: ভালোবাসার কোনো পরিমাপ হয় না। তীব্র অনুভূতি বোঝানোর সক্ষমতা সবার থাকে না।
তোমায় যতখানি ভালোবাসি, তা থাক না তোমার মুখে অপ্রকাশিত।
তোমার চোখই তা ঠিক বুঝিয়ে দিয়ে যায়।
তোমার চোখে তাকালে আমার কী মনে হয়, জানো?
তুমি আমায় ঠিক কতটা ভালোবেসেছ, তা তুমি নিজেও জানো না।
কারও সাথে ধরাবাঁধা নিয়মে থেকে যাবার মানুষটা যে তুমি নও।
তাই আমায় এতটা কাছে রেখে নিজেকেও আজ চিনতে পারছ না, বুঝি?
আচ্ছা, তা-ই যদি না হয়, তবে এমন নিঃস্ব আমায় কী করে মেনে নাও তুমি?
: তোমাকে সবার সাথে মেলাতে পারছি না।
তুমি আসলে কে, বলো তো?
কী চাও?
: হা হা হা...!
বড়ো অবুঝের মতো কথা বলছ।
জানো তো, ভালোবাসা যে প্রেম নয়।
হ্যাঁ, আমি অবুঝই হয়ে যাই।
তোমাকে কেন ভুলতে পারি না আমি?
অবচেতনভাবেই আমি আটকে গিয়েছি তোমার মায়াতে।
: আমাদের তো তেমন কোনো মুহূর্ত নেই, যার রেশ ধরে তুমি আমায় মনে রাখতে পারো।
যা ছিল, তার সবটাই তোমার বিপরীতে। তবুও কোনো এক অদৃশ্য যোগসূত্রে তোমার সবটায় জুড়ে রেখেছ আমায়।
ছেড়ে থাকতে চাও না বুঝি আর?
আচ্ছা, আমি যদি তোমার অনেকটা কাছে থাকতে পারি, তাহলে বুঝি আমায় নিয়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে?
: তুমি বাকিদের মতো নও।
তোমাকে ছুঁয়ে থাকলে মনে হয়, নিজেকেই ভালোবেসে ফেলছি আরেক বার।
জানতে চেয়েছিলে না, তুমি আমার কাছে কেমন?
তুমি একটা প্রশান্ত ঘর, যে-ঘরে আমি ব্যতীত অন্য কেউ কখনও প্রবেশ করেনি।
তা জেনেছি যে-মুহূর্তে, সেই ক্ষণ থেকেই তোমায় রেখেছি আমার বুকের গভীরে।
: তোমার ভেতরের মানুষটাকে ছুঁয়ে দেখতে পেরেছিলাম, কোনো এক অজানা মুহূর্তে।
জানো কি তুমি, তোমার ভেতরের মানুষটাই আমায় ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছে!
তাই ঠিক করেছি, তোমায় ছেড়ে কখনও যাব না; যদি প্রলয়ও আসে, তবুও না।
তোমার বাইরের রূপ দেখে নয়, আমি ভালোবেসেছি তোমার ভেতরটাকে। এজন্যই আমাদের গল্পটা ভীষণ অন্যরকম।
তুমি চাইলে এই গল্পে না-ও থাকতে পারো।
তোমার সবচেয়ে দামি অনুভূতিটা আমার কাছে রাখা আছে। ওটার খোঁজ করতে হলে, কোনো-না-কোনো দিন তুমি ঠিক আমায় খুঁজে নেবে।
তোমায় হারানোর ভয় আমি করি না। শুধু যখন খুব কাছে আসো তুমি, তোমার নিঃশ্বাসের তীব্রতায় খুব ভয় হয়; অতটা ভালোবাসা প্রকাশ করতে যে আমি বড়ো অপারগ।
তোমায় পাওয়া হবে না বলেই কি তুমি এতটা দামি?
: আমি তো আছিই তোমার সাথে।
এতটা বেশি করে আমাকে তো এই জীবনে আর কেউই কখনও পায়নি।
ওভাবে বোলো না...ভীষণ অধিকারবোধ জন্মায় তোমায় আগলে রাখার, তোমায় আরও বেশি করে ছুঁয়ে থাকার।
শোনো পাগলি, কে বলেছে তুমি নিঃস্ব?
তোমার মতো এতটা শুদ্ধ অনুভূতিসম্পন্ন মানুষের ভালোবাসা কি আমি আগে কখনো হৃদয়ে ধারণ করতে পেরেছিলাম?
আমার অনুভূতিগুলো এতটাই শুদ্ধতা পায় কেবল তোমার উপস্থিতিতেই। বলতে পারো, এগুলো সব তোমারই।
আমার অভিমানগুলো তোমার মনের খুব কাছে আশ্রয় খুঁজেছে, বিষাদের এই সময়ে।
: আচ্ছা, ভালোবাসা কি কেবলই অনিশ্চয়তায়-ঘেরা এক উপলব্ধি?
তোমার ভেতরটা কী বুঝেছে?
জানো, আমি শতভাগ নিশ্চিত যে আমি তোমায় ভীষণ ভালোবাসি।
তোমায় ভালোবাসতে পারার সেই অদৃশ্য শক্তি কী রূপে অর্জন করেছিলাম আমি, সেই গল্পটা কখনো তোমায় বলা হয়নি।
তুমি জিজ্ঞেস করেছিলে না, আমি তোমায় নিয়ে এত কথা অনায়াসে লিখে ফেলতে পারি কীভাবে? আগে থেকেই লেখালেখির অভ্যাস ছিল কি না?
হা হা... তোমায় আজ সেই অজানা গল্পটা বলতে চাই। শুনবে?
: নিশ্চয়ই... বলো না...?
: জানো, সেদিন তোমার কাছ থেকে চলে আসার পর থেকে ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল।
তোমায় ছুঁয়ে থাকতে আর পারব না, এই ভাবনায় বুকের ভেতরটা ছিঁড়ে যাচ্ছিল।
তুমি যে আমার প্রিয়তম লেখক, তা-ও তো বলা হয়নি তোমায় কখনো।
তোমার সাথে দূরত্বটা বাড়তে লাগল স্বাভাবিকভাবেই।
আমাদের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে ধরে নিয়েই ছিলাম।
ঠিক তখনই কানের কাছে ফিসফিসিয়ে কেউ যেন বলতে শুরু করল... ওকে ভেবে লেখাটা শুরু কর।
আমি জানি না, আমি কী লিখছি। শুধু জানি, এভাবে ছাড়া আমি তোমায় আর কোনো উপায়ে স্পর্শ করতে পারছি না। তাই লিখেই যাচ্ছি।
পৃথিবীর কেউ যদি আমার লেখা পড়ে কিছু না-ও বোঝে, আমি জানি, তুমি ঠিক বুঝে নেবে।
আমার লেখা শব্দের সবটা জুড়ে আছে কেবল আমাদের অপূর্ণতার গল্প—তোমার স্মৃতি, আমার না-বলা অনুভূতি, আমার ব্যর্থতা; আর আছে: এই আবর্জনায়-ঢাকা আমায় তোমার বুকে জায়গা করে দেবার গল্প।
আমাদের নির্বাক গল্পকথা... শুনতে পাও কি তুমি?
তোমার কাছাকাছি আসতেই আমি এত বেশি লিখে ফেলি।
আমার ভালো থাকার এই অজানা কারণটা কেবল তোমাকে ঘিরেই।
তোমার জন্যই লিখতে শিখেছি।
তোমায় ভালো রাখতে তো আমি কখনও পারিনি, তবে আমার অনুভূতিগুলো কেবল তোমাকেই জানিয়ে যেতে চাই।
তুমি হারিয়ে গেলে, আমি আর এভাবে করে কখনও লিখতে পারব কি না, জানি না।
নিজের মতো করে ভালো রেখো তুমি নিজেকে...