প্রিলিমিনারির বিভিন্ন টপিক নিয়ে…..
ভাষাঃ আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ ৯ম-১০ম শ্রেণীর ব্যাকরণ বই+ হায়াৎ মামুদের ভাষা-শিক্ষা+ গাইড বই
সাহিত্যঃ আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ সৌমিত্র শেখরের জিজ্ঞাসা+ হুমায়ূন আজাদের লাল নীল দীপাবলি+ মাহবুবুল আলমের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস+ গাইড বই
Language: আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ English for the Competitive Exams+ Oxford Advanced Learner’s Dictionary+ গাইড বই
Literature: আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ গাইড বই
বাংলাদেশ বিষয়াবলী+ আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীঃ আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন+ পেপার+ ইন্টারনেট+ গাইড বই+ রেফারেন্স বই
ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাঃ নতুন গাইড বই
সাধারণ বিজ্ঞানঃ আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন
কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তিঃ জব সল্যুশন+ আগের বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও টীকা+ নতুন গাইড বই
গাণিতিক যুক্তিঃ আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+ জব সল্যুশন
মানসিক দক্ষতাঃ আগের বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন+ গাইড বই+ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইভিনিং এমবিএ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নব্যাংক+ আইকিউ’র বই
নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসনঃ কমনসেন্স+ নতুন গাইড বই
বিসিএস প্রিলিমিনারি নিয়ে আমার ফেসবুক নোটগুলি দেখার পরামর্শ দিচ্ছি। ওখানে আরও অনেক বইয়ের নাম এবং পড়াশোনার অনেক টেকনিক পেয়ে যাবেন।
৩৫তম বিসিএস প্রিলি : কিছু পর্যবেক্ষণ
কখগঘ এই সিরিয়ালটা বাম থেকে ডানে না দিয়ে উপরেনিচে দেয়াতে অনেক ক্যান্ডিডেটই অন্তত ৩-৪টা জানা প্রশ্নের উত্তর ভুল দাগিয়েছেন।
প্রশ্নটি ‘এসো নিজে করি’ টাইপ কোনো প্রশ্ন না। পরীক্ষার হলে কথা বলেও তেমন কোন লাভ হয়নি।
কোচিং সেন্টার আর গাইডবই পড়েটড়ে তেমন কোনো কাজই হবে না, যদি না নিজের ‘হেডঅফিসে’ কিছু থাকে। ভাল প্রস্তুতি নেয়া অপেক্ষা ভাল পরীক্ষা দেয়াটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
‘অমুক কোচিং সেন্টারের সাজেশন এত পার্সেন্ট কমন’, ‘তমুক গাইডের এত সংখ্যক প্রশ্ন কমন’ এসব কথা বলার দিন শেষ হতে চলেছে, এটা মনে হল।
একেকভাবে ভাবলে একেকরকম আনসার হয়, এমন প্রশ্ন অন্যান্যবারের তুলনায় এবার একটু বেশি ছিল। পিএসসি ইচ্ছে করেই এই গেমটা খেলে যাতে কেউ সেগুলো আনসার না করে সেজন্য। লোভে পাপ, পাপে নেগেটিভ মার্কস।
প্রশ্নটি ভালভাবে দেখলে খেয়াল করবেন, আপনার অ্যাকাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড যা-ই হোক না কেন, আপনি কোনো বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন না।
এখন থেকে সবসময় পরীক্ষা এই স্টাইলেই হলে প্রশ্নব্যাংক, ডাইজেস্ট, জব সল্যুশন, কোচিং সেন্টারের রাজত্ব কমে যাবে কিংবা ওদেরকে সেবাদানের ধরণ বদলাতে হবে। স্রেফ মুখস্থবিদ্যার জোরে আমলাতন্ত্রে আসার দিন শেষ।
লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরুর আগে
লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করার আগে মাথায় রাখুন, বিসিএস পরীক্ষায় কী কী পড়বেন, সেটা ঠিক করার চাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল, কী কী পড়বেন না, সেটা ঠিক করা।
কোচিংয়ে দৌড়াদৌড়ি করেন আর যা-ই করেন, প্রতিদিন বাসায় পড়াশোনা করবেন অন্তত ৮-১০ ঘণ্টা। যাঁদের অন্য চাকরি করতেই হচ্ছে, উনারা চাকরির পাশাপাশি কমপক্ষে ৪-৫ ঘণ্টা পড়াশোনার পেছনে সময় দেবেন।
যে চাকরিটা অন্তত ৩০ বছর আরাম করে করবেন বলে ঠিক করে রেখেছেন, সেটার জন্য ৩ মাস নাওয়াখাওয়া বাদ দিয়ে পড়াশোনা করবেন না, এরকম বেকুব তো নিশ্চয়ই আপনি নন!
আমার লিখিত পরীক্ষার মার্কসশীট (দেখুন উপরের ছবিতে)
বাংলা ১ম পত্র
ব্যাকরণঃ আগের বছরের প্রশ্নগুলো, গাইড বই, নবম-দশম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণ, হায়াৎ মামুদের ভাষা-শিক্ষা, সৌমিত্র শেখরের দর্পণ থেকে সিলেবাসের টপিক অনুযায়ী পড়ে নিন। ৬টি বাক্যে প্রবাদ-প্রবচনের নিহিতার্থ প্রকাশ লেখার সময় নিজের মত করে সহজ ভাষায় লিখুন। এটিতে উদাহরণ দেয়ার দরকার নেই। এই অংশটা উত্তর করতে ৩০ মিনিটের বেশি সময় লাগার কথা না।
সারমর্মঃ ২-৩টি সহজ সুন্দর বিমূর্ত বাক্যে এটি লিখতে হবে। সময় লাগতে পারে ২০ মিনিট। এই অংশটির জন্য সাজেশনস রেডি করে বিভিন্ন বই থেকে নোট করে পড়লে খুব ভাল হয়।
ভাব-সম্প্রসারণঃ আগের বছরের প্রশ্নগুলো, গাইড বই, সৌমিত্র শেখরের দর্পণ, বাংলাদেশের আর কলকাতার কিছু লেখকদের বই থেকে এই অংশটা দেখতে পারেন। খুব প্রাসঙ্গিক ২০টি বাক্যে এটি লিখতে হয়। এই ২০টি বাক্য সময় নিয়ে লিখুন। উদাহরণ আর উদ্ধৃতি দিতে পারেন। লাগুক ৪০ মিনিট; খেয়াল রাখবেন, প্রত্যেকটি বাক্যের গাঁথুনি যেন খুবই চমৎকার হয়।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য- বিষয়ক প্রশ্নের উত্তরঃ আগের বছরের প্রশ্নগুলো খুব ভালভাবে স্টাডি করে কী কী ধরণের প্রশ্ন হয় না সেটা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নিন। এরপর গাইড বই, লাল-নীল দীপাবলি, মাহবুবুল আলমের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস এই বইগুলো থেকে বাদ দিয়ে বাদ দিয়ে পড়ুন। এই অংশটি সবার শেষে উত্তর করতে পারেন। উদ্ধৃতি ছাড়া অবশ্যই লিখবেন না।
বাংলা ২য় পত্র
অনুবাদঃ বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ এটি। এই অংশটি ইংরেজি পার্ট-বি’তেও আছে। মোট নম্বর ১৫+২৫+২৫=৬৫। আগের প্রশ্নগুলো পর্যালোচনা করলে দেখবেন, খুব একটা সহজ অনুবাদ বিসিএস পরীক্ষায় সাধারণত আসে না। এই অংশটা একটু ভিন্নভাবে পড়তে পারেন। প্রথম আলো, ইত্তেফাক, দ্য ডেইলি স্টার, দি ইন্ডিপেনডেন্ট, দ্য ফাইনানশিয়াল এক্সপ্রেস ইত্যাদি পত্রিকার সম্পাদকীয়কে নিয়মিত অনুবাদ করুন। কাজটি করাটা কষ্টকর, কিন্তু খুবই ফলপ্রসূ।
কাল্পনিক সংলাপঃ বিভিন্ন সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে ধারণা বাড়াতে হবে। নিয়মিত পেপারে চোখ রাখুন (বিশেষ করে, গোলটেবিল বৈঠকগুলোর মিনিটস), টকশো দেখুন, গাইড বই থেকে বিভিন্ন টপিক ধরে নিজের মত করে সহজ ভাষায় লেখার প্র্যাকটিস করুন। এ টপিকে ভাল করতে চাপাবাজি আর ভাষাজ্ঞান লাগে। ১টা টেকনিক বলছি।
পত্রলিখনঃ আগের বছরগুলোর প্রশ্নের ধরণ দেখে হায়াৎ মামুদের ভাষা-শিক্ষা আর গাইড বই থেকে পড়তে পারেন। আপনি যে যে ধরণের পত্র লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, সেগুলোর উপরেই প্রিপারেশন নেবেন। যেমন, ব্যক্তিগত পত্র লিখতে চাইলে ভাষার ব্যবহারের দিকটা মাথায় রাখতে হবে। এই অংশে লেখার ফরম্যাটের উপর আলাদা মার্কস বরাদ্দ থাকে।
গ্রন্থ-সমালোচনাঃ সিলেবাসে এই অংশ নিয়ে কোন সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়া নেই। বিখ্যাত এবং পরিচিত ৩০-৪০টা বইয়ের পরিচিতি জেনে যাবেন। কমন না পড়লেও “এই অমর সৃষ্টিটি বাংলা সাহিত্যে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য সংযোজন।” টাইপের কথাবার্তা লিখে দিয়ে আসুন। প্রয়োজনে লেখকের নাম আর বইয়ের বিষয়ের উপর মনে যা আসে তা-ই লিখে আসবেন। পরীক্ষায় ০ পাওয়ার চাইতে ০.৫ পাওয়াও ভাল।
রচনাঃ এই অংশটির পড়ার সময় ইংরেজি এসেই, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর বড় প্রশ্নের সাথে মিলিয়ে প্রস্তুতি নিতে পারেন। আগের বছরের প্রশ্ন দেখে কোন কোন প্যাটার্নের রচনা আসে, সেটি সম্পর্কে ধারণা নিয়ে যেকোনো ৩টি প্যাটার্নের উপর প্রস্তুতি নিন। সাজেশনস রেডি করে ইন্টারনেট, গাইড বই, রেফারেন্স বই থেকে পড়বেন। মাইন্ড-ম্যাপিং করে পয়েন্ট ঠিক করতে থাকুন, আর যত বেশি সম্ভব তত লিখতে থাকুন। প্রচুর উদ্ধৃতি দিন।
ইংরেজি
Stop smoking.
Stop to smoke.
পার্থক্য কোথায়? Stop’য়ের পর কি সবসময়ই verb+(-ing) হবেই? এটা বুঝতে কী লাগে? Grammar? নাহ! Commonsense লাগে।
ইংরেজিতে ভাল করার মূলমন্ত্র ২টিঃ
এক। বানান ভুল করা যাবে না।
দুই। গ্রামাটিক্যাল ভুল করা যাবে না।
এই ২টি ব্যাপার মাথায় রেখে একেবারে সহজ ভাষায় লিখে যান, মার্কস আসবেই। ফেসবুকে সহজ ইংরেজিতে একটু বড় বড় স্ট্যাটাস আর কমেন্ট লিখলে কাজে লাগবে। ভুল হোক, তবুও লিখতে থাকুন।
ইংরেজি পার্ট-এ
রিডিং কম্প্রিহেনশনঃ
এ) একটা আনসিন প্যাসেজ দেয়া থাকবে। এটা সাম্প্রতিক বিষয়ের উপর হতে পারে। বেশি বেশি করে ইংরেজি পত্রিকার আর্টিকেলগুলি পড়বেন, সাথে অবশ্যই সম্পাদকীয়। এটা লিখিত পরীক্ষার অন্যান্য বিষয়েও কাজে লাগবে। কম্প্রিহেনশন আনসার করার সহজ বুদ্ধি হল, প্যাসেজটা আগে না পড়ে প্রশ্নগুলি আগে পড়ে ফেলা, অন্তত ৩ বার। প্রশ্নে কী জানতে চেয়েছে, সে কিওয়ার্ডটা কিংবা কিফ্রেসটা খুঁজে বের করে আন্ডারলাইন করুন। এরপর প্যাসেজটা খুব দ্রুত পড়ে বের করে ফেলতে হবে উত্তরটা কোথায় কোথায় আছে।…………….contd.
একটা ব্যাপার মাথায় রাখবেন। প্যাসেজ পড়ার সময় প্যাসেজের ডিফিকাল্ট ওয়ার্ড কিংবা ইডিয়মের অর্থ খুঁজতে যাবেন না। এসব দেয়াই হয় পরীক্ষার্থীর সময় নষ্ট করার জন্য। এরপর নিজের মত করে প্রশ্নের উত্তর করে ফেলুন। এই অংশটি আইএলটিএস’য়ের রিডিং পার্টের টেকনিকগুলো অনুসরণ করে প্র্যাকটিস করলে খুব খুব ভাল হয়। বাজারের রিডিংয়ের বই কিনে পড়া শুরু করুন।
বি) গ্রামার এবং ইউসেজের উপর প্রশ্ন আসবে। কয়েকটি গাইড বই থেকে প্রচুর প্র্যাকটিস করুন।………… contd.
ইংলিশ ফর দ্য কম্পিটিটিভ এক্জামস্, অ্যা প্যাসেজ টু দ্য ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ, অক্সফোর্ড অ্যাডভান্সড লার্নারস ডিকশনারি, লংম্যান ডিকশনারি অব কনটেম্পোরারি ইংলিশ, মাইকেল সোয়ানের প্রাক্টিক্যাল ইংলিশ ইউসেজ, রেইমন্ড মারফির ইংলিশ গ্রামার ইন ইউজ, জন ইস্টউডের অক্সফোর্ড প্র্যাকটিস গ্রামার, টি জে ফিটিকাইডসের কমন মিস্টেকস ইন ইংলিশ সহ আরো কিছু প্রামাণ্য বই হাতের কাছে রাখবেন। এসব বই কষ্ট করে উল্টেপাল্টে উত্তর খোঁজার অভ্যেস করুন, অনেক কাজে আসবে। যেমন, এনট্রাস্ট শব্দটির পর ‘টু’ হয়, আবার ‘উইথ’ও হয়। ডিকশনারির উদাহরণ দেখে এটা লিখে লিখে শিখলে ভুলে যাওয়ার কথা না।
সামারিঃ একটা প্যাসেজ দেয়া থাকবে। ওটা ভালভাবে অন্তত ৫ বার খুব দ্রুত পড়বেন। পড়ার সময় কঠিন শব্দ দেখে ভয় পাবেন না। কঠিন অংশগুলোতে সাধারণত মূল কথা দেয়া থাকে না। মূল কথা কোথায় কোথায় আছে, দাগিয়ে ফেলুন।……contd.
পুরো প্যাসেজটাকে ৩-৪টি ভাগে ভাগ করে ফেলুন। এরপর প্রতিটি ভাগের কয়েকটি বাক্যকে একটি করে বাক্যে লিখুন। প্যাসেজ থেকে হুবহু তুলে দেবেন না। একটু এদিকওদিক করে নিজের মত করে লিখুন। এখানে উদাহরণ-উদ্ধৃতি দেবেন না। ভাল কথা, শুরুতেই সামারির টাইটেল দিতে ভুলবেন না। এই অংশের জন্য নিয়মিত পেপারের সম্পাদকীয় আর আর্টিকেলগুলোকে সামারাইজ করার চেষ্টা করুন।
লেটারঃ একটা প্যাসেজ কিংবা একটা স্টেটমেন্ট দেয়া থাকবে। সেটির উপর ভিত্তি করে কোন একটি ইস্যু নিয়ে পত্রিকার সম্পাদক বরাবর একটি পত্র লিখতে হবে। এই অংশের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য নিয়মিত পত্রিকার লেটার টু দি এডিটর অংশটি পড়ুন, সাথে কিছু গাইড বই। লেটার অংশে নিয়মকানুনের উপর মার্কস বরাদ্দ থাকে। লেটারের ভাষা হবে খুব ফর্মাল।
ইংরেজি পার্ট-বি
এসেইঃ নির্দিষ্ট শব্দসংখ্যার মধ্যে একটি রচনা লিখতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধানের ব্যাখ্যা, বিভিন্ন সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, উইকিপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া, ন্যাশনাল ওয়েব পোর্টাল, কিছু আন্তর্জাতিক পত্রিকা ইত্যাদি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখুন৷ প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় বিভিন্ন লেখকের রচনা, পত্রিকার কলাম ও সম্পাদকীয়, ইন্টারনেট, বিভিন্ন সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারা, বিভিন্ন রেফারেন্স থেকে উদ্ধৃতি দিলে মার্কস বাড়বে৷ এই অংশগুলো লিখতে নীল কালি ব্যবহার করলে সহজে পরীক্ষকের চোখে পড়বে৷ কোটেশন ছাড়া রচনা লেখার চিন্তাও মাথায় আনবেন না। এসেই কমন পড়বে না, এটা মাথায় রেখে সাজেশনস রেডি করে প্রস্তুতি নিন। নিজের মত করে সহজ ভাষায় বিভিন্ন টপিক নিয়ে ননস্টপ লেখার প্র্যাকটিস করুন।
অনুবাদঃ এটি নিয়ে বলেছি।
গাণিতিক যুক্তি
১২টি প্রশ্ন দেয়া থাকবে, যেকোন ১০টির উত্তর দিতে হবে। যেকোন তিনটি গাইড বই কিনে ফেলুন। প্রতিরাতে কিছু না কিছু ম্যাথস্ প্র্যাকটিস না করে ঘুমাবেন না। শর্টকাটে ম্যাথস্ করবেন না, প্রতিটি স্টেপ বিস্তারিতভাবে দেখাবেন। কোন সাইডনোট, প্রাসঙ্গিক তথ্য যেন কিছুতেই বাদ না যায়। কিছু ছোটখাট বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখবেন; এই যেমন, সাইডনোট লেখার সময় তৃতীয় বন্ধনীর আগে একটা সেমিকোলন দেয়া। ম্যাথসের প্রিপারেশন ঠিকমতো নিলে এ বিষয়ে ৫০য়ে ৪৯ পাওয়াও খুব কঠিন। আপনি যদি ১ মার্কসও কম পান, তবে আপনি হবেন বিরলতম হতভাগ্য ক্যান্ডিডেটদের একজন। একটু বুঝেশুনে পড়লে অংকে ফুলমার্কস পেতে সায়েন্সের স্টুডেন্ট হতে হয় না। তবে ম্যাথসের প্রশ্ন খুব একটা সহজ হওয়ার কথা নয়। তাই ভালভাবে প্র্যাকটিস না করলে ধরা খাওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর!
সরলঃ আগের বছরের প্রশ্ন, গাইড বই। সরল উত্তর করবেন সবার শেষে।
বীজগাণিতিক রাশিমালা, বীজগাণিতিক সূত্রাবলী, উৎপাদকে বিশ্লেষণ, একমাত্রিক ও বহুমাত্রিক সমীকরণ, একমাত্রিক ও বহুমাত্রিক অসমতা, সমাধান নির্ণয়, পরিমিতি, ত্রিকোণমিতিঃ আগের বছরের প্রশ্ন, গাইড বই। চাইলে ৯ম-১০ম শ্রেণীর সাধারণ গণিতের সংশ্লিষ্ট অধ্যায়টি সলভ করে নিতে পারেন।
ঐকিক নিয়ম, গড়, শতকরা, সুদকষা, লসাগু, গসাগু, অনুপাত ও সমানুপাত, লাভক্ষতি, রেখা, কোণ, ত্রিভুজ, বৃত্ত সংক্রান্ত উপপাদ্য, পিথাগোরাসের উপপাদ্য, অনুসিদ্ধান্তসমূহঃ আগের বছরের প্রশ্ন, গাইড বই
সূচক ও লগারিদম, সমান্তর ও জ্যামিতিক প্রগমন, স্থানাংক জ্যামিতি, সেটতত্ত্ব, ভেনচিত্র, সংখ্যাতত্ত্বঃ গাইড বই এবং ৯ম-১০ম শ্রেণীর সাধারণ গণিতের সংশ্লিষ্ট অধ্যায়
বিন্যাস ও সমাবেশঃ গাইড বই, ১১শ শ্রেণীর বীজগণিতের সংশ্লিষ্ট অধ্যায়
সম্ভাবনাঃ গাইড বই, ১২শ শ্রেণীর বিচ্ছিন্ন গণিতের সংশ্লিষ্ট অধ্যায়
মানসিক দক্ষতা
এ অংশের প্রশ্নগুলো একটু ট্রিকি হওয়ারই কথা। মাথা ঠাণ্ডা রেখে, ভালভাবে প্রশ্ন পড়ে, পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে উত্তর করতে হবে। এ অংশের প্রশ্ন হবে সহজ, এতোটাই সহজ যে কঠিনের চাইতেও কঠিন। ৩-৪ সেট গাইড বই কিনুন, সাথে ৩-৪টা আইকিউ টেস্টের বই। এ অংশে ফুল মার্কস পাবেন না, এটা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিন।
ভার্বাল রিজনিং: কিছু ঘোরানো কথাবার্তা দিয়ে একটা প্রশ্ন দেয়া থাকবে। ইতিহাস, ভূগোল, সাহিত্য, বিজ্ঞান কিংবা অন্য যেকোনো বিষয় সম্পর্কিত একটা স্টেটমেন্ট দেয়া থাকতে পারে, যেটা পড়ে বের করতে হবে ওই স্টেটমেন্টের কোন অংশটা মিসিং। এক্ষেত্রে কমনসেন্স, গ্রামার এবং ল্যাঙ্গুয়েজ স্কিল কাজে লাগবে।
অ্যাবস্ট্র্যাক্ট রিজনিং: কিছু ডায়াগ্রাম দেয়া থাকবে যেখানে কোন অবজেক্ট কিংবা আইডিয়ার বদলে যাওয়ার ধরণটা ভালভাবে খেয়াল করে ওই অবজেক্ট কিংবা আইডিয়ার পরবর্তী অবস্থানটা দেখাতে বলা হবে।
স্পেস রিলেশনসঃ একটা অবজেক্ট বিভিন্ন দিকে সরে গেলে কিংবা অবস্থান বদলালে সেটির মাঝামাঝি কিংবা শেষ অবস্থান সম্পর্কিত; কিংবা বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে সেগুলোতে লেটার কিংবা নাম্বারের অবস্থান সম্পর্কিত কোয়ালিটেটিভ কিংবা কোয়ানটিটেটিভ প্রশ্ন হতে পারে।
নিউমারিক্যাল অ্যাবিলিটিঃ এটি মূলত ম্যাথস, তবে একটু ভিন্ন ধাঁচের। এতে কোন সিরিজে/ ছকে/ ডায়াগ্রামে মিসিং নাম্বার বের করতে হবে। এটি করার জন্য কিছু সিম্পল ম্যাথস আর কমনসেন্স কাজে লাগবে।
মেকানিক্যাল রিজনিং: কিছু ছবি কিংবা ডায়াগ্রাম দেয়া থাকবে। সেগুলো সম্পর্কিত কিছু কথা লিখে প্রশ্ন করা হবে। প্রশ্ন দু’ধরণের হতে পারেঃ মাথায় করা যায় এরকম সিম্পল ম্যাথস কিংবা ডায়াগ্রামগুলোর বিভিন্ন অবস্থান কল্পনা করে উত্তর দেয়া যায় এরকমকিছু।
গাইড বই, আইকিউ টেস্টের বই, আর গুগলে ইংরেজিতে ‘ভার্বাল/ অ্যাবস্ট্র্যাক্ট/ মেকানিক্যাল রিজনিং/ স্পেস রিলেশনস/ নিউমারিক্যাল অ্যাবিলিটি প্র্যাকটিস’ কিংবা ‘ভার্বাল/ অ্যাবস্ট্র্যাক্ট/ মেকানিক্যাল রিজনিং/ স্পেস রিলেশনস/ নিউমারিক্যাল অ্যাবিলিটি টেস্ট’ লিখে সার্চ করে বিভিন্ন সাইটে ঢুকে নিয়মিত সলভ করুন। এ অংশে প্রশ্ন ‘কমন’ আসার কথা নয়, তাই ভাল করতে হলে অনেক বেশি প্র্যাকটিস করার কোন বিকল্প নেই।
স্পেলিং অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজঃ ভুল বানানে, ভুল ব্যাকরণে, ভুল যতিচিহ্নে কিছু শব্দ কিংবা বাক্য দেয়া থাকবে। সেগুলোকে ঠিক করতে হবে। কিংবা কিছু এলোমেলো বর্ণ কিংবা শব্দ ব্যবহার করে অর্থপূর্ণ শব্দ কিংবা বাক্য গঠন করতে হবে। ইংলিশ গ্রামারের প্রস্তুতি এখানেও কাজে লাগবে। গাইড বই, আইকিউ টেস্টের বই এবং অনলাইনে বিভিন্ন টেস্ট নিয়মিত দিলে খুব কাজে লাগবে।
সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
এই অংশের জন্য আগের বছরের প্রশ্নগুলো আর গাইড বইয়ের সাজেশনসের প্রশ্নগুলো প্রথমেই খুব ভালভাবে যথেষ্ট সময় নিয়ে কয়েকবার পড়ে ফেলুন। বিজ্ঞানের প্রস্তুতি নেয়ার সময় আপনি বিজ্ঞানের ছাত্র কিংবা ছাত্র না, এটা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নেবেন না। বিজ্ঞানে মনের মাধুরী মিশিয়ে সাহিত্যরচনা না করলেই ভাল হয়। এ অংশে প্রয়োজনীয় চিহ্নিত চিত্র, সংকেত, সমীকরণ দিতে পারলে আপনার খাতাটা অন্য দশজনের খাতার চাইতে আলাদা হবে। এসব জিনিস লিখে লিখে শিখতে হয়। ১০ মার্কসের একটা প্রশ্ন উত্তর করার চাইতে ৪+৩+৩=১০ মার্কসের ৩টা প্রশ্নের উত্তর করা ভাল।
পার্ট-এঃ সাধারণ বিজ্ঞান
আলো, শব্দ, চৌম্বকবিদ্যাঃ গাইড বই, ৯ম-১০ম শ্রেণীর পদার্থবিজ্ঞান, ১১শ-১২শ শ্রেণীর পদার্থবিজ্ঞান ১ম ও ২য় পত্র
অম্ল, ক্ষারক, লবণঃ ৯ম-১০ম শ্রেণীর রসায়নবিজ্ঞান, ১১শ-১২শ শ্রেণীর রসায়নবিজ্ঞান ১ম পত্র
পানি, আমাদের সম্পদসমূহ, পলিমার, বায়ুমণ্ডল, খাদ্য ও পুষ্টি, জৈবপ্রযুক্তি, রোগব্যাধি ও স্বাস্থ্যের যত্নঃ গাইড বই, ইন্টারনেট, ৯ম-১০ম শ্রেণীর সাধারণ বিজ্ঞান, ৯ম-১০ম শ্রেণীর ভূগোল
পার্ট-বিঃ কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তিঃ গাইড বই, ইন্টারনেট, পিটার নরটনের ইন্ট্রোডাকশন টু কম্পিউটারস, উচ্চমাধ্যমিক কম্পিউটার শিক্ষা ১ম ও ২য় পত্র
পার্ট-সিঃ ইলেকট্রিকাল এবং ইলেকট্রনিক টেকনোলজিঃ গাইড বই+ উচ্চমাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্রের বই
সিলেবাস দেখে টপিক ধরে ধরে কোনটা কোনটা দরকার, শুধু ওইটুকুই ওপরের বইগুলো থেকে পড়বেন (গাইডেও অনেককিছু দেয়া থাকে যেগুলোর কোন দরকারই নেই)। চাইলে পুরো বই না কিনে যতটুকু দরকার শুধু ততটুকু ফটোকপি করে নিতে পারেন। ইন্টারনেটে টপিকগুলোকে গুগল করে করে পড়লে খুবই ভাল হয়।
বাংলাদেশ বিষয়াবলী
অন্তত ৩-৪ সেট গাইড বই কিনে ফেলুন। বিভিন্ন রেফারেন্স বই, যেমন মোজাম্মেল হকের উচ্চমাধ্যমিক পৌরনীতি ২য় পত্র, বাংলাদেশের সংবিধান নিয়ে বই (যেমন, আরিফ খানের সহজ ভাষায় বাংলাদেশের সংবিধান), মুক্তিযুদ্ধের উপর বই (যেমন, মঈদুল হাসানের মূলধারা : ’৭১), নীহারকুমার সরকারের ছোটোদের রাজনীতি, ছোটদের অর্থনীতি, মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের নাগরিকদের জানা ভালো, আকবর আলী খানের পরার্থপরতার অর্থনীতি, আজব ও জবর-আজব অর্থনীতি, আব্দুল হাইয়ের বাংলাদেশ বিষয়াবলী ইত্যাদি বই পড়ে ফেলুন।বিসিএস পরীক্ষার জন্য যেকোনো বিষয়ের রেফারেন্স পড়ার একটা ভালো টেকনিক হচ্ছে, জ্ঞান অর্জনের জন্য না পড়ে, মার্কস্ অর্জনের জন্য পড়া৷ এটা করার জন্য বিভিন্ন বছরের প্রশ্ন স্টাডি করে খুব ভালভাবে জেনে নেবেন কোন কোন ধরণের প্রশ্ন পরীক্ষায় আসে না। রিটেনের প্রশ্নগুলো ভালোভাবে দেখে, এরপর রেফারেন্স বই ‘বাদ দিয়ে বাদ দিয়ে’ পড়ুন৷
৪ ঘণ্টা না বুঝে স্টাডি করার চাইতে ১ ঘণ্টা প্রশ্ন স্টাডি করা অনেক ভালো। তাহলে ৪ ঘণ্টার পড়া ২ ঘণ্টায় পড়া সম্ভব। বেশি বেশি প্রশ্নের প্যাটার্ন স্টাডি করলে, কীভাবে অপ্রয়োজনীয় টপিক বাদ দিয়ে পড়া যায়, সেটা শিখতে পারবেন। এটা প্রস্তুতি শুরু করার প্রাথমিক ধাপ। এর জন্যে যথেষ্ট সময় দিন। অন্যরা যা যা পড়ছে, আমাকেও তা-ই তা-ই পড়তে হবে—এই ধারণা ঝেড়ে ফেলুন। সবকিছু পড়ার সহজাত লোভ সামলান। একটি অপ্রয়োজনীয় টপিক একবার পড়ার চেয়ে প্রয়োজনীয় টপিকগুলো বারবার পড়ুন৷
অনলাইনে ৪-৫টা পেপার পড়বেন। পেপার পড়ার সময় খুব দ্রুত পড়বেন। পুরো পেপার না পড়ে বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় টপিকের আর্টিকেলগুলোই শুধু পড়বেন। একটা পেপারে এ ধরণের দরকারি লেখা থাকে খুব বেশি হলে ২-৩টা। প্রয়োজনে সেগুলোকে ওয়ার্ড ফাইলে সেভ করে রাখুন, পরে পড়ে ফেলুন।
পেপার পড়ার সময় পেপারের কলামগুলো পড়ে পড়ে বুঝে নেবেন কোন কোন টপিক থেকে পরীক্ষায় প্রশ্ন হতে পারে। বাংলাদেশ বিষয়াবলীতে সময়ের প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিকতা অনুসারে প্রশ্নের ধরণ বদলাতে পারে। বিভিন্ন কলাম পড়ার সময় কোন কলামিস্ট কোন বিষয় নিয়ে লেখেন, এবং কোন স্টাইলে লেখেন, সেটা খুব খুব ভাল করে খেয়াল করুন এবং নোটবুকে লিস্ট করে কলামিস্টের নাম, এর পাশে এরিয়া অব ইন্টারেস্ট, স্টাইল লিখে রাখুন। পরীক্ষার খাতায় উদ্ধৃতি দেয়ার সময় এটা খুব কাজে লাগবে।
প্রয়োজনীয় চিহ্নিত চিত্র ও ম্যাপ আঁকুন৷ যথাস্থানে বিভিন্ন ডাটা, টেবিল, চার্ট, রেফারেন্স দিন৷ পেপার থেকে উদ্ধৃতি দেয়ার সময় উদ্ধৃতির নিচে সোর্স এবং তারিখ উল্লেখ করে দেবেন। পরীক্ষার খাতায় এমন কিছু দেখান, যেটা আপনার খাতাকে আলাদা করে তোলে। যেমন ধরুন, বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে সোর্সসহ রেফারেন্স দিতে পারেন। উইকিপিডিয়া কিংবা বাংলাপিডিয়া থেকে উদ্ধৃত করতে পারেন। দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বিভিন্ন সময়ে কে কী বললেন, সেটা প্রাসঙ্গিকভাবে লিখতে পারেন। পেপারের সম্পাদকীয় থেকে ফর্মাল উপস্থাপনার স্টাইল শিখতে পারেন।
লেখা সুন্দর হলে ভালো, না হলেও সমস্যা নেই৷ লিখিত পরীক্ষায় অনেক বেশি দ্রুত লিখতে হয়৷ তাই প্রতি ৩-৫ মিনিটে ১ পৃষ্ঠা লেখার প্র্যাকটিস্ করুন৷ খেয়াল রাখবেন, যাতে লেখা পড়া যায়৷ সুন্দর উপস্থাপনা মার্কস বাড়ায়৷
বিভিন্ন রেফারেন্স, টেক্সট ও প্রামাণ্য বই অবশ্যই পড়তে হবে৷ বিসিএস পরীক্ষায় অনেক প্রশ্নই কমন পড়েনা৷ এসব বই পড়া থাকলে উত্তর করাটা সহজ হয়৷ প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় বিভিন্ন লেখকের রচনা, পত্রিকার কলাম ও সম্পাদকীয়, ইন্টারনেট, বিভিন্ন সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারা, বিভিন্ন রেফারেন্স থেকে উদ্ধৃতি দিলে মার্কস বাড়বে৷……contd.
এই অংশগুলো লিখতে নীল কালি ব্যবহার করলে সহজে পরীক্ষকের চোখে পড়বে৷ চেষ্টা করবেন, প্রতি পেজে অন্তত একটা কোটেশন, ডাটা, টেবিল, চার্ট কিংবা রেফারেন্স, কিছু না কিছু দিতে। ভালো কথা, পুরো সংবিধান মুখস্থ করার কোনো দরকারই নাই। যেসব ধারাগুলো থেকে বেশি প্রশ্ন আসে, সেগুলোর ব্যাখ্যা খুব ভালভাবে বুঝে বুঝে পড়ুন। সংবিধান থেকে ধারাগুলো হুবহু উদ্ধৃত করতে হয় না।
নোট করে পড়ার বিশেষ কোনো প্রয়োজন নেই৷ এতটা সময় পাবেন না৷ বরং কোন প্রশ্নটা কোন সোর্স থেকে পড়ছেন, সেটা লিখে রাখুন৷ রিভিশন দেয়ার সময় কাজে লাগবে৷ বাংলাদেশের সংবিধানের ব্যাখ্যা, বিভিন্ন সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, উইকিপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া, ন্যাশনাল ওয়েব পোর্টাল, কিছু আন্তর্জাতিক পত্রিকা ইত্যাদি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখুন৷ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে রাখুন৷ প্রয়োজনমত পরীক্ষার খাতায় রেফারেন্স উল্লেখ করে উপস্থাপন করুন৷
কোনভাবেই কোনো প্রশ্ন ছেড়ে আসবেন না৷ উত্তর জানা না থাকলে ধারণা থেকে অন্তত কিছু না কিছু লিখে আসুন৷ ধারণা না থাকলে, কল্পনা থেকে লিখুন। কল্পনায় কিছু না এলে প্রয়োজনে জোর করে কল্পনা করুন! আপনি প্রশ্ন ছেড়ে আসছেন, এটা কোন সমস্যা না৷ সমস্যা হল, কেউ না কেউ সেটা উত্তর করছে৷
মাঝে মাঝে বিভিন্ন টপিক নিয়ে ননস্টপ লেখার প্র্যাক্টিস করুন৷ বিভিন্ন বিষয়ে পড়ার অভ্যাস বাড়ান৷ এতে আপনার লেখা মানসম্মত হবে৷ কোনো উত্তরই মুখস্থ করার দরকার নেই৷ বরং বারবার পড়ুন, বিভিন্ন সোর্স থেকে৷ ধারণা থেকে লেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন৷ কেউই সবকিছু ঠিকঠাক লিখেটিখে ক্যাডার হয় না। রিটেনে সবাই-ই বানিয়ে লেখে। এটা কোনো ব্যাপার না! বরং ঠিকভাবে বানিয়ে লেখাটাও একটা আর্ট। বেড়াল সাদা কী কালো, সেটা বড় কথা নয়। আসল কথা, ইঁদুর ধরতে পারে তো?
আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর গাইড বই কিনে ফেলুন ৪-৫ সেট। আগের বছরের প্রশ্নগুলো খুব ভালভাবে স্টাডি করে বোঝার চেষ্টা করুন কোন কোন ধরণের প্রশ্ন বেশি আসে। কিছু কিছু প্রশ্ন সময়ের সাথে সাথে প্রাসঙ্গিকতা হারায়। সেগুলো বাদ দিন। প্রতিদিন অনলাইনে ৪-৫টি পেপার পড়ার সময় খেয়াল করুন কোন কোন বিষয়সমূহ বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ। সেগুলোকে আলাদা করে ওয়ার্ড ফাইলে সেভ করে রাখতে পারেন। গাইড বইয়ের সাজেশনস আর পেপারের বিভিন্ন আর্টিকেল অনুযায়ী নিজের সাজেশনস নিজেই রেডি করুন। সাজেশনসে বিভিন্ন সময়ে কিছু প্রশ্ন অ্যাড কিংবা রিমুভ করে ৪-৫ সেট সাজেশনস রেডি করবেন।………..contd.
এরপর সাজেশনস ধরে ধরে প্রশ্নগুলো গাইড থেকে, রেফারেন্স বই থেকে, পেপার থেকে পড়ে ফেলুন। সবচাইতে ভাল হয় যদি টপিকগুলো গুগলে সার্চ করে করে পড়েন। প্রয়োজনে টপিকের নাম বাংলায় টাইপ করে সার্চ করুন। গুগলে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর মোটামুটি সব প্রশ্নের উত্তরই পাবেন। উইকিপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া, বিভিন্ন সংস্থার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে প্রশ্নের উত্তর পড়লে সময় বেঁচে যাবে, মার্কসও ভাল আসবে। পেপারে দৈনিক এবং সাপ্তাহিক আন্তর্জাতিক পাতাটি, দ্য হিন্দু, দি ইকনোমিস্ট, টাইমস অব ইন্ডিয়া, টাইম সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পত্রিকা থেকে প্রয়োজনীয় আর্টিকেলগুলো পড়তে পারেন।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে যাঁরা লেখেন, এরকম ১৫-২০টি নাম ডায়রিতে লিখে রাখুন। পাশে ছোট করে লিখে ফেলুন কে কোন ধরণের বিষয় নিয়ে লেখেন। উদ্ধৃতি দেয়ার সময় কাজে লাগবে। ইন্টারনেট ঘেঁটে বিভিন্ন বিষয়ের উপর বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্য, সমালোচনা পড়ে নিন। কিছু প্রামাণ্য বই পড়ে ফেলুন। যেমন, আবদুল হাইয়ের আন্তর্জাতিক সংগঠন, সম্পর্ক ও পররাষ্ট্রনীতি, তারেক শামসুর রেহমানের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক; এরকম আরও কিছু। প্রয়োজনমত প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় প্রাসঙ্গিকভাবে ব্যবহার করলে উপস্থাপনা সুন্দর হবে। বিভিন্ন ম্যাপ, ডাটা, চার্ট, টেবিল, পর্যালোচনা, নিজস্ব বিশ্লেষণ, সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে সেটির প্রাসঙ্গিকতা ইত্যাদির সাহায্যে লিখলে আপনার খাতাটি আলাদা করে পরীক্ষকের চোখে পড়বে।
প্রশ্ন অতো কমন পড়বে না। তাই রিডিং হ্যাবিট বাড়ানো ছাড়া এ অংশে ভাল করা কঠিন। কিছু মুখস্থ করার দরকার নেই। বারবার দাগিয়ে দাগিয়ে পড়বেন। পরীক্ষার হলে নিজের মত করে বানিয়ে লিখে দেবেন। চেষ্টা করবেন, প্রতি পেজে অন্তত একটা উদ্ধৃতি, ডাটা, টেবিল, চার্ট কিংবা রেফারেন্স, কিছু না কিছু দিতে। এই অংশগুলো লিখতে নীল কালি ব্যবহার করতে পারেন। লেখা সুন্দর হলে ভালো, না হলেও সমস্যা নেই, পড়া গেলেই চলবে৷ লিখিত পরীক্ষায় অনেক বেশি দ্রুত লিখতে হয়৷ তাই প্রতি ৩-৫ মিনিটে ১ পৃষ্ঠা লেখার প্র্যাকটিস্ করুন৷
শর্ট কনসেপচুয়াল নোটসঃ আগের বছরের প্রশ্ন, রেফারেন্স বই, গাইড বই, পেপার ঘেঁটে ঘেঁটে কী কী টীকা আসতে পারে লিস্ট করুন। এরপর সেগুলো গুগল করে ইন্টারনেট থেকে পড়ে ফেলুন। সাথে পেপার-কাটিং, ওয়ার্ড ফাইলে সেভ করা পেপারের আর্টিকেল, গাইড বই আর রেফারেন্স বই তো আছেই। এ অংশে উত্তরের শেষে আপনার নিজের বিশ্লেষণ দিলে মার্কস বাড়বে।
অ্যানালাইটিক্যাল কোয়েশ্চেনসঃ যত বেশি সম্ভব তত পয়েন্ট দিয়ে প্যারা করে করে লিখবেন। এ অংশে ১টি ১৫ মার্কসের প্রশ্ন উত্তর করার চাইতে ৪+৬+৫=১৫ মার্কসের প্রশ্ন উত্তর করাটা ভাল। প্রশ্নের প্রথম আর শেষ প্যারাটি সবচাইতে আকর্ষণীয় হওয়া চাই। নীল কালি দিয়ে প্রচুর কোটেশন দিন।…………contd.
বিভিন্ন কলামিস্টের দৃষ্টিকোণ থেকে কোন ইস্যুকে ব্যাখ্যা করে উত্তরের শেষের দিকে নিজের মত করে উপসংহার টানুন। কোন মন্তব্য কিংবা নিজস্ব মতামত থাকলে সেটিও লিখুন।
প্রবলেম সলভিং কোয়েশ্চেনঃ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন, নিরাপত্তা ইস্যু, বাণিজ্য, চুক্তি, জলবায়ু পরিবর্তন, বিদেশি সাহায্য সহ সাম্প্রতিক নানান গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে কিছু কথা লেখা থাকবে কিংবা কোন একটা সমস্যার কথা দেয়া থাকবে। সেটিকে বিশ্লেষণ করে নানা দিক বিবেচনায় সেটার সমাধান কী হতে পারে, আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক এবং আপনার নিজের মতামত ইত্যাদি পয়েন্ট আকারে লিখুন। এটিতে ভাল করার জন্য নিয়মিত পেপার পড়ার কোন বিকল্প নেই।
বিসিএস প্রিলি নিয়ে…….
১০ম থেকে ৩৫তম বিসিএস, ২-৩টা জব সল্যুশন কিনে পিএসসি’র নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নগুলো (সম্ভব হলে, অন্ততঃ ২৫০-৩০০ সেট) বুঝে বুঝে solve করে ফেলুন। দাগিয়ে দাগিয়ে রিভিশন দেবেন অন্তত ২-৩ বার। Read the mind of the question setter, not the mind of the guidebook writer. পেপার, ইন্টারনেট আর রেফারেন্স বই ভালভাবে দেখতে হবে।
দুই সেট রিটেনের গাইড বই কিনে আগের বছরের প্রশ্নগুলো আর সাজেশন পড়ে ফেলুন। যে টপিকগুলো প্রিলির সাথে মিলে সেগুলো সিলেবাস ধরে পড়ে শেষ করে ফেলুন। এতে করে আপনার রিটেনের অর্ধেক পড়া হয়ে যাবে। রেফারেন্স পড়ার সময় আদৌ বইটি পড়ার দরকার আছে কিনা, সেটা বুঝে পড়ুন। রিটেনের শতকরা ৬০ ভাগের বেশি পড়া প্রিলির সাথে মিলে যায়।
বেশিরভাগ স্টুডেন্টই প্রথমে রেফারেন্স বই পড়ে, পরে প্রশ্ন সলভ করা শুরু করে। এখানে ২টা সমস্যা আছে।
এক। বেশি বেশি প্রশ্ন সলভ করার সময় পাওয়া যায় না। যত বেশি প্রশ্ন সলভ করবেন, ততই লাভ।
দুই। রেফারেন্স বইগুলোর বেশিরভাগ অংশই বিসিএস পরীক্ষার জন্যে কাজে লাগে না, অথচ পুরো বই পড়তে গিয়ে সময় নষ্ট হয় এবং বিসিএস নিয়ে অহেতুক ভীতি তৈরি হয়। তাছাড়া অতকিছু মনে রাখার দরকারও নেই।
তাই, উল্টো পথে হাঁটুন। আমিও তা-ই করেছিলাম। একটা প্রশ্নকে আরো ৩টি প্রশ্নের সূতিকাগার বানান। রেফারেন্স বই উল্টাতে কষ্ট হয়, এটা ঠিক। কিন্তু কষ্ট করে এই কষ্টটা করতে পারলে আপনার প্রিলি আর রিটেন দুটোতেই লাভ হবে, এটা আরো বেশি ঠিক।
প্রিলির জন্য কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, কারেন্ট ওয়ার্ল্ড, আজকের বিশ্ব, অর্থনৈতিক সমীক্ষা টাইপের বইপত্র পড়া বাদ দিন৷ একেবারেই সাম্প্রতিক বিষয় থেকে প্রিলিতে প্রশ্ন আসে বড়জোর ৫-৬টা, যেগুলো শুধু ওই বইগুলোতেই পাওয়া যায়৷ এরমধ্যে অন্তত ২টা পেপারটেপার প’ড়ে আনসার করা যায়৷ বাকি ৪টাকে মাফ করে দিলে কী হয়?! এই ৪ মার্কসের এ্যাতো পেইন কোন দুঃখে পাব্লিক নেয়, আমার মাথায় আসে না৷ আসলে, ওই যন্ত্রণাদায়ক বইগুলো পড়লে নিজের কাছে কেমন জানি পড়ছি পড়ছি মনে হয়৷ এটা অতি উচ্চমার্গীয় ফাঁকিবাজির পর্যায়ে পড়ে৷ পড়ার অভিনয় নয়, আসলেই পড়ুন।
একটা ফ্যাক্ট শেয়ার করি৷ কিছু কঠিন প্রশ্ন থাকে যেগুলো বার বার পড়লেও মনে থাকে না৷ সেগুলো মনে রাখার চেষ্টা বাদ দিন৷ কারণ এই ধরণের একটি প্রশ্ন আরো কয়েকটি সহজ প্রশ্নকে মাথা থেকে বের করে দেয়৷ প্রিলিমিনারি হাইয়েস্ট মার্কস্ পাওয়ার পরীক্ষা নয়, স্রেফ কাট-অফ মার্কস পেয়ে পাস করার পরীক্ষা৷ আপনি ১৯০ পেয়ে প্রিলি পাস করা যে কথা ৯০ পেয়ে প্রিলি পাস করা একই কথা। অপ্রয়োজনীয় মার্কসের বাড়তি শ্রম রিটেনের প্রিপারেশন নেয়ার পেছনে দিন, কাজে লাগবে। কে কী পারে সেটা নিয়ে কম ভাবুন। আপনি যা পারেন সেটার চাইতে অন্যরা যা পারে, সেটা শেষ পর্যন্ত বেশি কাজে আসবে, এরকমটা নাও হতে পারে। মনে রাখবেন, কঠিন প্রশ্নেও ১ নম্বর, সহজ প্রশ্নেও ১ নম্বর।
প্রিপারেশন নিচ্ছি নিচ্ছি—নিজেকে এবং অন্য সবাইকে এটা বোঝানোর চাইতে সত্যি সত্যি প্রিপারেশন নেয়া ভালো। ‘প্রিপারেশন প্রিপারেশন ভাব, প্রিপারেশনের অভাব।’ কম্পিটিটিভ এক্সামের প্রিপারেশন নেয়ার ক্ষেত্রে এটা হয়। অনেক পরিশ্রম করে ফেল করার চাইতে, বুঝেশুনে পরিশ্রম করে পাস করা ভালো। আপনাকে প্রত্যেকটা segment-এ খুব ভালো কিংবা মোটামুটি ভালো করতে হবে। কাজেই preparation নেয়ার সময় আপনি যা পারেন, শুধু সেটার উপরেই পুরো effort দেয়া যাবে না। আমার টেকনিক হল, আমি যা পারি সেটার বেশিবেশি যত্ন নিই, যাতে অন্যদের চাইতে অনেকবেশি সুবিধা আমি সেটাতে নিতে পারি। তবে তার আগে দেখে নিই, যেটা বেশি পারি, সেটা আদৌ সুবিধা নেয়ার মতো কিছু কিনা। ধরুন, ক্লিনটনের ওয়াইফের বান্ধবীর পোষা কুকুরের নামও আপনার মুখস্থ, কিন্তু আমার নানার একটা কালো কুকুর ছিল’কে ইংলিশে লিখেন, My grandfather was a black dog……… কোনো কাজ হবে না।
প্রথমবারের কাজ ভালো হয় না? কে বললো একথা? আমি প্রথমবারে ক্যাডার হয়েছি। এরকম আরো অসংখ্য নজির আছে। পথের পাঁচালি (বিভূতি ও সত্যজিৎ), নাগরিক, The 400 Blows কিংবা Wuthering Heights, The Catcher in the Rye, To Kill a Mockingbird, The Kite Runner-এর গল্প। বিসিএস পরীক্ষার মতো বিরক্তিকর পরীক্ষা আরেকবার দিতে হবে, এটা ভাবতে ভয় লাগে না? শুধু এইজন্যেই তো পড়াশোনা করা যায়। সবার মতো আপনাকেও বারবার বিসিএস দিতে হবে কেনো? তবে এখানে luck favour করা না-করার কিছু ব্যাপারও ঘটে। যারা ক্যাডার হয়, তারা একই সাথে যোগ্য ও সৌভাগ্যবান।
অনেকেই বলবে, আমার তো অমুক অমুক প্রশ্ন পড়া শেষ! ব্যাপারটাকে সহজভাবে নিন৷ আপনার আগে কেউ কাজ শেষ করলেই যে শেষ হাসিটা উনিই হাসবেন—এমন তো কোন কথা নেই৷ আর কেউ আপনার চাইতে বেশি পড়াশোনা করলে সেটা তো আর আপনার দোষ না। আমি বিসিএস পরীক্ষার জন্যে প্রস্তুতি শুরু করতে গিয়ে দেখলাম, অনেকের অনেককিছু পড়া শেষ। 3 Idiots তো দেখেছেন। বন্ধুর খারাপ রেজাল্টে যতোটা মন খারাপ হয়, বন্ধুর ভালো রেজাল্টে তার চেয়ে বেশি মেজাজ খারাপ হয়। যখন দেখলাম, আমি অন্যদের তুলনায় বলতে গেলে কিছুই পারি না, তখন আমি ২টা কাজ করলাম।
এক। বোঝার চেষ্টা করলাম, ওরা যা পারে, সেটা পারাটা আদৌ দরকার কিনা?
দুই। ওদের সাথে নিজেকে কম্পেয়ার করা বন্ধ করে গতকালকের আমি’র সাথে আজকের আমি’কে কম্পেয়ার করা শুরু করলাম।
গ্রুপ স্টাডি করা কতোটুকু দরকার? এটা আপনার অভ্যেসের উপর নির্ভর করে। আমার নিজের এই অভ্যেস ছিলো না। আমি গ্রুপ স্টাডি করতাম না ২টা কারণে।
এক। যখন দেখতাম, সবাই অনেককিছু পারে, যেগুলোর কিছুই আমি পারি না, তখন মনমেজাজ খারাপ হতো। আমি পারি না, এটা ভাবতে ভালো লাগে না। The Pursuit of Happyness এর ডায়লগটা মনে আছে তো? আপনি পারেন না, সবার কাছ থেকে এটা শুনে, বুঝে আপনার কী লাভ? সবাই এটা বললে তো আর আপনি বেশি পারতে শুরু করবেন না, বরং আপনার বেশি পারার ইচ্ছেটা কমে যেতে পারে।
দুই। সবার সাথে পড়লে বেশি বেশি গল্প করতে ইচ্ছে করতো, আর মনে হতো, ওরা যেটা করছে সেটা ঠিক, আমার নিজেরটা ভুল। অন্ধ অনুকরণ করতে ভালো লাগে না।
মাঝে মাঝে পড়তে ইচ্ছে করবে না, আমারও করত না৷ সারাক্ষণ পড়তে ইচ্ছে করাটা মানসিক সুস্থতার লক্ষণ না৷ Why so serious? Job for Life, not Life for Job. বিসিএস ক্যাডার হতেই হবে, এমন তো নয়! আপনার রিজিক আগে থেকেই ঠিক করা আছে। কতোকিছুই তো করার আছে! তাই, ব্রেক নিন, পড়াকে ছুটি দিন৷ মাঝেমধ্যেই৷ রুমের দরোজাজানালা বন্ধ করে ফুল ভলিয়্যুমে মিউজিক ছেড়ে সব ভাবনা ঝেড়ে ফেলে নাচুন! ইচ্ছেমতো গলা ফাটান! কী আছে আর জীবনে! দু’দিন পড়া হলো না বলে মন খারাপ করে আরো দু’দিন নষ্ট করার তো কোনো মানে হয়না৷ ভুল না করে শিখেছে কে কোথায় কবে? অনুশোচনা করার সময় কোথায়? আপনি তো আর পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভুলটি করে বসেননি! আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে দুঃখী মানুষটিও নন!
আইবিএ ভর্তি পরীক্ষার সাতসতেরো
আইবিএ’র বিবিএ+এমবিএ, বিআইবিএম’এর এমবিএম, ডিইউ’র ইএমবিএ, প্রাইভেট ভার্সিটির এমবিএ ভর্তি পরীক্ষার বিগত সব বছরের প্রশ্ন (সব না হলেও, অন্তত ১০-১৫ বছরের) ভালোভাবে বুঝে সলভ্ ক’রে ফেলুন৷ প্রশ্নের ধরণ সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা নিন৷ এটা প্রস্তুতি শুরু করার প্রথম ধাপ৷
একটা secret শেয়ার করি। সাধারণত ৫০% এর উপরে কোনো segment-য়েই cut-off marks থাকে না। তাই, চেষ্টা করবেন, যাতে সব segment-এ অন্তত ৫০% মার্কস পেয়ে viva board পর্যন্ত পৌঁছানো যায়।
কম্পিটিটিভ এক্জামগুলোতে ভালো করার ক্ষেত্রে প্রিপারেশনের চাইতে প্রিপেয়ার্ডনেসটা বেশি কাজে লাগে৷ I’m the best, এই ভাবটা এক্জাম হলে ধ’রে রাখুন৷ এটা ম্যাজিকের মতো কাজ করে!
Time Management. Because it does matter! এখন দেখা যাক, এর মানে কী? ২টা ব্যাপার মাথায় রাখবেন।
যতটুকুই প্রিপারেশন নিন না কেনো, এর maximum utilization করতে হবে। প্রস্তুতি নেয়া বড় কথা নয়, প্রস্তুতিকে ঠিকভাবে কাজে লাগানোই বড় কথা।
আপনাকে প্রত্যেকটা segment-এ আলাদা আলাদাভাবে পাস করতে হবে। কাজেই আপনি যা পারেন, শুধু সেটার উপরেই পুরো effort দেয়া যাবে না। তাই, সময়টাকে ভাগ করে নেবেন। পুরো সময়ের দুই-তৃতীয়াংশ সময়ে যা যা পারেন, সব answer করে ফেলবেন। বাকি সময়ে left-out প্রশ্নগুলো answer করবেন।
আইবিএ ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে বেশি বেশি questions solve করুন। প্রশ্ন বুঝে বুঝে অনলাইনে নিয়মিত GRE+GMAT-এর প্রশ্ন সলভ্ ক’রতে পারেন৷ (সবগুলো নয়, যেগুলো পরীক্ষায় আসে, সেগুলো৷)
এখন কোনটা কোন বই থেকে কতোটুকু পড়বেন, সেটা নিয়ে কিছু বলছি।
Verbal part
Vocabulary. এটার জন্যে Barron’s GRE Wordlist, Word Smart দেখতে পারেন। হাতে সময় কম থাকলে বাজারের বইগুলোও দেখতে পারেন।
Analogy part’টা GRE Big Book (old edition) থেকে দেখতে পারেন। কষ্ট কমাতে ২-১টা গাইড কিনে পড়তে পারেন।
Sentence completion এর জন্যে GRE Big Book (old edition) দেখতে পারেন।
Comprehension part-টা IELTS-এর বই থেকে পড়লে লাভ হবে।
Error Finding part-টা পড়বেন TOEFL-এর বই থেকে (যেমন, Cliff’s TOEFL)। Barron’s TOEFL-এর Essential Grammatical Rules অবশ্যই পড়ে নেবেন।
Mathematics
S@ifur’s Math, S@ifur’s Geometry, NOVA’s GRE এই বইগুলো থেকে সলভ করতে পারেন। সময় পেলে ARCO SATও দেখতে পারেন।
Analytical Analysis
Puzzle/Logical inference-এর জন্যে Official GMAT দেখতে পারেন। বাজারের ২-১টা বইও সাথে রাখতে পারেন।
Critical Reasoning-এর জন্যে GRE Big Book থেকে ছোটো ছোটো comprehension + Official GMAT দেখতে পারেন।
আইবিএ’র ভাইভা নিয়ে পরে কথা আছে।
Tips. লেখার স্টাইল ডেভেলাপ করার জন্য ডি এন ঘোষের College Essays বইটা নেড়েচেড়ে দেখবেন নাকি একটু?
Viva: the art of selling yourself
BCS + IBA
Have a look!! (ভিডিও ক্লিপ)
আসলে ভাইভা এক্জামের কোনো প্যাটার্নই নাই। ভাইভার মার্কস্ ম্যাটার করে, এধরণের ভাইভা আমি দিয়েছি এপর্যন্ত ২ জায়গায়। আইবিএ ভাইভা আর বিসিএস ভাইভা। আইবিএ’র ভাইভা বোর্ডে ছিলাম ১৮-২০ মিনিট, বিসিএস-এ ৪-৫ মিনিট। কতক্ষণ ওখানে রাখলো, কী জিজ্ঞেস করলো, কী কী পারলাম, কী কী পারলাম না, এগুলো অতটা মুখ্য নয় যতটা ভাবা হয়। অলস্ ওয়েল দ্যাট এন্ডস্ ওয়েল।
আমার মনে হয়েছে, ভাইভা ব্যাপারটা যতটা অবজেকটিভ, তার চেয়ে অনেক বেশি সাবজেকটিভ। আমাদের অভিজ্ঞতা কী বলে? কাউকে কাউকে দেখলে কথা বলতেও হিসাব করে বলতে হয়। আবার কাউকে কাউকে দেখলে কষে দুইটা চড় মারতে ইচ্ছা করে। মারতে না পারলে কেমন যেনো অস্বস্তি লাগে। ভাইভা দেয়ার সময় মাথায় রাখবেন, আপনাকে চাকরি দিতে কেউ বাধ্য নন। আপনি অপরিহার্যও নন। ভাইভাতে ভালো করার জন্যে প্রিপারেশন থেকে প্রিপেয়ার্ডনেসটাই বেশি জরুরি। প্র্যাকটিস তো সবাই-ই করে, তবুও সেঞ্চুরিটা কিন্তু টেন্ডুলকারের ঝুলিতেই যায়। সেইদিনটা আপনার কিনা সেটা অনেকটাই আপনার ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়।
আপনি কী জানেন তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমার ইমপ্রেশন কী হলো আপনার জানার সম্পর্কে। সাধারণত একজন ব্যক্তিকে দেখার প্রথম ২০ সেকেন্ডের মধ্যে তার সম্পর্কে একটা ইম্প্রেশন জন্মে, সেটা ইতিবাচকও হতে পারে, নেতিবাচকও হতে পারে। এটাকে কাজে লাগান। You will never get a second chance to make the first impression. সবাইকে দেখলে সবকিছু বলা যায় না, বলতে ইচ্ছেও করে না। কাউকে কাউকে দেখলে তাজমহল কীভাবে প্রেমের সাক্ষর বহন করে চলেছে, সেটা জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে; আবার কাউকে কাউকে দেখলে তাজমহলের ইটের সংখ্যা জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে। কারো কারো অ্যাপিয়ারেন্স অ্যাটিচিউড দেখলে পদ্মা নদীর দৈর্ঘ্য জিজ্ঞেস ক’রতে ইচ্ছা করে, আবার কারো কারো কাছ থেকে পদ্মার বুকে নৌকায় ভাসতে ভাসতে চাঁদের আলো ছুঁয়ে দেখার গল্প শুনতে ইচ্ছে করে। কিংবা পদ্মাপাড়ে প্রেমিকার হাত ধ’রে হাঁটবার গল্প। অথবা অন্য কোনোকিছু, যা বলতে কিছু জানতে হয় না, অথচ সবকিছুই জানিয়ে দেয়া যায় খুব সহজে। Sell yourself. অন্য একজনকে না দিয়ে আপনাকে কেনো চাকরিটা দিলে ভালো হয়, সেই ব্যাপারে উনাদেরকে convince করুন। Wipro’র example. BCS Foreign Affairs-এর ভাইভার ২টা examples.
যাঁরা ভাইভা বোর্ডে থাকেন, তাঁরা সত্যিই অনেক বেশি এক্সপেরিএন্সড আর এক্সপার্ট। উনারা খুব ভালো করেই বোঝেন আপনি কী বলছেন, কী লুকাচ্ছেন। Cheating is an art. Catch me if you can! A clever man knows how to cheat, an intelligent man knows how to make others let him cheat. আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো সাহিত্য থেকে! কেনো?
এক্সপেরিয়েন্স বলে, ভাইভাতে ভালো করার অন্ততঃ একশো টেকনিক আছে যেগুলোর একটাও কাজ করে না৷ যা সঞ্চয় করবেন, তার চেয়ে বেশি কাজে লাগবে যা সঞ্চয়ে আছে৷ আপনি যেরকম, সেটাকেই সুন্দরভাবে উপস্থাপন করুন। আত্মবিশ্বাস ভেঙে দেয় কিংবা আপনাকে আপনার মতো থাকতে দেয় না, এমন কিছু শুনবেন না, করবেন না৷ Be yourself. Be natural.
সিভিল সার্ভিসে একটাই Rule: Obey or Leave! অন্যান্য চাকরিতেও, What is, is the rule; not, what should be. আপনাকে বিপ্লব ঘটানোর জন্যে চাকরি দেয়া হবে না। আপনি যেমন মানসিকতারই হোন না কেনো, আপনি এটা প্রমাণ করুন যে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনের সাথে আপনি মানিয়ে নিতে পারবেন। ভাইভা বোর্ডে যারা থাকেন, তাঁরা কিন্তু ওইসময়ের জন্যে আপনার বস। আপনি কোনোভাবেই আপনার বসের চাইতে স্মার্ট নন। বসের সাথে কোনোধরণের মান-অভিমান করা যাবে না। সকল মান-অভিমান জমিয়ে রাখুন আপনার প্রিয়তম কিংবা প্রিয়তমার জন্যে।
ভাইভা বোর্ডে যে যে ব্যাপারগুলো দেখা হয় বলে আমার কাছে মনে হয়েছে —
Positive Attitude
Body Language
Mental Maturity
Ready Wit
Thought Clarity
Decent Appearance
Etiquette
Commonsense
Cool Temperament
English Fluency
Situation Handling Capability
Analytical Skill
নার্ভাসনেস থাকবে না, এটা হয় না৷ থাকবেই৷ ওটা কাটানোর কিছুটা দায়িত্ব সিচ্যুয়েশনের উপরে ছেড়ে দিন৷ আমার ক্ষেত্রে নার্ভাসনেস আমাকে ভালো মার্কস পেতে হেল্প করেছিলো। ঘটনাটা বলি। BCS Police’এর ভাইভার আরেকটা ঘটনা। A knife kills. Well, a knife saves too!
ভাইভা বোর্ডে আপনার সাথে যদি দুর্ব্যবহার করা হয়, তাহলে সেটাকে পারসনালি নেয়ার কিছু নাই। এখানে যা কিছুই করা হয়, প্রত্যেকটার পেছনে উদ্দেশ্য থাকে আপনাকে judge করা। BCS Admin’এর ভাইভার ঘটনা।
ভাইভা’র সময় আই কনট্যাক্ট রাখুন৷ অন্য দিকে তাকিয়ে কথা বলা কোনো কাজের কথা না৷ তাছাড়া, স্যারদের ইনস্ট্যান্ট এক্সপ্রেশন জানতেও এটা জরুরি।
বিসিএস পররাষ্ট্র ফার্স্ট চয়েস থাকলেই যে ভাইভা ইংলিশে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। ফরেনের অনেকেই ৫০% এর বেশি বাংলায় ভাইভা দিয়ে ক্যাডার হয়েছে। আমার ফার্স্ট চয়েস ছিলো কাস্টমস, অথচ আমার ৮৫ ভাগ ভাইভা হয়েছে ইংলিশে।
ভাইভা দিতে যাওয়ার সময় কিংবা ভাইভা দিতে ঢোকার আগমুহূর্তে ভাইভা নিয়ে পড়াশোনা না করাই ভালো। এতে নার্ভাসনেস বাড়ে। ভাইভা দেয়ার পর যারা ক্যাডার হতে পারেন, তাদের সাথে, যারা ক্যাডার হতে পারেন না, তাদের পার্থক্য সবচে’ বেশি—ভাগ্যে!
যারা আগে ভাইভা দিয়েছেন, উনাদের সাথে কথা বলুন, কী কী টাইপের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয়, সেটা সম্পর্কে একটা ফেয়ার আইডিয়া নিন। সবাই যেভাবে বলে, সেভাবে না বলে একটু ভিন্নভাবে উত্তরটা নিজের মধ্যে সাজিয়ে নিন। Presentation matters! Try to read the mind of the interviewer. আপনি কী বলতে চাচ্ছেন, তার চাইতে গুরুত্বপূর্ণ হল, উনারা যা শুনতে চাচ্ছেন, আপনি সেটা বলতে পারলেন কিনা। আপনি কী বললেন, সেটা নয়, আপনি সেই কথাটা কীভাবে বললেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ। Hiding is an art. ইউফেমিজম্ শিখুন৷ যেমন ধরুন, যদি আপনাকে আপনার নিজের একটা দুর্বল দিক সম্পর্কে বলতে বলা হয়, তবে আপনি এমনভাবে উত্তরটা দেবেন যাতে এটা আপনার সম্পর্কে খুব বেশি নেতিবাচক কিছু না দেখায়। (আমাকে আইবিএ’তে এটা জিজ্ঞেস করেছিলো) কিংবা, বাংলাদেশের কিছু সমস্যার কথা জিজ্ঞেস করলে এমন কিছু বলার চেষ্টা করবেন, যেগুলো সমাধানে ইতিমধ্যেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নিজের ফ্যামিলি, আগের জব, ক্যারিয়ার প্রসপেক্ট ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ইতিবাচকভাবে বলার চেষ্টা করুন। যদি দেখেন, হঠাৎ খেই হারিয়ে ফেলছেন, একটু থেমে থেমে ভেবে আস্তেধীরে উত্তর দিন। কথা বলার সময় হাত-ঘাড়-চোখ দৃষ্টিকটুভাবে নাড়াবেন না।
যদি কোনো প্রশ্ন উত্তর দেয়ার মাঝখানে অন্য কেউ প্রশ্ন করেন, তাহলে যিনি প্রথমে প্রশ্ন করেছেন, উনার পারমিশন নিয়ে পরের প্রশ্নটার উত্তর দিতে হবে।
মাঝে মাঝে Ted Talks শুনতে পারেন, Youtube সহ অনেক সাইটে দেয়া জব ইন্টারভিউগুলো শুনতে পারেন। বিটিভির রাত ১০টার ইংরেজি সংবাদ শুনতে পারেন। CNN, Al Jazeera শুনুন। সাবটাইটেল অন করে American accent এর মুভিগুলো দেখতে পারেন। কোনো বন্ধুর সাথে মাঝে মাঝে ইংলিশে কনভারসেশন প্র্যাকটিস করতে পারেন। তবে ভুলেও এমন কোনো পণ্ডিতের সাথে এই কাজটা করবেন না, যে শুধু ভুলই ধরিয়ে দেয়। ও বেশি জানে, এটা জেনে-বুঝে আপনার কী লাভ?
আপনার ভাইভার ডেটের আগের ১ সপ্তাহের কয়েকটা পেপারে নিয়মিত চোখ রাখুন। সাম্প্রতিক বিষয়, মুক্তিযুদ্ধ, নিজের সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখুন।
মাঝে মাঝে স্মার্টনেস না দেখানোটাই স্মার্টনেস৷ আপনাকে দেখার পর যে ফার্স্ট ইম্প্রেশন তৈরী হয়, সেটার উপর আপনার ভাইভার প্যাটার্ন অনেকটাই নির্ভর করে৷ নিজেকে gentleman/ lady হিসেবে উপস্থাপন করুন।
ভাইভা বোর্ডে কোনো বিষয় নিয়েই তর্ক করবেন না। Boss is always right! মানিক বড়? নাকি, বঙ্কিম বড়? আমার নিজের গল্প। বসের সাথে অনেক কায়দা করে টেনিস খেলায় হারার গল্প।
যেকোনো ভাইভা এক্সামে ২ ধরণের প্রশ্ন থাকে।
Informative
Non-informative
সাধারণত ২য় ধরণের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার স্টাইলের উপর স্যারদের বেশি emphasis থাকে। ভাইভাতে এরকম কিছু নেই যে, এতোটা পারলাম, এতো মার্কস দেয়া হবে, মানে ভাইভাতে কোনো segmented marking হয় না; বরং overall performance-এর উপর নম্বর দেয়া হয়। আপনি অনেক প্রশ্নের উত্তর করতে পারলেই যে অনেক মার্কস পাবেন, এমন নয়।
ইংলিশে উত্তর দেয়ার সময় যদি আপনার কোনো কথায় কোনো ভুল খেয়াল করেন, তাহলে থেমে গিয়ে সেটাকে শুধরে দেয়ার দরকার নাই। কথা হচ্ছে তীরের মতো, একবার ছুটে গেলে সেটাকে থামাতে গেলে হাত রক্তাক্ত হবে। হয়তো বা, স্যাররা আপনার ভুলটা খেয়ালই করেননি। কী দরকার আপনি নিজ থেকে বলে দেয়ার? লোকে ইংরেজি না পারার কারণে যতোটা ভুল করে তার চেয়ে বেশি ভুল করে ইংরেজিতে কথা বলতে পারবো না, এই ভয়ের কারণে। যতোটুকু সম্ভব, কথায় আঞ্চলিকতা পরিহার করুন।
সিভিল সার্ভিস, আপনার সাবজেক্ট, ক্যাডারের ফার্স্ট আর সেকেন্ড চয়েস সম্পর্কে ফেয়ার আইডিয়া রাখুন৷ আপনি কেন চাকরিটা চাইছেন, সেটার উত্তর রেডি রাখবেন। IBA’র ক্ষেত্রে আপনি কেনো MBA করতে চাইছেন, সেটার উত্তর রেডি রাখবেন। ঠিক উত্তর দেয়ার চাইতে উত্তর ঠিকভাবে দেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।
কী জানেন না, সেটা নিয়ে অত ভাববেন না৷ হয়তো আপনাকে ওটা জিজ্ঞেসই করা হবে না৷ Focus on your strength, not on your weakness. আর যদি জিজ্ঞেস করেই ফেলে, আর আপনি উত্তর দিতে পারলেন না, তাতে কী হয়েছে? প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য ভাইভাতে বেশি মার্কস্ বরাদ্দ থাকলে অনেক Parrot-type’য়ের লোকজন চাকরি পেতো৷
নিজেকে উৎসাহী শ্রোতা হিসেবে দেখান৷ চেহারায় একটা ভদ্র ভদ্র টাইপের ভাব ফুটিয়ে তুলুন, যাতে আপনাকে বকা দিতেই কষ্ট লাগে৷ এটা সত্যিই কাজে দেয়৷
ঢোকার সময় হাসিমুখে সালাম এবং বের হয়ে যাওয়ার সময় হাসিমুখে ধন্যবাদ এবং সালাম দিতে ভুলে যাবেন না। আপনার সাথে দেখা হওয়ার সময় এবং আপনি বিদায় নেয়ার সময় আপনার সম্পর্কে ধারণা জন্মে। ইন্টারনেটে non-informative questions নিয়ে প্রিপারেশন নিয়ে রাখতে পারেন। যেমনঃ Imagine You।.. Inquiries About Your Personal Life… মাঝে মাঝে অন্যকেউ হয়ে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করতে পারেন। Imagine yourself as that person you’ve always dreamt being of.
আড্ডা শেষ হোক গল্পে ……..
প্রথম গল্প:
একটা কাক গাছের উঁচু ডালে কোন কাজ না করে অলসভাবে বসে ছিল৷ ঠিক সে সময়ে ওই পথ দিয়ে এক খরগোশ যাচ্ছিলো৷ খরগোশ কাককে জিজ্ঞেস করল, “আচ্ছা ভাই, আমিও কি তোমার মতো কোন কাজ না করে এই গাছের নীচে বসে থাকতে পারি?” কাক বলল, “নিশ্চয়ই পারো!” খরগোশ তা-ই করল৷
কিছুক্ষণ পর সেই পথ দিয়ে এক শেয়াল যাচ্ছিল৷ শেয়াল খরগোশটাকে বসে থাকতে দেখে খপ্ করে ধরে খেয়ে ফেলল৷
এই গল্পের lesson কি? lesson হলো, যখন আপনি এতটা উঁচু আসনে বসে আছেন যে, কেউ আপনাকে ছুঁতে পারবে না, তখন আপনি হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে পারেন৷ তবে, এর আগে পরিশ্রম করে আপনাকে সেই আসনে বসার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে৷ ভাবুন, আপনারা এখন কোন আসনটাতে বসে আছেন৷
দ্বিতীয় গল্প:
শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে একটা ছোট্ট পাখি সাইবেরিয়া ছেড়ে যাচ্ছিল৷ হঠাৎ পাখিটা জমে গিয়ে বরফের টুকরোর মতন টপ্ করে মাটিতে পড়ে গেল৷ বেশ কিছু সময় পড়ে সেই পথ দিয়ে একটা গরু হেঁটে যাওয়ার সময় পাখিটার উপর মলত্যাগ করল৷ কিছুক্ষণ পর গোবরের উষ্ণতায় পাখির গায়ের সমস্ত বরফ ঝরে গেল৷ পাখিটা তখন খুশীতে গান গাইতে শুরু করল৷ কাছেই একটা বেড়াল বসেছিল৷ গান শুনে বেড়ালটা গোবর থেকে পাখিটাকে বের করে খেয়ে ফেলল৷
এই গল্পের lesson গুলো কি কি?
প্রথম lesson হলো, Not everyone who drops shit on you is your enemy. এর মানে হল, যারা আমাদের উপরে ময়লা ছিটিয়ে দেয় অর্থাৎ আমাদের বকা-ঝকা করেন, তাদের সবাই কিন্তু আমাদের শত্রু নন; অনেকেই আমাদের ভালো চান৷ এই দলে আছেন, আমাদের বাবা-মা, সিনিয়ররা, স্যাররা৷
দ্বিতীয় lesson হলো, Not everyone who gets you out of shit is your friend. এর মানে হল, অনেকেই আছেন যাঁরা আমাদের বিপদ থেকে মুক্ত করার কথা বলে হাত বাড়িয়ে দিয়ে আরো বড় বিপদে ফেলে দেন৷ এই দলে আছেন, আমাদের আশে-পাশের সেইসব মহাপণ্ডিত ব্যক্তিরা, যাঁরা বলেন, “বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে আর কি হবে? তার চেয়ে অন্য কিছু কর৷” অথবা বলেন, “তোমাকে দিয়ে বিসিএস হবেনা৷”আমি মনে করি, If you cannot help a person to do something, you have no right to demoralize him/her saying that he/she cannot do it.
আমার মনে হয়, তৃতীয় lesson টাই সবচেয়ে important. সেটি হলো, When you are in the shit, always keep your mouth shut!! এর মানে হল, যখন আপনি বিপদে আছেন, তখন সবসময় আপনার মুখ বন্ধ রাখবেন৷ Success talks the loudest. Success can buy silence. আপনার সাফল্য সবার মুখ বন্ধ করে দিতে পারে৷ তাই, নিজের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিন; অন্যদের প্রতি নয়৷
no easy day, the only easy day was yesterday
Good Luck!
শেষ হইয়াও হইল না শেষ
The Friendship Rule :
বস্! ‘ব্লক’ বাটনটা এখানে!!
সাঙ্ক কস্ট : কফি ও সিনেমার গল্প
Let it GO!! (ভিডিও ক্লিপ)
প্রশ্নোত্তর পর্ব
সবাইকে ধন্যবাদ