বেহুলা, সে আমি নই। সতীকে আমি দেখিই তো নি! সাবিত্রী আমি কখনও হতে পারিনি। তবে তোমায় যমের দুয়ার থেকে ফিরিয়ে আনতে হলে যে লড়াইটা আমায় করতে হতে পারে, তা আমি খুব ভালো করেই আয়ত্ত করতে পেরেছি। তুমি অত ভেবো না গো! ভালোবাসি, অমন করে হয়তো কখনও বলিনি। ভালোবাসাকে সংজ্ঞায়িত করতে চাই-ই তো নি! ভালোবাসায় অন্ধত্ব খুঁজে পাইনি আজও! তবে তোমায় ভালোবেসে নিজেকে তোমার চরণে একান্ত তোমারই করে উৎসর্গ করতে হলে, যে ভালোটা তোমায় বাসতে হতো, সেটুকু ভালো তোমায় বাসতে আমি খুব ভালো করেই শিখে নিয়েছি! সুযোগ পেয়েও কখনও কাছে আসতে পারিনি। কাছে-আসা কাকে যে বলে, বুঝিনি তা-ও,---সত্যি বলছি! কাছে এসে সংকোচটা ভেঙে ফেলতে হয় কী করে, জানিনি আজও! তবে তোমার মধ্যে নিজের পুরোটাকে সমর্পণ করতে হলে যতটুকু কাছের হিসেবে তোমায় এই মনে ঠাঁইটা দিতে হতো, সেটুকু কাছাকাছি আসতে খুব ভালোভাবেই আমি পেরেছি! দূরত্বটা কীভাবে যেন রয়েই গেছে, তা ঘোচাতে পারিনি। দূরত্বকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, সাঁকোটা পেরিয়ে তোমার কাছে পৌঁছনো আর হলো না! হ্যাঁ, ব্যবধানের এই রঙ্গমঞ্চে নিজেকে উপস্থাপন তেমন করতে হয়তো পারিনি, তবে তোমার মনটাকে ছুঁয়ে দেবার জন্য দূরত্বের সাথে ঠিক যতখানি সন্ধিচুক্তিতে আবদ্ধ হতে হতো, সেটুকু দায় খুব দারুণভাবেই সেরে ফেলতে আমি ঠিকই পেরেছি! তোমার দোরে প্রিয় কোনও অতিথি হতে এখনও পারিনি। এমনকি, নিজেকে এক অতিথি-প্রিয়া করে তোমায় মুগ্ধ...আজও করিনি। অতিথিশালাকে জমিয়ে ফেলে নতুন কিংবা অভিনব এক আতিথ্যপন্থায় তোমার জন্যে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলে ধরতে…তা-ও পারিনি। তবে তোমার চিরচেনা এক অতিসাধারণ আতিথ্য দিয়ে তোমায় কৌলীন্যের সাথে বরণ করে নিতে ঠিক যতটুকু অতিথিপরায়ণ আমাকে হতে হতো, ততটুকু হবার সাধনায় বিন্দুসমও ফাঁকি আমি সত্যিই রাখিনি!