শূন্যের নৃত্য



আমি—সমস্ত কিছুর উৎস,
তবু—কিছুই নই।
আমি প্রতিধ্বনিত হই, ছায়া আঁকি, ভেসে বেড়াই—
তবে, তা-ও যে করি, তা নয়।

শুধু এ-ই বিদ্যমান,
তবু মনে হয়, এরা জাগে, আবার মিলিয়ে যায়।
মন, আত্মা, ব্রহ্ম, চেতনা—
সবই তো এ-ই—
না অন্যকেউ, না তুমি, না কোনো বিভাজন—
স্ব-সৃষ্ট, স্ব-বিনাশী—
নিজের ভেতরে, নিজের মতো প্রবাহিত।

অজন্ম, অদেখা, অস্পর্শ;
তবু তাকে ছাড়া নড়ে না কিছুই—
না নিঃশ্বাস, না অস্তিত্ব।
সে প্রতিধ্বনিত হয়—
জগৎ হয়ে, সত্তা হয়ে, পদার্থ হয়ে,
এমনকি দর্শক “আমি” হয়ে।

তবু প্রতিধ্বনি ছুঁতে পারে না উৎসকে—
না চলমান, না স্থির,
না শুরু, না শেষ।
সে ফিসফিস করে—“আমি আছি।”
উঠে আসে, মিলিয়ে যায়।

আঁকড়ে ধোরো না, খুঁজো না, অনুসরণ কোরো না—
সব কিছু এখানেই আছে।
এটা যা, এটা নয় তা-ও।
না দুটি, না একটি,
এবং— নয় এক বা দুইয়ের হিসেবও।

আসা-যাওয়ার নৃত্য,
অস্তিত্ব ও অনস্তিত্বের খেলা,
শব্দ ও নীরবতার মিলন,
সৃষ্টি ও বিনাশের ধারা—
সবই প্রতিধ্বনি থেকে জন্ম নেয়,
প্রতিধ্বনিতেই মিশে যায়।

যা নিজেই অক্ষত, অজন্ম, অগ্রাহ্য।
না অনুসন্ধানী, না অনুসন্ধিত,
না কর্তা, না কর্ম—
শুধু আত্মার প্রতিধ্বনি,
শুধুই—সামনে যা আছে,
এবং—নয় তা-ও।
Content Protection by DMCA.com