স্বামী বিবেকানন্দের ব্যাখ্যা—মানবিকতার রণক্ষেত্র: স্বামী বিবেকানন্দ এই শ্লোককে দেখেছেন অন্তর্দ্বন্দ্বের প্রতীক হিসেবে—যেখানে মানুষের ভিতরে কর্তব্য ও মমতা, জ্ঞান ও মোহ, ধর্ম ও সম্পর্ক—এই দুই মেরুর সংঘাত ঘটে। তিনি বলেন, “The battle of Kurukshetra is not merely a physical war; it is the eternal war between the higher Self and the lower nature of man.” অর্থাৎ, কুরুক্ষেত্র কেবল বাইরের যুদ্ধক্ষেত্র নয়; এটি মানুষের নিজের ভিতরের মনের যুদ্ধক্ষেত্র—যেখানে আত্মার আদেশ (ধর্ম) এবং মমতার টান (অবিদ্যা) মুখোমুখি হয়।
বিবেকানন্দ বলেন, অর্জুনের “কথং ভীষ্মমহং” প্রশ্নটি প্রতিটি জাগ্রত মানুষের প্রশ্ন—যিনি জানেন কী করতে হবে, কিন্তু আসক্তি ও আবেগ তাঁকে আটকায়। তিনি মন্তব্য করেন, “This is the cry of every weak soul when the call of duty demands the sacrifice of personal affection.” অর্থাৎ, ব্যক্তিগত সম্পর্ক ত্যাগ করে কর্তব্য পালন করা মানুষের জন্য কঠিন, কিন্তু সেটিই যোগীর পথ—কর্মে অনাসক্তি এবং আত্মার আদেশে চলা।
রমণ মহর্ষির দৃষ্টিভঙ্গি—কর্তা ও কর্মের ভ্রম: রমণ মহর্ষি এই শ্লোককে ব্যাখ্যা করেন একেবারে অদ্বৈত দৃষ্টিতে। তাঁর মতে, অর্জুনের প্রশ্নের মূলেই আছে ‘আমি’—অহংকারের অনুভব। তিনি বলেন, “Who is the one that says ‘How can I kill’? The ‘I’ that identifies with the body feels it must kill or refrain. But the Self neither kills nor is killed.” অর্থাৎ, “কথং ভীষ্মমহং সংখ্যে…”—এই প্রশ্নে ‘অহং’-বোধই আসল মোহ। যিনি জানেন যে, আত্মা কর্তা নয়, দেহের কার্যই কেবল কর্মরূপে ঘটে, তিনি আর দ্বিধাগ্রস্ত হন না।
রমণ মহর্ষি গীতার ২.১৯-২.২১ শ্লোকের সঙ্গে এটি যুক্ত করে বলেন—“Once you realize the Self, there is no question of sin or merit. The question ‘how can I fight?’ dissolves when the doer dissolves.” অর্থাৎ, আত্মজ্ঞান হলে যুদ্ধ ও অযুদ্ধের পার্থক্য মুছে যায়। তখন কর্ম হয়, কিন্তু কর্তা থাকে না—যা গীতা পরে “কুর্বন্নপি ন লিপ্যতে” (৫.৭) বলে ব্যাখ্যা করে।
শ্রী অরবিন্দের ব্যাখ্যা—ধর্মের দ্বৈত সংকট: শ্রী অরবিন্দ তাঁর “Essays on the Gita”-তে বলেন, “Arjuna’s refusal is not cowardice; it is a confusion of dharmas—personal, social and spiritual.” অর্থাৎ, অর্জুন এখানে ভীত নন; তিনি বিভ্রান্ত, কারণ তিনটি ধর্ম—ক্ষত্রিয় ধর্ম (যুদ্ধ করা), সামাজিক ধর্ম (গুরুজনের প্রতি শ্রদ্ধা), আধ্যাত্মিক ধর্ম (অহিংসা)—এই তিনের সংঘর্ষ ঘটেছে।
অরবিন্দ ব্যাখ্যা করেন, গীতা এই সংকটকে সমাধান করে ধর্মের স্তরবিন্যাসের মাধ্যমে: সর্বোচ্চ ধর্ম হলো তা-ই, যা আত্মার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ—স্বধর্ম। তিনি বলেন, “The Gita resolves the conflict not by denying the battle, but by transfiguring it into the field of the soul’s yoga.” অর্থাৎ, কৃষ্ণ অর্জুনকে যুদ্ধ থেকে সরান না, বরং তাঁর মানসিক অবস্থাকে রূপান্তর করেন—যুদ্ধকেও যোগে পরিণত করেন।
স্বামী চিন্ময়ানন্দের ভাষ্যে—কর্তব্যে অনাসক্তির শিক্ষা: স্বামী চিন্ময়ানন্দ বলেন, এই শ্লোকটি অর্জুনের মানসিক অস্থিরতার প্রতিফলন। তিনি লিখেছেন, “Arjuna’s compassion is misplaced. True compassion must come from clarity of wisdom, not from weakness of emotion.” অর্থাৎ, ভীষ্ম ও দ্রোণের প্রতি অর্জুনের দয়া আসলে করুণারূপে মোহ; প্রকৃত করুণা জ্ঞানের সঙ্গে আসে, যেখানে কর্তা নিজের কর্তব্য পালন করে কিন্তু ফলের সঙ্গে জড়ায় না।
চিন্ময়ানন্দ বলেন, “When emotions cloud discrimination, even the noblest hearts lose their balance. Krishna’s teaching begins from here.” এই মুহূর্ত থেকেই শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বৈরাগ্য ও বুদ্ধিযোগের পথ শেখানো শুরু করেন—যা পরে নিষ্কাম কর্মযোগের দর্শনে রূপ নেয়।
আধুনিক বেদান্তিক দৃষ্টিতে সারসংক্ষেপ: আধুনিক আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যাকারীরা এই শ্লোককে মানুষের অভ্যন্তরীণ বিবর্তনের সূচনা হিসেবে দেখেন। স্বামী রঙ্গনাথানন্দ বলেছেন, “Arjuna’s question marks the birth of philosophy in the human mind.” একনাথ ঈশ্বরান (Eknath Easwaran) বলেন, “It is the first moment of awakening—the recognition that personal attachments and cosmic duty are at war within us.” পরমহংস যোগানন্দ এই শ্লোককে বলেন—“the point where the human heart begins its dialogue with the Divine.”
এই শ্লোকের মাধ্যমে গীতা ঘোষণা করে—আত্মিক শক্তি ছাড়া নৈতিক সংকটের সমাধান অসম্ভব। কর্তব্য (ধর্ম) ও মমতা (অবিদ্যা)-র সংঘর্ষে যে দ্বিধা জন্মে, তার একমাত্র সমাধান হলো আত্মজ্ঞান। অর্জুনের এই প্রশ্নই গীতার জন্মদ্বার—যেখানে মানবচেতনা প্রথমবার ঈশ্বরচেতনার দিকে মুখ ফেরায়। তাই, “কথং ভীষ্মমহং সংখ্যে…” কেবল যুদ্ধক্ষেত্রের প্রশ্ন নয়, এটি মানুষের নিজস্ব অন্তর্জগতে জ্ঞানের প্রারম্ভ—যেখানে কর্ম, ধর্ম ও জ্ঞানের মিলনবিন্দু সৃষ্টি হয়।
ময়ি সর্বাণি কর্মাণি সন্ন্যাস্যাধ্যাত্মচেতসা।
নিরাশীরনির্মমো ভূত্বা যুধ্যস্ব বিগতজ্বরঃ।। (ভগবদ্গীতা, ৩.৩০)
ময়ি—আমার মধ্যে, অর্থাৎ ঈশ্বরে। কর্মের ফল বা কর্তৃত্ব নিজের জন্য নয়, পরমাত্মায় সমর্পণ করে করো।
সর্বাণি কর্মাণি—জীবনের সমস্ত কার্য, ছোটো বা বড়ো, ধর্ম, কর্তব্য, যুদ্ধ, সেবা—সব কিছু।
সন্ন্যাস্য—সমর্পণ করে, ত্যাগ করে; কিন্তু ত্যাগ মানে কাজ ছেড়ে দেওয়া নয়, বরং অহংকার ও ফলের ত্যাগ।
অধ্যাত্মচেতসা—আত্মচেতনায় স্থিত মন দ্বারা; আত্মজ্ঞানে প্রতিষ্ঠিত মন কর্ম করলেও বন্ধন হয় না।
নিরাশীঃ—ফলের প্রত্যাশাহীন, কারণ আশাই বন্ধনের মূল।
নির্মমঃ—মমতাশূন্য, “আমার” ভাবের বিলোপ; তখন কর্ম ঈশ্বরের হয়ে যায়।
ভূত্বা—এই অবস্থায় স্থিত হয়ে; যুধ্যস্ব—যুদ্ধ করো, কর্তব্য পালন করো; বিগতজ্বরঃ—শোকহীন, উদ্বেগহীন, অহংবিহীন হয়ে।
স্বামী বিবেকানন্দ বলেন—কর্ম করো, কিন্তু কর্তার ভাব রেখো না; “Be the instrument, not the doer।” এটাই অধ্যাত্মচেতসা—আত্মায় স্থিত থেকে কর্ম করা। ঈশ্বরের যন্ত্র হয়ে কাজ করাই মুক্তির পথ। কর্ম তখন উপাসনা হয়, বন্ধন নয়।
রমণ মহর্ষি বলেন—অধ্যাত্মচেতসা মানে অন্তর্মুখী মন, যে আত্মাকে উপলব্ধি করে। “Who am I?” অনুসন্ধানে মন আত্মায় লীন হলে কর্তা থাকে না, কর্মফলও নয়। সন্ন্যাস্য মানে অহংবিলয়; কর্ম তখন ঈশ্বরের প্রবাহমাত্র। আত্মায় স্থিত মনই সত্য কর্মযোগী।
স্বামী চিন্ময়ানন্দ বলেন—“Adhyatma Chetasa means working with a vision anchored in the Self.” কর্ম থেকে বিচ্ছিন্নতা নয়, আত্মায় নিবিষ্টতা—এটাই মুক্তির পথ। মন যখন আত্মায় স্থিত, তখন কর্মফল তাকে স্পর্শ করতে পারে না। জ্ঞান ও কর্মের সমন্বয়ই এই চেতনার রূপ।
স্বামী শিবানন্দ বলেন—সমস্ত কর্ম ঈশ্বরকে নিবেদন করো, মন রাখো আত্মায়। “ময়ি সর্বাণি কর্মাণি সন্ন্যাস্য”—অর্থাৎ কর্ম ঈশ্বরকে উৎসর্গ করো, নিজের অহংকার ত্যাগ করো। অধ্যাত্মচেতসা মানে আত্মস্মৃতিতে স্থিত মন, যার কাজ হয়ে ওঠে যোগসাধনা। নির্মমো ভূত্বা—অর্থাৎ, সব কিছু ঈশ্বরের; নিজস্ব কিছু নেই।
ওশো বলেন—“To act with Adhyatma Chetasa is to act without the mind of the ego, but with the consciousness of the witness.” কর্ম চলবে, কিন্তু কর্তা থাকবে না; চেতনা সাক্ষীর মতো দেখবে। নির্মমো ভূত্বা—মানে “আমার” ভাবের অবসান; বিগতজ্বরঃ—অর্থাৎ, কর্মে থেকেও দুঃখহীনতা, কারণ অহংকার নেই। প্রতিটি কর্ম তখন ধ্যানের মতো।
শ্রীঅরবিন্দ বলেন—“The true worker is he whose consciousness is centered in the Divine Self.” ব্যক্তিচেতনা ঈশ্বরচেতনায় মিশে গেলে কর্ম আর ব্যক্তিগত থাকে না। যুধ্যস্ব বিগতজ্বরঃ—কর্তব্য করো, কিন্তু দুঃখ বা ভয় ছাড়া, কারণ তখন ঈশ্বরই কর্ম করছেন তোমার মাধ্যমে। ব্যক্তির কর্ম ঈশ্বরের ক্রিয়ায় রূপান্তরিত হয়।
অধ্যাত্মচেতসা সেই চেতনা, যা আত্মায় স্থিত, অহং থেকে মুক্ত, ঈশ্বরস্মৃতিতে ভাসমান। এই অবস্থায় কর্ম আর বন্ধন নয়, উপাসনা। ফল ও মমতা ত্যাগ করে, আত্মচেতনায় কর্ম করাই মুক্তির পথ। কর্ম, জ্ঞান ও ভক্তির সমবায়ে গীতার এই শ্লোক জীবনের প্রতিটি কাজে আত্মার দীপ্তি ছড়িয়ে দেয়—কর্তা নয়, আত্মা; ফল নয়, সমর্পণ; কর্ম নয়, যোগ।
কর্তৃত্বাভিমান ত্যাগ এবং অনাসক্তি—এ এক গভীর চ্যালেঞ্জ! নিষ্কাম কর্মের আলোচনায় একটি মৌলিক বিশ্লেষণ হলো কর্তৃত্বাভিমান (Ego-sense) ত্যাগের গুরুত্ব। ফলাকাঙ্ক্ষা বর্জনই যথেষ্ট নয়; যদি কর্তা নিজেকে ফলের কারণ বা মালিক মনে করে, তবে ফল না পেলেই তার মনে ক্রোধ, মোহ এবং অবশেষে দুঃখের সৃষ্টি হয়।
এই কারণেই নিষ্কাম কর্মের তিনটি প্রধান লক্ষণ নির্দেশ করা হয়েছে: ১. ফলাকাঙ্ক্ষা বর্জন (নিরাশী): ব্যক্তিগত লাভের চিন্তা থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি। ২. কর্তৃত্বাভিমান ত্যাগ (নির্মম): 'আমি কর্তা' এবং 'আমার' এই মালিকানা ভাব ত্যাগ করা। 'অধ্যাত্মচেতসা' ও 'নির্মম' শব্দ দ্বারা এই অহংবোধ ত্যাগের কথা বলা হয়েছে। এই অহংবোধ ত্যাগ না করলে চিত্ত আত্মসংস্থা বা স্থির হয় না। ৩. সর্বকর্ম ঈশ্বর সমর্পণ (ময়ি): কর্মকে যজ্ঞ বা পরমেশ্বরের উদ্দেশে নিবেদন করা।
ফলাকাঙ্ক্ষা দূর করতে হলে প্রথমে কর্তৃত্বাভিমান দূর করা প্রয়োজন। যতক্ষণ পর্যন্ত ব্যক্তি নিজেকে কর্তা মনে করে, ততক্ষণ সে ফলের অধিকার দাবি করবে। কর্মকে যোগস্থ হয়ে অর্থাৎ ঈশ্বরার্থে নিবেদন করাই এই অহংবোধ ত্যাগের একমাত্র বাস্তব কৌশল। এটি কেবল ধর্মীয় আদেশ নয়, বরং এটি একটি মনস্তাত্ত্বিক সুরক্ষা, যা ব্যক্তিকে কর্মজনিত বন্ধন এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয়।
সর্বকর্মাণ্যপি সদা কুর্বাণো মদ্ব্যপাশ্রয়ঃ।
মৎপ্রসাদাদবাপ্নোতি শাশ্বতং পদমব্যয়ম্।। (ভগবদ্গীতা, ১৮.৫৬)
চেতসা সর্বকর্মাণি ময়ি সন্ন্যস্য মৎপরঃ।
বুদ্ধিযোগমুপাশ্রিত্য মচ্চিত্তঃ সততং ভব।। (ভগবদ্গীতা, ১৮.৫৭)
সর্বকর্মাণ্যপি—সমস্ত কর্ম করলেও; সদা—সর্বদা; কুর্বাণঃ—কর্মরত অবস্থায়; মদ্ব্যপাশ্রয়ঃ—ঈশ্বরাশ্রিত, অর্থাৎ আমার প্রতি সমর্পিত চিত্ত; মৎপ্রসাদাত্—আমার কৃপায়; অবাপ্নোতি—প্রাপ্ত হয়; শাশ্বতম্—চিরন্তন, অবিনাশী; পদম্—ধাম বা অবস্থা; অব্যয়ম্—যা কখনও বিনষ্ট হয় না।
চেতসা—চেতনা দ্বারা, আত্মচেতনা বা ঈশ্বরচিন্তায় স্থিত মন দিয়ে; সর্বকর্মাণি—সব কর্ম; ময়ি—আমার মধ্যে, ঈশ্বরে; সন্ন্যস্য—সমর্পণ করে; মৎপরঃ—আমাতে নিবিষ্ট হয়ে; বুদ্ধিযোগম্—জ্ঞান বা বিচারের যোগ; উপাশ্রিত্য—আশ্রয় গ্রহণ করে; মচ্চিত্তঃ—মন আমার মধ্যে স্থাপন করে; সততং ভব—সর্বদা এমন অবস্থায় থাকো।
এই দুই শ্লোক পূর্বের “অধ্যাত্মচেতসা” ভাবেরই চূড়ান্ত পরিণতি। ৩.৩০-এ কৃষ্ণ বলেছিলেন—“ময়ি সর্বাণি কর্মাণি সন্ন্যাস্যাধ্যাত্মচেতসা”; এখন ১৮.৫৬-৫৭-এ সেই অবস্থার ফল প্রকাশ পাচ্ছে।
যিনি আত্মচেতনায়, ঈশ্বরস্মৃতিতে, বুদ্ধিযোগে অবিচল থেকে সমস্ত কর্ম ঈশ্বরের মধ্যে সমর্পণ করেন, তিনি কর্ম করেও অকর্মক হন। তাঁর জন্য কর্ম আর বন্ধনের কারণ নয়, বরং মুক্তির উপায়। “মৎপরঃ”—অর্থাৎ যিনি ঈশ্বরকেন্দ্রিক, ঈশ্বরনিষ্ঠ, তাঁর চেতনা যখন সর্বদা ঈশ্বরে নিবিষ্ট থাকে, তখন কর্মের মধ্যেও ঈশ্বরবোধ জেগে থাকে।
শংকরাচার্য ব্যাখ্যা করেন—“মদ্ব্যপাশ্রয়ঃ” মানে সেই ভক্ত, যিনি ঈশ্বরকে একমাত্র আশ্রয় মনে করেন, সমস্ত কর্ম ঈশ্বরচিন্তায় সম্পন্ন করেন। তাঁর কর্মের ফলও ঈশ্বরেই বিলীন হয়; তাই তিনি ‘শাশ্বতং পদমব্যয়ম্’—সেই অবিনাশী মুক্তি, ব্রহ্মনিষ্ঠ অবস্থায় প্রতিষ্ঠা লাভ করেন।
স্বামী বিবেকানন্দ এই শ্লোককে “divine detachment”-এর পরিণতি বলেন। কর্ম করো, কিন্তু ঈশ্বরস্মৃতিতে; তখন কর্ম আর দেহ বা মনকে স্পর্শ করে না, আত্মা অবিচল শান্তিতে থাকে। এই অবস্থা “শাশ্বতম্ স্থানম্”—নিত্য শান্তি।
রমণ মহর্ষি বলেন—“যখন মন ঈশ্বরে নিবিষ্ট থাকে এবং কর্ম চলে আত্মস্মৃতিতে, তখন কর্ম আর জন্ম-মৃত্যুর কারণ নয়।” তাঁর ভাষায়, “The mind surrendered to the Self acts without acting.” অর্থাৎ চেতসা সন্ন্যাস্য—মনকে আত্মায় বিলীন করো।