দর্পণে জগৎ ফোটে— হাসি-কান্না, জীবন-মরণ, ছায়ার মিছিল।
স্বচ্ছ কাচে একেকটা দৃশ্য সরে যায়। আত্মা স্থির শুদ্ধ মুক্ত। নির্লিপ্ত সাক্ষীর দৃষ্টিতে মগ্ন ত্রিকাল— কাল রয় বদ্ধ বর্তমানে। অনিমেষ মহাকাশতলে স্তব্ধ-মৌন ছায়াতরু; প্রশান্ত পরম অস্তিত্ব—উপমাহীন।
আমি একা—মুগ্ধ, নতজানু; তোমাকে প্রণাম করি।
ব্যক্ত প্রতিমার অব্যক্ত আভাসে মগ্ন, আত্মহারা অতলান্ত বোধে চেয়ে থাকি তারি দীপ্তাননে, যে-হিরণ্য জ্যোতির্ময় ছায়া ফেলে সূর্য, চন্দ্র, অগ্নির জ্যোতিতে।
তুরীয় সত্তার শান্ত অকম্পিত বুকে ইচ্ছের তরঙ্গ জাগে৷ শব্দের অনাদি পদ্ম থরথর কাঁপে। স্পন্দনে প্রাণের বেগে সৃষ্টি হয় কোটি জগতের আকাশে প্রাণের খেলা—হিমাদ্রিতে রবিকরসম!
সুষুপ্তির, স্বপ্ন-জাগ্রতের মায়া-বিজড়িত স্থাবর-জঙ্গম গিরিদরী, পশুপাখি, নারীনর— সংখ্যাহীন যুগকল্প।
জেনেছি জীবনের মানে— ফুল ফুটে ফুল ঝরে পড়া!
কালের প্রবাহ চলে অনুভূতিহীন অনিবার্য ছন্দে তালে। তারও ঊর্ধ্বে আদি-অন্তহীন তোমার দাক্ষিণ্যময় সৎ-চিৎ আনন্দধারার প্লাবন-প্রসাদ নামে হৃৎকমলের ঘরে।
তোমাকে প্রণাম করি। শুদ্ধ-জ্ঞানঘনমূর্তি, বরাভয়, নির্মল, নিবিড় করুণায় স্নিগ্ধ, স্মিত-প্রসন্ন, নির্মেঘ আকাশের উজ্জ্বলতা... নিরন্তর তোমাকে প্রণাম।