এক।
যে পথে পথিক হারায়,
সে পথের বাঁকে, পথিকের আর থাকে কী দেবার?
আমি যতবার যাই তোমার কাছে,
সমর্পিতা হই, বলি, ভালোবাসি,
তোমায় কি কিছু দিই কখনও?
আমি যে শূন্য হাতের ভিখিরিই কেবল!
তোমাকে দেবার মতো কী-ইবা আছে?
ছিল কি কখনও? তুমি তো জানো!
আমার কী আছে, বলো, তোমার যা নেই?
আমি তো পথিক হয়েছি এমন পথের,
যে পথে দেবার নেই কিছু আমার!
শূন্যহাতে প্রলাপ বকে হবেই-বা কী?
এমনি করে হয় কি প্রেম কিংবা ভালোবাসা?
আমার ভালোবাসার মূল্য কী-বা, দিয়েছি যা আমি?
নেমেছি কখন যুদ্ধমাঠে?
সুখ কি কখনও দিয়েছি তাকে?
ছায়া কখনও হয়েছি কি তার ক্লান্তিবেলায়?
আর কিছু নয়, স্রেফ বন্ধুই-বা হয়েছি কবে?
কিছুই পারিনি, হইনি কিছুই,
বলেছি শুধুই--ভালোবাসি!
আমি শুধু প্রলাপ বকেই দুর্বলতা ঢাকতে চেয়েছি!
এছাড়া আর পারিই-বা কী?
ভালোবাসাকে দিইনি কিছুই নিজের মতো,
শান্তি কি প্রেম, আসেনি তো কিছুই!
আমি এক ব্যর্থ পথিক সফল পথের!
দুই।
তুমি কি হারিয়ে গেছ?
নাকি আছ এখনও আমার পাশে?
আছ তুমি যদি, কেন সাড়া দাও না?
যদি হয় এমনও, চলেই গেছ, লুকিয়েছ কোনও নীরব স্বরে,
জেনে রেখো তবু, যেখানেই গেছ, যতদূরে হোক,
সেখানেই পাবে এই আমাকেই!
দেখবে সেখানে, তোমার পথেরই দিকে রয়েছি তাকিয়ে……
ক্লান্তি আমায় ক্লান্ত করে না,
ঘুম তো আমায় ঘুমে টানে না,
চাই যে তোমায়, জানি শুধু এইটুক,
আর নেই কোনও দাবি কি চাওয়া!
তবু পালিয়ে বেড়াও কীসের দায়ে?
মনে আসে শুধু হারানোর ভয়।
ভাবি এরপর, পাইনি যাকে,
সে আবার হারায় কেন? কেমন করে?
এ মনে কেবলই ভ্রমের রাজ্য,
সে তো যুক্তিতে নয়, বিশ্বাসে চলে,
সব জেনেবুঝে ভয়কে সরায়, প্রেমকে টানে।
আমি ভয়ে কেঁপে মরি প্রেমের জ্বরে,
নিঃশর্তেই তোমাকে আনি মনের ঘরে!
ফিরে এসো, প্রিয়! আমি আছি, জেনো।
ফিরে এলে তুমি বাঁচব আবার, তোমাকে পেয়ে,
কিংবা আবারও কখনও হারানোর ভয়ে!
তিন।
তোমার ভালোবাসার মানবী আছে।
তোমার বীর্য নেয়ার মানবী আছে।
তোমাকে শাসন করার মানবী আছে।
শুধু--
তোমার গালি কিংবা দুঃখ নেবার কেউ নেই হয়তো!
গালি হজম করে হাসিমুখেই তোমার চোখের দিকে অপলক চোখে তাকিয়ে থাকার মানবী তোমার নেই, জানি!
আমাকে ওই মানবীর জায়গাটা দিয়ো!
তোমার যত গালি আছে, ক্রোধ কিংবা অভিমান আছে, ব্যথা কিংবা হতাশা আছে,
তার সবটুকু আমাকেই দিয়ো!
তোমার দুঃখ কি রাগ,
কেবল আমার জন্যই সব তোলা থাক!