নিঃসঙ্গ শূন্য ফুলদানি

একটি সবুজ ভোর ফুটে ওঠে
ফিকে নীল আকাশের গায়। কোকিলের ডাকে
জানালার বাইরে রাত শেষ হয় কুয়াশার
অনেক মাধুরী নিয়ে, ঘুমেল নয়নদুটি
দিনলিপি পড়ে বার বার।




তারপর কচিরোদ মুকুলিত ডালে, ফুলে, ঘাসে
চকিতে ছড়িয়ে এই গতিমান পৃথিবীকে
কী আশ্চর্য রমণীয় করে!
ফাগুনের শীত শীত ভোরে
হলুদ পরাগ মেখে প্রজাপতি ওড়ে।




তবু এই অন্তহীন জীবনের তীরে
বেদনার নীল নদী এঁকেবেঁকে চলে।
কত যে ধুলোর ঘূর্ণিপাকে এলোমেলো ঝড় ওঠে,
কত যে শুকানো কুঁড়ি পথে পথে ঝরে।
দুরাশার রুক্ষমাঠ ধুলোবালি সব তুচ্ছ করে,
তবু সে মুগ্ধ হয়
যৌবনের সবুজ প্রহরে।




আতপ্ত দুপুরের মদির বাতাসে
হারানো অতীত আর চেনামুখ গান দিয়ে ভাসে,
আবার বকুলদল সুরভিত করে সেই দখিনের বন,
আবার বাসন্তী রং স্বপ্নে ভরে সুকন্যার মন,
আলিসায় মুখ রেখে সে হৃদয় যেন কার পদধ্বনি শোনে,
গভীর হৃদয়ক্ষত প্রশমিত চৈত্র রাতে জ্যোৎস্নার চন্দনে।




মাঝরাতে ঘুম ভাঙে শহরের নিচুতলা ঘরে
ইট, কাঠ, গলি ছেড়ে দূরে—বহুদূরে
কোথায় অচেনা গ্রাম, ঝাউবন, পাখিডাকা সুর
মনে পড়ে। সবুজ প্রহরগুলি বসন্তের
একদিন ঝরে যাবে জানি;
জানালায় পড়ে থাকে নিঃসঙ্গ শূন্য ফুলদানি।