ধ্যান ও সৎসঙ্গের মাধ্যমে এক নতুন স্তরের চেতনায় প্রবেশের সম্ভাবনার বার্তা ছড়িয়ে দিতে গিয়ে স্পিরিচুয়াল বা ইয়োগা কোচদের কাছে কিছু অপ্রত্যাশিত বিষয় ধরা পড়ে।
প্রথমদিকে থাকে অপরিসীম উচ্ছ্বাস—সপ্তাহে চার দিন, চারটি শহরে ক্লাস; যে-ই কিছু জানতে চাইত, তার ওপর ধারাবাহিক কথার ঝড় বইয়ে দেওয়া হতো। শ্রোতারা তখন মূলত তরুণ: বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া, চাকরিজীবী, বেকার ইত্যাদি। ধীরে ধীরে তাদের বাবা-মায়েরাও আসতে শুরু করে—কৌতূহল নিয়ে, বা সংশয় নিয়ে। অনেক বাবা-মা কোর্সে থেকে গেলেন, এমনকি তাঁদের সন্তানরা সরে গেলেও।
তারপর দেখা গেল—মানুষ বলছে, তারা ওজন কমিয়েছে, ধূমপান ছাড়তে পেরেছে, চাপ নিয়ন্ত্রণে এসেছে, সম্পর্ক উন্নত হয়েছে, সহনশীলতা বেড়েছে, অ্যালার্জি কমেছে—এমনকি বিভিন্ন রকমের খেলার দক্ষতাও নাকি বাড়ছে। সবাই ভাবল, ভালোই তো!
তখন ক্লাসগুলো উপস্থাপন করা হতো এক মহা-অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে—যার নাম দেওয়া হয়েছিল EPIC: Experience of Pure Intuitive Consciousness (শুদ্ধ অন্তঃপ্রেরণামূলক চেতনার অভিজ্ঞতা)। পরে আলোচনা প্রসারিত হয় রহস্যবাদী পথে—যা প্রায় সব ধর্মীয় পরম্পরাতেই মূলধারার বাইরে গড়ে উঠেছিল।
এমনকি অদ্বৈতবাদীরাও স্বীকার করে—ইন্দ্রিয়-জগত একদিকে ভ্রম, তবু তা আছে; আর অপরদিকে রয়েছে পরম-জাগরণ: আলোকপ্রাপ্তি, সত্যজ্ঞান, সমাধি, মোক্ষলাভ, নন-ডুয়াল রিয়ালাইজেশন, “বর্ন এগেইন”—নানান নামে।
আশ্চর্য, এ অবস্থার জন্য একটি সর্বজনীন নাম যদি থাকত! তবে ‘ঈশ্বর’ নামটাই-বা মন্দ কী? বরং এই নামটাই নিরাপদ—লোকে হইচই বাধায় না।
তাহলে আর কী! আনন্দে থাকো। আর যদি ধূমপানের মতো কোনো অভ্যাস ছাড়তে চাও—ওরকম একটা জাগরণের পথে হাঁটার চেষ্টা করে দেখতে পারো। কাজ হলেই তো হলো!