কবিতার মৃত্যু

ভাত খাচ্ছিলাম।
কয়েকটা গ্রাস পেটে চালান দিতেই
দুই-একটা শব্দ মাথায় এল,
যা দিয়ে একটা কবিতার জন্ম হতে পারে।




ভাবলাম, এখন আমি কী করব?
খাওয়া ছেড়ে উঠে যাব?
না কি হাত ধুয়ে-মুছে এঁটোমুখে শব্দগুলো কোথাও লিখে রাখব?
না কি মুঠোফোনের রেকর্ডারটা অন করে ওখানে রেখে দেবো?
না কি আমার সামনে বসা যে কারুর কাছে জমা রাখব শব্দগুলো?
না কি কবিতার এই ভ্রূণটিকে মাথার ভেতরে সুরে-বেসুরে আওড়ে যাব...খাওয়া শেষ হ‌ওয়া অবধি?




আমি এইসবের কিছুই করলাম না,
কিংবা করতে পারিনি।
মনে হলো, আমার কবিতা দিয়ে কার কী এসে যায়?
মনে হলো, "সামান্য" কবিতা নিয়ে এমন পাগলামি দেখে যদি কেউ ফিক করে হেসে ওঠে?
মনে হলো...না, আমার সত্যিই মনে পড়ছে না, ঠিক কী মনে হয়েছিল।
বোধ হয়, অলেখা সকল কবিতার স্বাভাবিক মৃত্যুর প্রক্রিয়াটি ঠিক এরকমই---
কবর এবং আঁতুড় একই স্থানে।




এভাবেই আমার অনেক কবিতা
জন্মের আগেই ঠায় মরে গেছে।
ওরা সবাই হারিয়ে গেছে...
ঠিক সেই মেয়েটির মতো, যাকে আমি চোখে চোখে রাখতে রাখতেই হারিয়ে ফেলেছিলাম;
ঠিক সেই জায়গাটির মতো, যেখানে যাব যাব করেও আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি মনের ভুলে;
ঠিক সেই মুহূর্তটির মতো, বাঁচি বাঁচি করেও যেখানে আজ‌ও বাঁচা হলো না।




যা লিখেছি খাতায়,
যা লিখেছি মাথায়,
যার জন্ম দিয়েছি,
যার জন্ম দিতে ব্যর্থ হয়েছি...ব্যস্ততায় কিংবা আলস্যে,
তার সব কিছুকে নিয়েই বেঁচে আছি।