অবিদ্যা-বিদ্যা: ৭৫



কর্মের ভূমিকা: যদিও তিনি জ্ঞান (আত্ম-বিচার)-এর ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করেছেন, তবুও তিনি দৈনন্দিন কর্তব্যকর্মকে নিষ্কাম কর্মের প্রেক্ষাপট হিসেবে দেখেছেন। ফললাভের আকাঙ্ক্ষা থেকে মুক্ত হয়ে, কেবল কর্তব্যের খাতিরে কর্ম করা এবং তা সম্পূর্ণভাবে ঈশ্বরের উপর সমর্পণ করার মাধ্যমে শান্তি লাভ করা যায়। রমণ মহর্ষির মতে, নিজের কর্তব্য পালন করাই ঈশ্বরের প্রতি সর্বশ্রেষ্ঠ সেবা। এই প্রক্রিয়া ব্যক্তি এবং তার জাগতিক দায়িত্বের মধ্যে একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ভারসাম্য তৈরি করে।

আধুনিক অদ্বৈত বেদান্তের এক কঠোর বা আমূল (Radical) ব্যাখ্যা বলতে বোঝানো হয় এমন এক দৃষ্টিভঙ্গি, যা ঐতিহ্যবাহী শঙ্করীয় অদ্বৈত থেকে অনেকটাই আলাদা। এই ধারাকে অনেক সময় “নিও-অদ্বৈতবাদ” (Neo-Advaita) বা “Radical Nonduality” বলা হয়। এখানে মুক্তি বা আত্মসাক্ষাৎকে কোনো দীর্ঘ সাধনার ফল হিসেবে নয়, বরং তাৎক্ষণিক উপলব্ধি হিসেবে দেখা হয়। এই ধারার মূল বক্তব্য হলো—“তুমি ইতিমধ্যেই ব্রহ্ম; কোনো সাধনা, প্রস্তুতি বা অর্জনের প্রয়োজন নেই।”

ঐতিহ্যবাহী বেদান্তে শ্রবণ (শোনা), মনন (বিবেচনা) এবং নিদিধ্যাসন (ধ্যান) —এই তিন ধাপের মাধ্যমে জ্ঞান লাভকে জরুরি ধরা হয়। কিন্তু আধুনিক র‍্যাডিক্যাল ব্যাখ্যায় এই ধাপগুলোকে অপ্রয়োজনীয় বলা হয়। তারা বলে—আত্মা বা চেতনা কখনো আবৃত হয় না; তাই মুক্তি মানে কিছু পাওয়া নয়, বরং “আমি”-বোধের মিথ্যা ভ্রম বিলীন হওয়া। অর্থাৎ, এখনই, এই মুহূর্তে, কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই আত্মা উপলব্ধ করা সম্ভব। এই ধারণায় কোনো অনুশীলন বা শৃঙ্খলার প্রয়োজন নেই—“এটাই এখন, এটাই পরম সত্য।”

এই ধারার মূল জোর অহং বা “আমি”-বোধের সম্পূর্ণ অবসানে। বলা হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ ভাবে “আমি কর্তা”, ততক্ষণই বন্ধন থাকে। মুক্তি মানে হলো এই “আমি”-বোধের সম্পূর্ণ বিলীনতা। তাই এখানে ঈশ্বর, ধ্যান, ভক্তি বা কর্ম—সবই আপেক্ষিক বা মানসিক ধারণা হিসেবে দেখা হয়। একবার “আমি”-বোধ মুছে গেলে, তখন যা থাকে, সেটাই ব্রহ্ম। রমণ মহর্ষির আত্মবিচারের প্রশ্ন “Who am I?” (আমি কে?)—এই ধারায় অত্যন্ত জনপ্রিয়, কারণ এটি অহংবোধকে উন্মোচনের সরাসরি পথ হিসেবে দেখা হয়।

এই ব্যাখ্যায় শরণাগতি, প্রপত্তি বা ঈশ্বরনির্ভরতার কোনো বিশেষ ভূমিকা নেই। ঐতিহ্যবাহী বেদান্ত যেমন ঈশ্বরের কৃপা বা গুরু-উপদেশকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে, তেমনি র‍্যাডিক্যাল অদ্বৈতে বলা হয়—“কেউ আপনাকে মুক্ত করতে পারবে না, কারণ আপনি সর্বদা মুক্ত।” এখানে মুক্তি কোনো ভবিষ্যৎ অবস্থা নয়, বরং বর্তমানের মধ্যেই নিহিত।

নৈতিকতা ও আচরণের ক্ষেত্রেও এই দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। শঙ্করীয় অদ্বৈতে নৈতিক শৃঙ্খলা, ইন্দ্রিয়সংযম ও কর্তব্যকর্ম জ্ঞানের প্রস্তুতি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু র‍্যাডিক্যাল ব্যাখ্যা এগুলোকে আপেক্ষিক বা মায়িক বলে মনে করে। বলা হয়, আত্মসাক্ষাতের পর নৈতিকতা ও কর্তব্য নিজে থেকেই ঘটে, আলাদা করে নিয়মের প্রয়োজন নেই। এই অবস্থান অনেক সময় বিপজ্জনক বা বিভ্রান্তিকর হতে পারে, কারণ এটি মানুষকে সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে।

র‍্যাডিক্যাল অদ্বৈতবাদে শাস্ত্র, ধ্যান, উপাসনা বা আচার-বিচারকে কেবল উপকথা বা প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। তাদের মতে, সত্য চেতনা কোনো পাঠ্যপুস্তক বা ধর্মীয় কাঠামোর মধ্যে বন্দি নয়; এটি “প্রত্যক্ষ অস্তিত্বের অভিজ্ঞতা।” তাই বাইরের ধর্ম, গুরু বা সাধনা—সবই এখানে গৌণ। এই অবস্থানে “বই” ও “বোধ”—দুটিই বিলীন, কেবল থাকে চেতনার নিঃশব্দ উপস্থিতি।

Tony Parsons, Jeff Foster, Jim Newman প্রমুখ আধুনিক শিক্ষকরা এই ধারার প্রচারক। তাঁরা বলেন—“There is no seeker, no path, no goal—only what is.” অর্থাৎ, “অনুসন্ধানী নেই, পথ নেই, লক্ষ্য নেই—শুধু যা আছে, সেটাই।” এই দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত র‍্যাডিক্যাল, কারণ এটি মানবজীবনের সব মানসিক ও আধ্যাত্মিক কাঠামোকে ভেঙে দেয়।

এই র‍্যাডিক্যাল ব্যাখ্যা নিয়ে অনেক সমালোচনাও হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী বেদান্তাচার্যরা মনে করেন, এই ভাবনা “instant enlightenment” বা হঠাৎ মুক্তির মিথ সৃষ্টি করে, যা গভীর প্রস্তুতি, শৃঙ্খলা ও নৈতিকতার প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করে। ফলত, এটি অনেক সময় বুদ্ধিবৃত্তিক মুক্তি দিলেও, বাস্তব জীবনে অহং-কেন্দ্রিক বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।

তবু, কিছু সাধক বা চিন্তক এই ধারা গ্রহণ করেন, কারণ এতে সত্যকে কোনো কাল্পনিক লক্ষ্য হিসেবে নয়, বরং এই মুহূর্তেই উপস্থিত বাস্তবতা হিসেবে দেখা হয়। এখানে মুক্তি কোনো ভবিষ্যৎ অবস্থা নয়; বরং এখনই যা ঘটছে, সেটাই মুক্তির ক্ষেত্র।

অতএব, আধুনিক অদ্বৈত বেদান্তের এই র‍্যাডিক্যাল বা আমূল ব্যাখ্যা সেই দৃষ্টিভঙ্গি, যেখানে সমস্ত উপায়, সাধনা ও প্রস্তুতিকে অপ্রয়োজনীয় বলা হয়, “আমি”-বোধকে একমাত্র অজ্ঞানের উৎস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, এবং বলা হয়—মুক্তি কোনো অর্জন নয়, বরং যা সর্বদা বর্তমান, সেটিরই সরাসরি প্রত্যক্ষতা। এটি এমন এক দৃষ্টি, যা সমস্ত ধারণা, ধর্ম, প্রচেষ্টা ও কাঠামোকে অতিক্রম করে বলে—“এখানেই ব্রহ্ম, এখনই ব্রহ্ম, তুমি সর্বদা সেই।”

নিসর্গদত্ত মহারাজ আধুনিক অদ্বৈত বেদান্তের অন্যতম কঠোর ও আমূল (Radical) ব্যাখ্যাকার। তাঁর দর্শন সরল, নিরাবরণ এবং সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতানির্ভর। তিনি কোনো ধর্মীয় রীতি, শাস্ত্র, ধ্যানপদ্ধতি বা গুরুকেন্দ্রিক আচারকে অপরিহার্য মনে করেননি। তাঁর মূল শিক্ষা হলো—“আমিই সেই” (I Am That)—অর্থাৎ, যা কিছু দেখা, শোনা, অনুভব করা যায়, তার সমস্ত কিছুর পেছনে যে বিশুদ্ধ চেতনা রয়েছে, সেটিই প্রকৃত “আমি”। এই “আমি” দেহ, মন বা ব্যক্তিগত সত্তা নয়; এটি নাম-রূপের অতীত এক নিরাকার সত্তা (Pure Being), যা সর্বদা অপরিবর্তিতভাবে বর্তমান।

নিসর্গদত্তের মতে, জীবনের সমস্ত দুঃখ, ভয়, আসক্তি ও বিভ্রান্তির মূল কারণ একটিই—“আমি শরীর” বা “আমি মন” এই ভ্রান্ত ধারণা। এই ধারণাই “কর্তৃত্বাভিমান”—যা মানুষকে মনে করায় যে, সে-ই কর্মের কর্তা, সে-ই সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। তিনি বলেন, এটি কেবল মনোজগতের এক মায়া। শরীর বা মন দ্বারা সম্পাদিত সমস্ত কর্ম কেবল মহাজাগতিক শক্তির স্বাভাবিক গতিবিধি, যেমন বাতাসের বইতে থাকা বা নদীর প্রবাহ। কর্ম চলছে, কিন্তু কোনো কর্তা নেই। তিনি বলেন—“You are not the doer; happenings happen.” এই উপলব্ধিই তাঁর দর্শনের মূল কৌশল—কর্তৃত্বাভিমান ত্যাগ।

এই কর্তৃত্বত্যাগ কোনো নিষ্ক্রিয়তা নয়, বরং অস্তিত্বের উৎসে ফিরে যাওয়া। তিনি শিক্ষা দেন, যখন তুমি চেতনার উৎসে মনকে ফিরিয়ে নাও—যে-উৎস থেকে “আমি আছি” (I am), এই অনুভূতি উদ্ভূত হয়—তখন তুমি দেখতে পাবে—কর্তা, কর্ম, ফল—সবই কেবল একটি মহাজাগতিক দৃশ্যের মতো চলছে। দেহ ও মন হচ্ছে উপকরণ; আত্মা কেবল নীরব সাক্ষী। তাঁর কথায়—“Stay with the sense ‘I am’; it is all the help you need. The rest will happen by itself.”

নিসর্গদত্তের কাছে “কর্ম” মানে কোনো পুণ্য বা পাপের সঞ্চয় নয়, বরং একগুচ্ছ অব্যয় শক্তি (unspent energy)—যা আমাদের অচেতন বাসনা, ভয়, ও অসম্পূর্ণ অভিজ্ঞতার ফল। এই অচেতন শক্তিগুলিই কর্মফল হিসেবে প্রকাশ পায় এবং পুনরায় জন্ম, আকাঙ্ক্ষা ও প্রতিক্রিয়ার চক্রকে চালু রাখে। কিন্তু তিনি বলেন, এই চক্রের কোনো বাস্তব অস্তিত্ব নেই; এটি কেবল এক বিভ্রম, যা “আমি দেহ” ধারণা থেকে জন্ম নেয়।

এই উপলব্ধি যখন আসে যে, “আমি দেহ-মন নই, আমি সেই বিশুদ্ধ অস্তিত্ব, যা সব কিছুর পটভূমি”—তখন কর্মফল স্বপ্নের মতো দ্রবীভূত হয়ে যায়। মহারাজ বলেন, “The sense of doership and the burden of karma dissolve together.” তাঁর মতে, মুক্তি মানে কোনো নতুন কিছু পাওয়া নয়, বরং যা সর্বদা ছিল, তা চিনে নেওয়া।

এই উপলব্ধির পথ সম্পূর্ণ অভ্যন্তরমুখী। কোনো চিন্তা, কোনো উপাসনা, কোনো কৌশল নয়—শুধু এই প্রশ্নটিই রাখতে হবে, “এই ‘আমি আছি’ কোথা থেকে আসে?” যতবার মন বাইরের দিকে যাবে, ততবার এই ‘আমি’-চেতনায় ফিরিয়ে আনতে হবে। ধীরে ধীরে বোঝা যায়, এই “আমি”ও এক অস্থায়ী ধারণা; এরও উৎসের ওপারে যে নিঃশব্দ, নিরাকার, অপরিবর্তিত অস্তিত্ব—তা-ই পরম আত্মা।

নিসর্গদত্ত বলেন, “Before you were born, you were aware in a non-personal way; now you are aware as a person. Return to that non-personal awareness—that is liberation.” তাঁর মতে, মুক্তি কোনো অভিজ্ঞতা নয়, কারণ অভিজ্ঞতা মানেই দ্বৈততা; মুক্তি হলো যখন অভিজ্ঞতা ও অভিজ্ঞতার বোধ এক হয়ে যায়। তখন যা থাকে তা শুধু বিশুদ্ধ “অস্তিত্ব-চেতনা-আনন্দ”—Sat-Chit-Ānanda—যার কোনো শুরু বা শেষ নেই।

নিসর্গদত্ত মহারাজের দর্শন এক কঠোর, অদ্বৈত, এবং আমূল আত্মবিচারমূলক অবস্থান—যেখানে কোনো ধ্যান, প্রার্থনা বা যোগপ্রক্রিয়া নেই; কেবল একটিই প্রয়াস—“আমি কে?” এই অনুসন্ধান। আর যখন এই প্রশ্নের উত্তর নিজেই বিলীন হয়ে যায়, তখন যা অবশিষ্ট থাকে, সেটিই ব্রহ্ম—নাম, রূপ ও কর্তার অতীত সেই নীরব, সর্বব্যাপী, চিরসচেতন সত্তা।

অ্যালেন ওয়াটস আধুনিক পাশ্চাত্য চিন্তায় এক অনন্য ব্যক্তিত্ব, যিনি প্রাচ্য দর্শনের জটিল আধ্যাত্মিক নীতিগুলিকে আধুনিক মনস্তত্ত্বের ভাষায় রূপান্তরিত করেছিলেন। তিনি বিশেষত জেন বৌদ্ধধর্ম, তাওবাদ (Daoism) এবং আংশিকভাবে অদ্বৈত বেদান্ত-এর চিন্তাধারাকে একত্রিত করে ব্যাখ্যা করেছেন যে, মানুষ প্রকৃত অর্থে কোনো পৃথক সত্তা নয়; সে মহাবিশ্বেরই এক অভিব্যক্তি, এক অবিচ্ছেদ্য প্রক্রিয়ার অংশ।

ওয়াটসের অন্যতম মৌলিক ধারণা হলো “নিয়ন্ত্রণের ভ্রম” (Illusion of Control)—মানুষ মনে করে যে, সে তার জীবন, ভবিষ্যৎ, পরিবেশ এবং ফলাফল সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু তাঁর মতে, এই ধারণাটিই মায়া। আসলে কোনো ব্যক্তি বা সত্তা আলাদা করে নিয়ন্ত্রণ করে না; সমস্ত কিছুই প্রকৃতির নিজস্ব ছন্দে, এক মহাজাগতিক সমন্বয়ে ঘটছে। এই উপলব্ধিই “কর্তৃত্বাভিমান ত্যাগের” (গীতা, ৩.২৭, ৫.৮) পথ।

৩.২৭ : সকল কর্ম সর্বতোভাবে প্রকৃতির গুণগুলির দ্বারা (সত্ত্ব, রজ ও তম) সম্পন্ন হয়। কিন্তু অহংকারে মোহাচ্ছন্ন অজ্ঞ ব্যক্তি মনে করে, 'আমিই কর্তা'।

৫.৮: তত্ত্বজ্ঞানী ব্যক্তি দেখেন যে ইন্দ্রিয়গুলিই ইন্দ্রিয়ের বিষয়ে প্রবৃত্ত হচ্ছে, তাই তিনি মনে করেন, "আমি কিছুই করি না"। অর্থাৎ, তিনি নিজেকে দেহ বা মনের কার্যের সাক্ষী মাত্র মনে করেন এবং কর্মের বন্ধন থেকে মুক্ত থাকেন।

ওয়াটস বলেন—“You are something that the universe is doing, in the same way that a wave is something that the ocean is doing.” অর্থাৎ, ব্যক্তি কোনো স্বতন্ত্র কর্তা নয়, বরং সমগ্র মহাজগতের চলমান শক্তিরই এক ক্ষণিক প্রকাশ।

এই দর্শন সরাসরি তাওবাদের উ-ওয়েই (Wu Wei) ধারণার সঙ্গে যুক্ত। “উ-ওয়েই” মানে “অপ্রচেষ্টা”—কাজ না করা নয়, বরং অতিরিক্ত প্রচেষ্টা, নিয়ন্ত্রণ বা বাধ্যতামূলক ইচ্ছার অনুপস্থিতি। ওয়াটস ব্যাখ্যা করেন যে, সত্যিকারের স্বাধীনতা তখনই আসে, যখন আমরা ফল নিয়ন্ত্রণের আকাঙ্ক্ষা বা "striving" বন্ধ করি। তখন কর্ম স্বতঃস্ফূর্তভাবে, স্বাভাবিকভাবে ঘটে যায়—যেমন নদী নিজে থেকেই প্রবাহিত হয়।

এই ধারণাটি গীতার নিষ্কাম কর্মযোগের (Nishkāma Karma Yoga) সঙ্গে গভীরভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ। গীতায় শ্রীকৃষ্ণ যেমন বলেন—“কর্ম করো, কিন্তু ফলের আসক্তি রেখো না।” (ভগবদ্গীতা, ২.৪৭)—তেমনি ওয়াটস বলেন, “Stop trying to control; let it flow.” উভয় ক্ষেত্রেই স্বাধীনতা আসে অহংকারের ভ্রান্ত নিয়ন্ত্রণবোধ ত্যাগে।