ভেঙে-যাওয়াটা মানতে
আমার খুব কষ্ট হয়।




জীবনের সময় থেকে ছুটি নিচ্ছি;
মনে হয়, গন্তব্য আর বেশি দূরে নয়।




তুমি এবং তোমাদের সময়গুলো সুন্দর থাকুক।
জলজ শরীরে সরীসৃপ যেমন থাকে,
আমি সেই নৈর্ব্যক্তিক অবেলা-মানুষ হয়ে যাই;
হয়তোবা
নিঃশব্দেই হেঁটে যাব পাশ দিয়ে, শুধু চিনবে না।




তুমি তরুণ-সবুজ, চিরায়ত সুন্দর,
জীবনের সব অক্ষে সফল মানুষ।




ভালো মেয়ে, ভালো থেকো।
অনেক সুন্দর একটা প্রকাণ্ড পূর্ণিমার মতন জীবন হোক তোমার।
আররেকজন বসে বসে সেই পূর্ণিমার নির্যাসটুকু খুঁটে খুঁটে,
নাহয় একটু দুঃখনীল মানুষ হয়ে রবে।




তুমি যদি ভালো থাকো, পৃথিবীটাও ভালো থাকবে,
আর . . .
আমিও।




শ্রীপুর
শ্রাবণের সতেরো
তারিখটাও কি লিখব?
না, থাকুক…