১৪১.
‘তুরীয়’—সাক্ষীসত্তা, ‘তুরীয়াতীত’—পরম সত্তা। ‘তুরীয়’ বা ‘আমি আছি’ বোধকে সর্বদা বর্ণনা করা হয়—সাক্ষীরূপে—সেই নীরব সত্তা, যে জাগ্রত, স্বপ্ন এবং সুপ্ত—এই তিন অবস্থার মধ্য দিয়ে সব কিছুকে দেখে। এই তিন অবস্থায় তুমি যাকে অনুভব করো, দেখো, জানো—তার পেছনে একটিই চেতন উপস্থিতি সদা জাগ্রত থাকে—এটাই ‘তুরীয়’—নিঃশব্দ সাক্ষীস্বরূপ।
গুরু বলেন, এই ‘তুরীয়’ অবস্থায় স্থিত হতে হলে চাই গভীর, আন্তরিক ধ্যান—যেমনটি গুরু নিজে শিক্ষা দেন। যখন এই ধ্যানে তুমি তুরীয়–তে স্থিত হতে শিখবে, তখনই সম্ভাবনা তৈরি হবে—এই ‘আমি’–কেও অতিক্রম করে যাবার। তখনই তুমি প্রবেশ করতে পারো ‘তুরীয়াতীত’–এ—যেখানে নেই কোনো অবস্থা, নেই ‘আমি’, নেই ‘সাক্ষী’—আছে কেবল নাম-রূপ-গুণাতীত পরম সত্তা।
অদ্বৈত বেদান্তে চেতনার তিনটি সাধারণ স্তর—জাগ্রত (waking), স্বপ্ন (dream) ও সুপ্ত (deep sleep)—এই তিনটি অবস্থা পরিবর্তনশীল, ক্ষণস্থায়ী। কিন্তু এই তিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যে-সচেতনতা সব কিছুকে দেখে, যে নিজের ভেতর থেকে সব কিছুর সাক্ষী হয়ে থাকে—সেই সত্তা হলো তুরীয়।
তুরীয় নিজে কোনো কর্ম করে না, কিন্তু তা সব অভিজ্ঞতার নীরব পটভূমি—চেতনার নির্জন দর্পণ। এই তুরীয় অবস্থায় স্থিত হতে হয় ধ্যান–এর মাধ্যমে—এবং ধ্যান তখনই যথার্থ হয় যখন তা নিখাদ ‘আমি আছি’ বোধে স্থির হয়। এই ধ্যানেই জন্ম নেয় সাক্ষীসত্তার বিশুদ্ধ উপলব্ধি। কিন্তু অদ্বৈত গুরুর জন্য, এও যথেষ্ট নয়—কারণ তুরীয় নিজেই একটি অবস্থা, যদিও সূক্ষ্ম ও নিঃশব্দ। তাকে অতিক্রম করেই পাওয়া যায় তুরীয়াতীত—যা অবস্থাহীন, অভিজ্ঞতাহীন, এবং চূড়ান্ত নির্ভাব।
‘তুরীয়’ হলো সেই সাক্ষীসত্তা, যা জাগ্রত, স্বপ্ন ও নিদ্রার তিন অবস্থাকেই দেখে, কিন্তু নিজে অচল থাকে। এই তুরীয় বোধে স্থিত হতে হলে চাই গভীর, গুরুর উপদেশমাফিক ধ্যান। তুরীয় স্থিতি জন্ম দেয় আত্মস্মরণ—আর এই আত্মস্মরণ গভীর হলে, ‘আমি’-রও বিলয় ঘটে। তখনই সম্ভব হয় প্রবেশ তুরীয়াতীত–এ—যেখানে নেই অবস্থান, নেই অভিজ্ঞতা, নেই ‘আমি’—আছে কেবল পরম অস্তিত্ব—অবিনাশী, অদ্বৈত, ও অনন্ত।
১৪২.
‘আমি’–র অনুপস্থিতিতে নিঃশব্দ অস্তিত্ব আত্মজ্ঞান ও বিস্মৃতির সন্ধিক্ষণ। এই মৌলিক ধারণা—‘আমি আছি’—যদি না থাকে, তবে কোনো চিন্তা থাকে না, থাকে না কোনো সচেতনতা, থাকে না নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে কোনো অনুভব। এই ‘আমি’–র গুরুত্ব বোঝা যায়, যখন তুমি ক্রমাগত এর উপর ধ্যান করো, গভীরভাবে ভাবো। যতই তুমি এই ‘আমি’–তে নিমগ্ন হও, ততই একমুহূর্তে যেন স্পষ্ট হয়ে ওঠে—"হ্যাঁ, এটাই মূল, এটাই কেন্দ্র।"
এই ‘আমি’–র উপরেই সব দাঁড়িয়ে আছে—তোমার সকল চিন্তা, সব কর্ম, এমনকি নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কেও যেটুকু জানা—সবই এর উপর নির্ভরশীল। যখন এই ‘আমি’ হারিয়ে যায়—তখন এই সমস্তই হারিয়ে যায়, যেমনটা ঘটে গভীর নিদ্রায় বা সেই অবস্থায় যখন ‘আমি’ বোধ এখনও জাগেনি—সেই জন্মপূর্ব নিঃসীম নীরবতায়।
অদ্বৈত বেদান্ত মতে, ‘আমি আছি’ বোধই হলো সকল চেতন অভিজ্ঞতার মূল সূচনাবিন্দু। এই বোধ না থাকলে চিন্তাও থাকে না, অনুভবও না, অস্তিত্ব সম্পর্কেও কোনো সচেতন উপলব্ধি থাকে না। এই বোধই জ্ঞান, এই বোধের উপরেই গড়ে ওঠে নাম, রূপ, কর্ম ও পরিচয়ের জগৎ। কিন্তু এই বোধটিকেও যদি স্থিরভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়, তবে বোঝা যায়—এটি নিজেই একটি মৌলিক ধারণা, যা প্রকৃতপক্ষে পরম সত্য নয়—বরং তার অভ্যন্তরে এক অসঙ্গায়িত নীরব অস্তিত্ব রয়েছে, যা ‘আমি’ বোধেরও পূর্ববর্তী।
গভীর নিদ্রার মতো অবস্থায়, বা সেই অনন্ত মুহূর্তে যখন ‘আমি’–র বোধ এখনো জাগেনি—তখনই সেই অস্তিত্ব অব্যক্তভাবে টিকে থাকে, নীরবভাবে—কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়া, কিন্তু অনুপস্থিত নয়।
‘আমি’ বোধই হলো সমস্ত অভিজ্ঞতা, চিন্তা, ও আত্মসচেতনতার কেন্দ্র। এই ‘আমি’ না থাকলে—তোমার অস্তিত্ব সম্পর্কেও তুমি কিছু জানো না, ভাবো না, অনুভব করো না। এই মৌলিক ধারণাটির গুরুত্ব বুঝতে হলে বার বার এর উপর ধ্যান করতে হয়। ধ্যানের গভীরে গিয়ে বোঝা যায়—এই বোধটিই সব অভিজ্ঞতার ভিত্তি, তবে এটিও পরিবর্তনশীল, কারণ গভীর নিদ্রা বা জন্মপূর্ব অবস্থায় এটি অনুপস্থিত থাকে।
সেই অনুপস্থিত ‘আমি’–র মধ্যে লুকিয়ে আছে পরম চেতনা, যা সব অভিজ্ঞতার ঊর্ধ্বে, এবং যার উপলব্ধিই আত্মজ্ঞান।
১৪৩.
‘আমি’ কীভাবে এল?—অস্তিত্বের পূর্বজিজ্ঞাসা।
দেহ এবং এর অন্তঃস্থিত ‘আমি আছি’ এই চেতনার সঙ্গে সঙ্গে সকল কিছুই অভিজ্ঞতার পরিসরে আসে। কিন্তু এই ‘আমি’–র আগে কী ছিল? এই ‘আমি আছি’ বোধই সব কিছুর মূলে—এই বোধ না থাকলে কিছুই জানা সম্ভব নয়। শুধু দেহ থাকলেই হবে না—যতক্ষণ না এই চেতনা জাগে, ততক্ষণ না জাগে অস্তিত্বের অনুভব, না জাগে জগত, সম্পর্ক, চিন্তা বা অভিজ্ঞতা। তাই যখন তুমি সত্যিই বুঝে ফেলো এই ‘আমি’–র গুরুত্ব, তখন তোমার সমস্ত সাধনা, অনুসন্ধান, ধ্যান, উপলব্ধি—এই একবিন্দুর দিকেই কেন্দ্রীভূত হওয়া উচিত।
এবং, সেই অনুসন্ধানের প্রাথমিক প্রশ্ন হওয়া উচিত: এই ‘আমি’ এল কোথা থেকে? এই বোধটি কীভাবে উদিত হলো? আর এই প্রশ্নের মধ্যেই নিহিত আছে আত্মজ্ঞান—কারণ এই প্রশ্নের উত্তরে পৌঁছোতে পারলে তুমি জানতে পারবে—এই ‘আমি’-র আগে যা ছিল, সেটিই চিরন্তন সত্য।
অদ্বৈত বেদান্ত শিক্ষা দেয়—এই ‘আমি আছি’ বোধই হলো সব অভিজ্ঞতার সূচনাবিন্দু। কিন্তু এই বোধ নিজে কীভাবে উদিত হলো? এর উৎস কোথায়? কে এর সাক্ষী? এই প্রশ্ন করাই হলো প্রকৃত অনুসন্ধান—কারণ এই বোধ নিজেই একটা ঘটনা, এটি জন্মের পর আসে, আর একদিন আবার হারিয়ে যায় (যেমন ঘুম, অচেতনা, মৃত্যু)। কিন্তু এই ‘আমি’–র আগেও কিছু ছিল, যার মধ্যে এই ‘আমি’ উদিত হলো।
সেই পূর্ব-অবস্থা—যেখানে ছিল না কোনো বোধ, না কোনো পরিচয়—তবুও ছিল সেই সত্তা—যার মধ্যেই জন্ম নেয় ‘আমি’, জগৎ, অভিজ্ঞতা। সেই চেতনার পেছনে যাওয়া—এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা—এই ‘আমি’ কোথা থেকে এল?—এটাই আত্মজিজ্ঞাসার আসল পথ।
‘আমি’ বোধ আসার পরই শুরু হয় অভিজ্ঞতা, জগৎ, ও নিজের অস্তিত্বের অনুভব। কিন্তু এই ‘আমি’ আসার আগে কী ছিল?—এই প্রশ্নই সাধনার সূচনা। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে যদি তুমি এই ‘আমি’-র প্রকৃত উৎসে পৌঁছোতে পারো, তবে তা-ই আত্মজ্ঞান, তা-ই পরম সত্য। কারণ ‘আমি’–র পূর্বে যা ছিল—তা কখনও জন্মায় না, মরে না, হারায় না—সেই চিরন্তন নিরাকার চেতনা। তাই সত্য অনুসন্ধান শুরু হোক এই প্রশ্ন দিয়ে—"এই ‘আমি’ কীভাবে এল?"
১৪৪.
‘আমি’–ই একমাত্র পুঁজি—সাধনার সহজ সূত্র।
এই যে ‘আমি আছি’—এই বোধটাই তোমার একমাত্র পুঁজি। এটিকে আঁকড়ে ধরো, এটিকেই অবলম্বন করো। এটিকে নিয়ে ধ্যান করো, এবং এই ‘আমি’-বোধকেই তার নিজের মতো করে উন্মোচিত হতে দাও। তুমি অনেক ঘুরেছ, বহু পথ পেরিয়েছ—কিন্তু এখন, এই প্রথম এমন কিছু শুনলে, যা একেবারে সরল, একেবারে মূল।
গুরু তো বার বার চেষ্টা করেছেন—তোমার মধ্যে এই ‘আমি’–র গুরুত্ব বোঝাতে, যতভাবেই সম্ভব, যত উপায়ে পারা যায়। তিনি বলেন—এই ‘আমি’–বোধই তোমার একমাত্র সম্পদ, এ ছাড়া আর কিছুই তোমার নিজের নয়। আর তিনি যে বলছেন, তা শুধু বিশ্বাস নয়—নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকেই বলছেন। তিনি বলছেন—এখন আর দ্বিধা কোরো না, এই ‘আমি আছি’–কে নিয়েই ধ্যান করো। এই জ্ঞান নিজেই তোমার সামনে উন্মোচন করবে যা-কিছু জানার প্রয়োজন, বুঝতে চাও বা বুঝতে হবে।
অদ্বৈত বেদান্তে ‘আমি আছি’ এই জ্ঞানটিকে বলা হয়—সব চেতনার মূলে থাকা প্রাথমিক আত্মবোধ। এই আত্মবোধ ছাড়া কোনো চিন্তা, অভিজ্ঞতা, জ্ঞান বা চেষ্টা সম্ভব নয়। গুরু এটিকে ‘পুঁজি’ বলেন—কারণ এই একটিই বস্তু, যা প্রকৃত অর্থে তোমার নিজস্ব, বাকি সবই পরিবর্তনশীল, অর্জিত, অথবা ধারণাগত। বহু সাধনা, বহু তপস্যা, বহির্মুখ চেষ্টার পরেও যা থেকে যায়, তা এই ‘আমি’–র বোধ।
এই বোধের উপর ধ্যান করলে—তুমি কোনো বাইরের জ্ঞান খুঁজছ না, বরং নিজের অস্তিত্বের উৎস-এ ফিরে যাচ্ছ। ধ্যান তখনই ফলপ্রসূ হয়, যখন তা বাইরের দিকে নয়—এই নিঃশব্দ আত্মবোধের উপর স্থিত হয়ে থাকে। তখন এই ‘আমি’ নিজেই উন্মোচন করে দেয় যা-কিছু জানার ছিল—নতুন কিছু না, বরং যা অন্তর্নিহিত, কিন্তু অবচেতন ছিল।
‘আমি আছি’—এই জ্ঞানই তোমার একমাত্র আসল সম্পদ। এটিকে ধরো, এটিকে বোঝো, এটিকে নিয়ে ধ্যান করো। গুরু বার বার এই সরল সত্যটি বোঝাতে চেয়েছেন—এই ‘আমি’–র মধ্যেই সব আছে, এবং এই জ্ঞানই নিজেই তোমার সামনে সব কিছু উন্মোচন করবে। বহু ঘোরাঘুরি, তপস্যার পরেও যদি কিছু অবশিষ্ট থাকে—তাহলে সেটি এই নিঃশব্দ ‘আমি’–বোধ। এই বোধকে ধারণ করাই সত্য সাধনা—এবং এই ধ্যানে স্থির থাকলেই আত্মজ্ঞান স্বতঃস্ফূর্তভাবে উদ্ভাসিত হয়।
১৪৫.
শুদ্ধ ‘আমি’–তে স্থিতি পরিচয়বিচ্ছিন্ন আত্মউত্তরণ। তোমার একমাত্র সত্য পরিচয়—এই অন্তঃস্থিত ‘আমি আছি’ জ্ঞান। তুমি কেবল এর সঙ্গেই নিজেকে একাত্ম করো—শুধু এটুকুই যথেষ্ট। এই ‘আমি’ বোধের সঙ্গে যা-কিছু পরে যুক্ত হয়েছে—নাম, পরিচয়, স্মৃতি, দেহবোধ, ভাবনা—সব কিছুর সঙ্গে তোমার সম্পর্ক ছেঁটে ফেলতে হবে অস্ত্রোপচারের নিখুঁত দক্ষতায়। এই বিচ্ছেদ ঘটাবার পর, তুমি শুধু এই নিখাদ, নিরুপাধি ‘আমি’–র মধ্যেই স্থিত থাকো।
এই ‘আমি আছি’ জ্ঞানই তোমার একমাত্র উত্তরাধিকার—জন্মের পর যা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল, এবং যার উপরই দাঁড়িয়ে আছে সব অভিজ্ঞতা। এটিকে বোঝা, এটিকে ধারণ করা—এটুকুই তোমার সাধনার সম্পূর্ণ দিকনির্দেশ। যদি তুমি একান্ত আন্তরিকতার সঙ্গে এভাবে স্থিত থাকতে পারো, তবে একসময় এমন একমুহূর্ত আসবে—যখন এই ‘আমি’–র সীমানাও অতিক্রম করে তুমি পৌঁছে যাবে তোমার প্রকৃত, স্বাভাবিক, চিরন্তন অবস্থানে—‘আমি’-রও অতীত, পরম অস্তিত্বে।
অদ্বৈত বেদান্তে ‘আমি’ বোধ নিজেই একটি মৌলিক ধারণা—কিন্তু তাতেও ‘উপাধি’ জুড়ে যায়: “আমি অমুক”, “আমি এই শরীর”, “আমি এই জীবন”। এই উপাধির স্তরগুলোই ‘আমি’–র বিশুদ্ধতাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে—যার ফলে প্রকৃত আত্মবোধ চাপা পড়ে যায়।
গুরু নির্দেশ দেন—এই বহিরাগত সংযুক্তিগুলো কাটতে হবে নির্মম নির্ভুলতায়—যেমন এক শল্যচিকিৎসক অস্ত্রপ্রয়োগে অপ্রয়োজনীয় অংশ বাদ দেন। এই সংযুক্তি মুছে ফেললে, যা থেকে যাবে—তা হলো এক নিঃশব্দ, পরিচয়হীন ‘আমি আছি’ অনুভব। এই নিখাদ অস্তিত্বের বোধে স্থিত থাকাই সাধনা, এবং এই স্থিতিই ধীরে ধীরে সমস্ত চেতনা ও পরিচয়ের সীমা ছাড়িয়ে তোমাকে নিয়ে যাবে সেই অবস্থাহীন, নিরাকার পরম সত্তা–র দিকে।
সব পরিচয়, সব সংযোজন—যা-কিছু ‘আমি’-র উপর চাপানো—তা কেটে ফেলতে হবে। তারপর কেবল এই নিঃশব্দ, অন্তঃস্থিত ‘আমি আছি’–তে স্থিত থাকতে হবে। এটিই একমাত্র উত্তরাধিকার, একমাত্র সত্য ভিত্তি। এই ‘আমি’ বোধেই স্থিত হয়ে থাকো—এবং আন্তরিকতা সহকারে করো সেই স্থিতি রক্ষা। তবেই একদিন এই ‘আমি’-ও লীন হয়ে যাবে—আর তুমি স্থিত হবে সেই চূড়ান্ত, অবিচল, নিঃশব্দ, পরিচয়হীন চৈতন্যে—যা কোনো নাম নয়, কোনো রূপ নয়—বরং চিরন্তন নিজস্ব স্বরূপ।