ধ্যানের উদ্দেশ্য হলো—ধ্যানের উদ্দেশ্যে জাগ্রত হওয়া। কোনো ব্যাখ্যাই এর প্রকৃত ব্যাখ্যার সমতুল্য হয়ে উঠতে পারে না, কারণ এই জাগরণের যে-ভাষা, তা কেবলমাত্র সরাসরি অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতেই জানা যায়, বোঝা যায়।
ধ্যানের উদ্দেশ্য নিজেই প্রকাশিত হয় একটি আবিষ্কার হিসেবে—আমাদের অন্তঃসত্তার আবিষ্কার। এটি হৃদয়ের জাগরণ, যা কেউ কেউ বলেন আত্মসাক্ষাৎ, আত্ম-উপলব্ধি, জাগরণ, ঈশ্বর-সচেতনতা, বা অদ্বৈত অভিজ্ঞতা।
এটি আমাদের জন্মগত সক্ষমতা—একটি ধ্যানমগ্ন, স্বতঃস্ফূর্ত জীবনযাপন করা, যেখানে আছে মনের নিখুঁত শান্তি ও সমদৃষ্টি। কারণ আমরা জেগে উঠি এই উপলব্ধিতে—যা এতদিন আমরা একমাত্র পরিচয় ভেবেছিলাম, অর্থাৎ একটি বিচ্ছিন্ন ‘আমি’, যেটি কেবল মনের শাসনের অধীন ছিল এবং যা ছিল আমাদের একমাত্র সম্পদ। আসলে সেটি একটি গৌণ পরিচয়—যাকে অনেকেই ‘মায়াময় পরিচয়’ বলেন।
আর আমাদের সত্য সত্তা হলো প্রাথমিক পরিচয়—একটি বিশুদ্ধ সচেতনতা, একতার অভিজ্ঞতা, যা ঈশ্বরের মধ্যেই পূর্ণভাবে অন্তর্ভুক্ত। রামন মহর্ষি এই প্রাথমিক পরিচয়কে বলেছিলেন “আমি-আমি”। যিশু একে বলেছিলেন ‘প্রেজেন্স’, অথবা পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হওয়া। অভ্যর্থী ধ্যান করে প্রাপ্তির জন্য, আর জাগ্রতজন ধ্যান করে ধারণের জন্য। ধ্যান কোনো প্রক্রিয়ার নামমাত্র নয়; এটি এমন এক জাগরণ, যেখানে আমরা নিজের অন্তঃসত্তা, ঈশ্বরীয় একতা, এবং অনন্ত শান্তিকে সরাসরি অভিজ্ঞতায় পাই।