পত্র-বিভ্রাট

যে-দিন তুমি আমার কাছ থেকে চলে যাও, সেদিন হতেই (১)
আমি বড়ো কষ্টে আছি; কিন্তু তুমি বোধ হয় মনে করছ যে, (২)
আমি পরম সুখে নিশ্চিন্ত মনে সময় কাটাচ্ছি। (৩)
যদি এমন হয়, তাহলে এ তোমার নিতান্তই ভুল; আমি (৪)
তোমাকে একদণ্ড, এমনকী একমুহূর্তের জন্য‌ও দেখতে (৫)
না পেলে ব্যাকুল হয়ে পড়ি; এবং তোমাকে মুহূর্তের জন্য‌ও চোখের আড়াল করতে (৬)
যেন না হয়, আমি কায়মনোবাক্যে ঈশ্বরের কাছে সবসময় তা-ই প্রার্থনা করি। (৭)
আমার একান্ত বাসনা এই যে, তুমি সবসময়ই আমার কাছে থাকো। (৮)
যখন তুমি আমার সামনে থাকো এবং আমি তোমায় দেখি, তখন (৯)
আমার হৃদয় আনন্দরসে পরিপূর্ণ হয় এবং তোমাকে দেখতে না পেলে (১০)
আমার হৃদয়ে ভীষণ যন্ত্রণা হতে থাকে; (১১)
এবং মনে হয় যে, সেই যন্ত্রণা ভোগ করার চাইতে আমার মৃত্যু হওয়াও ভালো। (১২)
যখন তুমি কথা বলো, তখন তোমার কথাগুলি আমার কানে (১৩)
মধুর অমৃতধারা বর্ষণ করে; এমনকী সুললিত সংগীতও তখন (১৪)
অতিমাত্রায় অপ্রীতিজনক, কর্কশ ও বিরক্তিকর বলে মনে হয়। (১৫)
তোমার বিরহে আমি যে, কী কষ্টে আছি, তা বলে বোঝাতে পারব না। (১৬)
আমি তোমাকে আমার মন, প্রাণ ও হৃদয় দিয়ে পুরোপুরি (১৭)
ভালোবাসি; তোমাকে ছেড়ে স্বর্গসুখ ভোগ করতেও আমি (১৮)
ঘৃণা করি; তুমি কখনও ভুল করেও মনে কোরো না যে, আমি তোমাকে ভালোবাসি (১৯)
না; আমার হৃদয় তোমাতেই মুগ্ধ—তুমিই আমার সর্বস্ব ধন। (২০)
তোমাকে দেখলে বা ছুঁলে, তোমার কথা শুনলে, এমনকী তোমার কথা ভাবাও (২১)
আমার কাছে সুখকর; এবং তুমি না থাকলে জগতের সমস্ত প্রিয় বস্তুই (২২)
আমার কাছে বিষের মতন লাগে এবং আমার হৃদয় কষ্টে পুড়তে থাকে। (২৩)

(এই লেখাটির লাইনগুলো পর পর পড়ে গেলে মনে হবে, কথাগুলো পছন্দের কার‌‌ও প্রতি নিবেদিত; আর বিজোড় ক্রমের লাইনগুলো পড়লে মনে হবে, কথাগুলো অপছন্দের কার‌‌ও প্রতি নিবেদিত।)