দৃষ্টিতে যা ধরা পড়ে, সেটাই আসল নয়। জীবনী বা পরিচয়ের বাইরে থাকা সত্যিকারের সত্তা অন্য কিছু। মানুষ কখনো স্বপ্নদ্রষ্টা, কখনো-বা দার্শনিক—গুরু বা এরকম কিছু-একটা নাম মানুষ মানুষকেই দিয়ে দেয়; অথচ প্রকৃত স্বরূপ এসব নামের কোনো সীমানায় পড়ে না। গুরু কিছুই করতে পারেন না, যদি না মানুষ নিজে কিছু করে।
অদৃশ্য হবার উপলব্ধি নিয়ে আসে এক গভীর সত্য—ঘটমান জগতে যা ঘটে, তার কোনো আসল গুরুত্ব নেই। ধরা যায়, ধরা যায় না—সবই বস্তু, আর বস্তু মানেই অনিত্য। তাই কারও মতামতের পূজা করার প্রয়োজন নেই, জয়-পরাজয়ের উল্লাস বা হতাশার তেমন কিছু মূল্য নেই। অর্থ বা সাফল্য হয়তো সমাজে মূল্যবান, কিন্তু চেতনার অদৃশ্য উপস্থিতির কাছে তা অর্থহীন।
সবচেয়ে বড়ো উপলব্ধি হলো—আসলে যা-কিছু গুরুত্বপূর্ণ, তা বস্তু নয়। অস্তিত্ব চিরন্তন উপস্থিতির মধ্যে, বস্তু-সীমার বাইরে।
বস্তু মূল্যবান হলে জাগতিক সাফল্য মানুষকে সুখ-স্বস্তি দিতে পারত। শান্তির উৎস দৃশ্যমান বস্তু নয়, অদৃশ্য চেতনা। অথচ এই উপলব্ধিকে বাইরে থেকে অনেকসময় পাগলামি বলেই মনে হয়।