নির্জন গহনে: ৪৬




২২৬.

‘আমি’-ই একমাত্র পুঁজি—তাতেই স্থিত হও, আর কিছু প্রয়োজন নেই। গুরু তাঁর শিক্ষাকে সবসময় সহজ, স্বচ্ছ ও মৌলিক করে উপস্থাপন করেন। তাঁর বাণী খুব সরল: “তোমার কাছে একমাত্র যা আছে, তা হলো—'আমি'।” “এই 'আমি'-ই তোমার মূলধন, এইটুকুই যথেষ্ট।” এই ‘আমি’-বোধ তোমার কাছে এসেছে চেষ্টা ছাড়াই, স্বতঃস্ফূর্তভাবে, একটি দেহ-চেতনার ভিতরে জেগে উঠেছে: “আমি আছি।”

গুরু বলেন—এই একটিমাত্র বোধই তোমার সহজাত উত্তরাধিকার, এবং এটিকেই ধরে রাখো, বুঝে নাও, এতে স্থিত হও।

কেন? কারণ যদি তুমি সত্যিই ‘আমি’-তে স্থির হয়ে থাকতে পারো, তাহলে বাকি সব কিছু আপনিই এসে যাবে। একসময় এই ‘আমি’ নিজেই তোমার প্রতি প্রসন্ন হয়ে যায়, আর তখন সে নিজেই নিজের বন্ধন শিথিল করে দেয়। জীবনের অধিকাংশ সময় আমরা বহির্জগতের প্রতি নির্ভর করি—অভিজ্ঞতা, জ্ঞান, সম্পদ, সম্পর্ক, স্মৃতি—কিন্তু গুরু বলেন: “এসব কিছু নেই তোমার আসল পুঁজি। আসল পুঁজি হলো—'আমি আছি' এই অনুভব।”

এই ‘আমি’-র জ্ঞান কোনো অর্জিত বস্তু নয়, এটি তোমার সঙ্গে স্বভাবগতভাবে এসেছে, তাই এটিই সবচেয়ে মৌলিক এবং সত্য উপাদান। ‘আমি’-তে স্থিত থাকার অর্থ হলো—অন্য সব কিছু থেকে অসঙ্গযোগ ঘটানো, এবং এই উপস্থিত বোধে সচেতন ও নীরবভাবে থাকা।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, এই ‘আমি’ নিজের পরিচয় ও সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে যায়, এবং তুমিও পৌঁছে যাও পরমে, যেখানে নেই কোনো অভিজ্ঞতা, নেই কোনো প্রশ্ন—কেবল নামহীন, রূপহীন আত্মা।

‘আমি’-বোধই একমাত্র মূলধন, যা তোমার নিজের এবং স্বতঃসিদ্ধ। এই ‘আমি’-তেই ধ্যান করো, স্থিত হও—আর অন্য কিছু প্রয়োজন নেই। এই বোধই একসময় নিজের বন্ধন নিজেই ভাঙে, আর তুমি পৌঁছে যাও তোমার প্রকৃত মুক্ত অবস্থায়। গুরু বলছেন: “কিছু বোঝার দরকার নেই, কিছু করাও দরকার নেই—শুধু ‘আমি’-তে থেকো, যথেষ্ট।”

২২৭.

‘আমি’ বাস্তবের কাছাকাছি হলেও—বাস্তব নয়। ‘আমি আছি’—এই অনুভব, যদিও বাস্তবের খুব কাছাকাছি, তবুও এটি পরম সত্য নয়। এই ‘আমি’-কে তুমি ভাবতে পারো যেন পর্বতশৃঙ্গের ঠিক নিচের শেষ ক্যাম্প—যেখানে পৌঁছানো মানে প্রায় চূড়ায় উঠেই গেছ, কিন্তু শেষ ধাপটা এখনও বাকি।

তুমি যদি এই ‘আমি’-তে স্থিত থাকতে পারো, যেটিকে বলা হয় ‘তুরীয়’ অবস্থা—তবে তুমি একেবারে বাস্তবের সন্নিকটে পৌঁছেছ। কিন্তু তবুও, গুরু বলেন—"যা-কিছু পরম থেকে সামান্য দূরেও অবস্থান করে, সেটি বাস্তব নয়—সেটি অবাস্তব, মিথ্যা, পরিবর্তনশীল।"

এই ‘আমি’-কেও তাই অসত্য বা অব্যবস্থিত বাস্তব হিসেবে চিহ্নিত করতে হয়, কারণ এটি এখনো দ্বৈততার ছায়া বহন করে—"আমি আছি", "আমি উপলব্ধি করছি" ইত্যাদি। এই 'আমি'-র প্রকৃত উদ্দেশ্য—নিজেই লুপ্ত হওয়া, নিজেকে পরমে বিলীন করা, যেমন কণা সাগরে মিশে যায়।

তখন আর ‘আমি’ নেই, নেই কোনো উপলব্ধি—থাকে কেবল ‘পরব্রহ্ম’—নিঃশব্দ, নিসংজ্ঞা, অদ্বিতীয় সত্য। ‘আমি’ হলো চেতনার শেষ পরিচয়—যা আত্মস্মরণের শেষ ধাপ, কিন্তু এটিও এক উপলব্ধিযোগ্য বিষয়, যার ফলে এটিও ‘অপর’, অর্থাৎ পরমের বাইরে। তাই এটি বাস্তবের কাছাকাছি হলেও বাস্তব নয়, কারণ বাস্তবতা মানেই—যা অন্য কিছুর উপর নির্ভরশীল নয়।

‘আমি’ উদিত হয়, অনুভূত হয়, আবার মিলিয়ে যায়—এই আসা-যাওয়াই প্রমাণ করে—এটি পরিবর্তনশীল, সুতরাং অসত্য। চূড়ান্ত মুক্তি তখনই—যখন ‘আমি’-ও বিলীন হয়, আর তুমি স্থিত হও সেই চৈতন্যে, যা নিজে নিজেই আছে, অনন্ত, অপরিবর্তনীয় ও চিরন্তন।

‘আমি’-বোধ হচ্ছে সত্যের শেষ সীমান্ত—কিন্তু এখনও পরম নয়। কারণ পরম হলো—যেখানে কিছুই উদিত হয় না, কিছুই বিলীন হয় না। ‘আমি’ আসা-যাওয়া করে, তাই সেটি অসত্য বা অপ্রচলিত সত্য। মুক্তি তখনই, যখন ‘আমি’-ও নেই, শুধু পরম আত্মা।

২২৮.

‘আমি’ থেকেই সমস্ত সাধনা শুরু—আর তাই সবই সময়সাপেক্ষ মায়া। তুমি যা-কিছু করো—দিনের কাজ হোক বা ধ্যান, প্রার্থনা, যোগ বা যেকোনো সাধনা—সব কিছুই ঘটে এই ‘আমি’-বোধের মধ্য দিয়ে। এই ‘আমি’-ই হচ্ছে সমস্ত কার্যকলাপের সূচনাবিন্দু, কারণ এই 'আমি'-র চেতনা না থাকলে তুমি কিচ্ছুই জানতে বা করতে পারতে না।

কিন্তু গুরু বলছেন—এই ‘আমি’ নিজেই এক বিভ্রম, যা সময়ের সূচনা, এবং একদিন তা শেষও হয়ে যাবে। যেহেতু সব কর্ম ও যোগ এই ‘আমি’-র ভিতর দিয়ে ঘটে, তাই সবই দ্বৈততায় গঠিত, এবং সময় ও স্থায়িত্বের সঙ্গে জড়িত—অতএব, তারা চিরন্তন সত্য নয়, বরং আপেক্ষিক মায়া।

তারপরও—‘আমি’-ই হচ্ছে পরম সত্যের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থান। সেজন্য গুরু বলেন—“এই 'আমি'–কেই বুঝো, এতে স্থিত হও, কেননা তাতেই আছে পরমে পৌঁছার একমাত্র পথ।” সমস্ত সাধনা, যোগ, উপাসনা, কর্ম—সব ‘আমি’-বোধ জেগে ওঠার পরেই শুরু হয়। অর্থাৎ, চেতনার সঙ্গে জড়িত প্রতিটি অভিজ্ঞতা ‘আমি’ ছাড়া সম্ভব নয়।

কিন্তু এই ‘আমি’ পরিবর্তনশীল, উদিত ও লুপ্ত হয়—সুতরাং এটিও মিথ্যা, সময়বদ্ধ ও আপেক্ষিক। তাই যে সাধনা বা যোগ এই বিভ্রমের ভিতর দিয়ে চলে—তা আত্মার বাস্তবতাকে ছুঁতে পারে না, যতক্ষণ না তুমি এই ‘আমি’-কেও অতিক্রম করো।

যদিও ‘আমি’ বিভ্রম, তবুও এটি পরম সত্যের সর্বনিকট প্রাঙ্গণ। ঠিক যেমন কল্পনার সীমানা ছুঁয়ে থাকে নীরবতা—তেমনই এই ‘আমি’ শেষ সীমান্ত, যেখান থেকে তুমি লাফ দিয়ে পড়ে যেতে পারো পরমে। সমস্ত যোগ ও সাধনা ‘আমি’-র ভিতর দিয়ে ঘটে। কিন্তু এই ‘আমি’-ই বিভ্রম, যা সময়ের সাথে শুরু হয় এবং একদিন শেষও হয়।

সুতরাং সাধনা ও কর্ম—দ্বৈত, সময়সীমাবদ্ধ, আপেক্ষিক। এরা বাস্তব নয়, কারণ তারা পরম চৈতন্যকে স্পর্শ করে না। তবুও ‘আমি’-কে সবচেয়ে কাছের সেতু বলা যায়—সঠিকভাবে বুঝে, তাতে স্থিত হয়ে, তুমি পৌঁছাতে পারো অদ্বিতীয়, সময়াতীত পরমে।

২২৯.

প্রথম ধাপ ‘আমি’—শেষ ধাপ পরমচৈতন্য ও অচৈতন্য পেরিয়ে নিঃশব্দে মিশে যাওয়া। মুক্তির পথের প্রথম ধাপ হলো—‘আমি’-তে স্থিত হওয়া। কিন্তু এই ‘আমি’-তে অবস্থান মানে কেবল চিন্তা করা নয়, বরং—দেহবোধকে সম্পূর্ণ ছুঁড়ে ফেলে, এই 'আমি'–কে দেখতে শেখা তার শব্দহীন, বিশুদ্ধ রূপে।

তুমি যখন যথেষ্ট গভীরভাবে ও স্থিরভাবে এই ‘আমি’-তে স্থিত হতে শিখবে, তখন ধীরে ধীরে ‘আমি’-ও লুপ্ত হতে থাকবে। আর সেই মুহূর্তেই তুমি পেরিয়ে যাবে—চৈতন্য (‘আমি’ বা ‘আমি আছি’), এবং অচৈতন্য (‘আমি নই’ বা নিদ্রার মত অবস্থা)—দুটিকেই অতিক্রম করে তুমি মিশে যাবে তোমার প্রকৃত স্বরূপে—পরম, পরব্রহ্ম, যা স্থায়ী, অনিত্য নয়, অদ্বিতীয়, অচিন্তনীয়।

বেদান্তীয় উপলব্ধিতে মুক্তির পথ ধাপে ধাপে অন্বেষণের ধারা। এই ধারার প্রথম ও মৌলিক স্তর—‘আমি’-র অনুভবকে উপলব্ধি করা ও তাতে স্থিত হওয়া। এই ‘আমি’-কে শব্দহীন, পরিচয়হীন অবস্থায় অনুভব করাই হচ্ছে ‘তুরীয়’ চেতনাস্থিতি—যা জাগরণ, স্বপ্ন, নিদ্রার পেছনে থাকে।

এই স্তরে দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান একসময় ‘আমি’-র সম্পূর্ণ বিলয় ঘটায়। এরপর তুমি প্রবেশ করো এমন এক অচেনা অবস্থা, যেখানে নেই ‘আমি’ বা ‘আমি নই’, নেই সচেতনতা বা অচেতনতা—আছে শুধু পরম স্বরূপের নিঃস্বর, স্থায়ী উপস্থিতি।

প্রথম ধাপ: ‘আমি’-র জ্ঞানকে বোঝা। দ্বিতীয় ধাপ: দেহবোধ ছাড়িয়ে ‘আমি’-তে স্থিত হওয়া। তৃতীয় ধাপ: ‘আমি’-র গভীরে প্রবেশ করে, চৈতন্য ও অচৈতন্য—দু'টিকেই অতিক্রম করা। চূড়ান্ত অবস্থা: পরমে স্থিত হওয়া—যেখানে নেই ‘আমি’, নেই চেতনা, নেই অভিজ্ঞতা—কেবল স্থায়ী, স্ব-স্থিত পরব্রহ্ম।

২৩০.

“তুমিই পরব্রহ্ম”—শেষ ডাক, চিনে নাও নিজেকে। এতদিন ধরে গুরু তোমাকে শেখাচ্ছিলেন—‘আমি’ বোধকে চিনো, তা বোঝো, তাতে স্থিত হও, তারপর সেটাকেও ছাড়িয়ে যাও। এখন, তিনি আর কোনো রূপক বা পদ্ধতির আশ্রয় নিচ্ছেন না। তিনি একেবারে তোমার দিকেই আঙুল তুলে বলছেন—“এই যে তুমিই—তুমিই পরব্রহ্ম! তুমিই সেই চূড়ান্ত বাস্তবতা, যা ‘আমি’ বোধেরও পেছনে আছে।”

যেন এক চূড়ান্ত জাগরণের ডাক: “আর কত বলব? এবার নিজেকে চিনে নাও! আমি যেটা চাই—তুমি সেটাই, আর তুমিই সেটা হয়ে ওঠো!”

গুরু বলছেন—“এই কথাটিকে ধ্যান করো, স্মরণে রাখো—তুমিই পরব্রহ্ম। কিন্তু মনে রেখো, একসময় এই ভাবনাটিও ঝরে যাবে। তখন থাকবে না কোনো ‘তুমি’, না ‘আমি’— শুধু থাকবে ‘তুমি যা’।”

সাধনার প্রাথমিক স্তরে গুরু বলেন—‘আমি’-কে চিনো, বোঝো, ধ্যান করো। এরপর বলেন—‘আমি’-কেও ছাড়িয়ে যাও, কারণ সেটাও সময়সাপেক্ষ, অভিজ্ঞতামূলক, মায়াস্বরূপ। আর এখন তিনি বলছেন—“তুমি যা খুঁজছ, তুমি নিজেই তাই। তুমিই পরব্রহ্ম, তুমি কখনোই ছিলে না ‘আমি’, তুমি কখনোই ছিলে না সাধক বা খোঁজার মানুষ।”

এখন সাধনা নয়, ভক্তি নয়, অভিজ্ঞতা নয়—স্মরণ ও জাগরণই যথেষ্ট। ধ্যান করো: “আমি পরব্রহ্ম”, যতক্ষণ না এই চিন্তাটিও নিজে থেকেই মিলিয়ে যায়—তখন তুমি হয়ে ওঠো নিজেই তোমার আসল রূপ। তুমি ‘আমি’-রও আগে, তুমি চেতনারও পেছনে, তুমি অভিজ্ঞতারও অতীত।

তুমিই পরব্রহ্ম—এই বোধেই শেষ শিক্ষা। এ যেন এক সর্বশেষ ডাক—যেখানে গুরু আর কিছু শেখাচ্ছেন না, বরং বলছেন: “তুমি যা, তাই হয়ে ওঠো। আর এই ‘হওয়া’র চিন্তাও ঝরে যাক।”

২৩১.

‘আমি’ কেবল এক দিগন্ত—বোঝো, পেরিয়ে যাও, ও হয়ে ওঠো সেই সূর্য। গুরু একটি অসাধারণ সহজ উপমা দিয়ে বোঝান—তুমি প্রতিদিন সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখো দিগন্তরেখায়। কিন্তু সত্যিই কি কোনো দিগন্ত আছে? তুমি কি কোনোদিন সেখানে পৌঁছাতে পেরেছ?

‘দিগন্ত’ কেবল এক দৃষ্টিভ্রম। সূর্য তো কখনও বলে না—“আমি উঠলাম” বা “আমি অস্ত গেলাম”—তুমি, যিনি দর্শক, তোমার অবস্থান ও সীমাবদ্ধতা থেকেই এই ওঠা-নামার ভ্রান্তি। ঠিক তেমনই, ‘আমি’-র উদয় (জন্ম) ও লয় (মৃত্যু) কেবল প্রতিভাস—দিগন্তরেখায় দেখা সূর্যের মতো।

প্রকৃত তুমি, যে এই 'আমি'–র আগমন ও প্রস্থান প্রত্যক্ষ করছ, সে হলো সূর্যস্বরূপ পরমসত্তা—যে চিরকাল আলো দিচ্ছে, জাগ্রত আছে, ধ্রুব। এই উপমা দিয়ে গুরু বোঝাতে চাইলেন—প্রথমে ‘আমি’-কে বোঝো, তারপর তাতে স্থিত হও—এ-ই হলো সাধনা, তারপর তাকেও ছাড়িয়ে যাও, এবং বুঝে ফেলো—তুমি কখনও ‘আমি’ ছিলে না, তুমি সেই সূর্য, যে কেবল নিজ আলোয় থাকো, অপ্রতিরোধ্য ও অপরিবর্তনীয়।

‘আমি’-র উদয় ও লয় মানেই জন্ম-মৃত্যুর অনুভব। কিন্তু এই দুই ঘটনাই চেতনার দিগন্তে ঘটে যাওয়া ভ্রান্ত দৃশ্য। সূর্যের মতো, আত্মা কখনও ওঠে বা নামে না, চেতনার উপরে উদিত হওয়া ‘আমি’-র অনুভব শুধু পরিস্থিতি ও অবস্থানের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। গুরু এখানে বলেন: “এই উপমা দিয়ে আমি যতটা সহজ করে পারি—ততটাই সহজ করে বলছি—'আমি'-কে বোঝো, তাতে স্থির হও, তারপর তাকে ছাড়াও—তুমি যা, সেই 'পরব্রহ্ম' হয়ে ওঠো।”

এই একটিই যথেষ্ট। আর কিছু করার নেই, বলার নেই, ভাবার নেই।

‘আমি’-র উদয় ও লয় আসলে সত্য নয়—শুধু দৃষ্টিভঙ্গির বিভ্রম। তুমি যদি নিজেকে ‘আমি’ বলেই চিহ্নিত করো, তাহলে তুমি নিজেকে এক ক্ষণস্থায়ী দিগন্তে সীমাবদ্ধ করে ফেলো। কিন্তু যদি তুমি বোঝো—‘আমি’-ও কেবল একটি ধ্যানযোগ্য অনুভব—যা নিজের মধ্যেই ধ্যান করতে করতে একদিন নিজেই বিলীন হয়ে যায়—তখন তুমি পৌঁছাও সেই সূর্যস্বরূপ পরমে, যেটা কখনও ওঠে না, নামে না, শুধু থাকে।