১. সৃষ্টি করে করে বহুকাল আগে হয়েছিলাম খুব জনপ্রিয়, জনপ্রিয়তা বাদে সব খুইয়েছি আজ, হয়েছি আমি নিষ্ক্রিয়! ২. কবিতা লিখে ভাত জোটেনি, চাকরি করেই জুটিয়েছি, এখন তবে ছুটির আমার, কবি হবার ক্ষমতাটা এবার কবিতার পায়েই লুটিয়েছি! ৩. মদ না খেলে জানবে কী করে, লোকে কেন মদ খায়? না ভাঙলে মন বুঝবে কী করে, লোকে কেন ভালোবাসতে যায়! ৪. নিজের যাতনায় মশগুল এতই, আমার যাতনা খোঁজো না! বৃষ্টির ভাষায় গান বাঁধো তুমি, তবু অশ্রুর ভাষা বোঝো না? ৫. চুপচাপ এই একজোড়া ঠোঁট, দু-চোখ ভর্তি অভিমানে, বুকভরা শত শব্দ আমার, আর তুমি খুঁজছ কিনা অভিধানে! ৬. পায়ের তলায় কাচ নয়, ও গো; কাচের উপরেই পা রেখেছি। আজকে দেখো ঠিক ঘুমোবো, কত রাত আমি একলা কেঁদেছি! ৭. শুরুই করিনি পথচলা, এখনই যদি থামতে বলো! কতটা পথ আরও যেতে হবে, প্রিয়; সবে তো মাত্র সন্ধ্যে হলো! ৮. ওহে কাপুরুষ, শরীর ছুঁয়ে ছুঁয়ে মন পবিত্র করার কথা মুখে তুমি নিয়ো না! মন না ছুঁয়েও ভালোবাসি বলে শরীরটা আমার অপবিত্র করে দিয়ো না! ৯. কোন সে ব্যথায় চুপসে গিয়েছি, এসো না জিজ্ঞেস করতে, শাড়ি-গয়নাতেই ভুলিয়ে রাখব, দেবোই না এ-চোখে চোখ পড়তে! ১০. এই চুড়িতে আমি প্রেম বেঁধেছি, নূপুরে বেঁধেছি কামনা, এই অশ্রুতে ভাসিয়ে দেবো, তোমার কষ্ট আর যাতনা! ১১. আমার বুকে প্রেমের সাগর, সাথে তোমার অবরোধ, পালিয়ে গেলাম তোমায় ভালোবাসতে শিখিয়ে, দেখে নাও, কী নির্মম প্রতিশোধ! ১২. কপালে লেগেছে সিঁদুর আমার, সে যে ধুলে মুছলেও যায় না! ভেঙে ফেলতে গিয়ে দেখি, আমার যে ওই একটা মাত্রই আয়না! ১৩. মনে আজও পড়ে…সবই---প্রতিরাতে, ক্ষণে ক্ষণে, কী দারুণ এক অভিনয় করে গেছ তুমি---চরিত্রেরই প্রয়োজনে! ১৪. সারাদিন ধরে মনের জখমের কথা হেসে হেসেই তো বলি! দোহাই লাগে, মাঝরাত্তিরে ওসব আমায় মনে করিয়ে দিয়ো না! জানোই তো, ফজরবেলার জানাজায় খুব বেশি লোক হয় না! ১৫. হয়েছ ললনা, তা বলেই কী ছলনা করবে? একটুখানি ভেবে নিয়ো! ললনার লেবাসে তুমিও যে মানুষ, এই পরিচয়টাই আগে দিয়ো! ১৬. পেটের ক্ষুধা বোঝে না অত নীতিবাক্যের মর্ম, মনের ক্ষুধা, না মানে কোনও জাতপাত আর ধর্ম। ১৭. তোমার চোখের পাপড়িতে লেগে-থাকা একবিন্দু জলই আমায় শায়েরি লিখতে বাধ্য করেছে। এই মুগ্ধতার দেখা পায় না বলেই দুনিয়ার তাবৎ মানুষ বাঁচার আগেই মরেছে! ১৮. যাকে শরীর দিতে চাইলাম আমি নিজইচ্ছেয়, সে চাইল শুধুই ভালোবাসা, আর যাকে চাইলাম ভালোবাসতে, তার কিনা এই শরীর পেতেই কাছে আসা! ১৯.তুমি নও, প্রিয়, শুধু যে তোমার স্মৃতিরাই ধাওয়া করে, আমার দু-চোখ বেয়ে অশ্রুর নামে অবিরল কেবল রক্ত ঝরে! ২০. ভালো আর তুমি বাসলে কবে, ঘৃণাই করলে অবিরত! বলি ঈশ্বরকে, দিয়ে দিক আমায়---তোমার দুঃখ যত! ২১. মনের বাগানে দুম করে সেই হারিয়েই গেলি কোথায় তুই! বুকের ক্ষতটা গুনগুনিয়ে বলে, তোকে শেষবার হলেও একটু ছুঁই? ২২. আমার গ্রামের আকাশে রোজ রোজই মেঘ আসে উড়ে, কিন্তু আমার তুমিটা যে বড্ড বেশি শহুরে! ২৩. সব ঠিক হয়ে গেছে, মোলায়েম ফুলের গন্ধ আর পাখিদের কিচিরমিচিরের সে কী বাদ্যবাজনা! তবু মন থেকে কে যেন চেঁচিয়ে যাচ্ছে বলেই, এ জন্মে তোমার আমার আর কখনও দেখা হবে না! ২৪. মিথ্যেই যখন বলবে তবে চোখদুটোকে অন্য দিকে ফিরিয়ে রেখো, ওরা নইলে সব সত্য উগড়ে দেবে, আমি বললাম, দেখো! ২৫. আকাশে ভারি বিষণ্ণতা, মেঘে মেঘে জমেছে সংশয়! বৃষ্টির ফোঁটাও চিৎকার করে বলে, এ আকাশটা তো আমাদের নয়!