স্বামী বিবেকানন্দ এই নীতিকে জীবনের কেন্দ্রে স্থাপন করেন। তিনি বলেন, “Work for work’s sake”—কাজ করো কাজের আনন্দে, প্রতিদানের আশায় নয়। তাঁর মতে, কর্মকে “মুক্ত উপহার” (Free Gift) হিসেবে দেওয়া অনাসক্তির সর্বোত্তম অনুশীলন। প্রত্যাশা জন্ম দেয় আসক্তির, কিন্তু প্রত্যাশাহীন দান মুক্তির পথ। তাঁর ভাষায়, “তুমি ঈশ্বরকে ভালোবাসো, কিন্তু তাঁর কাছ থেকে কিছু চেয়ো না; কারণ তবেই প্রেম পূর্ণ হয়।” কর্ম তখন কেবল কর্তব্য নয়, একপ্রকার ধ্যান।
শ্রীঅরবিন্দ নিষ্কাম কর্মকে “Divine Manifestation” বা ঈশ্বরচেতনার গতিশীল দিক হিসেবে দেখিয়েছেন। তাঁর মতে, কর্ম কোনো বন্ধন নয়; এটি আত্মার বিকাশের প্রক্রিয়া। যতই মানুষ নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে, ততই তার অন্তর ঈশ্বরচেতনার বাহন হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, “All life is yoga”—অর্থাৎ, জীবনই যোগ; প্রতিটি কর্মই ব্রহ্মসাধনা। গীতা-প্রসূত এই কর্মদর্শন তাঁর Integral Yoga-র ভিত্তি।
মহাত্মা গান্ধী এই নীতিকে রূপ দিয়েছিলেন সেবামূলক আদর্শে। তিনি ফলের চিন্তা নয়, কর্তব্যকেই গুরুত্ব দিয়েছিলেন। সবরমতী আশ্রমে নিজে শৌচাগার পরিষ্কার করা তাঁর কাছে ছিল অহংবোধ ভাঙার সাধনা—এক বাস্তব nishkāma karma। তিনি বলেন, “সেবা-ই উপাসনা; কর্ম-ই প্রার্থনা।”
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিষ্কাম কর্মকে প্রেম ও সৃজনচেতনার রূপে ব্যাখ্যা করেন—“যে-কর্মে অনন্তের প্রকাশ, সেই কর্মই ধর্ম।” তাঁর মতে, ফল নয়, কর্মের আনন্দই সত্য; কারণ কর্মের মধ্যে মানুষ ঈশ্বরলীলায় অংশ নেয়।
রমণ মহর্ষি নিষ্কাম কর্মকে আত্মজ্ঞান-কেন্দ্রিকভাবে দেখিয়েছেন। তাঁর মতে, কর্মকে মুক্ত করার একমাত্র উপায় হলো—“Who am I?”, এই অন্তর্দৃষ্টি। যখন ব্যক্তি উপলব্ধি করে যে, কর্তা-ভাব নিজেই মায়া, তখন কর্ম স্বয়ং নিষ্কাম হয়ে যায়। তিনি বলেন, “কর্ম ত্যাগ নয়, কর্তার ত্যাগই মুক্তির উপায়।” তাঁর Atma-Vichara (আত্মবিচার) প্রকৃতপক্ষে নিষ্কাম কর্মের সর্বোচ্চ অভ্যন্তরীণ রূপ—যেখানে কর্ম চললেও কর্তা বিলীন।
আত্মবিচার (Ātma-Vichāra)—বা “আমি কে?” অনুসন্ধান হলো রমণ মহর্ষির দর্শনের কেন্দ্রীয় তত্ত্ব। এটি কোনো দর্শনীয় তর্ক নয়, বরং আত্মস্বরূপে প্রত্যক্ষ প্রত্যাবর্তনের এক নির্মল, নিঃশব্দ উপায়। তিনি উপনিষদ ও বেদান্তের “আত্মানুভব”-নীতিকে একেবারে সরলভাবে বাস্তব জীবনের সাধনায় রূপ দিয়েছিলেন। তাঁর মতে, মুক্তি অর্জনের কোনো দ্বিতীয় উপায় নেই; আত্মবিচারই একমাত্র পথ, কারণ মুক্তি কোনো অর্জন নয়—এটি কেবল আত্মার নিজ চেতনায় প্রত্যাবর্তন।
রমণ মহর্ষি বলেন—“যখন কেউ জিজ্ঞেস করে, ‘আমি কে?’, তখন অন্য সমস্ত চিন্তা বিলুপ্ত হয়। কেবল ‘আমি’-বোধই থাকে; এবং সেই ‘আমি’-বোধের উৎসেই আত্মার প্রকাশ।” তাঁর ভাষায়, “When other thoughts arise, one should not pursue them, but inquire: ‘To whom do they arise?’ It will be answered: ‘To me.’ If one then inquires ‘Who am I?’ the mind will go back to its source, and the thought that arose will subside.” (Talks with Sri Ramana Maharshi, No. 197)। এই অনুসন্ধান কোনো ভাবনা নয়, বরং মনকে তার উৎসে ফিরিয়ে নেওয়া—এই উৎসই আত্মা।
এই পথের উপনিষদীয় ভিত্তি গভীর। বৃহদারণ্যক উপনিষদ (১.৪.১০) ঘোষণা করে—“অহং ব্রহ্মাস্মি (Ahaṃ Brahmāsmi)”—“আমি ব্রহ্ম।” ছান্দোগ্য উপনিষদ (৬.৮.৭) বলে—“তত্ত্বমসিঃ (Tat Tvam Asi)”—“তুই সেই পরম সত্য।” এবং কঠোপনিষদ (২.১.১০-১১) বলে—“অন্যান্যা প্রোচেন লভ্যঃ ন মেডয়া ন বহুনা শ্রুতেন। যমৈবৈষ বৃত্তে তেন লভ্যঃ তস্যৈষ আত্মা বিবৃণুতে তনূং স্বাম্।” অর্থাৎ, আত্মা বক্তৃতা, বুদ্ধি বা শ্রবণ দ্বারা নয়, বরং যিনি আত্মাকে বেছে নেন, তিনিই তাঁকে লাভ করেন। রমণ মহর্ষি এই উপনিষদীয় সত্যকেই আত্মবিচারে পরিণত করেছেন।
তিনি বলেন, “মনই জগৎ। যখন মন লয় পায়, জগৎও বিলীন হয়; যা অবশিষ্ট থাকে, তা কেবল আত্মা।” এটি গীতার ভাবের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত। গীতা (৬.২০-২৩)-এ বলা হয়েছে—“যত্রোপরমতে চিত্তং নিরুদ্ধং যোগসেৱনঃ। আত্মনৈব আত্মনা তুষ্টঃ স্থিতঃ তদা যোগ উচ্যতে।। সঃ স্থিরবুদ্ধির যোগী পরমশান্তিঃ লভতে।” অর্থাৎ, যখন মন সমস্ত চিন্তা থেকে নিবৃত্ত হয়ে আত্মায় স্থিত হয়, তখনই যোগ সম্পূর্ণ হয়। আত্মবিচার এই অবস্থাকেই স্থায়ী করে—মন লয় পেলে আত্মা স্বয়ং জাগরূক হয়।
রমণ মহর্ষির দৃষ্টিতে আত্মবিচার কোনো তর্কাত্মক বিশ্লেষণ নয়, বরং এক অন্তর্মুখী প্রত্যাবর্তন। প্রতিটি চিন্তা উঠলে প্রশ্ন করতে হবে—“এই চিন্তা কার?” উত্তর আসবে—“আমার।” তখন জিজ্ঞেস করতে হবে—“আমি কে?” এই “আমি”-বোধের অনুসন্ধান করতে করতে মন নিজের উৎসে ফিরে যায়। যখন “আমি”-চিন্তার উৎসে পৌঁছানো যায়, তখন দেখা যায়—“আমি দেহ নই, মন নই, কর্তা নই, ভোক্তা নই।” যা অবশিষ্ট থাকে, তা হলো “সত্তা-চৈতন্য-আনন্দ” (Sat-Chit-Ānanda)—অখণ্ড আত্মা।
এই অবস্থাকেই উপনিষদ বলে—“নায়মাত্মা কর্মণালিপ্যতে (বৃহদারণ্যক, ৪.৪.২২)”—আত্মা কখনও কর্মে লিপ্ত নয়। রমণ বলেন, “আত্মাকে জানার মানে আত্মা হওয়া; জ্ঞাতা, জ্ঞেয়, জ্ঞান—এই তিনের বিলয়ই আত্মবোধ।” এই ধারণাটি মাণ্ডূক্য উপনিষদ ও ‘গৌড়পাদ কারিকা’-র “অদ্বিতীয় তুরীয়” ধারণার সঙ্গে অভিন্ন, যেখানে সমস্ত দ্বৈততা বিলুপ্ত হয়ে চৈতন্য নিজে স্থিত হয়।
ভগবদ্গীতায় (৫.৮-৯) যেমন বলা হয়েছে—“নৈব কিঞ্চিত্ করোমি ইতি যুক্তো মন্যেত তত্ত্ববিত্। ইন্দ্রিয়াণীন্দ্রিয়ার্থেষু বর্তন্ত ইতি ধারয়ন্।” অর্থাৎ, জ্ঞানী ব্যক্তি ভাবে, “আমি কিছুই করি না; ইন্দ্রিয়েরা ইন্দ্রিয়ার্থে ক্রিয়াশীল।” রমণ মহর্ষির আত্মবিচার এই অবস্থারই অনুশীলন। মন যখন “আমি”-চিন্তার উৎসে লয় পায়, তখন কর্তা-ভাব বিলীন হয়, আত্মা নিজে প্রকাশিত হয়—যা গীতার ভাষায় “স্থিতপ্রজ্ঞতা” (গীতা, 2.55)।
রমণ মহর্ষির আত্মবিচার তাই বেদান্তের “অহং ব্রহ্মাস্মি” সত্যের জীবন্ত বাস্তবায়ন। এটি কোনো ভক্তিমূলক উপাসনা নয়, কোনো ত্যাগপন্থাও নয়, বরং সেই একমাত্র যোগ, যেখানে মন নিজের উৎসে ফিরে যায়। ভারতীতীর্থ যেমন দৃক্-দৃশ্য-বিবেকে বলেছেন—“দৃশ্যং প্রকৃতিভূতং, দৃক্ তু চেতনাত্মা”—দেখা সবই প্রকৃতি, আর দর্শী বা চেতনা কেবল আত্মা। রমণ এই দর্শনকে অভিজ্ঞতায় রূপান্তর করেছেন—“When the seer and the seen are one, that is Realisation.”
তাঁর শিক্ষা উপনিষদীয় নেতি-নেতি প্রক্রিয়ার ব্যাবহারিক রূপ। দেহ নয়, মন নয়, চিন্তা নয়, ইচ্ছা নয়—যা কিছু পরিবর্তনশীল, তা নয় আত্মা। একে একে সব “নয়”-এর স্তর অতিক্রম করলে, যা অবশিষ্ট থাকে, তা হলো সেই নিত্য আত্মা, যার জন্য বৃহদারণ্যক বলে—“অহং ব্রহ্মাস্মি।”
রমণ মহর্ষির আত্মবিচার পদ্ধতি কোনো বিশেষ আসন, প্রণায়াম বা জপ প্রয়োজন করে না। এটি নিঃশব্দ, অন্তর্মুখী জিজ্ঞাসা। তিনি বলেন, “Stay still. Be as you are. The Self will reveal itself.” (Talks, No. 146)। এই স্থিতি বা আত্মনিষ্ঠাই তাঁর মতে মুক্তি। এতে আর কোনো জ্ঞান বা ক্রিয়ার প্রয়োজন থাকে না; কারণ আত্মা কখনও অপ্রাপ্ত ছিল না—শুধু ভুল পরিচয়ই মুছে যায়।
আত্মবিচারই সেই সহজ, নিরাকার, নিঃশব্দ যোগ, যেখানে “আমি”-চিন্তা নিজের উৎসে বিলীন হয়ে যায়। তখন অবশিষ্ট থাকে একমাত্র আত্মা—নির্বিকার, চিরস্বরূপ, নিত্যপ্রকাশমান। উপনিষদ যেমন বলে—“একমেবাদ্বিতীয়ম্ (ছান্দোগ্য, ৬.২.১)”—“এক, দ্বিতীয়হীন।” রমণ মহর্ষি এই ঐক্যবোধকে জীবন্ত অভিজ্ঞতা করে দেখিয়েছেন, এবং তাঁর শিক্ষার সার এই এক বাক্যে ধরা যায়—“মন যেখানে নিঃশেষ হয়, সেখানেই আত্মা প্রকাশিত হয়; আত্মা প্রকাশিত হলে, আর কিছু জানার বা করবার অবশিষ্ট থাকে না।”
নিসর্গদত্ত মহারাজ একই ভাব প্রকাশ করেছেন আরও বাস্তব ভাষায়—“You are not the doer, nor the enjoyer; you are the witness.” তাঁর মতে, আসক্তি জন্ম নেয় যখন মানুষ ফলকে নিজের বলে মনে করে। কিন্তু যদি জানা যায় যে কর্ম ও ফল দুটোই চেতনার প্রকাশমাত্র, তবে আসক্তির প্রশ্নই ওঠে না। তাঁর শিক্ষায় নিষ্কাম কর্ম মানে “sākṣibhāva”—অর্থাৎ প্রত্যক্ষদর্শী থাকা, কর্মে যুক্ত থেকেও অন্তরে নির্লিপ্ত থাকা।
সাক্ষিভাব (Sākṣibhāva) হলো বেদান্ত দর্শনের এক গভীর এবং অন্তর্নিহিত ধারণা, যেখানে মানুষ নিজেকে দেহ, মন, বুদ্ধি বা কর্তা হিসেবে নয়, বরং সমস্ত চিন্তা, অনুভূতি ও অভিজ্ঞতার নীরব দর্শক বা সাক্ষী হিসেবে উপলব্ধি করে। “সাক্ষী” শব্দের আদি অর্থ—‘যিনি কেবল দেখেন, কিন্তু অংশ নেন না’। আর “ভাব” মানে মানসিক অবস্থা বা মনোভাব। তাই “সাক্ষিভাব” মানে এমন এক অন্তর্মুখী চেতনা-অবস্থা, যেখানে মানুষ বুঝতে শেখে—“আমি দেহ নই, মন নই, চিন্তা নই; আমি সেই চেতনা, যা সব কিছুর সাক্ষী।”
বৃহদারণ্যক উপনিষদ (৪.৩.২৩) বলে—“দ্রষ্টা শ্রোতা মন্তা বোধতা,” অর্থাৎ, আত্মাই সেই দ্রষ্টা, শ্রোতা, চিন্তাকারী ও জ্ঞাতা, কিন্তু সে কোনো কর্মে লিপ্ত নয়। কঠোপনিষদ (২.২.১৩)-এ বলা হয়েছে—”নিত্যোঽনিত্যানাং চেতনশ্চেতনানাম্।”—আত্মা দেহে অবস্থান করলেও দেহাতীত, অসীম এবং অব্যয়। এই শাস্ত্রবাক্যগুলি সাক্ষিভাবের মূল ভিত্তি স্থাপন করে। আত্মা সর্বদা উপস্থিত, কিন্তু জড়িত নয়; যেমন সূর্য সমস্ত কর্মকে আলোকিত করে, অথচ নিজে কোনো ক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না।
বেদান্ত মতে, সাক্ষী চেতনা একমাত্র বাস্তব। শঙ্করাচার্য ব্রহ্মসূত্রভাষ্যে বলেন—"সাক্ষী চেতনা নিশ্চিতভাবে এক (অদ্বৈত)।" সাক্ষী চেতনাই একমাত্র সত্যস্বরূপ, যা জাগরণ, স্বপ্ন ও সুষুপ্তি—এই তিন অবস্থার মধ্যেও অবিচ্ছিন্নভাবে বিরাজমান। দৃক্-দৃশ্য-বিবেক-এ বলা হয়েছে—“দৃশ্যং প্রকৃতিভূতং, দৃক্ তু চেতনাত্মা।” অর্থাৎ, যা-কিছু দেখা যায়, তা পরিবর্তনশীল দৃশ্য, কিন্তু যে দেখে, সেই চেতন আত্মা অবিনাশী। সাক্ষিভাব মানে এই চেতনা উপলব্ধি করা—আমি যা দেখি, শুনি, ভাবি বা অনুভব করি, তার সবই ‘দৃশ্য’; কিন্তু আমি সেই চেতনা, যা কেবল সাক্ষী।
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায়ও এই সাক্ষিভাবের বর্ণনা স্পষ্ট। গীতা (১৩.২৩)-এ শ্রীকৃষ্ণ বলেন—“উপদ্রষ্টাঽনুমন্তা চ ভর্তা ভোক্তা মহেশ্বরঃ। / পরমাত্মেতি চাপ্যুক্তো দেহেঽস্মিন্ পুরুষঃ পরঃ।।” অর্থাৎ, এই দেহে এক পরম পুরুষ অবস্থান করছেন, যিনি দর্শক, অনুমোদনকারী, ধারক, কিন্তু নিজে ভোক্তা নন; তিনিই পরমাত্মা। এই উপদ্রষ্টা বা দর্শকের ভাবই সাক্ষিভাব—যেখানে আত্মা সমস্ত ক্রিয়ার মধ্যেও নির্লিপ্ত থাকে।
ধ্যান ও আত্মবিচারে সাক্ষিভাব অত্যন্ত কার্যকর। যখন কেউ বলে “আমি রাগান্বিত,” সাক্ষিভাবে তার অর্থ দাঁড়ায়—“রাগ উঠেছে, আমি তার সাক্ষী।” রমণ মহর্ষি আত্মবিচারের মাধ্যমে এই ভাবটি স্থিতিশীল করতে বলেন। তিনি বলেন—“যখন মন দেখে যে, চিন্তা আসে ও যায়, তখন সে বুঝতে পারে, সে চিন্তার নয়, সে চিন্তার সাক্ষী মাত্র।” (Talks with Sri Ramana Maharshi, No. 244)। যতক্ষণ কেউ ভাবে, “আমি চিন্তাকারী”, ততক্ষণ দুঃখ ও বন্ধন থাকে; যখন সে বোঝে, “আমি সেই চেতনা, যা চিন্তারও সাক্ষী”, তখনই মুক্তি ঘটে।
গীতায় (৫.৮-৯) শ্রীকৃষ্ণ বলেন—
নৈব কিঞ্চিৎ করোমি ইতি যুক্তো মন্যেত তত্ত্ববিৎ।
পশ্যন্ শৃণ্বন্ স্পৃশন্ জিঘ্রন্ অश्नন্ গচ্ছন্ স্বপন্ শ্বসন্।। (৫.৮)
প্রলপন্ বিসৃজন্ গৃহ্ণন্ উন্মিষন্ নিমিষন্নপি।
ইন্দ্রিয়াণীন্দ্রিয়ার্থেষু বর্তন্ত ইতি ধারয়ন্।। (৫.৯)
আত্মাতে স্থিত বা তত্ত্বজ্ঞানী ব্যক্তি সর্বদা মনে করেন যে, 'আমি কিছুই করি না', যখন তিনি—
দেখেন, শোনেন, স্পর্শ করেন, শোঁকেন, আহার করেন, গমন করেন, নিদ্রা যান এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নেন (৫.৮)।
কথা বলেন, মলমূত্র ত্যাগ করেন, গ্রহণ করেন, এমনকি চোখের পাতা খোলেন বা বন্ধ করেন (৫.৯)।
তিনি এই স্থির জ্ঞানে থাকেন যে: 'ইন্দ্রিয়গুলি তাদের নিজ নিজ বিষয়ে (ইন্দ্রিয়ের বিষয়সমূহে) কেবল বিচরণ করছে।'