মাঝে মাঝে কী যেন হয়

মাঝে মাঝেই আমার কী যেন হয়।
শান্ত, গভীর ধীরে-চলা নদীটিতে হঠাৎ কী-একটা ভীষণ সাইক্লোন বয়ে যায়।
অগভীর নদীর পাড় ঘেঁষে হাঁটতে হাঁটতে হুমায়ূন আহমেদের গল্পের একজন মায়াবতী মৃন্ময়ীর মতন টুপ করে পড়ে জলে ডুবে-যাওয়া এক কিশোরী লাগে নিজেকে।
কী যেন হয়, জ্যোৎস্না-লাগা জমজমাট মধ্যরাত‌ও যেন ঘোর অমাবস্যার রাত হয়ে যায়।
কী যেন হয়ে যায় আমার...কলজের ভেতরটায় তোলপাড় হয়ে যায়, জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যায় যেন ভেতর-বাহির সবটায়।
উচ্ছ্বাসী নবমীর চাঁদেও যেন ছোপ ছোপ ব্যথার নিদারুণ দাগ গিয়ে লাগে, ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায় সব কিছুই।
সত্যিই, মাঝে মাঝে বানভাসির মতন সব কিছুই চুরমার চুরমার লাগে।
মাঝেমধ্যেই আমার কিছু-একটা হয়ে যায়। কাউকে বোঝানো যায় না, কাউকে বলাও যায় না। ছোটো ছোটো ছানাপোনা গাছের মগডালের বাসাটায় রেখে শিকারির খাঁচায় আটকে-পড়া মা পাখিটার মতন কী যে অসহ্য ছটফট ছটফট লাগে!
মনে হয়, আমি কেউ নই, আমার কিছু নেই। আমি শুধু পালাতে চাই, নিজের কাছ থেকে, নিজের পাশ থেকে।
তবুও আটকে আছি, কোথায় যেন বিশ্রীভাবে লটকে আছি।
সেই পুরোনো গানটার মতোই আজ আমার হাল। বার বার গলা ভেঙে, কণ্ঠ ছিঁড়ে সেই একই গান চিৎকার করে বেরিয়ে আসে…এ খাঁচা ভাঙব আমি কেমন করে…এ খাঁচা ভাঙব আমি কেমন করে!