জীব ও ব্রহ্মের মধ্যকার পার্থক্য (bheda) হলো অবিদ্যাজনিত ভ্রম, যা ব্রহ্মজ্ঞানের মাধ্যমে অপনীত হয়। এই অপসারণের প্রকৃতিকে বোঝার জন্য অদ্বৈত দর্শন বিবর্ত বাদ (Vivartavāda—Theory of unreal manifestation) ব্যবহার করে এবং বিভিন্ন দৃষ্টান্তের আশ্রয় নেয়। রজ্জু-সর্প ন্যায় (Rope-Snake Analogy)—অন্ধকার বা অজ্ঞানতার কারণে দড়িকে সাপ বলে মনে হওয়া। জ্ঞান বা আলো (vidyā) আসার সঙ্গে সঙ্গে সাপটি (mithyā) অপসারিত হয় এবং কেবল দড়ি (ব্রহ্ম) অবশিষ্ট থাকে। ঘটাকাশ ন্যায় (Pot-Space Analogy)—ব্রহ্ম (মহাকাশ) উপাধি (ঘট) দ্বারা সীমিত হয়ে জীব (ঘটাকাশ—মহাকাশের অংশ) রূপে প্রতিভাত হলেও, মূলত তারা অভিন্ন। উপাধি দূর হলে ঘটাকাশ পুনরায় মহাকাশে বিলীন হয়।
বেদান্তের কিছু মন্ত্র জীব এবং ঈশ্বরকে ভিন্ন সত্তা হিসেবে বর্ণনা করে (bheda shruti)। অদ্বৈত এই মন্ত্রগুলিকে ব্যাবহারিক সত্যের বর্ণনা হিসেবে ব্যাখ্যা করে অথবা সাধকের প্রাথমিক স্তরের জন্য উপযোগী বলে মনে করে। তবে, তৎ ত্বম অসি (That thou art)-এর মতো মহাবাক্যগুলি (Mahā-Vakyas) অভেদকেই পরম সত্য হিসেবে ঘোষণা করে, যা অবিদ্যার বিনাশ করে এবং ব্রহ্মের অন্বয় প্রতিষ্ঠা করে। যদি ভেদ একটি বাস্তব সম্পর্ক (Sambandha) হতো, তবে জ্ঞান দ্বারা তার নিবৃত্তি সম্ভব হতো না। অদ্বৈত দার্শনিকরা প্রমাণ করেন যে, ভেদ মূলত একটি নিষেধ (Niṣedha) বা অবস্তু (non-entity), যা ব্রহ্মের অখণ্ড চৈতন্যে আরোপিত হয়। এই আরোপিত প্রকৃতিই প্রমাণ করে—ভেদের কোনো পারমার্থিক ভিত্তি নেই।
অদ্বৈত বেদান্তে অবিদ্যার স্বরূপ: এক না বহু—অদ্বৈত বেদান্তের ইতিহাসে অবিদ্যা বা অজ্ঞানতার স্বরূপ নিয়ে একটি গভীর দার্শনিক বিতর্ক বিদ্যমান। প্রশ্নটি হলো, অবিদ্যা কি এক (Eka), না কি বহু (Nānā)? এই বিতর্ক উত্তর-শঙ্কর যুগের অদ্বৈত চিন্তাবিদদের মধ্যে বিশেষভাবে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। এই জটিল সমস্যার সমাধানে 'লাঘব তর্ক' (Law of Parsimony) বা কার্যব্যাখ্যার সরলতা নীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এক-অবিদ্যা বাদ (Eka-Avidya Vada): এই মতানুসারে, ব্রহ্মকে আবৃত করে রাখা 'মূল-অবিদ্যা' (Fundamental Ignorance) কেবল একটিই। এটি সমষ্টি উপাধি হিসেবে ঈশ্বরের (Īśvara) সাথে যুক্ত থাকে, যেখানে ঈশ্বরকে সকল জীবের অবিদ্যার সমষ্টিগত প্রকাশক হিসেবে দেখা হয়। এক-অবিদ্যা-বাদের পক্ষে মূল যুক্তি হলো লাঘব তর্ক। এই নীতি বলে যে, কোনো ঘটনা ব্যাখ্যা করার জন্য সর্বনিম্ন সংখ্যক কারণ অনুমান করা উচিত। যদি অবিদ্যা একাধিক হতো, তাহলে মুক্তির প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল হয়ে যেত। প্রতিটি জীবের জন্য ভিন্ন ভিন্ন অবিদ্যা স্বীকার করলে, একজন জীব মুক্তি লাভ করলেও অন্য সকলের অবিদ্যা বিদ্যমান থাকায় জগতের অস্তিত্ব বা সকলের মুক্তি সম্ভব হতো না। একক অবিদ্যার কল্পনা সকল জীবের ব্যাবহারিক ভেদ (phenomenal distinctions) ব্যাখ্যা করার জন্য একটি সহজ এবং যথেষ্ট ভিত্তি প্রদান করে। এটি ব্রহ্মের অখণ্ডতা এবং অদ্বিতীয়ত্বকে অক্ষুণ্ণ রাখে।
এক-জীব বাদ (Eka-Jiva Vada): অবিদ্যার এককত্বের সঙ্গে 'এক-জীব বাদ' (Eka-Jiva Vada) ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত। এই মতবাদ অনুযায়ী, অবিদ্যা এক হওয়ার কারণে, পারমার্থিকভাবে মুক্ত হবার মতো জীবও প্রকৃতপক্ষে একজনই। অন্য সকল জীব এবং দৃশ্যমান জগৎ হলো সেই একমাত্র জীবের 'দৃষ্টি-সৃষ্টি' (simultaneous creation with cognition); অর্থাৎ, যেমন একজন ব্যক্তি স্বপ্নে বিভিন্ন দৃশ্য এবং চরিত্র দেখতে পায়, তেমনি একমাত্র জীব তার অবিদ্যার প্রভাবে এই বহুত্বপূর্ণ জগৎ এবং অন্যান্য জীবকে সৃষ্টি করে। সিদ্ধান্তলেশ সংগ্রহ-এ এই মতবাদকে বোঝার জন্য স্বপ্নদৃষ্টান্ত (dream analogy) ব্যবহার করা হয়েছে। এই মতবাদের ফলে একাধিক সৃষ্টিকর্তার জটিলতা দূর হয় এবং ব্রহ্মের অখণ্ডতা সুদৃঢ় হয়। একমাত্র জীব যখন নিজের স্বরূপ উপলব্ধি করে, তখন তার অবিদ্যা অপসারিত হয় এবং সমগ্র জগৎ তার কাছে মিথ্যা প্রতীয়মান হয়।
'সিদ্ধান্তলেশ সংগ্রহ' (Siddhantalesha Sangraha) গ্রন্থে স্বপ্নদৃষ্টান্ত বা স্বপ্নের উপমা (dream analogy) ব্যবহারের মাধ্যমে যে-মতবাদকে বোঝানো হয়েছে, সেটি অদ্বৈত বেদান্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। অদ্বৈত বেদান্তের বিশ্বদৃষ্টি—অদ্বৈত বেদান্ত অনুসারে, ব্রহ্ম (Brahman) হলেন একমাত্র পরম সত্য (Absolute Reality)। এই জগৎ (বিশ্ব) যা আমরা দেখি, তা আসলে মিথ্যা (unreal) বা মায়ার (Maya) কারণে সৃষ্টি হওয়া একটি ভ্রম মাত্র। এই জগৎকে মিথ্যা প্রমাণ করার জন্যই স্বপ্নের উপমা ব্যবহার করা হয়। স্বপ্নকালীন বাস্তবতা—যখন একজন মানুষ স্বপ্ন দেখে, তখন সেই স্বপ্নের মধ্যেকার সব কিছুকেই বাস্তব বলে মনে হয়। স্বপ্নের ভেতরের বাড়ি, মানুষ, ঘটনা—সব কিছুরই একটা 'বাস্তবতা' থাকে। স্বপ্নভঙ্গের পরে—ঘুম ভাঙার পর সেই স্বপ্নের কোনো কিছুই আর সত্য থাকে না। তখন স্পষ্ট বোঝা যায় যে, স্বপ্নের ভেতরের সব ঘটনাই ছিল মনের সৃষ্টি এবং অবাস্তব।
ঠিক একইরকমভাবে, অদ্বৈত বেদান্ত বোঝাতে চায় যে, এই দৃশ্যমান জগৎও অনেকটা স্বপ্নের মতো। যতদিন পর্যন্ত আমাদের অজ্ঞানতা (Avidya) বা মায়া থাকে, ততদিন পর্যন্ত এই জগৎকে আমরা বাস্তব বলে মনে করি। কিন্তু যখন জ্ঞান বা মুক্তি লাভ হয়, তখন এই জগৎ-এর 'বাস্তবতা' ভেঙে যায় এবং এই উপলব্ধি হয় যে, একমাত্র ব্রহ্ম-ই সত্য, আর এই জগৎ তাঁরই একটি আপাত-প্রতীয়মান রূপ বা ভ্রম। 'সিদ্ধান্তলেশ সংগ্রহ' গ্রন্থে মূলত দেখানো হয়েছে, কীভাবে বিভিন্ন আচার্যরা (যেমন শঙ্করাচার্য) এই স্বপ্নদৃষ্টান্ত ব্যবহার করে জগতের মিথ্যাত্ব (unreality of the world) এবং ব্রহ্মের একমাত্র সত্যতা—এই মতবাদটিকে দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছেন। স্বপ্নদৃষ্টান্ত মতবাদটি বোঝায় যে, জগৎ হলো একটি দীর্ঘ স্বপ্নের মতো, যা আমাদের অজ্ঞানের কারণে বাস্তব মনে হয়, কিন্তু জ্ঞানের মাধ্যমে যার ভ্রম কেটে যায়।
নানা-জীব বাদ (Nānā-Jiva Vada) ও মুক্তির ভিন্নতা: অনেক অদ্বৈত পণ্ডিত অবশ্য 'নানা-জীব বাদ' (বহু জীববাদ) অনুসরণ করেন। এই মতবাদ ব্যাবহারিক অভিজ্ঞতার ন্যায্যতা দিতে চায়, যেখানে একাধিক ব্যক্তি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে মুক্তি লাভ করে। আমাদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা এটাই বলে যে, বিভিন্ন মানুষ ভিন্ন ভিন্ন সময়ে জ্ঞান লাভ করে এবং মুক্ত হয়। এই মতে, প্রতিটি জীবের অবিদ্যা বা আবরণ শক্তি ভিন্ন ভিন্ন। সুতরাং, যখন কোনো নির্দিষ্ট জীবের মধ্যে 'অখণ্ডাকার চিত্তবৃত্তি' (akhandakāra cittavritti) বা ব্রহ্মের অভিন্ন জ্ঞানমূলক বৃত্তি উদিত হয়, তখন সেই নির্দিষ্ট জীবের ওপর থেকে ব্রহ্মকে আবৃতকারী শক্তি অপসারিত হয়। কিন্তু অন্য জীবদের ক্ষেত্রে সেই আবরণ অক্ষুণ্ণ থাকে, কারণ তাদের অবিদ্যা স্বতন্ত্র এবং তখনও অপসারিত হয়নি। এই মতবাদ জীবের ব্যক্তিগত সাধনা ও মুক্তির সম্ভাবনার উপর জোর দেয়।
এই বিতর্ক মূলত লাঘব তর্ক এবং ব্রহ্মের একত্ব নীতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত এক-অবিদ্যা বাদ (এবং এক-জীব বাদ) এবং ব্যাবহারিক অভিজ্ঞতার (বিভিন্ন সময়ে একাধিক ব্যক্তির মুক্তি) মধ্যকার সমন্বয়ের একটি প্রচেষ্টা। অদ্বৈত বেদান্তের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো এই দুটি স্তরকে—পারমার্থিক একত্ব (ব্রহ্মের অদ্বিতীয় স্বরূপ) এবং ব্যাবহারিক বহুত্ব (জগতের বৈচিত্র্য)—'অনির্বচনীয়ত্ব'-র (inexpressibility) মাধ্যমে ধরে রাখা। অর্থাৎ, ব্যাবহারিক স্তরে বহুত্ব সত্য মনে হলেও, পারমার্থিকভাবে তা অবিদ্যার কারণে সৃষ্ট একটি মায়িক প্রতিভাস মাত্র। এই সমন্বয় অদ্বৈত দর্শনের গভীরতা এবং তার সক্ষমতা প্রমাণ করে, যা দৃশ্যমান বৈচিত্র্য এবং চূড়ান্ত এককত্বের মধ্যে একটি যৌক্তিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়। এটি দেখায় যে, অদ্বৈত দর্শন কেবল তাত্ত্বিক বিচারে সীমাবদ্ধ নয়, বরং আমাদের অভিজ্ঞতালব্ধ বাস্তবতার সঙ্গেও সঙ্গতিপূর্ণ একটি সমন্বিত worldview প্রদান করে।
উপাধি (Upādhi) হলো অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের একটি কেন্দ্রীয় ধারণা, যা ব্যাখ্যা করে—কীভাবে অখণ্ড, নির্বিশেষ চৈতন্য (ব্রহ্ম) আপাতদৃষ্টিতে সসীম জীব (ব্যক্তিগত আত্মা) এবং গুণবিশিষ্ট ঈশ্বর রূপে প্রতিভাত হয়। এই ধারণার মূল ভিত্তি হলো, উপাধি নিজে মিথ্যা বা অস্থায়ী একটি সীমাবদ্ধকারী বা শর্ত আরোপকারী উপাদান। এর অর্থ হলো, উপাধি যখন সরে যায় বা দূরীভূত হয়, তখন মূল সত্তা, অর্থাৎ ব্রহ্মের কোনো পরিবর্তন ঘটে না। এটি অনেকটা একটি স্বচ্ছ স্ফটিকের মতো, যা ভিন্ন ভিন্ন রঙের বস্তুর সংস্পর্শে এসে সেই রং ধারণ করে বলে মনে হলেও, বস্তুত স্ফটিকের নিজস্ব কোনো রং নেই এবং তার মৌলিক প্রকৃতি অক্ষুণ্ণ থাকে।
অদ্বৈত মতে, উপাধি দু-প্রকারের: মায়া এবং অবিদ্যা। মায়া হলো ঈশ্বরের উপাধি। এই মায়ার প্রভাবেই ব্রহ্ম যেন গুণযুক্ত ঈশ্বর রূপে প্রতীয়মান হন, যিনি সৃষ্টি, স্থিতি ও লয়ের কর্তা। কিন্তু এই ঈশ্বরত্ব ব্রহ্মের মৌলিক প্রকৃতি নয়, বরং মায়ার উপাধি দ্বারা আরোপিত একটি অবস্থা। অন্যদিকে, অবিদ্যা হলো জীবের উপাধি। অবিদ্যার কারণে অখণ্ড চৈতন্য নিজেকে সসীম, ব্যক্তিগত জীব আত্মা হিসেবে অনুভব করে, যা জন্ম-মৃত্যু, সুখ-দুঃখ এবং কর্মফলের অধীন। এই অবিদ্যাই জীবকে 'আমি কর্তা', 'আমি ভোক্তা' ইত্যাদি মিথ্যা ধারণায় আবদ্ধ রাখে। যখন এই অবিদ্যা দূরীভূত হয়, তখন জীব তার প্রকৃত স্বরূপ উপলব্ধি করে এবং ব্রহ্মের সঙ্গে তার অভেদত্ব জ্ঞান হয়।
এই ধারণা বিশিষ্টাদ্বৈত বেদান্তের জীব ও ব্রহ্মের সম্পর্ক থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। রামানুজের বিশিষ্টাদ্বৈত মতে, জীবকে ব্রহ্মের নিত্য বিশেষণ বা গুণ (attribute or Visheshaṇa) হিসেবে দেখা হয়। রামানুজ মনে করেন, জীবেরা চিরন্তন সত্তা এবং তারা ব্রহ্ম থেকে পৃথক অস্তিত্ব রক্ষা করে। এমনকি মুক্তিলাভের পরেও জীব তার স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখে এবং ব্রহ্মের নিত্য সেবক হিসেবে অবস্থান করে। এই দর্শনে, জীব এবং ব্রহ্ম উভয়ই বাস্তব এবং সত্য, যদিও জীব ব্রহ্মের উপর নির্ভরশীল। জীব ব্রহ্মের শরীর এবং ব্রহ্ম জীবের আত্মা। এই সম্পর্ককে শরীর-আত্মা ভাব দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়।
কিন্তু অদ্বৈত দর্শনে, উপাধি (অবিদ্যা বা মায়া) দূর হলে জীব তার স্বাতন্ত্র্য হারায় এবং অসীম ব্রহ্মের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায়। এটি অস্থায়ী পোশাক ছেড়ে দেবার পর আত্মার পূর্ণতা লাভের মতো। যেমন, একজন ব্যক্তি যখন তার পোশাক পরিবর্তন করে, তখন তার নিজস্ব সত্তার কোনো পরিবর্তন হয় না; বরং একটি বাহ্যিক আবরণ মাত্র অপসারিত হয়। তেমনি, অবিদ্যারূপী উপাধি যখন অপসারিত হয়, তখন জীবের আপাত পার্থক্য বিলীন হয়ে যায় এবং সে তার অসীম ব্রহ্মসত্ত্বা উপলব্ধি করে।
জীবত্ব (Jīvatva) হলো একটি আগন্তুক অবস্থা, যা বাহ্যিক কারণের উপর নির্ভরশীল। এটি ব্রহ্মের অপরিহার্য প্রকৃতি নয়; এটি ব্রহ্মের উপর ভ্রান্তভাবে আরোপিত হয়। জীবত্ব ব্রহ্মের প্রকৃত স্বরূপের উপর একটি আরোপিত উপাধি মাত্র। স্বপ্নাবস্থায় যেমন একজন ব্যক্তি নিজেকে ভিন্ন রূপে দেখে, কিন্তু জাগরিত হলে সেই স্বপ্নের আরোপিত পরিচয় বিলীন হয়ে যায়, ঠিক তেমনি অবিদ্যাজনিত জীবত্ব জ্ঞানরূপী জাগরণের মাধ্যমে বিলীন হয়ে ব্রহ্মের সঙ্গে অভিন্নতা লাভ করে। ব্রহ্ম নির্গুণ, নিরাকার এবং নিরবচ্ছিন্ন চৈতন্য। যখন উপাধি সরে যায়, তখন ব্রহ্ম তাঁর স্বরূপে প্রকাশিত হন, যেখানে জীব এবং ব্রহ্মের মধ্যে কোনো ভেদ থাকে না। এই অবস্থাকেই মোক্ষ বা মুক্তি বলা হয়, যেখানে জীব তার পরমাত্মার সঙ্গে একাত্মতা লাভ করে।