কেন দিয়েছে সে এটা আমায়, আমার প্রশ্ন তা নয়। এটা পড়ে আমার অনুভূতিটা তাকে বোঝাব কী করে, আমার প্রশ্ন এটাই! কী বলতে হয়? কতটুকু বললে পরে কিছুটা হলেও বোঝানো হয়? কোনও সাধারণ কিছু তো এটা নয় যে, এক সাদামাটা ব্যাখ্যায় আমি একে সাজিয়ে তাকে পাঠিয়ে দেবো! তবে অত অসাধারণও তো আমি নই! সে তো জানে, ওই নিভৃত লুকোচুরিতে যতই আমাকে হার মানিয়ে রাতটাকে অপরিচিত আর কালো করে দিতে চেয়ে সে থাকুক না কেন, আমি ঠিকই ফেরাউনের সমাধি পার করে হলেও তাকে খুঁজে নিয়ে আসব! না না, ভুল করবেন না! খুঁজে পাবার অপেক্ষা আমি করবই তো না! খুঁজে আমি নিয়ে আসব! রাতটা চাঁদনি রাত যদিও-বা না হয়, তা-ও তাকে আমার হার মেনে নেবার এই ভ্রান্তি থেকে মুক্ত আমি করতে পারবই…এটার আনন্দটা কিন্তু থাকবে অবশেষে! নিজের ভেতরটা? হ্যাঁ হ্যাঁ, সে তো আমি আরও অনেক আগেই ভেঙেছি! অনুসন্ধানী হয়ে অনেকবার প্রকাশিত হয়েছি! শুধু প্রাপ্তি ছিল না কিছুই…এই যা! এবড়োখেবড়ো ভূমিতে কোদাল দিয়ে শরতকে যে উঠোনে সেই শরতই খুঁজেছে, সেই উঠোনটা আমিই ছিলাম। অবাধ্য চিহ্নগুলো আঁকবার জন্যে যে তুলিটা ছিল হাতে, তার অজান্তেই, সেটা আমি…হ্যাঁ, আমিই ছিলাম! সন্ধের কাঁপুনিতে যে শীতটা তাকে মুড়ে রাখতে চেয়েছিল, ওটাও, অবধারিতভাবে, আমিই ছিলাম! শুধু সে জানতে পারেনি এসব…এই যা! বরফের মাঠে অন্ধ নীহারিকার দেয়ালে যে ভাগ্যটা লিখেছিল সময়, সেই ভাগ্যের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম এই আমি নামক এক অভাগিনী! যেই প্রান্তরের প্রান্তে তার জেদি আবেগগুলো নিথর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে শেষ পর্যন্ত নিথরই হয়ে গেছে, সেই প্রান্তে দাঁড়িয়ে যে কলঙ্কিনী আজও ঠায় অপেক্ষারত আছে, সেই কালিমা-নির্বাসিতা আর কেউ নয়…আমি নামক এই আমিটাই! ফেরাউনের সমাধি ঘুরেও খুঁজে আমি পাবো না তো তাকে, বরং খুঁজে নিয়ে আসব! হ্যাঁ, আসবই…কথা দিলাম!