বুনোহাঁসের বুনো-ভালোবাসায় প্রেম যখন বুনো হয়েই ধরা দেয়, তখনও টিকে থাকে সুখের যত বসবাস, তার সবটুকুই পর হয়ে ক্রমেই অন্যের আঙিনায় জড়ো হয়। তুমি আমার প্রতিটি ক্ষণে মনে-পড়ার মানুষটি হতে কখনও চাও তো কখনওবা চাওই না। যদি আমি হারিয়ে যাই তোমার অবহেলায়, তবে কোনও অবেলায় ভুলেও আমায় খুঁজতে যেয়ো না। আর পাবে না খুঁজে! এই যে শহরটা দেখছ না, এই শহরে প্রতিটি মানুষই মানসিকভাবে অসুস্থ। কেউ হয়তো আক্ষরিকতায় পাগল, কেউবা হয়তো কোনও এক ‘তুমি’কে প্রচণ্ড রকমের ভালোবাসতে গিয়ে ভাবানুবাদে...ঘুরেফিরে, সেই পাগলই! কেন বুঝলে না তুমি? তোমার পৃথিবীটা হয়তো তোমার মতোই কতশত আলোর বাতিতে স্বমহিমায় উজ্জ্বল, তাই হয়তো তুমি এবং তোমার নিজস্ব পৃথিবী, দুই-ই স্বল্পকথনে সুস্পষ্ট হতেই অভ্যস্ত। কিন্তু আমার পৃথিবী যে তোমার হিসেবি চোখে, আমারই মতন আঁধারে আঁধারে প্রাক্তন! তাই আমার ভাষা বুঝবার সময়টুকু তোমার আর কখনও হয়ে ওঠে না। কত কথাই তো যাই বলে...। তুমি এখন অনেক ব্যস্ত। আমায় বুঝবার সময়ের বড্ড অভাব তোমার। আমার মনের কথা আর আমার কলমের খোঁচা,--- এ দুটোকে আলাদা করবার সময় এবং ধৈর্য তোমার এখন আর হয় না। তাই কোনও কাব্যরূপে না এগিয়ে, মনে যা আছে, সরাসরিই বলে ফেললাম, যদিও জানি, এসবও তোমার কাছে, তা-ও শেষঅবধি, শুধু কিছু লেখাই! ---এখানেই আমার যত ব্যর্থতা! এ আমার শব্দচয়নে অপারগতা, না কি প্রকাশভঙ্গিতে অপরিপক্বতা--- আমি সত্যিই জানি না। কোন সে অদৃশ্য অনর্জিত ব্যর্থতায় আমি কিছুই বোঝাতে পারি না তোমায়, সে আমার আজও জানা হলো না। কষ্ট হচ্ছে, এমন বলে বলে কখনও কষ্ট বোঝানো যায় না। সব কথাই বলে বোঝানোর মতো হয় না কখনওই। কথা কিছু বুঝে নিতে হয় নিজের উদারতা দিয়ে, কিংবা ওদের বিদেয় বলতে হয় নিজের উদাসীনতা নিয়ে। এর মাঝামাঝি আর কোনও পথ নেই। অনাদরে এমন দুঃসহ পন্থায় আমার এই ভালোবাসাকে এক অনাকাঙ্ক্ষিত আবদার আর না-ইবা করে তুললাম! সব গল্পেরই পরিণতি যে কাছে-আসায় রূপ নেয় না! তোমার শহরের আবহাওয়ায় যখন প্রচণ্ড ব্যস্ততায় ভালো থাকবার উষ্ণতা, ঠিক তখন আমার শহরে ক্রমাগত মন খারাপে মন খারাপে আমার নিজের মধ্যেই নিজেকে হারিয়ে ফেলবার ভীষণ নিম্নচাপ! তুমি আমায় ছেড়ে ভালো থাকতে চাইলে...থাকো! আমি নাহয় চেষ্টা করব তোমায় খুঁজে নিতে আমার সাজানো কল্পকথার ভিড়ে। একটাই অনুরোধ। এতটা অভিনয়ে আমার না হয়েও আমার হয়ে থেকে আমায় এমন করে হেরে যেতে বাধ্য আর কোরো না!