তার সেই হা হা হা শব্দের চিৎকারটা হয়তো আমি শুনিইনি, অগত্যা তাকে থামিয়ে দেবার চেষ্টাটুকুও তখন করিনি। ঘড়ি সম্পর্কিত অনেক জ্ঞান আমার নেই যদিও; তবু হ্যাঁ, এখনও আমি ঘড়ির কর্তৃত্বেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। সৎ কবিদের কুঁড়েঘরকে বাঁচাতে হয়তো আমি পারিনি; তবু অতিনিশ্চয়ই, ব্যক্তিগত আক্রমণটা ওদের আমি কখনও করিনি, বরং সব সময়ই একটু হলেও আগলে রাখবার চেষ্টা করেছি। মারাত্মক, হিমশীতল ভয়াবহতার কাছে কেবলই অবিশ্বাস্য রকমের জন্মান্ধ ক্লিকের শব্দ আমি শুনিনি কখনও; তবে আমি জানি, আমি বরাবরই আমার চোখের সামনে পড়া প্রতিটি পাগলের পাগলামিকে অনেকটুকু প্রশ্রয় দেবার আন্তরিক চেষ্টা করেছি। বজ্রপাতের রেখা একটা-একটা করে জ্বলে উঠলে পরে সন্ত্রাসকে কর্তৃপক্ষের কাছে হেরে যেতে হয়তো আমি দেখিনি; তবু হ্যাঁ, মায়ের নকশিকাঁথা সেলাইয়ের সময়, অদৃশ্য কোণের অপরিমেয় ফাঁকটা কিন্তু আমার চোখ এড়ায়নি আজও। অন্ধকার রাতে মনটা বড্ড বেশিই ছদ্মবেশী কখনও হয়েছে কি না, তা হয়তো বেহিসেবের ফাঁদে পড়ে আমার জানা হয়ে ওঠেনি; কিন্তু হ্যাঁ, আমি নিজে ছদ্মবেশী হতে না চাইলেও সমস্ত ছদ্মবেশকে বিনা কারণেই আগলে রাখতে শিখেছি বুকের মধ্যে। চাঁদের পাহাড় হয়তো আমাকে তার দূরত্ব দিয়ে হারাতে চেয়েছে; তবুও, আমি কিন্তু হার মানিনি…সত্যিই! বরং পাহাড় পরিমাপকারীকে কল্পনায় এনে আরও খানিকটা এগিয়ে যেতে চেয়েছি। ছায়ানট হতে উৎসারিত সুরে, ছায়াপথ থেকে দূরের ছায়ায় ঘেরা এই শহরে আমার কখনও তাকে জিজ্ঞেস করা হয়নি…এর অর্থ কিংবা ওর অনর্থ; তবু, তার আধেক অন্ধ আর কিছুটা বিকৃত আয়নার ভেতর দিয়ে আমি তাকেই নয় শুধু, বরং তার মধ্যে থেকে, তার মধ্য দিয়ে আরও একটু এগিয়ে নিজেকেই খুঁজে ফিরেছি!