সুতোছেঁড়া ঘুড়িটা যখন আকাশে এদিক ওদিক গোত্তা খেতে খেতে কোনও এক মৃত নেক্রোপলিস শহরে এসে আটকে গিয়েছিল আকস্মিকই, তখন তাকিয়ে কি দেখেছিলে, কে বেশি নৃশংসভাবে খুন হয়েছিল? সুতো ছিঁড়ে দিগ্বিদিকশূন্য ঘুড়িটা? না কি ঘুড়ির বিক্ষুব্ধ ঘূর্ণনে ক্ষতবিক্ষত শহরের আকাশটা? সাঁতারভোলা জলচর যখন পুকুরপাড়ে ভিড়ে একডুবেই জলে নেমে আত্মঘাতী হবার ভয়ংকরতম প্রয়াস নিয়ে কোনও এক শ্যাওলাপড়া পিছল ঘাটের সিমেন্টখোয়া পাদদেশে এসে আটকে পড়ে ছিল আকস্মিকই, তখন তাকিয়ে কি দেখেছিলে, কে বেশি মর্মান্তিকভাবে তার অস্তিত্ব খুইয়েছিল? সাঁতার ভুলে আত্মবিস্মৃত জলচর? না কি জলচরের ভুলের মাশুলে বন্দি শ্যাওলাপড়া সিমেন্টখোয়া পিছল ঘাট? পথভোলা পথিক যখন ভালোবাসাকে নিলামে তুলে তার প্রিয়ার কাছে ফিরে যাবার সব পথ হারিয়ে এসে ‘গন্তব্যকে পালটে ফেলেছি।’ বলে ভিখিরিবেশে কোনও এক ডিসেম্বরের শহরতলিতে গ্রহণকালের গ্রহবিপাকে এসে থমকে দাঁড়ায় আকস্মিকই, তখন তাকিয়ে কি দেখেছিলে, কে বেশি অযাচিতভাবে অযাত্রিক বলে লিপিকারের খাতায় লিপিবদ্ধ রয়েছিল? পথ ভুলে প্রিয়াকে ফেলে পথের দাবিতে হেরে-যাওয়া পথিক? না কি পথিকের সাথের পথের কাঁটায় রক্তাক্ত হয়ে-যাওয়া ডিসেম্বরের শহরতলি? দুর্দান্ত প্রেমালাপ বিস্মৃত গতিকের প্রেমিক যখন প্রতারণার বোঝা মাথায় করে রিক্ত কোনও এক রমনার বটমূলে এসে মাথাগোঁজার ঠাঁই খোঁজে আকস্মিকই, তখন তাকিয়ে কি দেখেছিলে, কে বেশি জঘন্যভাবে ঘৃণ্যতার সাথে কলঙ্কিত বলে নামাঙ্কিত হয়েছিল? প্রেমকে বন্যতা বলে নাম-দিয়ে-দেওয়া সংশয়ী গতিকের প্রেমিক? না কি গতিকের প্রেমের বন্যতায় পালটে-যাওয়া রমনার রিক্ত বটমূল? গল্পের কুটিরে অনুপ্রবেশ-হারানো ফিকে রূপকথা যখন চাঁদের ভালোবাসায় আধাঁর মিশিয়ে সূর্যের প্রকাশকে তেজস্বিতাসমৃদ্ধ করতে কোনও এক বোবা টানেলে শব্দ ছুড়ে দেয় আকস্মিকই, তখন তাকিয়ে কি দেখেছিলে, কে বেশি অনতিবিলম্বে করুণানিলয়ে নীল রংচটা দেয়ালের খসেপড়া চুনে ভালোবাসার রং লাগিয়ে দিয়েছিল? অনুপ্রবেশ হারিয়ে দীর্ঘশ্বাসে বেঁচে-থাকা ফিকে রূপকথা? না কি শব্দহীনতার চিরকুটে চাপা-পড়ে-থাকা বোবা টানেল?