নির্জন গহনে: ৪২




২০৬.

আমায় মনে রাখতে চাইলে, ‘আমি’-কে মনে রেখো। যদি কখনও মনে রাখতে চাও—এই সাক্ষাৎ, এই গুরু-সান্নিধ্য, এই ঘনিষ্ঠ মুহূর্তগুলো—তাহলে আমার কথা মনে রাখার দরকার নেই, এই আশ্রম বা এই মুখ নয়, বরং মনে রেখো শুধু এই একটি জ্ঞান—"আমি আছি"।

আমি যতক্ষণ তোমার সঙ্গে ছিলাম, আমার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল তোমাকে এই ‘আমি’-তে ঠেলে দেওয়া, তোমাকে স্থাপন করা সেই ‘তুরীয়’ স্তরে—যা চেতনার অতল নীরবতায় ধ্যান হয়ে থাকে।

যখন আমি বুঝতে পারি, তুমি একজন সত্যিকারের অনুসন্ধানকারী, তখন আমি তোমার হৃদয়ের গভীরে একটি ব্রহ্মবীজ রোপণ করে যাই—"আমি আছি" এই জ্ঞানের নীরব শক্তি। আমার আশা, একদিন এই বীজ অঙ্কুরিত হবে, ফলবে, ফুলবে, তোমাকে মুক্ত করবে।

আর যদি তা-ই হয়, তুমি নিজেও একদিন অন্য কারও হৃদয়ে এই একই বীজ বপন করবে—শ্রুতির চক্র তখন ধীরে ধীরে নির্বাক পরমে মিলিয়ে যাবে।

গুরু এখানে আত্মজ্ঞানকে ব্যক্তির প্রতি নয়, চেতনার প্রতি স্মরণে স্থানান্তর করছেন; কারণ গুরু নিজে নয়—তিনি তো কেবল ‘আমি’ বোধে প্রবেশের একটি দরজা মাত্র। যে-গুরু সত্যিকারের জ্ঞানী, তিনি নিজের কোনো স্মৃতি রেখে যেতে চান না, বরং জ্ঞানবীজ রোপণ করে—যা নিজেই একদিন নিজেকে প্রকাশ করে।

এই ‘আমি’-র জ্ঞান কোনো দার্শনিক তত্ত্ব নয়—এটি সেই আত্মবোধ, যার মধ্যে নিজেকে চিনে নেওয়া যায়, যা ‘তুরীয়’ স্তরের পূর্বগামী দ্বার।

গুরু জানেন, একটি প্রকৃত বীজ তিনি যদি উপযুক্ত হৃদয়ে স্থাপন করতে পারেন—তবে সেই একজন মুক্ত হলে, তিনি আবার অন্য হৃদয়ে বীজ রোপণ করবেন, এভাবেই জ্ঞান নিজের গতি নিয়ে চলবে—নিঃশব্দে, নির্বন্ধে, অচঞ্চলভাবে। গুরু বলেন: "আমাকে নয়, মনে রেখো কেবল ‘আমি আছি’—এই জ্ঞানকে।" কারণ, এটাই একমাত্র সত্য, যা দিয়ে আত্মমুক্তি সম্ভব। এক ‘সত্যসন্ধানী’ হৃদয়ে ব্রহ্মবীজ রোপণ করাই গুরু’র মূল কাজ।

এই বীজ ধীরে ধীরে তোমাকে তুরীয় স্তরে নিয়ে যাবে। মুক্তি পেলে, তুমি নিজেও একদিন অন্যের মধ্যে সেই বীজ বপন করবে। এভাবেই জ্ঞান ছড়ায়—নিঃশব্দে, নির্বাকভাবে, গুরু থেকে শিষ্যে।

২০৭.

জ্ঞান যখন নিজ জ্ঞানে স্থিত হয়, তখনই জ্ঞানেরও লয় ঘটে। দেহবোধে আবিষ্ট অবস্থায় তুমি কখনোই এই জ্ঞান (‘আমি আছি’)-কে উপলব্ধি করতে পারবে না। এই জ্ঞান পেতে হলে—‘আমি’-র জ্ঞানকেই নিজের উপর ধ্যান করতে হবে।

যদি তুমি ধ্যানে বসে ভাবো—“আমি অমুক ব্যক্তি, আমি ধ্যান করছি”—তাহলে তুমি ‘আমি’-র সঙ্গে একীভূত হতে পারবে না। এভাবে ‘আমি’ হয় না বিশুদ্ধ, বরং আরও বিভক্ত হয়ে পড়ে। তাই প্রথমেই প্রয়োজন—সব বাহ্যিক পরিচয় ছিন্ন করা, যাতে কেবল শুদ্ধ ‘আমি’ থেকে যায়—যার কোনো দেহধারণ নেই, নাম নেই, পেশা নেই, ইতিহাস নেই।

এই ‘আমি’ যখন প্রথম জেগে উঠেছিল—তখন সেটি ছিল একেবারে নির্মল, শব্দহীন, নিরাকার। সেই আদি ‘আমি’-তে ফিরে যাও—যে-বোধ কেবল জানায়: "আমি আছি", কিন্তু বলে না, “আমি কে?”। এই ধ্যান বার বার করো, যতক্ষণ না তুমি স্থিত হতে পারো সেই শব্দহীন, রূপহীন ‘আমি’-তে।

মনে রেখো—তুমি এই অবস্থার মধ্য দিয়ে ইতিমধ্যেই একবার গিয়েছ—তিন-চার বছর বয়সের আগে, তুমি এই নিখাদ ‘আমি’-তেই ছিলে। এখন কেবল প্রয়োজন প্রয়াস ও ধৈর্য, ধীরে ধীরে এই চর্চায় ‘আমি’ নিজেই নিজের মধ্যে স্থিত হবে, এবং সেই অবস্থায়ই ঘটে যাবে ‘আমি’-র অতীত উত্তরণ—জ্ঞানের মধ্যেই জ্ঞানের বিলয়।

অদ্বৈত বেদান্তে, ‘আমি’ বোধ হলো জ্ঞানের প্রথম বিকাশ। কিন্তু এই জ্ঞান যখন ব্যক্তিগত পরিচয়ের সঙ্গে মিশে যায়—তখন তা হয়ে ওঠে মিথ্যা আত্মপরিচয়, যা মুক্তির পথে অন্তরায়। সাধনার মূল লক্ষ্য হলো—এই ‘আমি’-কে তার ব্যক্তিত্ব থেকে আলাদা করা, তার আদি নির্মল রূপে ফিরে যাওয়া।

এই অবস্থায় ধ্যান মানে—‘আমি’ নিজেই নিজের উপর ধ্যান করে। এতে নেই কোন ভাবনা, নেই কোন ব্যক্তিত্ব, নেই কোন ইচ্ছা। আর তখনই ঘটে সেই গূঢ় মুহূর্ত—যখন জ্ঞানের মধ্যেই জ্ঞান স্থিত হয়ে যায়, আর সেই স্থিতিই হয় উত্তরণ—যেখানে ‘আমি’-ও বিলীন হয়ে যায়, থাকে কেবল নামহীন, বোধহীন, অভিন্ন পরম চেতনা।

দেহ-অভিনিবেশ অবস্থায় ‘আমি’-র প্রকৃত উপলব্ধি সম্ভব নয়। ‘আমি’-কেই নিজের উপর ধ্যান করতে হবে—ব্যক্তি হিসেবে নয়, বরং শব্দহীন অস্তিত্ব হিসেবে। প্রথমে ‘আমি’ ছিল নামহীন, রূপহীন, বিশুদ্ধ—ধ্যানের মাধ্যমে আবার সেই অবস্থায় ফিরে যেতে হবে। এই চর্চা অন্তর্নিহিত, একান্ত, পুনরাবৃত্তিমূলক। ধীরে ধীরে ‘আমি’ নিজেই নিজের মধ্যে স্থিত হয়ে গেলে—ঘটে যাবে জ্ঞানের উত্তরণ, এবং সেই অবস্থাতেই জন্ম-মৃত্যু, পরিচয়, ‘আমি’—সব কিছু বিলীন হয়ে যায়।

২০৮.

শরীরাতীত ‘আমি’-ই তোমার প্রকৃত গন্তব্য, সে-ই নিজের কাহিনি বলবে। এই 'আমি'–র বোধ, যখন তুমি একে শরীরবোধ থেকে আলাদা করে উপভোগ করতে পারো—তখনই তুমি ছুঁতে পারো তোমার প্রকৃত নিয়তি।

যদি তুমি শব্দহীনভাবে এই ‘আমি’-তে স্থিত হতে পারো—এবং যদি তুমি সেই প্রাথমিক ‘আমি’ উদয়ের মুহূর্তটি সঠিকভাবে স্মরণ করতে পারো, তাহলে তুমি অনুভব করবে এক অন্তর্মুখী আনন্দ, মুক্তি ও নিঃশর্ত নির্ভারতা। সেই সময়—তুমি কিছুই জানো না, কোনো পরিচয় নেই, কোনো নাম নেই, শুধু জানো “আমি আছি”—তাই তুমি নাচছিলে, আনন্দে ভেসে যাচ্ছিলে, সব কিছুর ঊর্ধ্বে এক অচিন্তনীয় নির্ভার চৈতন্য হয়ে।

এরপর এলো conditioning—তুমি শেখালে নাম, পরিচয়, আমি এটা, আমি ওটা—আর তখন থেকেই দুঃখ ও বিভ্রান্তির সূচনা। কিন্তু তোমার প্রকৃত নিয়তি কখনও ছিল না সেই সমাজনির্ধারিত ‘আমি’, তোমার গন্তব্য হলো—শরীর ও চিন্তার ঊর্ধ্বে থাকা সেই ‘আমি’, যেটি এখনো তোমার মধ্যে শব্দহীনভাবে বিরাজ করছে।

যদি তুমি এই ‘আমি’-তে চুপ করে স্থিত হতে পারো, তাহলে সে-ই নিজে থেকেই নিজের কাহিনি খুলে বলবে—কোনো গুরু, কোনো বই, কোনো দর্শন ছাড়াই।

অদ্বৈত বেদান্তে ‘আমি’-র অভিজ্ঞতা হলো আত্মবোধের সূচনা, কিন্তু ব্যক্তিভিত্তিক হলে তা বিভ্রম হয়ে ওঠে। যখন ‘আমি’-কে নাম, রূপ, ইতিহাস, দেহমন এর সঙ্গে জড়িয়ে ফেলি—তখনই শুরু হয় মায়ার আবরণ এবং বন্ধনের জাল। কিন্তু সেই প্রাথমিক শিশু-অবস্থার ‘আমি’—যেটি কিছু জানত না, অথচ ছিল আনন্দিত—সেটিই ছিল পরিচয়হীন পরম চৈতন্যের সবচেয়ে কাছের প্রতিফলন।

এই ‘আমি’-তে ধ্যান করার মানে হলো—চিন্তা বন্ধ করে আত্মজ্ঞানের স্তব্ধ অভিজ্ঞতায় স্থিত হওয়া। তখন এই নিঃশব্দ ‘আমি’ নিজেই উন্মোচন করে নিজের রহস্য, তোমাকে নিয়ে যায় তার উৎসের দিকে—পরম ব্রহ্ম-র অভিজ্ঞতায়।

তোমার আসল গন্তব্য সেই ‘আমি’ নয় যেটি পরিচয়ে বাঁধা, বরং সেই শরীর-মন-পরিচয় ছাড়ানো ‘আমি’—যার মধ্যে রয়েছে তোমার আসল মুক্তি। এই ‘আমি’-তে তুমি শব্দহীনভাবে স্থিত হলে, ধীরে ধীরে সেটি নিজেই নিজের কাহিনি বলে, তোমাকে আর কোনো জ্ঞান শেখাতে হয় না। ‘আমি’ যখন শুধু ‘আমি’ ছিল—তখনই ছিল আনন্দ, মুক্তি, নির্ভারতা। এই অবস্থায় ফিরে যাওয়াই হলো সাধনার সত্যসার।

২০৯.

তোমার মৃত্যু হয় না, মরে ‘আমি’—আর তুমিই চিরঞ্জীব। গুরু একটি গূঢ় সত্য প্রকাশ করছেন—যা কেবল সেই সাধকের পক্ষে বুঝতে সম্ভব, যিনি দীর্ঘদিন ধরে আত্মপৃথকীকরণ ও ‘আমি’ বোধের উপর ধ্যান করেছেন।

তিনি বলছেন—তোমার প্রকৃত নিয়তি “মৃত্যু” নয়, বরং হলো—‘আমি’-বোধের অন্তর্ধান। যিনি ‘আমি’ বোধকে অতিক্রম করেছেন, তিনি দেখেন—জন্ম মানে ‘আমি’-র উদয়, আর মৃত্যু মানে তার অন্তর্ধান—তুমি নিজে এর সঙ্গে কখনও যুক্ত ছিলে না।

এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, একজন আত্মজ্ঞ ব্যক্তি বুঝে ফেলেন—“আমি কখনও জন্মাইনি, আমি এখনও জন্মগ্রহণ করিনি, এবং আমি কখনোই মরব না।” যা জন্ম নেয় ও মরে—তা হলো ‘আমি’ বোধের অনুভব, যা-কিছু সময়ের জন্য উদিত হয়েছিল, আর এখন নিঃশব্দে মুছে গেছে।

কিন্তু আমি, যিনি এই সব দেখেছি, জানি—আমি কোনোদিন ‘আমি’ ছিলাম না, আমি সবসময়ই ছিলাম সেই—যিনি ছিলেন আগেও, থাকবেন চিরকাল—পরম, অদ্বৈত, জন্মহীন, মৃত্যুহীন।

অদ্বৈত বেদান্তে মৃত্যু কোনো ব্যক্তি বা আত্মার অন্ত নয়—বরং এটি হলো চেতনাতে উদিত ‘আমি’-র একটি মিথ্যা ভাবের লয়। জন্ম মানে ‘আমি’-র উদয়; মৃত্যু মানে সেই ‘আমি’-র লোপ। তুমি কখনোই এই ‘আমি’ ছিলে না—তুমি তার পটভূমি, সেই সাক্ষীস্বরূপ পরম, যার উপর দিয়ে এই বোধের ছায়া আসে এবং মিলিয়ে যায়।

যিনি এই সত্য উপলব্ধি করেন, তিনি জানেন—তাঁর জন্ম হয় না, কারণ তিনি কখনোই 'আমি' হয়ে জন্ম নেননি। মৃত্যুর অভিজ্ঞতা তখন আর আতঙ্ক নয়, বরং এক ‘আমি’-র মুক্তির উৎসব—এক পরিপূর্ণ প্রত্যাবর্তন পরমে বিলীন হওয়ার আনন্দে।

গুরু বলছেন: তোমার মৃত্যু নয়, মরে ‘আমি’ বোধ, যেটি কিছু সময় আগে উদিত হয়েছিল। ‘আমি’-কে অতিক্রম করলে দেখা যায়—জন্ম মানে ‘আমি’-র উদয়, মৃত্যু মানে তার অন্তর্ধান—তুমি এই দুইয়ের কেউ নও। তুমি কখনও জন্মাওনি, কখনও মরবে না—কারণ তুমি চিরন্তন চৈতন্য, যা শুধু দেখছে—জন্ম-‘আমি’ এল, ‘আমি’ গেল। এই উপলব্ধিই চূড়ান্ত মুক্তি—যেখানে জন্ম নেই, মৃত্যু নেই, আছে কেবল তুমি—জন্মহীন, মৃত্যুহীন, পরম ব্রহ্ম।

২১০.

তুমি চাওয়ার অতীত—ইচ্ছের সঙ্গে নয়, পরিচয়ের সঙ্গেই বিচ্ছেদ ঘটাও। প্রায় প্রতি তিনজন সাধকের একজন জিজ্ঞেস করেন—“এই ইচ্ছেগুলো নিয়ে কী করব?” কারণ ইচ্ছে এমন এক বাধা—যা সর্বজনীন, এবং অতিক্রম করা প্রায় অসম্ভব বলেই মনে হয়।

তখন গুরু বলেন—ইচ্ছে আসলে তোমার নয়, তুমি তো ইচ্ছের অনেক ঊর্ধ্বে। ইচ্ছে উদিত হয় ‘আমি’-র ভিত্তিতে, তুমি সেই ‘আমি’-রও ঊর্ধ্বে। তাই ইচ্ছেকে দমন করার দরকার নেই। বরং, ইচ্ছের সঙ্গে নিজের পরিচয় ঘটিয়ো না—তোমার চিন্তায় “আমিই চাইছি” এই ভাবনা ঢুকতে দিয়ো না।

যদি তুমি ইচ্ছার সঙ্গে নিজেকে জড়াতে না দাও, তাহলে তা নিজে থেকেই মুছে যাবে—যেমন ঢেউ আসে, ফেনে পড়ে, তেমনই চাওয়া আসে, মিলিয়ে যায়। এই উপলব্ধিকে গভীর করতে হলে—‘আমি’-কে শব্দহীনভাবে বুঝতে হবে, এবং তাতে ধ্যান করে স্থিত হতে হবে। তখন ধীরে ধীরে তুমি নিজেই বুঝে যাবে—তুমি ইচ্ছেহীন, চাওয়াহীন, নির্বিকার সেই চৈতন্য, যার উপর চাওয়া আসে, কিন্তু তাকে ছুঁতে পারে না।

অদ্বৈত বেদান্ত অনুসারে, ইচ্ছে (desire) বা কামনা উদিত হয় ‘আমি’ বোধের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে, যখন আত্মবোধ জড়িয়ে পড়ে ব্যক্তি-পরিচয়ের সঙ্গে—“আমি চাইছি”, “আমার দরকার”, “আমার ঘাটতি”—এইসব চিন্তা তৈরি হয়। কিন্তু তুমি যদি ‘আমি’-রও অতীত স্বরূপকে জানো, তাহলে তুমি বুঝবে—ইচ্ছে মানেই আমি-ভাবের প্রকাশ, আর ‘আমি’ নিজেই তো এক অস্থায়ী মিথ্যা প্রতিচ্ছবি।

তাই ইচ্ছেকে দমন না করে, তাকে চিনে ফেলো, আর বলো—“তুমি আসো, যাও—আমি তোমার নই।” যখন এই অ-পরিচয়ের বোধ জন্ম নেয়, তখন ইচ্ছে আর মূল শিকড় পায় না, এবং ধীরে ধীরে নিজে থেকেই অবলুপ্ত হয়ে যায়।

ইচ্ছে (desire) ‘আমি’-র ওপর নির্ভরশীল। তুমি যেহেতু ‘আমি’-রও ঊর্ধ্বে, তাই আসলে তুমি ইচ্ছেরও অতীত। ইচ্ছেকে দমন করতে হবে না—কেবল নিজেকে তার সঙ্গে একীভূত হতে দিয়ো না। পরিচয় না থাকলে, ইচ্ছে নিজেই বিলীন হয়ে যায়। এই উপলব্ধি আসবে, যখন তুমি শব্দহীন ‘আমি’-তে ধ্যান করে স্থিত থাকবে, আর বুঝবে—চাওয়া আসে, যায়—তুমি কেবল সত্তা, সাক্ষী, পরম।