শৈব কালী: পঁয়ত্রিশ



মাণ্ডূক্য উপনিষদের প্রথম মন্ত্রে বলা হয়েছে—“ওমিত্যেতদক্ষরমিদং সর্বং তস্যোপব্যাখ্যানং” অর্থাৎ, ওম্‌কার বা প্রণবই এই সমগ্র বিশ্বচেতনার প্রতীক, আর এই ওম্‌কারের মধ্যেই ব্রহ্মের চারটি পদ বা অবস্থা নিহিত। এই চারটি পদ হলো—বৈশ্বানর, তৈজস, প্রাজ্ঞ, এবং তুরীয়।

প্রথম পদ বৈশ্বানর—যা জাগ্রত চেতনার প্রতীক। এখানে আত্মা বহির্মুখ হয়ে ইন্দ্রিয় দ্বারা জগতকে উপলব্ধি করে। এটি “স্থূল” স্তর, যেখানে চেতনা নিজেকে দেহ, কর্ম ও জগতের সঙ্গে একাত্ম মনে করে।

দ্বিতীয় পদ তৈজস—যা স্বপ্ন অবস্থার প্রতীক। এখানে চেতনা অন্তর্মুখ হয়, জাগতিক ইন্দ্রিয় বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু মানসিক চিত্ররূপে সৃষ্টি অব্যাহত থাকে। এটি সূক্ষ্ম স্তর, যেখানে জগৎ মনের মধ্যে প্রকাশ পায়।

তৃতীয় পদ প্রাজ্ঞ—যা সুষুপ্তি অবস্থার প্রতীক। এখানে চেতনা কোনো বাহ্য বা অন্তর প্রতিচ্ছবি ধারণ করে না, কিন্তু আত্মা গভীর শান্তিতে লীন থাকে। এটি কারণ স্তর, যেখানে অজ্ঞানের বীজ রয়ে যায়—অচেতনতার মধ্যেও চেতনা সুপ্ত অবস্থায় বিদ্যমান।

চতুর্থ পদ তুরীয়—যা তিন অবস্থার অতীত। এটি অদ্বৈত চেতনার নিখাদ স্বরূপ, যেখানে না জাগ্রত, না স্বপ্ন, না নিদ্রা—শুধু বিশুদ্ধ আত্মস্বরূপ অবশিষ্ট। শঙ্করাচার্য একে বলেছেন—“তুরীয়ং সর্বোপাধি-বিরক্তম্‌”—অর্থাৎ, তুরীয় পদ সকল উপাধি বা সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্ত। এখানে আত্মা আর ব্যক্তি নয়, সে নিজেকে ব্রহ্মরূপে চিনে।

এইভাবে “চতুর্পাদ ব্রহ্ম”—এই চার পদ মিলে ব্রহ্মচেতনার সম্পূর্ণ মানচিত্র গঠন করে। প্রথম তিন পদ আপাতভাবে দ্বৈত—যেখানে চেতনা কখনো জগতে, কখনো মনের মধ্যে, কখনো অচেতন শান্তিতে থাকে। কিন্তু চতুর্থ পদে সব ভেদ লুপ্ত হয়—চেতনা নিজেকে নিজের মধ্যেই চিনে ফেলে। এখানেই জ্ঞান, চেতনা ও আনন্দ একাকার হয়ে যায়—সৎ-চিত্‌-আনন্দ।

অদ্বৈতের দৃষ্টিতে এই “পদ”-গুলি কেবল মানসিক অবস্থা নয়, বরং অস্তিত্বের স্তর। জাগ্রত, স্বপ্ন, সুষুপ্তি ও তুরীয়—এই চার স্তরই চেতনার বিভিন্ন ঘনত্ব। তিনটি স্তরে চেতনা মায়ার আচ্ছাদনে, আর চতুর্থ স্তরে সেই আচ্ছাদন সম্পূর্ণ বিলীন। তাই বলা হয়, “তুরীয়ং পদম্‌ একম্‌”—চতুর্থ পদই একমাত্র সত্য, অন্য সব তার প্রতিফলনমাত্র।

অদ্বৈত বেদান্তে “ওম্‌কার”-এর তিন ধ্বনি (অ, উ, ম) এই প্রথম তিন পদকে নির্দেশ করে, আর ওম্‌-এর পরের নিঃশব্দতা (অমাত্রা) নির্দেশ করে তুরীয় পদকে। সেই নিঃশব্দতা ব্রহ্মের নিরাকার স্বরূপ—যেখানে শব্দ থেমে যায়, ধারণা বিলীন হয়, আর থাকে কেবল বিশুদ্ধ উপস্থিতি।

তান্ত্রিক বা কাশ্মীর শৈব ব্যাখ্যায় এই চার পদ আরও বিস্তৃত অর্থ পায়—যেমন আণবপদ, শাক্তপদ ও শাম্ভবপদ—যেখানে চেতনার সীমাবদ্ধতা থেকে পরিপূর্ণতার দিকে যাত্রা ঘটে। আণবপদে আত্মা নিজেকে ক্ষুদ্র মনে করে, শাক্তপদে শক্তি জেগে ওঠে, আর শাম্ভবপদে আত্মা উপলব্ধি করে—“আমি-ই শিব।”

অদ্বৈত বেদান্তে “পদ” মানে কোনো স্থূল স্থান নয়, বরং চেতনার আত্ম-অন্তর্গমন ও আত্ম-উন্মোচনের স্তর। প্রথম তিন পদ হলো আচ্ছাদিত চেতনা—যা ঘনত্বের স্তর; চতুর্থ পদ হলো উন্মুক্ত চেতনা—যেখানে সব আচ্ছাদন ভস্ম। এই চতুর্থ পদই মুক্তি, জ্ঞান ও আত্মবোধের চূড়ান্ত ধাপ—যেখানে আত্মা জাগ্রত হয় এবং উপলব্ধি করে—“নেহ নানাস্তি কিঞ্চন” (বৃহদারণ্যক উপনিষদ, ৪.৪.১৯ এবং কঠ উপনিষদ, ২.১.১১)—এই জগতে কোনো ভেদ নেই; যা আছে, আমি-ই তা।

কাশ্মীর শৈব দর্শনের দৃষ্টিতে “ভয়” মানে চেতনার নিজের স্বাধীনতা ভুলে যাওয়া। স্পন্দকারিকা (১.১০)-য় উত্পলদেব বলেছেন—“যদা ভয়ং তদা ন স্পন্দঃ”—যেখানে ভয়, সেখানে স্পন্দ নেই। শিবচেতনা যখন নিজের সীমিত রূপে, “জীব” হিসেবে আত্মবিস্মৃত হয়, তখন তার মধ্যে কর্তা-ভাব ও ফল-আসক্তি জন্ম নেয়, এবং সেখান থেকেই ভয় উৎপন্ন হয়। কাশ্মীর শৈব মতে, ভয় হলো চেতনার স্বাতন্ত্র্য বা সর্বশক্তিত্বের আচ্ছাদন; চেতনা নিজের সার্বভৌম স্বাধীনতা হারিয়ে নিরুপায় মনে করে নিজেকে। “মা ভৈঃ” এখানে শিবচেতনার প্রত্যভিজ্ঞার আহ্বান—“নিজেকে চিনো, তুমি-ই শিব।”

ঈশ্বরপ্রত্যভিজ্ঞা (১.৫.৮)-এ উত্পলদেব বলেন—“চিদেব চিদ্রূপতয়া বিবর্ততে স্বাতন্ত্র্যেন দ্বৈতাভাসনা ভবতি”—অর্থাৎ, চেতনা নিজের চেতনাতেই প্রকাশিত হয়, আর নিজের স্বাধীনতায় দ্বৈততার আভাস সৃষ্টি করে। কিন্তু এই দ্বৈততা সত্য নয়; এটি কেবল লীলা। তাই যখন চেতনা নিজের আসল স্বরূপে ফিরে যায়, তখন সে বুঝতে পারে—ভয় করার কিছুই নেই, কারণ সে নিজেই বিশ্ব, নিজেই শিব, নিজেই কালীর চেতনা। অভিনবগুপ্ত এই অবস্থাকে প্রকাশ করেছেন এভাবে—“ভয়ং ন কিঞ্চিদস্তি তত্র, যত্র সর্বং স্বরূপতঃ”—যেখানে সব কিছু নিজেরই রূপ, সেখানে ভয় বলে কিছু নেই।

শাক্ত দর্শনে “মা ভৈঃ” হল দেবীর করুণা-মন্ত্র, মাতৃবাণী। কালী বা দুর্গার অভয়মুদ্রা সেই করুণার দৃশ্যমান প্রতীক—যেখানে মা নিজেই সন্তানকে বলেন, “ভয় কোরো না, আমি আছি।” কিন্তু এর দার্শনিক অর্থ আরও গভীর। কালী চেতনার করাল রূপ—যেখানে মৃত্যু, ধ্বংস, ও অন্ধকার আলাদা কোনো বাস্তব নয়, বরং চেতনারই অন্তর্গত গতি। ভয় জন্মায়, যখন আমরা মৃত্যু ও ধ্বংসকে আলাদা বাস্তব বলে মনে করি; কালী শেখান, মৃত্যু-ধ্বংস সবই আমারই খেলা।

তাঁর রক্তস্নাত মুখ ও শ্মশাননৃত্য কোনো হিংসা নয়, বরং মায়ার মুখোশ ভাঙার প্রতীক। তাই যখন মা কালী বলেন “মা ভৈঃ”, তিনি কেবল আশ্রয় দেন না—তিনি আমন্ত্রণ জানান আত্মবিসর্জনে: “তুমি যা ধরে আছ, তা ছেড়ে দাও; কারণ তুমি যা ভাবছ, তা তুমি নও।” এই আত্মবিসর্জনই মুক্তি। শাক্ততত্ত্বে একে বলা হয় মহাভয়াতীত অবস্থা—যেখানে জীবন ও মৃত্যুর পার্থক্য মুছে যায়, কেবল চেতনার অনন্ত লীলা থাকে। শ্মশানে দাঁড়িয়ে মা কালী যখন বলেন “মা ভৈঃ”, তখন তাঁর সেই কালো রূপ মৃত্যুর ভয়কে মাতৃগর্ভে রূপান্তরিত করে—অন্ধকারই তখন চেতনার আলো হয়ে ওঠে।

কালীর রক্তস্নাত মুখ, শ্মশাননৃত্য এবং শিবের বক্ষের উপর তাঁর দাঁড়ানো—এই তিনটি প্রতীক একসাথে মিলিয়ে এক গভীর দার্শনিক সত্য প্রকাশ করে। বাহ্যদৃষ্টিতে এগুলি ভয়ংকর ও ধ্বংসাত্মক মনে হলেও, আসলে এগুলি চেতনার মুক্তি, মায়ার বিলয় এবং পরম ঐক্যের প্রকাশ।

অদ্বৈত বেদান্তে কালী সেই শক্তি, যিনি ব্রহ্মের মায়াশক্তি হিসেবে কার্যকর। তাঁর রক্তস্নাত মুখ অহংকার, আসক্তি এবং অবিদ্যার বিলয়ের প্রতীক। এখানে রক্ত মানে জীবনের রস, যা আত্মজ্ঞান লাভের অগ্নিতে পুড়ে শুদ্ধ হয়। কালী যখন শ্মশানে নৃত্য করেন, সেটি জগতের অনিত্যতা ও মৃত্যুর সত্যকে নির্দেশ করে। শ্মশান এমন স্থান, যেখানে সব রূপ, পরিচয় ও সম্পর্ক মুছে যায়—যা অবশিষ্ট থাকে, সেটিই চিরন্তন চেতনা। এই নৃত্য তাই সংহার নয়, বরং মায়ার পর্দা সরে গিয়ে নগ্ন সত্যের উদ্ভাস।

কাশ্মীর শৈব দর্শনে, শিব হলেন নিস্তরঙ্গ চেতনা, আর কালী সেই চেতনার স্পন্দিত শক্তি। তাঁর রক্তস্রোত মানে চেতনার অনন্ত গতিশীলতা—সৃষ্টি ও লয় এক অবিচ্ছিন্ন চক্রে ঘটে চলেছে। শ্মশান তাঁর নৃত্যের ক্ষেত্র, কারণ সেটি সীমাহীন চেতনার প্রতীক, যেখানে সব কিছু নিজের স্বরূপে ফিরে আসে। আর তিনি যখন শিবের বক্ষে দাঁড়ান, সেটি নির্দেশ করে যে, চেতনা ও শক্তি দুই নয়। শিব শক্তিহীন হলে শব (śava), আর শক্তি শিবহীন হলে অচেতা।

এখানে “শিব” মানে বিশুদ্ধ চেতনা—যিনি নিস্তরঙ্গ, স্থির, সর্বব্যাপী এবং নিজে থেকেই সব কিছুর ভিত্তি। তিনি সর্বজ্ঞ হলেও নিজে কোনো কর্ম করেন না; তিনি হলেন সেই নিরবচ্ছিন্ন উপস্থিতি, যার ওপর সমস্ত গতি, পরিবর্তন ও সৃষ্টির খেলা ঘটে। অন্যদিকে “শক্তি” মানে সেই চেতনারই প্রকাশ, গতি ও কর্মশক্তি—যিনি সৃষ্টি, স্থিতি, সংহার, তিরোভাব ও অনুগ্রহ—এই পাঁচটি ক্রিয়ায় শিবকে প্রকাশ করেন।

এই দুই সত্তা—শিব ও শক্তি—আলাদা নয়, কিন্তু তারা একে অপরের পরিপূরক। যেমন আগুন ও তার তাপ আলাদা নয়, তেমনি শিব ও শক্তিও অবিচ্ছেদ্য। তাই বলা হয়—শিব শক্তিহীন হলে শব। “শব” মানে মৃতদেহ, অর্থাৎ প্রাণহীন, অচল, নিস্পন্দ। চেতনার মধ্যে যদি প্রকাশের শক্তি না থাকে, যদি কোনো গতি না থাকে, তবে সেই চেতনা নিষ্ক্রিয় ও অপ্রকাশিত থেকে যায়। শক্তি ছাড়া শিব শুধুই সম্ভাবনা—তিনি থাকেন, কিন্তু তাঁর অস্তিত্বে প্রকাশের কোনো গতিশীলতা নেই। এই কারণেই বলা হয়, শক্তি হল শিবের প্রাণ।

অন্যদিকে, শক্তি শিবহীন হলে অচেতা। অর্থাৎ, যদি শক্তির মধ্যে চেতনার ভিত্তি না থাকে, তবে সে কেবল অন্ধ গতি—যেখানে আছে কর্ম কিন্তু সচেতনতা নেই, আছে আন্দোলন কিন্তু জ্ঞানের দীপ্তি নেই। শিব ছাড়া শক্তি উদ্দেশ্যহীন; তিনি তখন মায়ার রূপে প্রকাশিত হন, যা অবিদ্যার প্রতীক। চেতনার সংযোগ ছাড়া শক্তি যেমন অন্ধ, তেমনি শক্তি ছাড়া চেতনা জড়।

এই কারণেই কাশ্মীর শৈব ও শাক্ত দর্শনে বলা হয়—“শিবঃ শক্তিসহিতো নিত্যং”—শিব সর্বদাই শক্তিসম্পন্ন। শিব ও শক্তি একে অপরের অন্তর্নিহিত দিক: শিব হলেন নিস্তরঙ্গ চেতনা, শক্তি সেই চেতনার স্পন্দন; শিব হলেন স্থিতি, শক্তি হলেন গতি; শিব হলেন আলোক, শক্তি সেই আলোকের দীপ্তি। একজন নীরবতা, অন্যজন সেই নীরবতার নৃত্য।

চেতনা ও শক্তি কখনও আলাদা নয়। স্থিরতা ও গতি, নীরবতা ও শব্দ, মৃত্যু ও জীবন—সব একই সত্যের দুই দিক। শিব ও কালী তাই একে অপরের বিপরীত নন, বরং একই চেতনার দুই রূপ—একজন স্থির, অন্যজন নৃত্যমান। যেখানে শিব আছেন, সেখানে শক্তি; আর যেখানে শক্তি প্রকাশিত, সেখানে শিবই চেতনারূপে দীপ্তিমান।

তাই কালী শিবের উপর দাঁড়িয়ে আছেন মানে—চেতনা (শিব) ও শক্তি (কালী) একে অপরের অবিচ্ছেদ্য রূপ। এটি আধিপত্য নয়, ঐক্যের প্রতীক। শক্তি শিবের উপর ভর দিয়ে যে-নৃত্য করেন, সেটিই জগতের গতি, সময়ের প্রবাহ, এবং চেতনার লীলা।

শাক্ত দর্শনে এই প্রতীক আরও মাতৃত্বপূর্ণ। কালী এখানে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জীবনের জন্ম দেন। রক্তস্নাত মুখ তাঁর করুণা—যিনি সমস্ত পাপ, অহংকার ও অজ্ঞানকে গ্রাস করে জীবকে মুক্তি দেন। শ্মশান তাঁর প্রিয় স্থান, কারণ সেখানে মায়ার কোনো স্থান নেই, কেবল সত্যের নগ্নতা থাকে। শিবের উপর তাঁর পদার্পণ বোঝায়, জীবন ও মৃত্যু, পুরুষ ও প্রকৃতি, স্থিরতা ও গতি—সব একাকার। শিবের নিস্তরঙ্গ স্থিতির উপর শক্তির এই নৃত্যই বিশ্বচক্রের প্রতীক।

কালীর রক্তস্নাত মুখ তাই ভয়ের নয়, মুক্তির; তাঁর শ্মশাননৃত্য ধ্বংসের নয়, পুনর্জাগরণের; আর শিবের বক্ষে তাঁর পদচিহ্ন কোনো কর্তৃত্ব নয়, বরং চেতনা ও শক্তির মিলনের চূড়ান্ত প্রকাশ। কালী এইভাবেই ঘোষণা করেন—“যেখানে লয়, সেখানেই সৃষ্টি; যেখানে মৃত্যু, সেখানেই অমৃত; যেখানে অন্ধকার, সেখানেই চেতনার পরম দীপ্তি।”

আধুনিক মনস্তত্ত্বও এই “মা ভৈঃ” মন্ত্রের অর্থের সঙ্গে তার নিজের আশ্চর্য সামঞ্জস্য খুঁজে পায়। কার্ল ইয়ুং বলেছেন—“One does not become enlightened by imagining figures of light, but by making the darkness conscious.” এই অন্ধকারের মধ্যেই কালী দাঁড়িয়ে বলেন “মা ভৈঃ”—নিজের shadow বা অবচেতন অন্ধকারকে সচেতন করে তোলাই মুক্তির পথ।

যতক্ষণ না মানুষ নিজের অন্ধকার দিককে স্বীকার করে, ততক্ষণ ভয় থাকে; কিন্তু যখন সে তা চেতনায় গ্রহণ করে, তখন ভয় বিলীন হয়। হাইডেগারের “Sein-zum-Tode” বা মৃত্যুর দিকে থাকা মানসিকতা এবং নীটশের “Amor Fati” বা ভাগ্যপ্রেম—দু’টিই আসলে “মা ভৈঃ”-এর আধুনিক প্রতিধ্বনি। এগুলো শেখায়—ভয় করো না, যা আসে তাকে আলিঙ্গন করো, কারণ জীবন ও মৃত্যু একই চেতনার দুই দিক।