আমরা যদি ভাবি যে, আমাদের একটা কমলা খেতে ইচ্ছে করছে, তবে হয়তো ফলের ঝুড়ির কাছে গিয়ে নেব, হয়তো নেব না। আবার যদি আমরা কেবল ধারণা করি, কমলার স্বাদ কেমন হতে পারে—অথচ কখনও খাইনি—তাহলে আমরা জানি না, আসলে কমলার স্বাদ কেমন। কিন্তু যদি আমরা সত্যিই একটি রসালো কমলা খেয়ে থাকি, তখনই আমরা জানি, সত্যিকার অর্থে জানি।
কারও কাছে সেই স্বাদ বোঝাতে গেলে, যত রূপক, উপমা বা তুলনা ব্যবহার করি না কেন, ভাষা শেষপর্যন্ত সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। আমরা বলতে পারি—“এটা ওটার মতো”, “এমন স্বাদের মতো”—কিন্তু অভিজ্ঞতার আসল সত্য ভাষায় ধরা যায় না। কারণ জানাটা সরাসরি অভিজ্ঞতায়, বর্ণনায় নয়।
অন্য কেউ আমাদের অভিজ্ঞতার সত্যতা নিয়ে যতই সন্দেহ প্রকাশ করুক না কেন, অভিজ্ঞতা কখনও তর্কের দাস হয় না। এমনকি যারা বলে, কমলা আসলে এক ভ্রম, এমনকি ‘খেয়েছে’ বলার মতো কোনো ‘কেউ’ নেই—তাদের কথাও অভিজ্ঞতাকে অস্বীকার করতে পারে না।
মূল বক্তব্য হলো—আধ্যাত্মিক জাগরণ সম্পর্কেও একই কথা প্রযোজ্য। এর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা, নানা ধারণা গড়ে তোলা—এসব পথের ধাপ হতে পারে, কিন্তু সেগুলো আসল ‘জানা’ নয়। এমনকি অনুভূতি বা বিশ্বাসও সত্যিকার জানা নয়। কেবল অভিজ্ঞতা—প্রত্যক্ষ উপলব্ধি—হলো জ্ঞানের একমাত্র পথ।
তাই যদি জানতে চাও, অথবা একদিন জানলেও অনেক দিনের ব্যবধানে ভুলে গিয়ে থাকো, তবে খুঁজে নাও জীবনের সেই ফলভাণ্ডারকে। সেখানে নিশ্চয়ই কোনো সহানুভূতিশীল ব্যক্তি তোমাকে একটি কমলার দিকে আঙুল দেখিয়ে বলবে—“চাও কি?”—আর সেখানেই শুরু হবে তোমার সরাসরি জানা।