একাকিত্বের বিলাসিতা

বিশাল এক বিলাসিতার নাম একাকিত্ব! বিলাসিতা করার সামর্থ্য বা সুযোগ কোনোটাই আমার ছিল না, তবুও একাকিত্বের মোহে পড়ে মৃত্যুকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলছিলাম। মাত্রই তো সেকেন্ড দশেকের দূরত্বে ছিল মৃত্যু!

আমি খুব বুঝেছিলাম, মৃত্যুকে একবার ছুঁয়ে দিলেই আমার নিজেরও একটা নিজস্ব জগৎ থাকবে, যে-জগতে থাকবে মহাকাশসমান নিস্তব্ধতা।

ভাবতেই পরম আবেশে চোখ বুজে আসে। আমি বুঝি, মৃত্যুদেবীর হিমশীতল কোলে এলিয়ে পড়ছি। কিন্তু…চোখ মেলতেই দেখি, মৃত্যু আমায় ছুঁড়ে ফেলেছে পথের ধারে পড়ে-থাকা প্রায় ভেঙে-পড়া স্লাবের উপর, একটা পা ভাঁজ হয়ে আছে আর ডান হাতটা ড্রেইনের নোংরা প্রায় ছুঁই ছুঁই অবস্থায়। কী বীভৎস, কী বীভৎস!

কখনোবা মায়ের ধবধবে শাদা বিছানায়, ক্লান্ত পরিশ্রান্ত ছুঁড়ে-ফেলা ‘আমি’-কে পেয়েছি। চোখ মেলে তাকাই, কোথায় আছি বুঝে ওঠার আগেই দেখি, মৃত্যু আমায় তাচ্ছিল্যের দৃষ্টি ছুড়ে প্রশ্ন করে, “আয়ু-দেবতার গা জড়িয়ে কেমন করে আমায় ছুঁতে আসিস?”

আমি সমস্ত শক্তি জড়ো করে দেবীকে ডাকি…আমায় একটু মৃত্যু দাও, মা! আমার যে বিলাসিতা চাই, একাকিত্বের বিলাসিতা!
Content Protection by DMCA.com