ডেটলাইন ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
শীত নেই, ঘুম আছে। ঘুমোনো যাবে না, নিয়ম নেই। এখানে নিয়ম না ভাঙাই নিয়ম। বিছানায় শুয়ে শুয়ে উঠব উঠব করছি আর সুনীল ভাবছি। এই কবিতাটা একটা সময়ে আবৃত্তি করতাম:
কাচের চুড়ি ভাঙার মতন মাঝে মাঝেই ইচ্ছে করে
দুটো চারটে নিয়ম কানুন ভেঙে ফেলি
পায়ের তলায় আছড়ে ফেলি মাথার মুকুট
যাদের পায়ের তলায় আছি, তাদের মাথায় চড়ে বসি
কাঁচের চুড়ি ভাঙার মতোই ইচ্ছে করে অবহেলায়
ধর্মতলায় দিন দুপুরে পথের মধ্যে হিসি করি।
আমাকে যাঁরা চেনেন, তাঁদের সবাই-ই খুব অবাক হয়ে যান, এই আমিও এখনও শোকজ খাইনি। আমি নিয়ম মানতে শিখে যাচ্ছি বোধ হয়। ভোরে ঘুম ভাঙাতে হলো। হাঁটছিলাম আর ঘুমাচ্ছিলাম, কিংবা ঘুমাচ্ছিলাম আর হাঁটছিলাম। শরীরটাকে টেনে টেনে নিয়ে যাচ্ছি। আজ একজাম নেই কেন? আমি চাই, প্রতিদিন একজাম থাকুক। যে ক্যারিয়ার ঘুম কেড়ে নেয়, সে ক্যারিয়ার দিয়ে কী হয়?
মাথার উপর দিয়ে ছোট্ট পাখির বড়ো ঝাঁক উড়ে গেল। সেই ঝাঁকে শত শত নয়, হাজার হাজার পাখি। মনে হচ্ছিল, রাজ্যের কিচিরমিচির পিএটিসি’র ওপর দিয়ে হাসছে, পার হচ্ছে। মনে হলো, পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর দৃশ্যটি ভোরবেলায় পাখিদের ওড়াউড়ি। এই ট্রেনিংও কখনো কখনো একেবারে খালিহাতে ফেরায় না। পাখিদের ভালোবাসতে ইচ্ছে হল; বাসলাম। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘চরাচর’ মুভিটার কথা মনে আছে তো? পাখিদের এমন হাসিখুশি উড়ে যাবার একটা দৃশ্য আছে ওতে। আকাশজুড়ে পাখির মেলা। আজকের সকালটাতেও ওরকম কিছু-একটা দেখে নিজের মনেই কী যেন ভেবে অথবা কিছুই না ভেবে হেসে উঠলাম। এই হাসিতে চোখ হাসে বেশি।
ঘুম ঘুম চোখে পিটি ফুরোল। ৭টা। পিটিগ্রাউন্ড থেকে রুমে ফিরতে লাগে ২-৩ মিনিট। ক্লাস শুরু হয় সাড়ে ৮টায়। পিটিগ্রাউন্ড রুমে ফিরে প্রতিদিন যা করি, সেটা হলো, মোবাইলে কিংবা ল্যাপটপে বসে কিছু গান শোনা। এই গান শোনাটা আমার কাছে প্রার্থনার মতো মনে হয়। প্রার্থনা প্রতিদিন না করলে দেহমন শুদ্ধ হয় না। দিনের শুরুতে মনটাকে শান্তসমাহিত করতে ইচ্ছে করে। যে কটা গান বেশি শোনা হয়, সেগুলো শেয়ার করছি:
তুমি নির্মল করো মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে...মঙ্গলদীপ জ্বেলে অন্ধকারে দু-চোখ আলোয় ভরো প্রভু...বঁধুয়া নিদ নাহি আঁখিপাতে...একা মোর গানের তরী ভাসিয়েছিলাম নয়নজলে...শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে...আমি অকৃতী অধম বলেও তো কিছু কম করে মোরে দাওনি...চরণ ধরিতে দাও গো আমারে...খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে...আকাশভরা সূর্য তারা...সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে...আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও...ডাকে পাখি, খোলো আঁখি...মা, ভোরের আলোয়, পাখির গানে, তুই মা আছিস সর্বখানে...আর কিছু ভক্তিমূলক গান।
এই ভোরবেলায় গান শোনার দীক্ষাটা বাবা-মা’র কাছ থেকে পাওয়া। এসব শুনে শুনে বড়ো হয়েছি। মা ঘুম পাড়াতেনও গান শুনিয়ে। ভোরবেলায় টুইনওয়ানে গান বেজে উঠত আর আমি চোখ রগড়াতে রগড়াতে ঘুম থেকে জাগতাম। এই ছোটোবেলার গানগুলো যতটা শুনি, ততোধিক অনুভব করি। যে-গানে ঘুমুতে যাই, ঘুম থেকে জাগি, সে যে প্রাণের গান। ছোটোবেলায় দেখতাম, এখনও দেখি, ‘তুমি নির্মল করো’ গানটি গাইবার সময় মায়ের চোখ বেয়ে অশ্রু নামে। নিবেদনের অশ্রু। গানটি শুনলেই সেই সুর, সেই আবেগ, সেই আকুলতা খুব গভীরভাবে অনুভব করি।
আচ্ছা, একটা মেজাজ খারাপ-করা ব্যাপার খেয়াল করলাম। ইউটিউবে ‘তুমি নির্মল করো’ ডিসলাইক করেছেন ১৯ জন, ‘মঙ্গলদীপ জ্বেলে’ ডিসলাইক করেছেন ৪১ জন, ‘বঁধুয়া নিদ নাহি আঁখিপাতে’ ডিসলাইক করেছেন ২ জন, ‘একা মোর গানের তরী’ ডিসলাইক করেছেন ১৩ জন...থাক, আর না বলি! ওদেরকে তুলে আছাড় মারতে পারলে বড়ো শান্তি পেতাম। আমি এই মূর্খ হৃদয়হীন বেসুরো গর্দভগুলোর এক মাস সশ্রম কারাদণ্ড চাই! ওদের কানে ধরে এক-শো-বার ওঠ-বস করানো হোক। (আচ্ছা, ওরা কি ভেবেছিল, ওটা ডাউনলোড বাটন?)
কিন্তু কথা সেটা না। কথা হলো, এসব গান শুনে যখন স্নানঘরে যাই, তখন মাথায় কোত্থেকে যেন কীসব গান এসে ভর করে। আজ পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর ‘ভোর হলো বিভাবরী’ শুনে স্নানে গেলাম, আর মাথায় উড়ে এল ‘ইয়েহ হ্যায় প্রেম’ মুভির মিলিন্দ ইঙ্গলের ‘ও প্রিয়া, জানি ক্যায়সা ভিগা ভিগা ভিগা’। এসব গানে ভেসে ভেসে ক্লাসে গেলাম। মনটা এমনিতেই খুব উড়ু-উড়ু, তার উপরে আশেপাশে সুন্দরী কেউ থাকলে কেমন যে লাগে! কী মিষ্টি একটা মেয়ে! আমি তাকিয়েই থাকি, লুকিয়ে লুকিয়ে। হাসলে গালে টোল পড়ে, চোখগুলো আরও বেশি দুষ্টু দুষ্টু হয়ে ওঠে। ওঁকে দেখছিই তো দেখছি আর ভাবছি, একটা মেয়ে এত মিষ্টি চেহারার হবার কী দরকার? আজব!! মানুষের কাজ আছে না?? সুন্দরী সহপাঠিনী এবং টিচার দুই-ই ক্লাসে মনঃসংযোগের ক্ষেত্রে বিশেষ হানিকর। আজ পরের আরেকটা ক্লাসে যাবার সময় দূর থেকে দেখলাম, সেই উনিই করিডোরে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি কী যেন এক সংকোচে মাথা নিচু করে গুটিসুটি মেরে হাঁটতে লাগলাম। উনি দাঁড়িয়েই আছেন। কাছে আসতেই জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কি পায়ে ব্যথা পেয়েছেন?” আমি খুব অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। তোতলাতে তোতলাতে উত্তর দিলাম, “ইয়ে না না, কিচ্ছু হয়নি। আমি ঠিক আছি!” বলেই খুব দ্রুত অনেকটা পালিয়ে গেলাম। খুব আফসোস হতে লাগল, হায়! পায়ে কেন ব্যথা পেলাম না? কী এমন ক্ষতি হতো একটু ব্যথা পেলে? তাহলে তো আর ওঁকে ‘না’ বলতে হতো না। সুন্দরীকে ‘হ্যাঁ’ বলার এই সুযোগ বিধাতার নিষ্ঠুর ইশারায় হেলায় হারালাম। আমিও ‘না’ বলে দিতে পারি?!
ক্লাসে এক স্যার বললেন, “তোমরাই দেশের ভবিষ্যৎ। তোমাদের উপরে নির্ভর করছে অনেক কিছু। তোমরাই বাংলাদেশ।” আর ওদিকে সবকটা বাংলাদেশ সমানে ঘুমোচ্ছে। এই স্যার বড্ড ভালো। পড়ান ভালো, বকা দেন না, ঘুমিয়ে পড়লেও হাসিমুখে পড়াতে থাকেন, এমনকী কেউ ঘুম ভেঙে জেগে উঠলে ওর দিকে তাকিয়ে ‘যেন কিছুই হয়নি’ ভঙ্গিতে তাকিয়ে কথা বলতে যে ঔদার্য আর মানসিক পরিপক্বতা লাগে, সেটা ওঁর পুরোমাত্রায় আছে। বেশ সহজসরল সহানুভূতিশীল ভালোমানুষ। “আইনের ক্লাস, ক্লাসে ঘুম আসবে, এটাই স্বাভাবিক। তোমরা ঘুমিয়ে পড়ো, কোন সমস্যা নাই, কিন্তু ক্লাসে কিছুতেই দুষ্টুমি করবে না।” কথাটি আরেক স্যারের। স্যার বেশ ভালো নাচতে ও পড়াতে জানেন। আজ স্যার পড়াচ্ছেন, আমার মাথায় বাজছে, ‘শ্রী ৪২০’-এর পেয়ার হুয়া ইকরার হুয়া...আর দেখছি নার্গিসবিহীন রাজ কাপুরের নাচ। লতা-মান্নাকে খুব মনে হতে লাগল। এই মানুষগুলোর কাছে আমাদের অনেক ঋণ।
অনার্সে পড়ার সময় এমনিতে কেউ ক্লাসে মন দিতাম না, কিন্তু স্যার যেই বলত, “এই প্রশ্নটা পরীক্ষার জন্য ইম্পরট্যান্ট”, অমনিই সবার কান খাড়া হয়ে যেত। কালকে একটা একজাম আছে। একজামকে সামনে রেখে একটা ‘প্রবলেম সল্ভিং এক্সট্রা ক্লাস’ দেওয়া হয়েছিল আজ লাঞ্চের পর। ক্লাসে কার কী কী সমস্যা আছে জিজ্ঞেস করাতে আমরা বললাম, “স্যার, আপনার কাছে যা-কিছু আমাদের জন্য জানাটা ইম্পরট্যান্ট বলে মনে হয়, সব কিছুই বুঝিয়ে দেন।” সেই ক্লাসে মোটামুটি একজামে যা-কিছু ‘আসতে পারে’ সবই বুঝিয়ে দেওয়া হলো। সবাই কান খাড়া করে ক্লাস করেছে। কেউই ঘুমোয়নি। স্যার পড়ানও ভালো। পিএটিসি’তে আসার পর আর কোনো ক্লাস এতটা অখণ্ড মনোযোগ দিয়ে করেছি বলে মনে পড়ে না। আমি এই পর্যন্ত কোনো ক্লাসেরই লেকচার খাতায় তুলিনি। আজকেই প্রথম ‘ক্লাস-নোট’ নিলাম। এর আগে সবসময়ই নিয়েছি ‘পিএটিসি ডায়েরি নোট’, মানে এখানে যা ঘটে, তার কিছু কিছু নোট নিই। নাহলে এত সব কিছু মনে রেখে লেখা সম্ভব নয়। আমার ভুলে যাবার ক্ষমতা অসীম।
এই ক-দিন এবারের বইমেলা থেকে কেনা বইগুলো নেড়েচেড়ে দেখছি। আজ সন্ধেয়ও একটু-আধটু পড়ছিলাম। কিছু কথা বলতে ইচ্ছে করছে:
"When a true genius appears in the world, you may know him by this sign, that the dunces are all in confederacy against him."
সুইফট যখন ওপরের কথাটা লিখেছিলেন, সেসময়ে ফেইসবুক ছিলো না৷ থাকলে, উনি হয়তো বলতেন,
When a genius appears on Facebook, you may doubt him by this sign: that the dunces are all in confederacy against him.
জন কেনেডি টুলি তাঁর লেখা ছাপবার জন্যে প্রকাশকদের দরোজায় কড়া নাড়তে নাড়তে অবশেষে আর প্রত্যাখ্যান সহ্য করতে না পেরে প্রচণ্ড অভিমানে ৩১ বছর বয়সে আত্মহত্যা করেন৷ তাঁর লেখার ছেঁড়াফাটা নোংরা পাণ্ডুলিপি নিয়ে তাঁর মা থেলমা টুলি পার্সি ওয়াকারের কাছে যান৷ ওয়াকার সাহেব কলেজে পড়াতেন, টুকটাক লিখতেন৷ তিনি প্রথমে পাণ্ডুলিপি পড়তেই রাজি হননি৷ “আমার ছেলে এই লেখা ছাপতে না পেরে অনেক কষ্ট নিয়ে আত্মহত্যা করেছে৷ আমি এটা আপনার কাছে রেখে যাচ্ছি; দয়া করে অন্তত কয়েক পাতা পড়বেন, যদি ছাপবার যোগ্য না হয়, আমাকে আর খবর পাঠাবেন না, আপনিই ছুড়ে ফেলে দেবেন৷ আমি এটা ধরে নিয়ে সান্ত্বনা খুঁজে নেব, হয়তো ওটা একটু পড়ে দেখার সময়ই হয়নি আপনার৷” এই বলে ওয়াকার সাহেবের টেবিলে পাণ্ডুলিপিটা রেখে কোনো আশা ছাড়াই মা অফিস থেকে বেরিয়ে পড়েন, যেভাবে অসহায় মা তাঁর শিশুকে অনাথাশ্রমে রেখে আসেন এই আশায় যে, ভালো থাক না থাক, অন্তত বেঁচে থাক৷
এরপর কী হয়েছিল, সেটা সবারই জানা৷ লেখকের মৃত্যুর ১১ বছর পর অ্যামেরিকান কমিক মাস্টারপিস্ A Confederacy of Dunces প্রকাশিত হয়, লেখককে মরণোত্তর পুলিৎজারও দেওয়া হয়৷...সন্তোষ সেনগুপ্তের গাওয়া একটা গান মনে পড়ে গেলো...জীবনে যারে তুমি দাওনি মালা, মরণে কেনো তারে দিতে এলে ফুল...
কমলকুমার-জীবনানন্দ’রা ছাপা হওয়া দূরে থাক, কেউ কখনোই পড়বেও না, এটা জেনেও কীসের মোহে লেখার প্রতি কতটা নিষ্ঠা আর ভালোবাসা নিয়ে উপন্যাস লিখতেন, সেটা এইসময়ে যাঁরা লিখছেন, তাঁরা একটু ভেবে দেখবেন, প্লিজ? আমরা অনেক আশা নিয়ে পড়তে বসি তো!
বইমেলা আসে, তাই অনেকে লেখেন৷ আমরা পাঠকেরাও এই সময়ের অপেক্ষায় থাকি৷ বই দেখি, কিনি, কখনো কখনো পড়ি৷ ইদানীং পড়ার পর আমার প্রায়ই Ratatouille অ্যানিমেশন মুভির ইঁদুরটার মতো করে বলতে ইচ্ছে হয়, Anyone can write, that does not mean that anyone should. বলি, বেঁচে আছেন বলে লিখতেই হবে? কে আপনাকে অমন দিব্যি দিয়েছে? লিখছেন, ঠিক আছে। ছেপেও দিচ্ছেন কেন? আপনি বোধ হয় ধরেই নেন, আপনার বইটা কেউই কিনবে না, তাই না? কিংবা কিনলেও এমন কেউ কিনবে, যে বই-টই অতটা পড়েটড়ে না, মানে নেহায়েত অপরিপক্ব পাঠক, তা-ই কি?
এবারের বইমেলা থেকে কেনা মোট ১৭৮টি বইয়ের মধ্যে অন্তত ৪০টি বই কিনেছি নতুন এবং একটু অপরিচিত লেখকের। আমি নতুনদের লেখা পড়ি। দেখতে ইচ্ছে করে, কে কীভাবে কেমন লিখছেন। আমার সাথে মেলায় দেখা হয়ে গেছে কিংবা দেখা করেছেন, এমন কেউই নেই, যাঁকে বই উপহার দিইনি। বই দেওয়া আমার খুব প্রিয় একটা কাজ। সমস্যা হলো, তাঁদের কাউকে কাউকে আমি নতুন লেখকদের কারও কারও বই কিনে দিয়েছি। এখন সে বইগুলো নিজে পড়ে ভাবছি, কী বোকামিটাই-না করে ফেলেছি! কেউ বই কিনে দিলে পড়ে দেখে, এমন লোকের সংখ্যা বেশি নয়। যদি আমার ওই শুভাকাঙ্ক্ষীদের দু-একজন উপহার-পাওয়া ওসব বই পড়ে-টড়ে ফেলেন, তাহলে আমার রুচি সম্পর্কে কী ভাববেন! এটা ভেবেই খুব বিব্রতবোধ করছি।
জীবনানন্দ লিখেছিলেন, সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি...আমি বলি, সকলেই লেখে না, কেউ কেউ প্রসব করে...পুরোনো লেখকদের কারও কারও লেখা পড়ে মনে হয়েছে, ওঁরা বই লেখা ছেড়ে দিয়ে এখন বই প্রসব করতে শুরু করেছেন। কারও বই পড়লে মনে হয়, “এই শালাকে একটা নোবেল দিয়ে এক্ষুনি থামিয়ে দেওয়া যায় না?” অবশ্য বেশ কিছু ভালো বইও কেনা হয়েছে। নতুনরা অনেকেই জানিয়ে দিচ্ছেন, ওঁরা হারিয়ে যাবেন না।
ইদানীং ব্যস্ততার কারণে ‘পিএটিসি ডায়েরি’ ঠিকমতো লিখতে পারছি না। এর মধ্যেই অনেকগুলো জমা হয়ে আছে। কয়টা যেন? ভুলে গেছি। উফফ্! লোকে চাকরি করে লেখে কীভাবে! কালকের ডায়েরিটা আজ লিখলাম। এখন ‘প্রথম আলো’র জন্য লিখতে বসতে হবে। ওরা ৩৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ক্যান্ডিডেটদের জন্য একটা পরামর্শমূলক লেখা চেয়েছে। ওটা পেপারে আসবে ২৭ ফেব্রুয়ারি, পরীক্ষার ঠিক ১ সপ্তাহ আগে। লিখতে হবে, এটা জেনেছি কালকে রাত ২টায়, আমার ওয়ালে একটা পোস্ট দেখে। ওরা আরও আগেই আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল। আমার মোবাইল প্রায়ই বন্ধ থাকে, যখন অন করা ছিল, তখন আমিই ফোনটা ধরিনি, তাই যোগাযোগ হয়ে ওঠেনি। ওরা ফেইসবুকেও অনুরোধ করেছে। আমার ইনবক্স চেক করা হয় খুব কম, করলেও ১০%-এর মতো মেসেজ চেক করি, তাই আমি খেয়াল করিনি। ক্যান্ডিডেটদের জন্য লিখব। ভাবছি, যাঁদের প্রস্তুতি ‘নেই, ভালো না, এবং মোটামুটি’—এই ৩ ধরনের ক্যান্ডিডেটদের জন্য কিছু লিখব; যাঁদের প্রস্তুতি ভালো, তাঁরা ওইদিনের লেখাটা না পড়লেও চলবে। সারাদিনের ট্রেনিং প্রোগ্রামের ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলে এখন লিখতে বসতে হবে। সমস্ত শরীরমন ভেঙে প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছে। পাক!
The woods are lovely, dark and deep,
But I have promises to keep,
And miles to go before I sleep,
And miles to go before I sleep.