এই অভেদ জ্ঞানই তাঁকে কর্মফলের বন্ধন থেকে মুক্ত রাখে। যেহেতু তিনি নিজেকে কর্তা মনে করেন না এবং সমস্ত কর্মে সেই এক আত্মাকে দেখেন, তাই তিনি বাহ্যিকভাবে কর্মশীল হলেও, সেই কর্মের শুভ বা অশুভ ফল তাঁকে স্পর্শ করতে পারে না (ন লিপ্যতে)। শ্লোকটি প্রমাণ করে যে, জ্ঞান এবং কর্মের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই, যখন কর্ম নিঃস্বার্থভাবে এবং অভেদ জ্ঞানে স্থিত হয়ে করা হয়।
জ্ঞানীর কর্ম আরাধিত কর্ম, যা অহংকারহীন চেতনার স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশমাত্র। তাঁর কর্মের মূলে থাকে না কোনো ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা বা ফল ভোগের ইচ্ছা। এ যেন প্রকৃতিরই এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, যেখানে প্রতিটি ক্রিয়া সম্পন্ন হয় এক গভীর সচেতনতা ও নির্লিপ্ততার সাথে। রমণ মহর্ষি এই ধারণাকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন: “The Jñānī does not act; actions happen around him. He is like the unmoving screen on which the play of the world appears.” অর্থাৎ, জ্ঞানী কোনো কর্মের কর্তা নন; কর্ম তাঁর চারপাশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটে, আর তিনি কেবল সেই সব কর্মের সাক্ষীমাত্র। তাঁর সত্তা এক স্থির চিত্রপটের মতো, যেখানে জগতের সকল দৃশ্যপট উন্মোচিত হয়, কিন্তু সেই চিত্রপট নিজে নির্বিকার ও অপরিবর্তিত থাকে।
স্বামী চিন্ময়ানন্দ জ্ঞানীর জীবনের গভীর তাৎপর্য তুলে ধরেছেন এই বলে: “A Jñānī is a living Upaniṣad; his very presence teaches what books can only hint.” এর অর্থ হলো, জ্ঞানীর জীবনই বেদান্তের জীবন্ত প্রতিমূর্তি। বইপত্র বা ধর্মগ্রন্থ যা কেবল ইঙ্গিতে প্রকাশ করতে পারে, একজন জ্ঞানী ব্যক্তি তাঁর অস্তিত্ব ও জীবনযাপনের মধ্য দিয়েই সেই পরম সত্যকে মূর্ত করে তোলেন। তাঁর প্রতিটি আচরণ, তাঁর নীরবতা, তাঁর উপস্থিতি—সবই এক গভীর আধ্যাত্মিক জ্ঞান এবং প্রজ্ঞার উৎস। জ্ঞানীর জীবন কেবল তত্ত্বগতভাবে নয়, বরং ব্যাবহারিকভাবেও আত্মজ্ঞানের পথ প্রদর্শন করে। তিনি অহংবোধের সীমা অতিক্রম করে এক অনন্ত চেতনার স্তরে বিরাজ করেন, যেখানে কর্ম আর অকর্মের ভেদাভেদ লুপ্ত হয়ে যায়। তাঁর কর্মফল তাঁকে স্পর্শ করে না, কারণ তিনি কর্মের সাথে নিজেকে অভিন্ন রূপে দেখেন না, বরং দেখেন এক বৃহত্তর cosmic খেলার অংশ হিসেবে। এই নির্লিপ্ততা ও অহংকারহীনতাই জ্ঞানীর জীবনের মূল ভিত্তি।
অদ্বৈত দর্শনে অবতার, দেবতা এবং জ্ঞানীর মধ্যে গভীর সত্তাগত ঐক্য বিদ্যমান, যদিও তাঁদের উপাধি বা প্রকাশভঙ্গিতে পার্থক্য দেখা যায়। এই পার্থক্য নির্ভর করে মায়ার সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কের মাত্রার ওপর। মায়াকে অদ্বৈত দর্শনে এক রহস্যময় শক্তি হিসেবে দেখা হয়, যা ব্রহ্মকে জগৎরূপে প্রতিভাত করে।
অদ্বৈতের দৃষ্টিতে অবতার সেই সত্তা, যিনি মায়ার অধীন হয়েও মায়াকে অতিক্রম করে যান। তিনি মায়ার জগতে অবতীর্ণ হন জীবের কল্যাণের জন্য, কিন্তু মায়ার দ্বারা তিনি কখনও আবদ্ধ হন না। মায়ার মধ্যে থেকেও তাঁর চৈতন্য অক্ষুণ্ণ থাকে, এবং তিনি মায়িক বন্ধন থেকে মুক্ত থাকেন। তাঁর আগমন এবং কার্যকলাপ সবই মায়িক জগতের মধ্যে ঘটে, কিন্তু তাঁর স্বরূপ সম্পূর্ণরূপে মায়াতীত। যেমন, শ্রীকৃষ্ণ বা শ্রীরামকে অবতার হিসেবে দেখা হয়, যাঁরা মায়িক লীলা করলেও তাঁদের জ্ঞান ও সত্তা মায়ার ঊর্ধ্বে।
দেবতাগণ মায়ার কার্যরূপে প্রতীয়মান হন। তাঁরা মায়ারই এক বিশেষ প্রকাশ, যা নির্দিষ্ট গুণ ও ক্ষমতার অধিকারী। তাঁদের অস্তিত্ব মায়ার অধীনে, এবং তাঁদের ক্ষমতাও মায়িক জগতের মধ্যে সীমাবদ্ধ। দেবতারা মায়াকে সম্পূর্ণভাবে অতিক্রম করতে পারেন না, বরং তাঁরা মায়ারই বিশেষ রূপ হিসেবে পূজিত হন। উদাহরণস্বরূপ, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর—এঁরা সকলেই মায়ার বিশেষ প্রকাশরূপে বিভিন্ন কার্য সম্পাদন করেন বলে অদ্বৈত-মতে বিবেচিত।
জ্ঞানী হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি মায়াকে সম্পূর্ণরূপে অতিক্রম করে নিজের শুদ্ধ স্বরূপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি মায়ার আবরণ ভেদ করে আত্মজ্ঞান লাভ করেছেন এবং ব্রহ্মের সঙ্গে তাঁর অভেদত্ব উপলব্ধি করেছেন। জ্ঞানীর কাছে মায়া আর কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারে না, কারণ তিনি মায়ার স্বরূপকে জেনেছেন এবং তার বন্ধন থেকে চিরতরে মুক্ত হয়েছেন। তিনি দেহ, মন, বুদ্ধির ঊর্ধ্বে উঠে বিশুদ্ধ চৈতন্যরূপে অবস্থান করেন।
শঙ্কর তাঁর অদ্বৈত দর্শনে এই সত্তাগত ঐক্যকে আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ঈশ্বর মায়ার অধীশ্বর—অর্থাৎ, তিনি মায়াকে নিয়ন্ত্রণ করেন, মায়া তাঁর অধীন। অন্যদিকে, জ্ঞানী মায়াকে অতিক্রমী—অর্থাৎ, তিনি মায়াকে ভেদ করে তার ঊর্ধ্বে চলে যান। শঙ্কর জোর দিয়ে বলেছেন যে, ঈশ্বর এবং জ্ঞানীর স্বরূপ একই। উভয়েই মায়ার প্রভাবমুক্ত হয়ে পরম সত্যে প্রতিষ্ঠিত। এই গভীর ঐক্যকে রমণ মহর্ষি এক অবিস্মরণীয় বাক্যে প্রকাশ করেছেন: "God, Guru and Self are one and the same." এই উক্তিটি অদ্বৈত দর্শনের মূল ভিত্তি—ব্রহ্ম, আত্মা এবং জগৎ-এর অভেদত্বকে সুচারুরূপে তুলে ধরে।
স্বামী বিবেকানন্দ এই প্রাচীন জ্ঞানকে আধুনিক ভাষায় ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি মানবপ্রেম এবং মানবসেবাকে সর্বোচ্চ পূজা হিসেবে দেখেছেন। তাঁর মতে, "The highest worship is to see God in man—the Jñānī is that living God." বিবেকানন্দ এখানে জ্ঞানীর মহিমা বর্ণনা করেছেন। যিনি আত্মজ্ঞান লাভ করেছেন, যিনি মায়াকে অতিক্রম করেছেন, তিনিই জীবন্ত ঈশ্বর। কারণ তাঁর মধ্যে পরম সত্যের প্রকাশ ঘটেছে। মানবসেবার মাধ্যমে এই জীবন্ত ঈশ্বরকে উপলব্ধি করাই সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক সাধনা। এই উক্তিটি প্রমাণ করে যে, অদ্বৈত দর্শন কেবল বিমূর্ত তত্ত্ব নয়, বরং তা মানবজীবনে আত্মোপলব্ধি এবং মানবসেবার মাধ্যমে পরমার্থ লাভেও উৎসাহিত করে।
অবতার, দেবতা ও জ্ঞানী তিনজনই এক চিদানন্দরূপ ব্রহ্মের তিনটি দিক—অবতারে ব্রহ্ম করুণা হয়ে প্রকাশিত, দেবতায় শক্তি হয়ে কার্যকর, জ্ঞানীতে জ্ঞান হয়ে আত্মপ্রকাশিত। এই তিন ভিন্ন অভিব্যক্তি মিলেই ব্রহ্মের পূর্ণতা প্রকাশ পায়। শেষপর্যন্ত যখন সব ভেদ বিলীন হয়, তখন থাকে কেবল সেই এক চেতনা—নির্গুণ, নিরাকার, সর্বব্যাপী—যিনি কখনও জন্মান না, কখনও অবতীর্ণ হন না, তবু যিনি সর্বত্র সর্বদা দীপ্ত আছেন—চিদানন্দরূপ ব্রহ্ম, যিনি অবতার, দেবতা ও জ্ঞানী—তিনেরই একমাত্র সত্য স্বরূপ।
রমণ মহর্ষির দৃষ্টিতে “Sarvam Khalvidam Brahma” কোনো দর্শনীয় তত্ত্বের নিছক পাণ্ডিত্যপূর্ণ ব্যাখ্যা নয়, বরং এটি একটি গভীর, সরাসরি অন্তর্মুখী অভিজ্ঞতা—আত্মোপলব্ধির চরম পর্যায়। তিনি জোর দিয়ে বলতেন যে, মানুষ ব্রহ্মকে বাহ্যিক রূপে, আচার-অনুষ্ঠানে বা শাস্ত্রীয় তত্ত্বে অন্বেষণ করে থাকে, অথচ ব্রহ্ম কোনো বাইরের সত্তা নন। ব্রহ্ম প্রকৃতপক্ষে আমাদের চেতনারই সারবস্তু, যা আমাদের অভ্যন্তরীণ সত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। মহর্ষির মতে, এই দৃশ্যমান বাহ্য জগতের যত রূপ, নাম, শক্তি, এবং ক্রিয়া—সবই সেই একীভূত চেতনারই বহুমুখী প্রতিফলন।
ব্রহ্মকে কখনও কোনো ভৌগোলিক স্থানে বা পার্থিব বস্তুতে খুঁজে পাওয়া যায় না; তিনি আত্মার গভীরে, আমাদের অস্তিত্বের মূল কেন্দ্রে স্বতঃস্ফূর্তভাবে উন্মুক্ত। এই উপলব্ধির পথ কেবলমাত্র আত্ম-অনুসন্ধান বা আত্ম-বিচার (Self-Inquiry) এর মাধ্যমেই সম্ভব। তাঁর অবিস্মরণীয় উক্তি, “Look within; see who you are. When the ‘I’ dissolves, all that remains is Brahman”—অর্থাৎ, “নিজের গভীরে দৃষ্টিপাত করো; অনুধাবন করো, তুমি কে। যখন এই ‘আমি’ বা অহং-ভাব সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়, তখন যা অবশিষ্ট থাকে, তা কেবল ব্রহ্ম।” এই উক্তি তাঁর সমগ্র দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু, যা আত্মবিলয়ের মাধ্যমে পরম সত্যে উপনীত হওয়ার পথ নির্দেশ করে।
এই গভীর উপলব্ধি থেকেই মহর্ষি জগতকে মায়া বা বিভ্রম বলে নেতিবাচক অর্থে আখ্যায়িত করেননি। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, জগৎ নিজে মায়া নয়, বরং মায়ার অন্তরালে ব্রহ্মেরই এক মহিমান্বিত প্রকাশ। বাহ্যিক রূপে জগৎ অসংখ্য বৈচিত্র্য ও বহুত্ব প্রদর্শন করলেও, এর অন্তরালে একমাত্র পরম সত্য সেই এক চৈতন্য। মহর্ষির ভাষায়, “Names and forms which constitute the world continually change and perish. It is unreal to limit the Self to these names and forms, and real to regard all as the Self.”—অর্থাৎ, জগতের সকল নাম ও রূপ নিরন্তর পরিবর্তনশীল ও নশ্বর। তাই আত্মাকে এই ক্ষণস্থায়ী নাম ও রূপের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা অজ্ঞানতা বা ভ্রম; পক্ষান্তরে, সর্বত্র সেই এক আত্মাকে দর্শন করাই প্রকৃত ও শাশ্বত জ্ঞান। এই উপলব্ধির মাধ্যমেই ব্যক্তি জাগতিক বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে পরম শান্তি ও নির্বাণ লাভ করে। এটি শুধুমাত্র একটি দার্শনিক ধারণা নয়, বরং জীবনযাপনের এক ব্যাবহারিক পথ, যা প্রতিটি ব্যক্তিকে তার নিজস্ব গভীর সত্তার সাথে সংযোগ স্থাপনে সহায়তা করে।
রমণ মহর্ষি তাঁর গভীর প্রজ্ঞা দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন যে, "Sarvam Khalvidam Brahma" (সব কিছুই ব্রহ্ম), এই পরম সত্যটি কেবল তখনই একজন মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতার অংশ হয়ে ওঠে, যখন তার মন সম্পূর্ণভাবে আত্মায় বিলীন হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত মন বহির্মুখী থাকে, অর্থাৎ বাইরের জগৎ এবং জাগতিক বিষয়ে নিমগ্ন থাকে, ততক্ষণ এই মহাবাক্যটি কেবল শ্রুতি, একটি তত্ত্ব বা ধারণামাত্র। এটি তখন উপলব্ধির গভীর স্তরে পৌঁছায় না।
কিন্তু যখন সাধকের মন আত্মায় স্থির হয়, যখন সে তার নিজস্ব সত্তার গভীরতম স্তরে প্রবেশ করে, তখনই সে উপলব্ধি করতে পারে যে, "আমি" এবং "এ বিশ্ব"—এই দুটি আসলে ভিন্ন নয়, বরং এক ও অভিন্ন। এই উপলব্ধির মুহূর্তটি হলো আধ্যাত্মিক জাগরণের চূড়ান্ত পর্যায়। মহর্ষি এই অবস্থাকে অত্যন্ত সরল অথচ গভীর ভাষায় বর্ণনা করেছেন: “যখন তুমি জানো, ‘আমি এই ব্রহ্ম’, তখন জগৎও আর বাহির নয়—তুমি নিজেই সব।” এর অর্থ হলো, যখন ব্যক্তি নিজের আত্মাকে ব্রহ্মের সাথে অভিন্ন রূপে জানতে পারে, তখন তার কাছে এই বহির্বিশ্ব আর আলাদা কোনো সত্তা হিসেবে প্রতিভাত হয় না; সে নিজেকেই এই সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড রূপে অনুভব করে।
রমণ মহর্ষি এই গভীর আধ্যাত্মিক অবস্থাকে ঘুম ও জাগরণের পার্থক্যের সঙ্গে তুলনা করেছেন, যা অত্যন্ত সহজবোধ্য একটি উপমা। যেমন, স্বপ্ন দেখার সময় একজন মানুষ প্রায়শই বুঝতে পারে না যে, সে স্বপ্ন দেখছে। তার কাছে স্বপ্নের জগৎটি সম্পূর্ণ বাস্তব বলে মনে হয়। কিন্তু যখন সে জেগে ওঠে, তখন সে স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করতে পারে যে, স্বপ্নের জগৎটি ছিল মিথ্যা, একটি মায়া। ঠিক তেমনি, আত্ম-জাগরণের পর একজন জ্ঞানী ব্যক্তি বুঝতে পারেন যে, এই জগৎ আসলে ব্রহ্মের প্রতিফলন ছাড়া আর কিছু নয়। এটি ব্রহ্মেরই প্রকাশ, একটি আপাতদৃষ্টিতে ভিন্ন রূপ, কিন্তু মূলে তা ব্রহ্ম থেকে অবিচ্ছেদ্য। এই উপলব্ধি মানুষকে জাগতিক মোহ থেকে মুক্ত করে।
এই চরম উপলব্ধির পর, জ্ঞানীর কাছে আর কোনো কর্মফল বা পাপ-পুণ্যের ধারণা অবশিষ্ট থাকে না। তার সকল কর্ম তখন এক ভিন্ন প্রকৃতির হয়ে ওঠে—যা রমণ মহর্ষি Ārādhita-Karma (আরাধিত কর্ম) নামে অভিহিত করেছেন। এই কর্ম অহংকারহীন, অনাসক্ত এবং স্বতঃস্ফূর্ত চেতনার প্রকাশ। জ্ঞানী ব্যক্তি কাজ করেন, সমস্ত জাগতিক দায়িত্ব পালন করেন, কিন্তু সেই কর্ম তাঁকে স্পর্শ করে না। তিনি কর্মের বন্ধনে আবদ্ধ হন না; কারণ তিনি সম্যক জানেন যে, কর্মকারী (কর্তা), কর্ম (ক্রিয়া) এবং কর্মফল (ফলাফল)—এ সবই আসলে ব্রহ্মের এক বিশাল খেলা বা লীলামাত্র। ব্রহ্মই সব কিছুর মূলে, এবং তিনিই সব কিছুর প্রকাশ। এই অবস্থায় তিনি পরম শান্তি ও মুক্তি লাভ করেন।