আশ্বাস

যদি ধরার জন্য আর কারুর হাত না পাও শেষ অবধি, আমি আছি।
যদি কাউকে দেখার তৃষ্ণায় বুক ফেটে যায়, আমি আছি, আমার কাছে এসো আক্ষেপ করতে।
যদি তোমার কোনও সাফল্যে নতুন নতুন মানুষ তোমাকে বন্ধু বলে বসে, তুমি অবাক হতে চাইলে আমাকে ডেকো; আমরা একসাথেই অবাক হব নাহয়।
যদি কখনও ব্যর্থতার মেঝেতে নুয়ে পড়ো, আমার বাড়িতে এসো; আমি মেঝে ধুয়েমুছে চকচকে করে রেখেছি, দু-জনে একসাথেই নুয়ে পড়লাম নাহয় এক বিকেলে।
যদি কখনও কোথাও পালিয়ে যেতে ইচ্ছে হয় একা একা, আমার কাছে এসো। আমি দূরে কোথাও চলে গিয়ে তোমাকে আমার বাড়িতে একলা থাকার সুযোগ করে দেবো, সাথে দেবো নিরাপত্তাও।
যদি কোন‌ও ছুটির দিনে কোথাও যাবার জন্য তৈরি হবার পরে শোনো যে প্রোগ্রাম ক্যান্সেলড, জামা না বদলে আমার কাছে এসে পোড়ো, কেমন? আমি অনেক দিন চা খাই না, একসাথে খাব।
যদি কখনও ভরপেট খাবার পরে হাঁসফাঁস লাগে, জামাকাপড় এলেমেলো করে ঘড়িটা ছুড়ে ফেলে বিছানায় গড়াগড়ি করতে ইচ্ছে হয়, আমার বাড়ি এসো।
যদি কখনও ক্ষুধায় পাগল পাগল লাগে, বাড়িতে রান্না করার কেউ না থাকে, এদিকে চলে এসো।লাউশাক, বেগুনভর্তা, আলুভাজি আর বড়ই দিয়ে টাকি মাছ রেঁধে খাওয়াব। তুমি আসো না বলে এগুলো রাঁধা হয় না, আমিও খেতে পারি না।
যদি কখনও লিখতে ইচ্ছে করে, অথচ কাগজ খুঁজে না পাও, প্রয়োজনে আমি বুক পেতে দেবো, তবুও লেখালেখি ছেড়ে দিয়ো না।
আর যদি কখনও নতুন কিছু পড়তে ইচ্ছে হয়, প্রয়োজনে আমিই লেখক সেজে এটা-ওটা লিখে হাজির করব তোমার সামনে, তুমি এসো।




তুমি তবুও এসো...অজুহাতে, অকারণে, মনের দুঃখে, রাগান্বিত চোখে, বিরক্ত হয়ে, পথের ভুলে, রাগের মাথায়, বুড়োকালে, রিটায়ারমেন্টের পরে, কিংবা হলে হোক আমার মৃত্যুর পরে...




তুমি এসো।
আমি ঘরে খিল দিই না, গেটে তালা দিই না, জানালা বন্ধ করি না, অপেক্ষা করা ছেড়ে দিই না...
তুমি একটা বার অন্তত এসো!