আধ্যাত্মিক জাগরণ এমন এক বিষয়, যা সবসময় মানুষকে আকর্ষণ করেছে। জীবনের গভীর হতাশার মুহূর্তে অন্তরে এক অঙ্গীকার জন্ম নেয়—যদি কখনো অন্তরে শান্তি লাভ সম্ভব হয়, তবে সেই শান্তির বার্তা অন্যদের জানানোই হবে জীবনের লক্ষ্য।
কিন্তু সমস্যাটা হলো—এই অভিজ্ঞতা ভাষায় সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করা যায় না। হতাশা থেকে আনন্দে রূপান্তরের আসল অনুভূতিকে কোনো শব্দ পুরোপুরি বহন করতে পারে না। তাই উদাহরণ আর রূপকের সাহায্যেই বিষয়টি বোঝানো সম্ভব।
ভাবা যাক—মানুষের জন্ম এক ছোট্ট গ্রামে, পাহাড়ের পাদদেশে। শৈশবে পাহাড়কে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে চোখ বার বার পাহাড়ের দিকে যায়। একসময় অন্তরে রহস্যময় এক আকাঙ্ক্ষা জাগে—“ওপরে কী আছে?”
সময়ের সাথে সাথে সেই আকাঙ্ক্ষা প্রবল হয়। কারও কারও কাছে তা এত তীব্র হয়ে ওঠে যে, তারা সব কিছু ত্যাগ করে উঠে দাঁড়ায়—শুরু হয় পাহাড়ে ওঠার যাত্রা। তখন শোনা যায় সামনের আরোহণকারীদের মুখে—শীর্ষের দৃশ্য অবিশ্বাস্য, আর সেটাই সমস্ত তৃষ্ণা মেটায়, এনে দেয় পরম শান্তি।
আরোহণের পথে নানা বাধা আসে। কখনো ভয়াবহ ঝড়, কখনো নিরুৎসাহের মেঘ। তবুও শোনা যায় আশ্বাসবাণী—“ওপরে পৌঁছালে দেখা যাবে, সেটাই ঈশ্বরের উপস্থিতি, পরম নিবাস।” এই ডাকেই এগিয়ে যাওয়া হয়।
কিন্তু শীর্ষের কাছে পৌঁছালে আরেকটি কণ্ঠ শোনা যায়—“তুমি মরে যেতে পারো। এটা বোকামি। কিছুই নেই। ফিরে যাও।” অনেকেই তখন থেমে যায়, কেউ-বা ফিরে যায়। কেউ নীরব হতাশায় জীবন কাটায়, আবার কেউ অন্যদেরও নিরুৎসাহিত করে।
কিন্তু যারা ভয়কে অতিক্রম করে ঝুঁকি নেয়, তারাই এগিয়ে গিয়ে চূড়ায় পৌঁছয়…