ব্রহ্মকে জ্ঞান ও কর্মের সংযোগের মাধ্যমে জানা যায়—অর্থাৎ, কিছু দার্শনিক বলেন—মুক্তি বা ব্রহ্মলাভ হবে যদি জ্ঞান (আত্মা-ব্রহ্ম সম্পর্কিত সত্য-জ্ঞান) এবং কর্ম (যজ্ঞ, আচার, পূজা ইত্যাদি) একসাথে করা হয়। কিন্তু এই মত আসলে টেকসই নয়, এমনকি তাদের ক্ষেত্রেও এই সংযোগতত্ত্ব (জ্ঞান + কর্ম) শেষমেশ টেকে না—যারা মনে করে, ব্রহ্ম সর্বদা ভেদের (পার্থক্যের) বৈশিষ্ট্য ধরে রাখে—ব্রহ্ম নিজে চিরকাল ভিন্ন ভিন্ন রূপে প্রকাশিত হন—অভেদ + ভেদ, দুটোই তাঁর স্বরূপের অংশ।
আমরা ভেদাভেদবাদ (ভেদ-অভেদ বাদ বা দর্শন বা তত্ত্ব—Bhedābhedavāda)-এর দুটি প্রকার আলাদা করে নেব, এবং দেখাব, কেন উভয় ক্ষেত্রেই “জ্ঞান ও কর্মের সংযোগ” মতবাদটি খণ্ডিত হয়ে যায়। “ভেদ” মানে ভিন্নতা, আর “অভেদ” মানে অভিন্নতা। ভেদাভেদবাদীরা বলেন—জীব (ব্যক্ত আত্মা) আর ব্রহ্ম (পরম আত্মা) একদিক দিয়ে অভিন্ন, আবার আরেকদিক দিয়ে ভিন্ন। উদাহরণস্বরূপ, ঢেউ আর সমুদ্র—ঢেউ সমুদ্র থেকেই জন্মায়, তাই অভিন্ন; কিন্তু আকার-আকৃতি দিয়ে ঢেউ সমুদ্র থেকে ভিন্নও বটে।
ভেদাভেদবাদের দুটি রূপ—প্রথম মত: জীব ও ব্রহ্ম সবসময় অভিন্ন—এমনকি সংসার অবস্থাতেও; কিন্তু জীব অজ্ঞতার কারণে নিজেকে সীমিত, দেহ-মনসত্তা হিসেবে দেখে। দ্বিতীয় মত: জীব ও ব্রহ্ম প্রকৃতিগতভাবে ভিন্ন। জীব কখনোই প্রকৃত ব্রহ্ম হতে পারবে না।
এখন দেখি, কেন “জ্ঞান + কর্ম” মতটি টিকছে না। যদি জীব ও ব্রহ্ম অভিন্ন হয়, তাহলে ব্রহ্মলাভে বাধা একমাত্র অজ্ঞতা। আর অজ্ঞতাকে দূর করতে পারে কেবল জ্ঞান, কর্ম নয়। সুতরাং কর্ম এখানে অপ্রয়োজনীয়। যদি জীব ও ব্রহ্ম ভিন্ন হয়, তাহলে জীব কখনোই ব্রহ্মে মিলতে পারবে না। সুতরাং মুক্তি একেবারেই অসম্ভব। তাই কোনো অবস্থাতেই “জ্ঞান + কর্ম = ব্রহ্মলাভ” এই সংযোগতত্ত্ব টেকে না।
ধরা যাক, (অভিন্ন মত) সূর্য আর আলো এক, কিন্তু মেঘ ঢেকে রাখায় সূর্যকে দেখা যাচ্ছে না। মেঘ সরলেই আলো আসবে। (জ্ঞান = আলো, অজ্ঞতা = মেঘ)। এখানে যজ্ঞের মাধ্যমে আগুন জ্বালানো বা বৈদিক রীতিতে গান গাওয়া (কর্ম) দিয়ে মেঘ সরবে না। (ভিন্ন মত) যদি বলি, সূর্য আর অন্ধকার চিরকাল ভিন্ন সত্তা, মেঘ সরে যাবার উপর আলো আসা না-আসা নির্ভর করে না, তাহলে আলো কখনোই অন্ধকারকে মিলিয়ে দিতে পারবে না। সুতরাং মুক্তি অসম্ভব।
তাই “জ্ঞান + কর্ম মিলেই মুক্তি হবে”—এই মত টেকসই নয়। কারণ—যদি জীব আর ব্রহ্ম এক হয়, তাহলে মুক্তির পথে বাধা কেবল অজ্ঞতা, তাকে দূর করবে কেবল জ্ঞান। যদি জীব আর ব্রহ্ম আলাদা হয়, তাহলে তো মুক্তি চিরকালই অসম্ভব। এই সংযোগতত্ত্ব টিকতে পারে না—তাদের ক্ষেত্রে, যারা মনে করে, জীব ও ব্রহ্ম সংসার অবস্থাতেও অভিন্ন; কিংবা তাদের ক্ষেত্রে, যারা মনে করে, জীব ও ব্রহ্ম ভিন্ন। এর কারণ—যদি তারা অভিন্ন হয়, তবে ব্রহ্মলাভে বাধা কেবল অজ্ঞতা দ্বারাই হতে পারে। আর যদি তারা ভিন্ন হয়, তবে মুক্তি একেবারেই অসম্ভব।
যদি ধরা হয় জীব প্রকৃতিগতভাবে সর্বদাই ব্রহ্ম, তবে কেবল অজ্ঞতাই ঈশ্বরলাভে বাধা দেয়। এই মতের বিরুদ্ধেই আমরা বলছি—অজ্ঞতা বিনাশের উপায় কর্ম নয়। এটি কেবল জ্ঞান দ্বারাই হয়। তাই কর্ম এই ক্ষেত্রে নিরর্থক।
আর যদি ধরা হয় ব্রহ্ম জীব থেকে ভিন্ন, তবে—কর্ম দ্বারা নয়, জ্ঞান দ্বারা নয়, এমনকি জ্ঞান ও কর্মের মিলিত প্রয়োগ দ্বারাও নয়—এই তিনের কোনো উপায়েই ব্রহ্মলাভ সম্ভব নয়। কারণ, যদি ব্রহ্ম সত্যিই জীব থেকে ভিন্ন হয়, তবে সেই ভিন্নতা কেবল ব্রহ্ম নিজেই প্রকাশ করতে পারে।
যেখানে দুটি বস্তু স্বভাবতই ভিন্ন, সেখানে একটির সঙ্গে আরেকটির অভিন্নতা কোনোদিনই সম্ভব নয়। আর যদি ধরে নিই তা সম্ভব, তবে জীব ও ব্রহ্মের ক্ষেত্রে তা মুক্তি বা ঈশ্বরপ্রাপ্তি নয়, বরং জীবের সম্পূর্ণ ধ্বংসই হবে—কেননা যেহেতু জীব ও ব্রহ্ম ভিন্ন, সেহেতু একটিকে পুরোপুরি বাদ না দিলে আরেকটির প্রাপ্তি সম্ভব নয়।
ভেদাভেদবাদীদের নতুন একটি শাখা বলে: মুক্তি জ্ঞানের দ্বারাই হয়। এটা চমৎকার, কিন্তু সমস্যা হলো—তাদের এই দাবির ভিত্তি একটি বৈদিক বিধান (injunction)। অর্থাৎ, তারা ভাবে, মুক্তি মানে জ্ঞান + বৈদিক নির্দেশের (যাগযজ্ঞাদি) মিলিত ফল। বলা হচ্ছে—যদি এমনকি দুঃখী দ্বৈতবাদীরাও (যারা মনে করে, আত্মা ও ব্রহ্ম ভিন্ন) সঠিকভাবে আধ্যাত্মিক অনুশীলন ও শাসন (discipline) করে, তবে তারাও মুক্তি পেতে পারে। কিন্তু ভেদাভেদবাদীরা এখানে ব্যর্থ হয়, কারণ—তারা ভাবে, কর্ম (যজ্ঞ, আচার ইত্যাদি) দিয়েও মুক্তি সম্ভব—অথচ কর্ম নিজে থেকেই দ্বৈততার চিহ্ন বহন করে; আর মুক্তি হলো অদ্বৈত উপলব্ধি।
কর্ম মানেই কর্তা-কর্ম-ফল এই তিন ভিন্ন সত্তা। তাই কর্ম যখনই থাকবে, অদ্বৈত অভিজ্ঞতার বিপরীত একটা দ্বৈততা থেকেই যায়। এজন্য বলা হচ্ছে—কর্ম শুধু নিজের উপস্থিতির দ্বারাই পরম আত্মার বিরোধিতা করে। তাহলে তো ভেদাভেদবাদীদের উদ্দেশে এই প্রশ্ন থেকেই যায়—যিনি সম্পূর্ণ ব্রহ্মে প্রতিষ্ঠিত, যিনি সব কিছু ত্যাগ করেছেন, যিনি আর কোথাও কোনো ভিন্নতা দেখেন না—তাঁর কাছে কোনো বৈদিক আদেশ কীভাবে কর্ম করার প্রেরণা হতে পারে? জ্ঞানপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে শাস্ত্র আর কর্মে ঠেলতে পারবে কি?
ভেদাভেদবাদীরা বলে: সংসারজীবনে থেকেও জীব ব্রহ্মের সঙ্গে অভিন্ন। কিন্তু যদি জীব ব্রহ্মের সঙ্গে অভিন্ন হয়, তবে সে তো সব জাতির (বর্ণের) সঙ্গেও অভিন্ন হয়ে যাবে; অথচ বৈদিক বিধানগুলোর বৈশিষ্ট্য হলো—এগুলো নির্দিষ্ট বর্ণ (ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র)-এর জন্য প্রযোজ্য—অর্থাৎ এখানে ভেদের বিষয়টি সুস্পষ্ট। তাহলে ভেদাভেদবাদীর দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, এই বিধানগুলোর প্রেরণাশক্তি তথা বিধানগুলির প্রাসঙ্গিকতা একেবারে বাতিল হয়ে যায়, তা-ই নয় কি?
ভেদাভেদবাদীরা কর্ম ও জ্ঞানকে একসঙ্গে ধরে মুক্তি বোঝাতে চেয়েছিল। কিন্তু সমস্যা হলো—কর্ম আসলেই অদ্বৈত উপলব্ধির পথে বাধা। ব্রহ্মে অভিন্ন হলে জাতিভেদ মানা যায় না, অথচ বৈদিক বিধান জাতিভেদকে কেন্দ্র করেই রচিত। তাই তাদের মত একেবারেই টিকতে পারে না।
যদি ভেদাভেদবাদীরা এমন দাবি করে—“বৈদিক বিধানগুলির প্রভাব তো সেই জীবের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে, যে যদিও ব্রহ্মের সঙ্গে নিজের অভিন্নতা জেনেছে, তবুও দৈনন্দিন অভ্যাসবশত কিংবা ভ্রান্তির কারণে শরীরের সঙ্গেই নিজের পরিচয় স্থাপন করে”—তাহলে এর স্পষ্ট জবাব হলো—“তা কখনোই নয়।” কারণ প্রকৃত জ্ঞানীর অন্যতম বৈশিষ্ট্যই হলো, তিনি আর শরীরের সঙ্গে নিজের অভিন্নতা স্থাপন করতে পারেন না। শরীরকে আত্মা ভেবে বসা আসলে অজ্ঞানতার ফল। শাস্ত্র বার বার বলে এসেছে—এই ভেদবুদ্ধি বা শরীর-আত্মার অভিন্নতার ভ্রমই হচ্ছে মায়াজাত বিভ্রান্তি, যাকে “শয়তানি অজ্ঞান বা অবিদ্যা” বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এখন যদি বলা হয়—অজ্ঞতার এমন ক্ষমতা আছে যে, এটি এমনকি একজন জ্ঞানীকেও বিপর্যস্ত করতে পারে, তবে এর পরিণতি হবে ভয়ঙ্কর। কারণ তখন আত্মজ্ঞান বা ঈশ্বরলাভের সমস্ত অর্থই লোপ পাবে। যদি জ্ঞান অর্জনের পরও একজন মানুষ দেহকেই আত্মা মনে করতে থাকেন, তবে বুঝতে হবে, সেই জ্ঞান আসলেই জ্ঞান ছিল না—তা ছিল কেবল তাত্ত্বিক ধারণা বা বুদ্ধিবৃত্তিক তথ্য।
সত্যিকারের জ্ঞান যখন উদিত হয়, তখনই দেহ-আত্মা ভ্রম সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়। তখন আর কোনো পরিস্থিতিতেই জ্ঞানীর পক্ষে শরীরকে নিজের সঙ্গে অভিন্ন মনে করা সম্ভব নয়। আর যদি কেউ এখনও দেহকে আত্মা বলে ধরে রাখেন, তবে তিনি এখনো অজ্ঞানতার আঁধারেই আচ্ছন্ন, প্রকৃত জ্ঞানী নন—তিনি আদৌ জ্ঞানী হননি, কেবল বুদ্ধিগত তথ্য জেনেছেন, হৃদয়ে জ্ঞানের উপলব্ধি হয়নি। প্রকৃত জ্ঞান আসলে এমন শক্তিশালী আলো, যা দেহ-আত্মার ভ্রমকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। তাই শরীরকে আত্মা ভেবে চলা মানেই এখনো অজ্ঞতায় আটকে থাকা; জ্ঞানীর ক্ষেত্রে এটি কখনোই ঘটে না।
যেমন, অন্ধকারে দড়িকে সাপ বলে ভ্রম হয়। কিন্তু একবার যখন আলো ফেলে সত্যটা ধরা পড়ে—“এ তো দড়ি, সাপ নয়”—তখন আর দ্বিতীয় বার সেই একই দড়িকে সাপ বলে মনে হয় না। যদি কেউ তখনও সাপ ভেবে ভয় পায়, তবে বোঝা যাবে সে আলোই দেখেনি। ঠিক তেমনি, যিনি সত্যিই আত্মাকে ব্রহ্মরূপে জেনেছেন, তাঁর কাছে দেহকে আত্মা বলে মনে হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। অন্ধকার কেবল আলোর অভাবে থাকে, কিন্তু সূর্য উঠলেই অন্ধকার এক মুহূর্তেই সরে যায়। কেউ যদি বলে—“সূর্যের আলো আছে, কিন্তু অন্ধকারও রয়ে গেছে”—তাহলে সেটা বিরোধপূর্ণ কথা হবে। ঠিক তেমনি, জ্ঞান ও অজ্ঞান একসঙ্গে থাকতে পারে না। যেখানে আত্মজ্ঞান উদিত হয়েছে, সেখানে অজ্ঞানের অন্ধকার চিরতরে দূর হয়ে যায়।
(বৈদিক) কর্ম তথা যাগযজ্ঞাদি হলো অজ্ঞতার ফল। সুতরাং জ্ঞান ও কর্মের মধ্যে কোনো যোগ—না একসাথে, না ধারাবাহিকভাবে—কখনও হতে পারে না, কেননা একটি সত্য (জ্ঞান) এবং অন্যটি অসত্য (অজ্ঞতা-জাত কর্ম)-এর ওপর প্রতিষ্ঠিত। যদি কোনো জ্ঞানী আবার নিজের সঙ্গে দেহ ও মনকে অভিন্ন মনে করেন, তবে তিনি আসলে জ্ঞানী নন, বিভ্রান্ত। তাঁকে কর্ম করতে দিন—অজ্ঞকে কে থামাতে পারে?
বলা হয়, “সব কর্মই আসলে সম্পাদিত”। এর মানে কী? যোগী/জ্ঞানী—যিনি অদ্বৈত বোধে প্রতিষ্ঠিত, তাঁর দৃষ্টিতে “আমি আলাদা কর্তা” বলে কিছু থাকে না; প্রকৃতি (দেহ-মন (বা ‘আমি’)-ইন্দ্রিয়) নিজস্ব গতিতে কাজ করে। তাই ‘এটা করো’—এমন আলাদা করে আদেশ দেবার কিছু থাকে না। এই অর্থে বলা হচ্ছে: কর্ম তো চলছেই / সম্পন্ন হচ্ছেই—শ্বাস চলছে, হৃৎপিণ্ড চলছে, হজম হচ্ছে, কথা/চিন্তা/চলাফেরা—সব প্রকৃতির ধারায় ঘটছে। তাই “কর্ম করো” বলে নতুন করে কিছু সিদ্ধ করাতে হয় না। ধরুন, আপনি কাউকে বললেন, “হার্টবিট চালু করো”—এটা অর্থহীন; কারণ হার্টবিট তো নিজেই চলছে। জ্ঞানীর ক্ষেত্রে কর্মের ক্ষেত্রটা ঠিক এমন—নিজস্ব ধারায় যা ঘটার, তা ঘটেই চলেছে।
কেন ‘কর্মকে আদেশ করা’ যায় না? বিধান (vidhi) মানে: “এটা করো”—যেখানে ধরে নেওয়া হয়, কর্তা আলাদা আছেন, কাজটা নতুন করে আরম্ভ করতে হবে। আর জ্ঞানীর ক্ষেত্রে—কর্তৃত্ব-বোধ (doership) লুপ্ত; সুতরাং “তোমার উচিত এই কাজটা করা”—এই ভাষা প্রযোজ্যই নয়। যেটা স্বভাবগত/স্বয়ংক্রিয়, তাকে আদেশ দিয়ে করানো যায় না—ঠিক যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস। “শ্বাস নাও”—এটা বিধান নয়; কারণ আপনি না বললেও তিনি শ্বাস নেবেন। “সূর্য ওঠাও”—এটাও বিধান হতে পারে না; কারণ সূর্য ওঠা আপনার করায়ত্ত নয়।
“কর্ম—বিশেষ ও সর্বজনীন—উভয়ই ঐ যোগীর স্বরূপ”—এর মানে নিয়ে ভাবা যাক। এখানে ‘কর্ম’-এর দুটি স্তর বোঝানো হয়েছে—বিশেষ (particular) কর্ম: নির্দিষ্ট করে বোঝানো কোনো কাজ—যেমন কারও সঙ্গে কথা বলা, হাঁটা, রান্না করা, কোনো যজ্ঞের নির্দিষ্ট অঙ্গকর্ম। সর্বজনীন (universal) কর্ম: বৃহত্তর কাজের প্রবাহ—যেমন পৃথিবী ঘোরা, প্রকৃতির চক্র, দেহের ভেতরে চলমান জীবন-প্রক্রিয়া, সমাজ-জগতের চলতি কার্যধারা।