অবিদ্যা-বিদ্যা: ৮৭



যখন সাধক ধীরে ধীরে এই কোষগুলিকে অতিক্রম করেন, তখন তাঁর অন্তর্দৃষ্টি বিকশিত হয়—মন থেকে বুদ্ধি, বুদ্ধি থেকে আত্মা, আত্মা থেকে ব্রহ্মে উত্তরণ ঘটে। এই অতিক্রমণের পরিণতি হলো তুরীয়—“চতুর্থ”, যা কোনো স্তর নয়, বরং সমস্ত স্তরের সাক্ষী। তুরীয়ে সমস্ত শারীরস্থান এক নিঃশব্দ ঐক্যে বিলীন হয়—স্থূল-সূক্ষ্ম-কারণ দেহ, পাঁচ কোষ, তিন অবস্থা—সবই চেতনার অন্তর্গত প্রতিফলন বলে প্রকাশিত হয়।

শ্রী রমণ মহর্ষির “Mouna Upadeśa” বা নীরব উপদেশ মূলত এই ধারণা প্রকাশ করে যে, সত্য জ্ঞান কোনো শব্দ বা চিন্তার মাধ্যমে অর্জনযোগ্য নয়—এটি সরাসরি অভিজ্ঞতার বিষয়। তাঁর শিক্ষায় “Cosmic Anatomy” বা চেতনার আভ্যন্তরীণ স্থাপত্য কোনো তাত্ত্বিক মানচিত্র নয়, বরং এক অভিজ্ঞতামূলক মানচিত্র (experiential cartography)—যেখানে অনুসন্ধানকারী নিজের মধ্যেই সমগ্র বিশ্বচেতনার কাঠামো দেখতে পান।

রমণ মহর্ষি বলেন—“The body is a thought, the mind is a thought, and the world is a thought; all thoughts rise and set in the Self.” অর্থাৎ, দেহ, মন, এবং জগত—সবই চিন্তার রূপ। এগুলি আলাদা বাস্তব নয়, বরং চেতনার ওপর ভেসে ওঠা তরঙ্গমাত্র। যখন মন সক্রিয় থাকে, তখন এই সব চিন্তা-রূপ জগৎ দেখা যায়; কিন্তু যখন মন থেমে যায়, তখন থাকে কেবল চেতনা, যা নিজেই সব চিন্তার উৎস ও আশ্রয়।

এইভাবে, “স্থূল দেহ”, “সূক্ষ্ম প্রাণ” এবং “কারণ মন”—এই তিন স্তরই আসলে মনের বিভিন্ন স্তরে ঘনীভূত প্রকাশ। দেহ হচ্ছে মনের স্থূলীকৃত রূপ, প্রাণ হচ্ছে তার শক্তির গতি, আর কারণ শরীর হচ্ছে সেই অচেতন বীজ, যেখানে চিন্তা নিদ্রিত অবস্থায় থাকে। মহর্ষি দেখিয়েছেন, এই সব স্তর আসলে মন-কেন্দ্রিক, আর মন নিজেই আত্মার আলোকেই প্রতিফলিত।

তাঁর আত্ম-বিচার (Ātma-Vichāra)—“Who am I?” এই প্রশ্নের পদ্ধতি—এই পুরো আভ্যন্তরীণ স্থাপত্যে প্রবেশের পথ। এই প্রশ্ন কোনো বৌদ্ধিক অনুসন্ধান নয়; এটি এমন এক অন্তর্মুখী ধ্যান, যা মনকে নিজের উৎসের দিকে ফিরিয়ে দেয়। যখন কেউ প্রশ্ন করে, “আমি কে?”, তখন মন সমস্ত বহির্মুখ চিন্তা থেকে সরে গিয়ে নিজের কেন্দ্রে মনোনিবেশ করে। চিন্তার তরঙ্গ একে একে থেমে যায়, স্তরগুলি ভেদ হয়—প্রথমে দেহ-বোধ, পরে মন-বোধ, অবশেষে কর্তা-বোধও মিলিয়ে যায়। তখন যা অবশিষ্ট থাকে, সেটি আর কোনো চিন্তা নয়, কোনো অনুভূতিও নয়—সেটি হলো চিদানন্দরূপ আত্মা, বিশুদ্ধ চেতনা ও আনন্দের স্বরূপ।

এই উপলব্ধিতে “Cosmic Anatomy” মানে দাঁড়ায়—এক এমন অভ্যন্তরীণ মানচিত্র, যা কোনো বাহ্যিক মহাবিশ্বের নয়, বরং চেতনার নিজস্ব অন্তর্লীন বিন্যাসের। রমণ মহর্ষির দৃষ্টিতে, মহাবিশ্বের প্রকৃত গঠন চেতনার গঠনেরই প্রতিফলন। তাই আত্মার সন্ধান মানেই মহাবিশ্বের মূলকে স্পর্শ করা, আর মনের নীরবতাই সেই দ্বার—Mouna Upadeśa সেই নীরব চেতনারই শিক্ষা, যেখানে কোনো শব্দ নেই, কিন্তু সমস্ত জ্ঞান নিহিত।

আধুনিক অদ্বৈত ভাবধারায়, যেমন নিসর্গদত্ত মহারাজ, জিড্ডু কৃষ্ণমূর্তি বা রুপার্ট স্পিরা প্রমুখের দর্শনে এই cosmic spiritual anatomy নতুন ভাষায় প্রকাশ পায়। নিসর্গদত্ত বলেন, “Consciousness is the universal solvent—it dissolves everything into itself.” কৃষ্ণমূর্তি বলেন, “In choiceless awareness, the observer and the observed are one.” রুপার্ট স্পিরা বলেন, “Awareness is not in the body; the body is in awareness.” এই সকল উপলব্ধি একটিই সত্য নির্দেশ করে যে—সমগ্র দেহ, মন, জগৎ এবং জ্ঞানের কাঠামো আসলে চেতনারই এক unfolding।

এখানে “Cosmic Spiritual Anatomy” কোনো তত্ত্ব বা দর্শনশাস্ত্রের বিমূর্ত কল্পনা নয়—এটি এক জীবন্ত অভিজ্ঞতা (living experience)। এর অর্থ, মানুষ যখন গভীর ধ্যান বা আত্মস্মরণে প্রবেশ করে, তখন সে নিজের ভেতরেই মহাজাগতিক চেতনার নকশা দেখতে পায়। ব্যক্তিসত্তা তখন মহাজাগতিক চেতনার সঙ্গে একাত্ম হয়, যেন একটি ঢেউ সাগরের সঙ্গে মিলিয়ে যায়—ঢেউ আর সাগরের আলাদা অস্তিত্ব তখন থাকে না।

এই উপলব্ধিতে শরীর, মন, ও আত্মা—সব একে অপরের প্রতিফলন। যেমন একটি ক্ষুদ্র পিণ্ডে (মানবদেহে) মহাবিশ্বের সব উপাদান বিদ্যমান, তেমনি বলা হয়—“যথা পিণ্ডে তথা ব্রহ্মাণ্ডে”—যা ক্ষুদ্র, তা-ই বৃহৎ; যা মানবদেহে, তাই বিশ্বদেহেও। তাই মানুষের এই অভ্যন্তরীণ আধ্যাত্মিক শরীরই (spiritual anatomy) আসলে ব্রহ্মাণ্ডেরই প্রতিরূপ। যখন এই উপলব্ধি স্পষ্ট হয়, তখন ব্যক্তির ভেতরের ও বাইরের ভেদ মিলিয়ে যায়; মন, দেহ, জগৎ, ও চেতনা—সব একাকার হয়ে মিশে যায় এক অখণ্ড, সর্বব্যাপী চিদাকাশে—চেতনার আকাশে।

এই অবস্থাই সহজ সমাধি (Sahaja Samādhi)—অর্থাৎ, স্বাভাবিক সমাধি, যেখানে কোনো জোর বা প্রচেষ্টা নেই। এখানে ধ্যান আর আলাদা কোনো ক্রিয়া নয়; প্রতিটি নিশ্বাস, প্রতিটি দৃষ্টি, প্রতিটি মুহূর্ত নিজেই ধ্যান হয়ে ওঠে। জীবন নিজেই তখন চেতনার প্রবাহ—এক অবিচ্ছিন্ন নীরব সঙ্গীতের মতো, যেখানে ব্যক্তির প্রতিটি অভিজ্ঞতা cosmic consciousness-এর স্পন্দন।

অর্থাৎ, “Cosmic Spiritual Anatomy” আমাদের মনে করিয়ে দেয়—মহাবিশ্ব আমাদের বাইরে নয়, আমাদের মধ্যেই প্রতিফলিত; আর এই উপলব্ধির মুহূর্তেই ব্যক্তি ও ব্রহ্ম, সীমিত ও অসীম, সব এক চিরন্তন নীরব ঐক্যে লীন হয়ে যায়।

এই বোধ বা আত্ম-প্রত্যয়ই অদ্বৈতের চূড়ান্ত উপলব্ধি, যা আধুনিক যুগে বহু মহান সাধক ও দার্শনিক তাঁদের নিজ নিজ ভুবনে পুনর্ব্যাখ্যা করেছেন।

শ্রী রমণ মহর্ষি এই অভ্যন্তরীণ যাত্রাকে এক সহজ অথচ গভীর পথে স্থাপন করেন—যার নাম আত্ম-বিচার (Ātma-Vichāra)। তাঁর শিক্ষা: “Who am I?”—এই প্রশ্নই অবিদ্যা-আবৃত স্তরগুলিকে একে একে দ্রবীভূত করে। তিনি দেখিয়েছিলেন, পঞ্চকোষ-বিবেক কোনো ধ্যানপদ্ধতি নয়, বরং অহং-নিবৃত্তির প্রক্রিয়া—যেখানে “আমি”-চেতনা নিজের উৎসে ফিরে যায়, এবং বুঝতে পারে, “আমি দেহ নই, মন নই; আমি চিরসাক্ষী চেতনা।” তাঁর “Silent Transmission” বা Mouna Upadeśa ছিল সেই নিস্তব্ধ অভিজ্ঞতার প্রতিফলন, যেখানে শব্দ, ভাবনা ও রূপ সব মিলিয়ে যায় চিদাকাশে।

মহর্ষির “Mouna Upadeśa” বা “Silent Transmission” অদ্বৈত বেদান্তের ইতিহাসে এমন এক অনন্য দৃষ্টান্ত, যেখানে শিক্ষা কোনো ভাষা, যুক্তি বা প্রতীক নয়—বরং চেতনার নিঃশব্দ প্রতিসরণ। তাঁর “মৌন” (silence) কেবল বাক্যহীনতা নয়, বরং চিন্তাহীনতা, অহংহীনতা, এমনকি “শিক্ষক-শিষ্য” দ্বৈততারও অতীত এক অস্তিত্বগত অবস্থা। এই নীরবতা কোনো নেগেশন নয়; এটি চেতনার positive plenitude—এক এমন “পূর্ণ শূন্যতা” (pūrṇa śūnya), যেখানে ভাষা, ভাবনা ও রূপ সকলেই তাদের উৎসে লীন হয়ে যায়—চিদাকাশে (cit-ākāśa)।

"চেতনার positive plenitude" কথাটির বাংলা পরিভাষা হলো "চেতনার ধনাত্মক পূর্ণতা" বা "চেতনার ইতিবাচক প্রাচুর্য"। এটি একটি দার্শনিক ধারণা, যা বোঝায় যে, চেতনা (Consciousness) কেবল অস্তিত্বের একটি নিষ্ক্রিয় অবস্থা নয়, বরং এটি সক্রিয়ভাবে, সম্পূর্ণভাবে এবং ইতিবাচকভাবে পূর্ণ ও স্বয়ংসম্পূর্ণ (Self-sufficient)। এই ধারণাটি মূলত নেতিবাচক বা সীমিত সংজ্ঞা থেকে ব্রহ্মকে আলাদা করে—

ইতিবাচক পূর্ণতা (Positive Plenitude): এটি বোঝায় যে, ব্রহ্ম বা পরম চেতনা কেবল 'যা নয়' (যেমন—সীমিত নয়, দুঃখী নয়, জন্ম-মৃত্যুহীন) তা-ই নন; বরং তিনি সৎ, চিৎ ও আনন্দ (Existence, Consciousness, Bliss)—এই তিনটি ইতিবাচক গুণের সমষ্টি। চেতনা সব সময়ই পূর্ণ, অসীম এবং সীমাহীন। এই পূর্ণতা কোনো কিছুর অভাব (Lack) দ্বারা চিহ্নিত নয়, বরং অতিরিক্ততা বা প্রাচুর্য দ্বারা চিহ্নিত।

নেতিবাচক সংজ্ঞা থেকে পার্থক্য (Via Negativa): পশ্চিমা দর্শন বা ভারতীয় দর্শনের কিছু অংশে ব্রহ্মকে প্রায়শই "নেতি নেতি" (Not this, not this) বলে বর্ণনা করা হয়—অর্থাৎ, যা-কিছু সীমিত, তা ব্রহ্ম নয়। কিন্তু "Positive Plenitude" ধারণাটি সেই নেতিবাচক সংজ্ঞা থেকে বেরিয়ে আসে এবং জোর দেয় যে, ব্রহ্মের স্বরূপ হলো আনন্দ (Bliss) ও জ্ঞান (Jñāna)—যা স্বয়ং-প্রকাশিত (Self-revelatory) এবং স্বয়ং-পরিপূর্ণ (Self-complete)। চেতনার ধনাত্মক পূর্ণতা হলো সেই অবস্থা, যেখানে চেতনার অসীমতা, আনন্দ ও জ্ঞানের প্রাচুর্য কোনো কিছুর উপর নির্ভরশীল নয়, বরং এটি নিজের মধ্যেই স্বয়ংসম্পূর্ণ।

অদ্বৈত বেদান্তে “Mouna Upadeśa” মানে সেই অবস্থা, যেখানে আত্মা নিজের স্বরূপে অবস্থান করে, এবং শিক্ষার মাধ্যম হয়ে ওঠে কেবল উপস্থিতি। রমণ মহর্ষি বলেন—“Mouna is the highest Upadeśa. It is the teaching without words, where the mind of the teacher merges in the Self, and the student’s mind is drawn into the same stillness.” এখানে “উপদেশ” মানে নির্দেশ নয়, বরং এক চেতনা-সংক্রমণ (transmission of consciousness), যেখানে আত্মার নীরব দীপ্তি অন্যের অন্তরেও জেগে ওঠে। এটি śabda-rahita pratyabhijñā—শব্দহীন আত্ম-স্মরণ—যেখানে কোনো ভাষা, ধ্বনি বা প্রতীক প্রয়োজন হয় না, কারণ আত্মা নিজেই নিজের সাক্ষী হয়ে ওঠে।

“শব্দহীন প্রত্যভিজ্ঞান” (śabda-rahita pratyabhijñā) শব্দটির অর্থ হলো “শব্দহীন আত্মস্বীকৃতি” বা “চেতনার নীরব পুনঃস্মরণ”—যেখানে জ্ঞান কোনো শব্দ, চিন্তা বা যুক্তির মাধ্যমে নয়, বরং নীরব প্রত্যক্ষতার মাধ্যমে ঘটে। এখানে “śabda” বলতে কেবল উচ্চারিত শব্দ নয়, বরং সমস্ত মানসিক প্রতীক, ধারণা ও ভাষাগত কাঠামো বোঝায়; আর “rahita” মানে সেগুলির সম্পূর্ণ অনুপস্থিতি। “pratyabhijñā” মানে নিজের স্বরূপকে চিনে ফেলা—যে-চেতনা নিজের উৎসকে পুনরায় স্বীকৃতি দেয়। ফলে śabda-rahita pratyabhijñā বলতে বোঝায় সেই মুহূর্তকে, যখন চেতনা সমস্ত ভাষা ও চিন্তার সীমা ছাড়িয়ে নিজেকে নিজের মধ্যেই প্রত্যক্ষ করে।

এই ধারণা মূলত কাশ্মীর শৈব দর্শনের “Pratyabhijñā Darśana”-এর সঙ্গে সম্পর্কিত, যেখানে আত্মজ্ঞানকে বলা হয়েছে “নিজস্ব চেতনার পুনঃস্বীকৃতি।” কাশ্মীর শৈব দর্শনের “Pratyabhijñā Darśana” (প্রত্যভিজ্ঞা দর্শন) হলো এক গভীর অদ্বৈত তত্ত্ব, যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আত্মার স্ব-স্বীকৃতি—নিজের মধ্যে ঈশ্বরত্বকে চিনে ফেলা। “Pratyabhijñā” শব্দের আক্ষরিক অর্থ “পুনরায় জানা” বা “নিজেকে পুনরায় চিনে ফেলা”—যেখানে মুক্তি মানে কোনো নতুন কিছু অর্জন নয়, বরং নিজের অন্তর্নিহিত শিব-স্বরূপকে স্মরণ করা।

অদ্বৈত শৈব দর্শনের আলোকে নিজের অন্তর্নিহিত শিব-স্বরূপ (Śiva-Svarūpa) হলো সেই পরম, কল্যাণময় এবং স্বয়ং-আলোকিত চেতনা, যা প্রতিটি জীবের আত্মার গভীরে চিরকাল অবস্থান করে। এটি কোনো পৌরাণিক দেবতা নয়, কোনো চিন্তাগত সত্তাও নয়; বরং সমস্ত অভিজ্ঞতার ভিত্তি ও সাক্ষী—এক বিশুদ্ধ, নির্লিপ্ত, সর্বব্যাপী চৈতন্য। শিব শব্দের আক্ষরিক অর্থ “কল্যাণ” বা “মঙ্গল”, এবং সেই অর্থেই শিব-স্বরূপ হলো জীবের সেই অনাহত সত্তা, যা কখনও দুঃখ, কলুষতা বা পরিবর্তনের দ্বারা স্পর্শিত হয় না। এটি আত্মার সেই স্বরূপ, যা নীরব অথচ সচল, অচল অথচ সর্বব্যাপী—যা কেবল দেখা নয়, বরং দেখার ক্ষমতাই নিজে।

এই শিব-স্বরূপ তিনটি মৌলিক গুণে চিহ্নিত।

প্রথমত, এটি কল্যাণ (Śiva)—যা সর্বদা শুভ, নির্মল এবং সত্তার কেন্দ্রে শান্তিরূপে বিরাজমান।

দ্বিতীয়ত, এটি চিদ্‌-শক্তি (Cit-Śakti)—অর্থাৎ, সেই সচেতন শক্তি, যা জ্ঞানের ও অভিজ্ঞতার উৎস। এখানে শিব ও শক্তি দুই নয়; চেতনা ও তার প্রকাশ একই অভিন্ন সত্যের দুই দিক।

তৃতীয়ত, এটি অব্যক্ত শূন্যতা (Śūnyatā)—যেখানে সব নাম, রূপ ও ভেদ বিলীন হয়, অথচ চেতনার পরিপূর্ণতা অক্ষুণ্ণ থাকে। এই শূন্যতা কোনো শূন্যত্ব নয়, বরং পূর্ণতার এক নীরব সম্ভাবনা—অসীম অস্তিত্বের অব্যক্ত পটভূমি।