এখানে পূর্বপক্ষ: চার্বাক দর্শন ও দেহাত্মবাদ। চার্বাক দর্শন হলো ভারতীয় দর্শনের একটি প্রধান নাস্তিক্যবাদী ধারা, যা বেদকে প্রামাণ্য বলে স্বীকার করে না। এদের মতে, প্রত্যক্ষই হলো জ্ঞানের একমাত্র উৎস, এবং যা প্রত্যক্ষযোগ্য নয়, তার অস্তিত্ব নেই। চার্বাকরা ভূতচতুষ্টয়বাদী, অর্থাৎ তারা বিশ্বাস করে যে, ক্ষিতি, জল, তেজ ও বায়ু—এই চারটি মৌলিক পদার্থ থেকেই সমস্ত বস্তুর উৎপত্তি। এই মৌলিক পদার্থের সংমিশ্রণেই চৈতন্যের উদ্ভব হয়, যা কোনো পৃথক সত্তা নয়। তাদের মতে, যেমন কিণ্বাদির সংমিশ্রণে মাদকতা সৃষ্টি হয়, ঠিক তেমনি চারটি মৌলিক পদার্থের সংমিশ্রণে দেহে চৈতন্য জন্মায়। তাই, চৈতন্যবিশিষ্ট দেহই আত্মা (দেহাত্মবাদ)। চার্বাক দর্শনের বিভিন্ন শাখায় ইন্দ্রিয়, প্রাণ বা মনকেও আত্মা হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
দেহাত্মবাদ হলো ভারতীয় দর্শনের একটি মতবাদ, যেখানে দেহকেই আত্মা বলে মনে করা হয়। এটি এমন একটি চরম বস্তুবাদী ধারণা, যা মন এবং চেতনাকে দেহ থেকে আলাদা কোনো চিরন্তন সত্তা হিসেবে স্বীকার করে না। দেহাত্মবাদ মূলত নাস্তিক্য চার্বাক দর্শন (লোকায়ত দর্শন) দ্বারা প্রচারিত। এর মূল বক্তব্যগুলি নিম্নরূপ:
১. দেহই আত্মা: দেহাত্মবাদ অনুসারে, আত্মা বলে কোনো পৃথক বা অমর সত্তার অস্তিত্ব নেই। আমাদের ব্যবহৃত "আমি" (Ātman বা স্ব) ধারণাটি হলো আমাদের জড় শরীরই মাত্র।
২. চেতনা দেহের ধর্ম: চেতনা (Consciousness) দেহের বাইরে অন্য কিছু নয়, বরং এটি জড় দেহেরই একটি বিশেষ ধর্ম বা গুণ। যখন দেহের চারটি মৌলিক উপাদান (ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ) একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে একত্রিত হয়, তখন চেতনা উৎপন্ন হয়—ঠিক যেমন বিশেষ উপাদানের মিশ্রণে মদ বা নেশার সৃষ্টি হয়।
৩. অনিত্যতা (Impermanence): যেহেতু চেতনার উৎপত্তি দেহ থেকে, তাই দেহ ধ্বংস হলে চেতনারও ধ্বংস হয়। অর্থাৎ, পুনর্জন্ম, পরকাল, কর্মফল, স্বর্গ বা নরক—এসবই মিথ্যা।
৪. প্রত্যক্ষ প্রমাণ: এই মতবাদ কেবল প্রত্যক্ষ প্রমাণকে (যা ইন্দ্রিয় দিয়ে সরাসরি দেখা যায়) স্বীকার করে। যেহেতু আত্মা বা পরকালকে প্রত্যক্ষ করা যায় না, তাই এগুলি সত্য নয়।
চার্বাক দর্শনের মধ্যে কিছু গোষ্ঠী ছিল, যারা আত্মার স্বরূপকে দেহের বিভিন্ন অংশের সাথে অভিন্ন বলে মনে করত। যদিও মূলমত হলো 'দেহই আত্মা', কিছু উপ-বিভাগ এটিকে আরও নির্দিষ্ট করেছিল:
স্থূল দেহ (Gross Body): অনেকেই মনে করেন স্থূল শরীরটাই আত্মা। ইন্দ্রিয় (Senses): কিছু চার্বাক মনে করতেন, ইন্দ্রিয়গুলিই আত্মা (যেমন চক্ষু বা শ্রুতি/কান)। প্রাণ (Life-breath): কেউ কেউ প্রাণ বা জীবন-শক্তিকে আত্মা বলে মনে করতেন। মন (Mind): অনেকে মনকে আত্মা বলে মনে করতেন।
তবে, এদের সবার মূল বক্তব্য ছিল একই: আত্মা দেহের বাইরে কোনো অমর বা অতীন্দ্রিয় সত্তা নয়।
দেহাত্মবাদকে অদ্বৈত বেদান্তের মতো আস্তিক্য দর্শনের একটি প্রধান বিরোধী মতবাদ হিসেবে গণ্য করা হয়, কারণ অদ্বৈত বেদান্তের মূল কথা হলো: দেহ মিথ্যা এবং আত্মা (ব্রহ্মন) একমাত্র সত্য।
কিণ্বাদি (কিণ্ব-আদি) শব্দটি ভারতীয় দর্শন, বিশেষত মীমাংসা-দর্শনে ব্যবহৃত একটি টেকনিক্যাল টার্ম। “কিণ্ব” (kinva) মানে হচ্ছে কোনো কারণ, উদ্দীপক বা প্রেরক শক্তি। যেমন মদ তৈরিতে “কিণ্ব” হলো খামির বা ferment, যা পুরো প্রক্রিয়াটিকে চালু করে। “আদি” মানে “ইত্যাদি” বা “এর সাথে যুক্ত অন্যান্য বিষয়সমূহ”।
মীমাংসা-দর্শন হলো ভারতীয় দর্শনের ছয়টি আস্তিক ধারার (ষড়দর্শন) মধ্যে অন্যতম একটি প্রধান শাখা। একে পূর্ব-মীমাংসা বা কর্ম মীমাংসা নামেও ডাকা হয়। এই দর্শনের মূল উদ্দেশ্য হলো বেদের কর্মকাণ্ড (অর্থাৎ যজ্ঞ ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কিত অংশ) এবং বৈদিক কর্তব্যগুলিকে যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করা।
মীমাংসা শব্দের অর্থ হলো 'অনুসন্ধান' বা 'যুক্তিভিত্তিক বিচার'। এই দর্শনের প্রধান ভিত্তি ও উদ্দেশ্যগুলি নিম্নরূপ:
১. মুখ্য উদ্দেশ্য—ধর্মের অনুসন্ধান: মীমাংসা দর্শনের মূল লক্ষ্য হলো ধর্মের প্রকৃত স্বরূপ নির্ধারণ করা। এখানে 'ধর্ম' বলতে জীবনের নৈতিক কর্তব্য নয়, বরং মূলত বৈদিক নির্দেশিত কর্ম বা আচার-অনুষ্ঠানকে বোঝানো হয়। এটি বিশ্বাস করে যে, বৈদিক নির্দেশিত ধর্মীয় কর্ম (যেমন যজ্ঞ, উপাসনা ইত্যাদি) যথাযথভাবে পালন করলে পুণ্যলাভ হয় এবং সেই পুণ্যই স্বর্গ বা শুভ ফল প্রদান করে।
২. প্রধান প্রামাণ্য গ্রন্থ—বেদ: এই দর্শন বেদকে (বিশেষত বেদের কর্মকাণ্ড অংশকে) চূড়ান্ত ও অভ্রান্ত প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করে। মীমাংসকগণ মনে করেন, বেদ কোনো ব্যক্তিবিশেষের দ্বারা রচিত নয়; এটি শাশ্বত (nitya) এবং স্বতঃপ্রমাণ (svatah-pramāṇa)। এই কারণে, বেদের বাক্যকে প্রশ্ন করা যায় না, কেবল ব্যাখ্যা করা যায়।
৩. কর্মের উপর জোর: এই দর্শন কর্মকে বা অনুষ্ঠানকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। এটি মানুষকে নিষ্ক্রিয় না থেকে, বেদের নির্দেশ অনুসারে সক্রিয়ভাবে ধর্মীয় কর্তব্য পালনের উপদেশ দেয়। এই কারণেই মীমাংসা-দর্শনকে কর্ম মীমাংসা বলা হয়।
৪. প্রবর্তক ও মূল গ্রন্থ: মীমাংসা-দর্শনের প্রধান প্রবর্তক হলেন ঋষি জৈমিনি। এর মূল গ্রন্থ হলো জৈমিনির মীমাংসা সূত্র।
উত্তর মীমাংসার সাথে পার্থক্য: মীমাংসা-দর্শনকে পূর্ব-মীমাংসা বলা হয়, কারণ এটি বেদের পূর্ব অংশ (কর্মকাণ্ড) নিয়ে আলোচনা করে। এর বিপরীতে রয়েছে উত্তর মীমাংসা, যা বেদের উত্তর অংশ (জ্ঞানকাণ্ড বা উপনিষদ) নিয়ে আলোচনা করে এবং যা বেদান্ত দর্শন নামে পরিচিত। পূর্ব মীমাংসা—আলোচনা করে ধর্ম, কর্ম ও বৈদিক আচার-অনুষ্ঠান। উত্তর মীমাংসা (বেদান্ত)—আলোচনা করে ব্রহ্ম, আত্মা ও জ্ঞান।
সংক্ষেপে, মীমাংসা-দর্শন হলো সেই শাখা, যা বৈদিক অনুষ্ঠান ও কর্তব্যের মাধ্যমে ধর্মীয় ফল লাভের পথকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য যুক্তির ব্যবহার করে। মীমাংসা ও বেদান্তীয় আলোচনায় “কিণ্বাদি” বলতে বোঝানো হয়—যে-সকল উপাদান (কারণ, সহায়ক বা প্রেরক শক্তি) কর্মকে সক্রিয় করে বা কর্মের ফলোৎপত্তিতে ভূমিকা রাখে। উদাহরণ: যজ্ঞে যজ্ঞীয় দ্রব্য, মন্ত্র, যাজ্ঞিক ইচ্ছা ইত্যাদি—এগুলোকে বলা হয় “কিণ্বাদি”; কারণ এগুলো সেই কর্মফল উৎপাদনে খামিরের মতো অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। যেমন খামির ছাড়া মদ তৈরি হয় না, তেমনি যজ্ঞ বা বৈদিক কর্মের ফল উৎপাদনে নির্দিষ্ট কারণ-উপাদান লাগে। এই সমস্ত কারণকে মিলিয়ে বলা হয় “কিণ্বাদি”।
চার্বাকদের এই মতবাদটি একটি মৌলিক যৌক্তিক ত্রুটির সম্মুখীন হয়, যা ভারতীয় দর্শনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই বিতর্কের মূল ভিত্তি হলো আত্মার নিত্যতা ও অনিত্যতার প্রশ্ন। যদি আত্মা অনিত্য হয়, অর্থাৎ যদি তা শরীরের সঙ্গে বিনাশপ্রাপ্ত হয়, তবে তা কিছু গুরুতর সমস্যা তৈরি করে, যা শুধু দার্শনিক বিতর্ক নয়, বরং নৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থার ভিত্তিকেও নড়বড়ে করে দেয়। কীরকম?
প্রথমত, যদি আত্মা শরীরের সঙ্গে বিনাশপ্রাপ্ত হয়, তবে পূর্বজন্মে করা সমস্ত কর্মফল মৃত্যুর পর হারিয়ে যাবে। এর অর্থ হলো, একজন ব্যক্তি তার সারা জীবনে যা যা পুণ্য বা পাপ কাজ করেছে, তার কোনো ফল সে ভোগ করবে না। এটি কর্মফলের ধারণাকে সম্পূর্ণ অর্থহীন করে তোলে, যা ভারতীয় দর্শনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। যদি কর্মফল মৃত্যুর পর বিলুপ্ত হয়ে যায়, তবে পুণ্যার্জন বা পাপ পরিহারের কোনো নৈতিক বা আধ্যাত্মিক প্রেরণা থাকে না। এতে সমাজে নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটতে পারে, কারণ মানুষের মধ্যে ভালো কাজ করার বা মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকার কোনো কারণ থাকবে না।
দ্বিতীয়ত, এমন সব কর্মফল—যে-কর্মসমূহ সে কখনও করেনি, সেগুলির ফলও বর্তমান জীবনে ভোগ করতে হবে। এই যুক্তিটি পূর্ববর্তী যুক্তিরই প্রতিপাদক। যদি আত্মা অনিত্য হয় এবং কর্মফল স্থায়ী না হয়, তবে একজন ব্যক্তি কেন তার বর্তমান জীবনের সুখ-দুঃখের জন্য দায়ী হবে? বর্তমান জীবনে আমরা যে কষ্ট বা আনন্দ ভোগ করি, তার কারণ হিসেবে সাধারণত পূর্বজন্মের কর্মফলকে দায়ী করা হয়। কিন্তু যদি আত্মা অনিত্য হয়, তবে এই ব্যাখ্যাটি অর্থহীন হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে, ব্যক্তির বর্তমান জীবনের অভিজ্ঞতাগুলি এলোমেলো এবং উদ্দেশ্যহীন বলে মনে হবে, যা কোনো প্রকার ন্যায় বা যুক্তি দ্বারা ব্যাখ্যা করা যাবে না।
এই দুটি সমস্যা নৈতিক কার্য-কারণ বা কর্মবাদকে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দেয়। কর্মবাদ হলো এই বিশ্বাস যে, প্রতিটি কাজের একটি ফল আছে, যা সেই কাজটি সম্পাদনকারীকে ভোগ করতে হয়, তা এই জীবনে হোক বা পরবর্তী জীবনে। এটি প্রায় সকল ভারতীয় দর্শন, এমনকি বৌদ্ধ ও জৈন দর্শনেও স্বীকৃত একটি মৌলিক নীতি। কর্মবাদ শুধুমাত্র একটি দার্শনিক ধারণা নয়, এটি একটি সামাজিক ও নৈতিক কাঠামো প্রদান করে, যা মানুষকে ন্যায়পরায়ণ জীবনযাপন করতে উৎসাহিত করে। যদি কর্মবাদ বাতিল হয়ে যায়, তবে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে, কারণ অপরাধীরা তাদের কর্মের কোনো স্থায়ী পরিণতি দেখতে পাবে না।
চার্বাক মতবাদের এই দিকটি ভারতীয় দর্শনে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অন্যান্য দর্শন, যেমন বেদান্ত, ন্যায়, বৈশেষিক, মীমাংসা, সাংখ্য, যোগ, এবং এমনকি বৌদ্ধ ও জৈন দর্শনও আত্মার নিত্যতা এবং কর্মফলের ধারাবাহিকতাকে সমর্থন করে। তারা মনে করে যে, আত্মার অমরত্ব এবং কর্মফলের অবিচ্ছিন্নতা ছাড়া ন্যায় ও নৈতিকতার ধারণা অর্থহীন হয়ে পড়ে। চার্বাকদের যুক্তিগুলো এই সকল দর্শনের মৌলিক ভিত্তিগুলোকে চ্যালেঞ্জ করে, যা ভারতীয় দার্শনিক চিন্তাধারায় এক গুরুত্বপূর্ণ বৈপরীত্য তৈরি করে। এই বিতর্কের মূল সারাংশ হলো, মানুষের জীবনের উদ্দেশ্য, নৈতিকতা এবং পরকাল সম্পর্কিত ধারণাগুলো আত্মার নিত্যতা বা অনিত্যতার ওপর গভীরভাবে নির্ভরশীল।
যদি নৈতিক কার্য-কারণ বা কর্মবাদকে রক্ষা করতে হয়, তবে অবশ্যই একটি নিত্য আত্মার অস্তিত্ব স্বীকার করতে হবে, যা এই কর্মফলের আধার হিসেবে কাজ করবে। কর্মবাদ অনুসারে, প্রতিটি মানুষকে তার কৃতকর্মের ফল ভোগ করতে হয়, কারণ কর্মফল কখনোই নষ্ট হয় না। কর্ম একধরনের অদৃশ্য শক্তি (অদৃষ্ট) উৎপন্ন করে, যা ভবিষ্যতে সুখ-দুঃখ ভোগ করার কারণ হয়।
বর্তমান জগতের বৈষম্য ও ভিন্নতা, যেমন জন্মগত সুখ-দুঃখ, অন্য কোনো উপায়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। এটি অবশ্যই পূর্বকৃত কর্মফলের অদৃশ্য শক্তি (অদৃষ্ট) থেকে উদ্ভূত। মীমাংসা দর্শন অনুসারে, অদৃষ্ট হলো আচার-অনুষ্ঠানের অদৃশ্য ফলাফল, যা ব্যক্তির জন্য সঞ্চিত হয় এবং যা পঞ্চ-ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে জানা যায় না। এই অদৃষ্ট হলো সেই নৈতিক কার্য-কারণ, যা বহুত্ব ও অসীম বৈচিত্র্যময় প্রাণীকে একটি একক নিয়মে আবদ্ধ করে। যেহেতু এই অদৃশ্য শক্তিটি পূর্বজন্মের অস্তিত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত, আর আত্মা যেহেতু এই কর্মফলের আধার, তাই তাকে অবশ্যই অনাদি ও অনন্ত হতে হবে। একটি সুপ্রতিষ্ঠিত নিয়ম হলো—যে-বস্তু আদিতে জন্মহীন, তার অন্তও নেই।
সুতরাং, এই যুক্তির মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, শরীর ও ইন্দ্রিয়াদি আত্মা হতে পারে না, কারণ সেগুলো অনিত্য, সীমাবদ্ধ এবং উৎপন্ন পদার্থ। একটি অনিত্য আত্মা কর্মফলের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারে না, যা মহাবিশ্বের নৈতিক শৃঙ্খলাকে বিঘ্নিত করে। তাই, একটি নিত্য আত্মার অস্তিত্ব অপরিহার্য, এবং তাকে জানার একমাত্র উপায় হলো বেদ।
একটি মৌলিক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়: আত্মার অস্তিত্বের কোনো প্রমাণ আছে কি না—এটি প্রাকৃতিক, না কি অতিপ্রাকৃতিক? এই আপত্তির মূল ভিত্তি হলো: আত্মা যেহেতু ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নয়, তাই তাকে কোনো প্রমাণ-পদ্ধতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।