আমি কখনও এসব বলিনি তোমাকে; তুমি কষ্ট পাবে, তাই। কিন্তু আমি তোমাকে জানাতে চাই, আমি তোমাকে ভালোবাসি, অথচ তুমি যখন কাছে আসো, তখন আমি সেখানে তোমার ভালোবাসা অনুভব করতে পারি না কখনও। তোমার আপ্রাণ চেষ্টা থাকে আমাকে সর্বোচ্চ সুখ এনে দেবার, কিন্তু আমি তো শুধু সুখের জন্য তোমার কাছে যাই না। আমি তোমার কাছে গিয়ে তোমাকে খুঁজি, তোমার ভালোবাসা খুঁজি, কিন্তু কোথাও আমি তোমার ভালোবাসা অনুভব করতে পারি না। আত্মা দিয়ে যে যোগাযোগ, সেটা তুমি শরীর দিয়ে কখনও স্থাপন করতে পারবে না। আত্মার প্রশান্তির জন্য তোমাকে আত্মার কাছেই আসতে হবে। তুমি আমার কাছে এলে এমন অমনোযোগী থাকো কেন? তোমার এত তাড়া এত চাপ একপাশে কিছু সময়ের জন্য সরিয়ে রেখে বাকি পৃথিবী থেকে আলাদা হয়ে আমার কাছে আসতে পারো না? টাকাপয়সা যতটা অকপটে খরচ করো, নিজেকে ততটা অকপট করো না কেন? তুমি কি আসলে সুখ পাও এতে? তুমি সশরীরে আমার কাছে না থাকলেই বরং আমি তোমাকে আমার করে বেশি পাই। তুমি যখন আমার সামনে আসো, তখন তোমাকে ভীষণ ফরমাল মনে হয়। মনে হয়, সব কিছুই করছ, কিন্তু কোথাও একটা সূক্ষ্ম দূরত্ব আছে। আমি তো তোমাকে শেকড়ের মতো জড়িয়ে রাখতে চাই, কিন্তু মনে হয়, জোর করে আমি কাউকে পোষ মানাতে চাইছি। আমাকে তুমি কেন বোঝো না? তুমি কি ইচ্ছে করেই অবুঝ হয়ে থাকো, আর আমার আবেগগুলোকে পাশ কাটিয়ে একধরনের স্পেস রাখতে চাও? এতশত অভিযোগের অর্থ এটা না যে আমি তোমাকে জোর করে নিজেকে বদলে ফেলতে বলছি। আমি তোমাকে জানাতে চাইছি, তুমি সব দিক থেকেই আমার কাছে নিরাপদ ও নির্ভার। আমাকে তোমার ছাদের একটুখানি অংশ দিতে পারবে? …একটা আশ্রয়? …একটু ছায়া? যদিও এখন পর্যন্ত এর কোনোটারই বিন্দুমাত্র অভাব নেই আমার, তবুও কেন যেন একধরনের স্পষ্ট প্রকট অভাব আমার সব ঐশ্বর্যকে ঢেকে দেয়! মানুষ এতটা দুর্বল এতটা অপারগ হয় কেন? পৃথিবীর সবচেয়ে শক্ত মানুষটাও কখনও কখনও ভেঙে পড়ে, জানো? কখন পড়ে…তা জানো? আমি ভালো নেই। আমার নিজের একটা মানুষ নেই, যার কাছে যখন-তখন ফোন করে কথা বলা যায়। এই পৃথিবীতে আমি এমন একলা কেন? সবারই তো নিজের বলে একজন থাকে, অধিকার দেখাবার মতো কেউ তো একজন থাকেই…! আমার কেন নেই? আমি কাউকে ধরে রাখতে জানি না কেন? আমার ভেতরে ভালোবাসায় বেঁধে ফেলে আগলে রাখার ক্ষমতাটুকু কেন নেই? কেউ আমার সাথে থাকতে চায় না কেন? আমি এমন কখন হয়ে গেলাম…অথচ আমি টেরই পেলাম না কিছু!