“কয়েকটা রুটি আর মাছ দিয়ে হাজারো মানুষকে খাওয়ানো”—এটাকে খ্রিস্টধর্মের এক অলৌকিক ঘটনা ধরা হয়। কিন্তু আমি সবসময় খুঁজে দেখি তার অন্য দিক।
আমার চোখে, যিশু মানুষকে শুধু রুটি-মাছ খাইয়ে বাঁচাননি, বরং হাজারো মানুষকে খাইয়েছেন শব্দ দিয়ে। তারা যে-সময়ে ধর্মীয় কর্তৃত্বের দমনচাপে বন্দি ছিল, যিশুর কথা তাদের সেই অন্ধকার থেকে মুক্তির আলো দিয়েছিল। তিনি বলেছিলেন—সত্যই তোমাদের মুক্তি দেবে।
একবার তিনি এমনও বলেছিলেন—“আমার দেহ খাও, আমার রক্ত পান করো।” এতে অনেকে ভয়ে বা ভুল বুঝে তাঁকে ছেড়ে চলে গেল। কিন্তু যিশু আসলে বলতে চেয়েছিলেন—তাঁর কথাগুলো কেবল উপরে-উপরে শুনলে হবে না, গভীর অর্থে, ভেতরের প্রাণে নিতে হবে। কথা মানুষকে বাঁচাতে পারে, মারতে পারে।
আর দশজন গুরুর মতো তাঁরও আকাঙ্ক্ষাও ছিল—মানুষকে চেতনার আলোয় ভরিয়ে তোলা। তিনি বলেছিলেন ঈশ্বর আসলে ভালোবাসা, প্রতিশোধপরায়ণ কোনো ভীতিকর সত্তা নন। “Fear of the Lord” মানে ভয়ে কাঁপা নয়, বরং ঈশ্বরের প্রতি অভিভূত হয়ে বিস্ময় প্রকাশ করা। অহংকার আর কৃত্রিম মতবাদ সরিয়ে রেখে, বুদ্ধির সীমা পেরিয়ে সরাসরি সেই প্রেমকে অনুভব করাই আসল লক্ষ্য—“ঈশ্বরের আসল রূপ হলো প্রেম।”
এই প্রেমের অভিজ্ঞতায় মানুষ একেবারে নতুন হয়ে জন্ম নেয়—যেন এক নতুন মানুষ, ঈশ্বরের উপস্থিতিতে বসবাসকারী।
এ-ই হচ্ছে আসল খাবার। এ-ই রুটি আর মাছ কিংবা সবজি, যা চিরতরে ক্ষুধা-তৃষ্ণা মেটায়।