"ন তস্য প্রতিমা অস্তি" (শুক্লযজুর্বেদ ৩২/৩)—ভগবানের কোনো প্রতিমা হয় না। এই বাক্য একদিকে নিরাকার ভাবনার প্রতিচ্ছবি, অন্যদিকে এটি এক অবিরাম বিতর্কের দ্বারও খুলে দেয়।
কেউ বলেন, ভগবান সবকিছুর ঊর্ধ্বে, তাঁকে মূর্তিতে বাঁধা যায় না। আবার কেউ মনে করেন, মূর্তিই সেই মাধ্যম, যার ভেতর দিয়ে মানুষ তাঁর সান্নিধ্য খুঁজে পায়।
কারও কাছে ভগবান এক চেতনা, যিনি ধরা দেন ধ্যানের গভীরতায়।
আবার কারও কাছে প্রতিমা তাঁর রূপ, যেখানে ভক্তি এক রূপ থেকে অন্য রূপে প্রবাহিত হয়।
যিনি যেমন ভাবেন, তিনি তেমনই অনুভব করেন।
পাওলো কোয়েলহো বলেছিলেন, "One is loved because one is loved. No reason is needed for loving." (The Alchemist (1988))
ভালোবাসা সবসময় যুক্তির নিয়ম মানে না।
কখনো এটি আকস্মিক, ব্যাখ্যাতীত—হঠাৎ করেই অনুভূতির ঢেউ হয়ে আসে।
কখনো আবার ছোট্ট ছোট্ট মুহূর্তের মধ্যে গড়ে ওঠে—একটি দৃষ্টি, একটি স্পর্শ, অসুস্থতার সময় কপালে রাখা শীতল হাতের মতো।
একেকজন মানুষ যেমন একেকভাবে ভগবানের অস্তিত্ব অনুভব করেন, তেমনই একেকজন একেকভাবে ভালোবাসা অনুভব করেন।
ভালোবাসা কি তবে একপ্রকারের আধ্যাত্মিকতা?
ভগবান যেমন এক, অথচ তাঁকে উপলব্ধির পথ ভিন্ন, ভালোবাসাও তেমন এক অনুভূতি—
যা কখনো নিরাকার, কখনোবা মূর্ত।
যা কখনো কারণহীন, আবার কখনোবা একমাত্র কারণ হয়ে ওঠে।
যা কখনো নিঃশব্দ, আবার কখনোবা শব্দের গভীরে লুকিয়ে থাকে।
তাহলে, ভালোবাসাও কি একপ্রকারের আধ্যাত্মিকতা নয়?